জয়িতা সরকার
শীত কিংবা বর্ষা, গ্রীষ্ম অথবা বসন্ত, হাঁড় কাঁপুনি থেকে পাতা ঝরা সবটাই কেমন উল্টে পাল্টে দেখতে চায় এই মন। বড্ড বেপরোয়া আর হাওয়া বদলের মত দিক বদলায় সে। বারমুখো চক্রব্যূহে ঢুকে পড়া মনের যে এই জীবদ্দশায় মুক্তি নেই তা বলাই বাহুল্য। পাহাড় থেকে জঙ্গল, নদী থেকে বালুকাবেলা সবটাই যেন দাগ কেটে যায় মনে। সেই মনের টানে সাড়া দিতেই বারবার বেড়িয়ে পড়া।
আমার যদি একটা জঙ্গল থাকত, কী আর হতো? জংলী হয়ে ঘুরে বেড়াতাম। না না, জংলী কেন হতে যাব? বেশ শিকার করতাম, একটা বড় বন্দুক কাঁধে শুকনো পাতা উড়িয়ে দু'চারটে বাঘ ভাল্লুকের মালকিন তো হয়েই যেতাম। ঘোরাফেরায় মন ভরছে না, এবার রাজপুরুষ হওয়ারও ইচ্ছে হয়েছে মনে। আরে হবে নাইবা কেন? যে জঙ্গল পথ ধরে আপনি গাড়ি নিয়ে ছুটছেন, সেই জঙ্গলটা ছিল শুধু রাজাদের আমোদের জায়গা। শুধুমাত্র শিকারের জন্য একটা জঙ্গল, যেখানে হাতি, লেঠেল বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাজ-রাজারা।
রাজা শিকার করবেন, আমোদে-আটখানা হয়ে মহীশূর থেকে রওনা হলেন। পথ বেশ অনেকটাই। জঙ্গল বেশ গভীর। এদিক ওদিক দৌঁড়ে বেড়াচ্ছে হরিণের পাল। আহা কী কোমল দৃষ্টি। কচি ঘাস গুলো খোশ মেজাজে চিবিয়ে চলেছে। হুঁশ করে শব্দ, আরে ভয় পাস না, রাজা রাজত্ব ওসব অতীত। গুলি-বন্দুক সিন্দুকে, এখন গাড়ি আর ক্লিক-এর সময়। আমাদের দু'চারটে ছবি নেবে, এই যা। এইসব মানুষদের শখ আবার অন্য। ওসব ছিল ওদের ঠাকুরদার আমলে। ঘাস চিবোতে চিবোতে হয়ত ওরা এই গল্পই করছিল।
জীব বৈচিত্র্য-এর এক ভরকেন্দ্র এই অরণ্য। রাজাদের প্রমোদের জন্য তৈরি দক্ষিণের এই জঙ্গল এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। শুধুমাত্র পর্যটক নয়, অবাধে বন্যপ্রাণীর এক অভেদ্য বিচরণ ক্ষেত্র। বান্দিপুর টাইগার রিজার্ভ। রাজ-রাজাদের মত আমারও ইচ্ছে হয় ওই জঙ্গল পথে ঘুরে বেড়াতে। তবে ওই যে শিকারের কথা বলছিলাম সেসব কিছু নয়, শুধুই দু'চোখ ভরে দেখব বলেই বেড়িয়ে পড়লাম ভোরের আলো ফোটার আগেই।
পূব আকাশে যখন লাল আভা তখন আমরা দাঁড়িয়ে নাইস রোডে। নামের যথার্থতা আছে অবশ্যই। নাইস রোড ছাড়িয়ে মাইসোর রোড, একে একে পেড়িয়ে যাব পরিচিত কিছু জায়গা। প্রথমেই রামনগর, যেখানে পৌঁছতেই শোলে সিনেমার কথা আপনার মনে পড়বে। ঘড়ির কাঁটায় আট'টা, এবার টি ব্রেক। একটু এগিয়ে গেলেই শ্রীরঙ্গপত্তনম, সেই টিপু সুলতান, শুনলেই একটা লড়াকু মনোভাব জেগে ওঠে। এরপরই সেই মহীশূর মানে বর্তমানের মাইসোর। তবে শহরে না ঢুকে ডানদিকে বাঁক নিয়ে উটি-মাইসোর রোড ধরে চলছি আমরা।
পথ চেনাতে সাহায্য করছে গুগল। আমরাও চলছি, আবার আরেকটা ডানদিক। কিছুটা যেতেই ওয়েলকাম টু বান্দিপুর, আমি তো আত্মহারা, জঙ্গল এতো সুন্দর হয় নাকি? সবাই যেন নিয়ম মেনে রয়েছে এখানে, প্রতিটি গাছ যেন একে অপরকে শৃঙ্খলে বেঁধে রেখেছে। দু'পাশে ঘন জঙ্গল মাঝ দিয়ে ঝাঁ চকচকে রাস্তা।
জঙ্গলের সঙ্গে আমার একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে, পশু-পাখি গুলো হয়ত বুঝতে পারে আমি এসেছি। কোনদিন খালি হাত ফিরিনি। তবে দক্ষিণের পশু-পাখি গুলো আবার আমার কথা বুঝবে কিনা এই সন্দেহ নিয়ে এগোচ্ছি, চারিদিকে পাখির কিচিরমিচির, তার মাঝেই ওগুলো কী? আরে জংলি শুয়োর, দাঁত বের করে ছুটছে, এতদূর এসে এসব দেখব নাকি ? চলতে চলতেই একটা জলাশয়, নিশ্চয়ই বাঘ জল খেতে আসে এখানে, একটু দাঁড়িয়ে গেলে হতো না? ওরে অতগুলো কী? জংলি কুকুর, আর সম্বর হরিণ, চটজলদি ক্যামেরা দে, কিন্তু কিছুই এলো না, দাঁড়ানোর কোন অনুমতি নেই। অগত্যা এগিয়ে চলা।
কিছুটা যেতেই, এতো পুরো পরিবার, ছানা নিয়ে দাঁড়িয়ে হাতির পাল। আচ্ছা এগুলো কী ওয়াদিয়ার-দের হাতির বংশধর, মানে যার নামে কর্ণাটক সরকারের ঐরাবত বাস চলে? আমার প্রশ্নটা শেষ করতেই বুঝলাম এবার বকা খাওয়ার পালা। সেসব যাক, ছবি আমি তুলবই কিন্তু সফরসঙ্গী নারাজ। কারণ একটাই , হাতির পাল আমাদের থেকে পাঁচ হাত দূরেও নেই। তো চল এগিয়ে যাই, কিন্তু সাফারি পয়েন্ট কোথায়? জঙ্গল পথে নেটওয়ার্ক নেই, কিছুই বুঝতে পারছি না। হঠাৎ চেক পোস্ট, কিছুই বুঝলাম না, পেড়িয়ে চললাম, খানিকটা যেতেই জিজ্ঞাসাবাদ, বললাম ডে-ট্রিপ, কিন্তু এরা মালয়ালি বলছে কেন? একশ মিটার যেতে না যেতেই সবটা পরিস্কার, ওয়েলকাম টু ওয়ানাড , মানে? এতো কেরালা, আমরা তো যাব তামিলনাড়ুর দিকে। পথ ভুল, উফফ গুগল যে মাঝে মাঝে এমন গোল করে।
এবার ফিরতে হবে, সে আরেক বিপত্তি, চেকপোস্ট, এবার কানাড়া, আরটিপিসিআর দেখাতে হবে? চক্ষু গোল, এই তো আধ ঘন্টা আগে গেলাম এই রাস্তা দিয়েই, না কেরালা থেকে এলে এটা লাগবেই। উপায়? শেষে টোলের স্লিপ দেখিয়ে মুক্তি। স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতেই আরে পুরো পরিবার এখনও দাঁড়িয়ে। বেশ কিছু লোকজনও দাঁড়িয়ে, সাহস দেখিয়ে আমিও নেমে পড়লাম। দু'চারটে ক্লিক করতেই তাড়া খেলাম। না হাতির নয়, বাকিটা বুঝে নিতে হবে।
ওই যে দেখ দেখ, দু'টো ময়ূর একসঙ্গে, বেশ সুন্দর ঘুরছে ওরা। জঙ্গলের এই খোলামেলা বেঁচে থাকাটা আমার বড্ড প্রিয়। নিজের মত করে বাঁচা হয়ত একেই বলে। এসব ভাবতে ভাবতেই অগুনতি হরিণ, এতো সুন্দর তাকিয়ে আছে, দেখেই যেন মায়া হয়। এবার জঙ্গল ছেড়ে বেরোনোর পালা। দাঁড়িয়ে থাকা গার্ডকে জিজ্ঞেস করতেই সে বলল, এটা কেরালা সাইড, এটা কোর। ওদিকে উটি সাইড, ওখানে সাফারি হয়।
বেলা তখন সাড়ে বার'টা, যাব কিনা ভাবতে ভাবতেই চল গিয়েই দেখা যাক প্রস্তাব। বেশ অনেকটা পথ। মাঝে একটু খাওয়াদাওয়া। এবার চলছি সবার পরিচিত বান্দিপুরের দিকে। কিছুটা এগিয়ে যেতেই প্রথম বাঁক, পরপর কয়েকটা বাঁক নিতেই বেশ খানিকটা ওপরে উঠে এলাম। কিন্তু আমরা তো উটি যাব না, তবে ফেরা যাক। একটু আসতেই চোখের সামনে দু'টো বাইসন। এই জঙ্গলে সত্যি বৈচিত্র্য আছে। যেমন গাছ-পাহাড়ের বন্ধুত্ব, তেমনিই ওদের কোলে বেড়ে ওঠা পশু-পাখি।
প্রকৃতির যে কত রং, তা হয়ত এই পাহাড় ঘেরা জঙ্গলে আছে। নেমে আসছি পাহাড় থেকে। আমাদের আবার আসবে বলার অপেক্ষায় ছিল ওরা, এক পাল হরিণ। ওদের টাটা বলে বেড়িয়ে এলাম উটি-মাইসোর রুটের বান্দিপুর থেকে। প্রায় সাত কিলোমিটার আগে রয়েছে সাফারি বুকিং সেন্টার। ইচ্ছে করলে বাস কিংবা জিপে চেপে আপনি ঘুরে আসতে পারেন জঙ্গলের অলিগলি। তবে এই যাত্রায় সবকিছুর দেখা পেলেও, বাঘ মেলেনি। তাই হয়ত সেই রাজকীয় জঙ্গল ভ্রমণটা এখনও বাকির তালিকায়।
বাঘ দেখার জন্য আরও একবার আসতেই হবে, তবে ইচ্ছে থাকল ভুল পথ ধরে আরও একবার কেরালা দিকের বান্দিপুরে যাওয়ার। সত্যি অনেকটা গভীর, আর একটু যেন বেশি সুন্দর। মাঝের কাবিনি নদী আর ওপাশের নাগারহোল ন্যাশনাল পার্ক এপাশের বান্দিপুরকে আরও মোহময়ী করে তুলেছে। এক অদ্ভুত নির্জনতা আছে এই আদিম প্রকৃতিতে।
গল্প
নতুন ভোর শ্রাবনী সেনগুপ্ত
নতুন বছরের সূর্যোদয়।দূরে টিলার দিকেএকদৃষ্টে তাকিয়ে দেখছেন নতুন বিডিও-মনের মধ্যে থেকে সরে যাচ্ছে কবেকার হতাশা। ফেলে আসা অতীতের স্মৃতিপথ দিয়ে তিনি হেঁটে চলেছেন।
তিনি তখন শিশু।মা বাবার সংসারে অভাবের সঙ্গে সুখের ওম্ টুকুও ছিল ।মা সোনামণি টুডু ছিল সুন্দরী-কালো চিকন গায়ের রঙ, শরীরের বাঁধন দেখবার মতোন।গাঁয়ের একমাত্র কুয়ো থেকে যখন জল নিতে যেত,আর সব বৌ ঝিদের মাঝে নজর কাড়ত সে।প্রতিবাদী, উচিৎ কথা বলতে দড় সোনামনি টুডু।সে চাইত তার মেয়ে লেখাপড়া শিখুক।গাঁয়ের একমাত্র পাঠশালায় সে তার মেয়েকে ভর্তি করেছিল।এইটিতেই চোখ টাঁটাল সবার-"বিটিছেল্যা আবার লিখাপড়া শিখ্যে কি করবেক?"রব তুলল সবাই।তার উত্তরে সোনামনি বলে-"কেন-বিটি ছিল্যা কি মানুষ লয়?ও লিখাপড়া শিখ্যে অনেক বড়টা হবেক্।শহরের বিটিদের পারা চাকরিট করবেক।"গাঁওবুড়া সাফ্ জানিয়ে দিল-"অই সব শওড়েপানা আমাদের এখানে চলবেক লাই এই বইল্যে দিলাম।"শুনলোনা সোনামনি ।তার বরও অনেক বারণ করল,এমনকি মারলও তাকে ।কিন্তু সে মেয়েকে পাঠশালায় পাঠাতে থাকল।তেল চুপচুপে চুলে দুই বেণী করে যখন হারামণি ইস্কুলে যেত,মা সোনামণি চটের থলেতে বই নিয়ে তার পিছু ধরত।আহা সে এক চোখজুড়ানো দৃশ্য।এক আলোর বলয় যেন ঘিরে থাকত তাদেরকে।গ্রামের বাকি মেয়ে বউয়েরাও মনে মনে সামিল হতে চাইত তাতে,কিন্তু সাহসে কুলতো না।তাই তারা অভিশাপ দিত সোনামনিকে-"মর্ মর্ গতরখাকি।" তবে পাঠশালার মাস্টারমশাই সোনামণির সঙ্গে ছিলেন সবসময়। এইটি আরো চক্ষুশূল হয়ে উঠল সবার। বাড়িতেও শুরু হল অশান্তি।মাস্টারমশাইকে আর সোনামনিকে নিয়ে কানাকানি শুরু হল গাঁয়ে।অনেকদিন ধরে সোনামনিকে নিজের করে পাবার ইচ্ছে ছিল মোড়লের,এই সুযোগটাকে কাজে লাগাল সে।
সোনামনির বরকে হাত করে সুযোগ বুঝে এক রাতে সোনামণির নারীত্ব লুট করতে চেষ্টা করল।সোনামণিও ছাড়লনা,সে তার কোমরে থাকা টাঙ্গি দিয়ে কোপাল তাকে।মরল মোড়ল।কেউ টের পাবার আগেই সোনামণি মেয়ের হাত ধরে ছুটে চলল মাস্টারমশাইয়ের কাছে।গিয়ে সটান তার পায়ে ধরল-"মাস্টর বাঁচা।"তার রক্তাক্ত চেহারা দেখে শিউরে উঠলেন মাস্টারমশাই।বললেন-"একি! কি করে তোর এই অবস্থা হল?" সোনামনি বলল-"ও মাস্টর আমার মেয়েটাকে তুই বাঁচা-আমি খুন করেছি রে,একটা বদ মানুষকে সইরে দিছিরে এই সোন্দর পিথিবী থেকে।গাঁয়ের কেউ এখনো টের পায় নাই। টের পেল্যে একে আর বাঁচতে দিবেক লাই।তোর দুটি পায়ে ধরি রে-একে তুই বাঁচা। মেয়েট যেন লিখাপড়াট শিখে মানুষ হতে পারে-তোর কাছে রেখ্যে গেলাম,আমি চললাম পুলিশ ফাঁড়ি।" এই বলে হারামণিকে সেইখানে রেখে সে ছুটল।না,সেদিন সে পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত্য পৌঁছানোর আগেই গ্রামবাসীরা তার কাছে পৌঁছে গেল।পিটিয়ে মারল তাকে,আর তার মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে পুড়িয়ে দিল তার ঘর।
মাস্টারমশাই অনেক কষ্টে লুকিয়ে রাখলেন হারামণিকে । তাঁর এক বন্ধুর কাছে পাঠিয়ে দিলেন শহরে। সেখানেই সেই ভদ্রলোকের সাহায্যে এক আবাসিক বিদ্যালয়ে থেকে শুরু হল হারামণির আলোর পথে চলা। এইভাবে নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে আজ হারামনি বিডিও ম্যাডাম।তারই প্রচেষ্টায় এই অঞ্চলে গড়ে উঠছে মেয়েদের ইস্কুল । সে প্রতিজ্ঞা করেছে যাতে আর কোনো মেয়েকে পড়াশোনা করার জন্য তার মতোন কষ্ট না পেতে হয় তার জন্য সমস্ত রকমের প্রচেষ্টা জারি রাখবে।আজ নতুন বছরের রবির আলোকচ্ছটায় সে যেন দেখতে পাচ্ছে তার মা সোনামণির খুশিভরা মুখ-সেই নারী যে তার সমাজের সমস্ত রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেও তার মেয়েকেএগিয়ে দিতে চেয়েছিল আলোর দিকে। মনে মনে বলল হারমনি- "মা গো তুই খুশি ত,তর বিটি আজ তার মতোন বিটিছিল্যদের লিখাপড়ার সব বাঁধা দূর করবেক এই কথাটা তোকে দিল বটেক।" হেসে উঠল চারদিক এসেছে নতুন ভোর।
রম্য রচনা
থোর বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোর
স্বপন কুমার দত্ত
আবার একটি বছর পেরিয়ে পা দিতে চলেছি, নতুন বছরে, কিন্তু তার হাল হকিকত বদলাচ্ছে কই? মানে সেই "থোর বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোর।" বছরের শেষ দিনে এবং নতুন বছরের প্রথম দিনে সাড়ম্বরে পালিত হবে "ফিষ্ট "। জবাই হবে, নিরীহ মুরগী, ছাগাদি সঙ্গে যুক্ত হবে আরও অনুষঙ্গ। কে বলবে, তখন দেশে রয়েছে দারিদ্র্য,বেকারত্ব আরও নানা সমস্যা।
যাক সে প্রসঙ্গ। এখন আমজনতার সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বাজারে যাওয়া। ক্রমাগত লম্ফমান বাজার দরের কারণে বাড়িতে গিয়ে হিসেব দেওয়া সত্যিই মুশকিল। স্ত্রী স্বামীকে বিশ্বাস করেনা, পুত্রকে পিতা বিশ্বাস করতে অপারগ। এতো এক ভীষণ যন্ত্রণা!
অসংখ্য সমস্যার মুকুটের সঙ্গে এবার নতুনভাবে জুড়তে চলেছে, সমস্যার নতুন একটি পালক। ব্যাংক বিলগ্নিকরণ এবং তারপর গণেশ উল্টালে মিলবে অ্যাকাউন্ট প্রতি সর্বোচ্য পাঁচ লক্ষ টাকা। এর বেশি জমা থাকলেও " নো হোপ নো চান্স, রিটার্ন হোম এট ওয়ান্স"। কলে আটকানো ইঁদুরের মতো এখন পাবলিকের অবস্থা। টাকা রাখা যাবেনা ব্যাংকেও, আবার চিটফান্ডে রাখলেও পুরোটাই চিট্ । তাহলে এখন ,-- " শ্যাম রাখি,না কূল রাখি অবস্থা।" তাহলে নতুন বর্ষে, কিভাবে রইবো হর্ষে?
নতুন জীবনতো দূরস্থান, পুরোনো জেবনেই জেরবার। 'জেবন' একেবারে আইঢাই। গ্যাস দিয়ে শুরু আর গ্যাস দিয়েই শেষ। প্রথমে সাবসিডি ছাড়বার অনুরোধ, পরে একেবারে রোধ। এখনতো ছুঁচো গেলার অবস্থা। একবার অভ্যাস করিয়ে সাধের গিন্নিকে ঘুঁটে কয়লা ঘাটতে বললে একেবারে ময়লা করে দেবে। কী দরকার, খুঁচিয়ে ঘা করে একজিমা বানানোর। চলুক, হনুমান কৃত স্বর্ণলঙ্কা দহন।
হাতি সদর দরজা পার হয়ে গেলেও রয়ে গেছে পুচ্ছখানা। রোগযন্ত্রনার ভোগান্তির শেষ কই? কখনো উপসর্গ যুক্ত, কখনই উপসর্গহীন , নাকমুখ ঢেকে মাস্কের কারণে দমবন্ধ হওয়ার জ্বালা, না পড়লে কান ধরে উঠবস ---- " বল মা তাঁরা দাঁড়াই কোথা?" শেষে না হাঁপানী ধরে যায়! ভ্যাকসিন পর্ব মিটেও যেন মিটছে না। আবার নাকী লাগবে "বুষ্টার ডোজ "! ভীষ্মের শরসজ্জা করে দিয়ে তবে মিলবে ছাড়! হায়রে অদৃষ্ট !
নববর্ষে নতুন জীবনতো সোনার পাথর বাটি। চপ,সিঙ্গারা,তেলেভাজা আর চা বেচে বেচেতো হাড়মাস কালি হয়ে গেল যুবক যুবতীদের। বেকার উচ্চ ডিগ্রিধারীরা এখন ডোমের পদেও চাকরি করতে রাজী। কিন্তু চাকরি পাওয়া আজকাল ঈশ্বরপ্রাপ্তির থেকেও দুর্লভ। নতুন বর্ষে কী মিলবে এর কোন সুলুক সন্ধান?
পেট্রোল, ডিজেল এতো দুর্মূল্য হয়ে পড়েছে, এখন নতুন গাড়ি কেনা দূরস্থান, নিজের গাড়ি, বাইক বেচতে পারলে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে এরপর আবার আসতে চলেছে,পালকি, গরুর গাড়ি বা ফিটন গাড়ির জমানা। সেদিন শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড দিয়ে লণ্ঠন ঝোলানো গরুর গাড়ি নিয়ে বরযাত্রীসহ বরের বিয়ে করতে যাওয়া করে দিয়েছে এই ঘটনার সূত্রপাত। গাড়ি
বাইকের অবস্থান হবে জাদুঘরে।
নতুন বর্ষে নতুন জীবন মিলুক আর না মিলুক, ফিরুক আবার পড়াশুনার পরিবেশ। পরীক্ষা ছাড়া পাশ, মানে গোপলাও পাশ,আর ন্যাপলাও পাশ, একেবারে নাপসন্দ। তা না হলে ভাঙা কোমর নিয়ে এই পড়ুয়ারা আর কতদূর এগোবে?
আর একটি বিষয়ে আলোকপাত না করলে হবে সত্যের অপলাপ। নতুন বর্ষে দার পরিগ্রহ করে নতুন জীবনে প্রবেশ যেন সুখকর মধুময় হয় । বিবাহ অনুষ্ঠানে মুখাবরনী পড়ে, গুটিকতক নিমন্ত্রিত লোকজন নিয়ে, নিয়ম মাফিক আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে নতুন বর্ষ হোক,-- আলোকময়, বর্ণোজ্জ্বল এবং হীরকদ্যুতিময়।
কবিতা
চিঠি
শ্রাবণী সেন
একটা নতুন ঝকঝকে
রাইটিং প্যাডের
হাল্কা আকাশি পাতা
খুলে বসে আছি, জানো!
তোমায় চিঠি লিখব যে...
সম্বোধনে লিখব - আমার বসন্ত এসো
তুমি বলবে তোমার বর্ষা মাসে জন্ম,
তুমি মেঘমল্লার!
কিন্তু তুমি যে দখিনা বাতাসের মত উচ্ছল
বসন্তের রুদ্রপলাশের মত রক্তরঙিন
পরজবসন্ত রাগ যেন তুমি,
মর্মে আবীরগুলাল ছড়িয়েছ!
আরো লিখব
তুমি কবে আসবে বল তো!
অনেকদিন দেখিনি।
শেষ বিকেলের নরম আলোয়
সেই নদীর জল
ছোঁয়া হলনা যে!
জীবন খুব স্বল্প পরিসর
তাই জীবন তোমার মত বর্ণময়!
এটুকু লিখেই চিঠি শেষ করে
আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকব।
না পাঠানো চিঠি থেকে যাবে
আকাশি রঙ কাগজে,
নাকি আকাশে!
আবারও নতুন করে চিঠি লিখব
নতুন বছরে
কোনো নতুন দিনে।
এইসব ছিঁড়ে দিয়ে
প্রনব কুমার কুন্ডু (রুদ্র)
নতুন কদরে পুরাতন আঘাতের চিহ্ন লোল ফ্যালে
নামমাত্র ভিত্তিতে সুতলঘাটে সৈন্য পাহারা।
বন্ধধোঁয়ায় ভয়াবহ ধুমধামে নজরের পীড়া
নিখুঁত বুনিপ খেলা, মরশুম ঢাকে রোদস্নান।
উভচর ছাপ ডোরাকাটা দেহ
চোটমজুদ দরদর রাত, সব জানে শালা চাঁদ।
চামড়ার উর্দি রেখে যৌবনকলে ফুল দেব নারী।
ঘুম ছুটছে বিগত বছরের ম্যাও ম্যাও ভাতায়
বিশ্বাসের কাঁচাপাতায় অসীম ফল্গুধারা, পাগলপারা।
নলবাহিত ঘোড়া, তীক্ষ্ণ ঢাল বিছানো অঙ্ক
মাইনাস সম্পর্ক, ভাইরাস বাড়ির চর্বিভরা জানা।
অভ্যাসে তেতো আগলায় জিভে
ধু ধু বুদ্ধি, বেকার জীবনে শত বেগরবাই।
ব্যাঙভাষা সাপ বোঝে আর বোঝে শীতকালের গল্প
স্বপ্নজলা ছাদ, এই যে বিষাদ অক্ষম দুই হাত
এসো, এসো বিপ্লব, নতুন বর্ষে পট্টি ঢাক্কান খুলে।
রাঙা সূর্যরীনা মজুমদার
বর্ষ আসে বর্ষ যায়
অমোঘ তার যাওয়া আসা
বছরের প্রথম রাঙা আলোয়
স্বপ্ন আঁকি, তোমার সাক্ষাতের পর
অন্তরের শব্দগুলো সাজাই কবিতায়-
শরীরের প্রতিটি শেকড়ে মনুষ্যত্বের
কথা লিখি বারবার
খুলে দিই মননের অব্যক্ত দুয়ার
তবুও তো বছরভর বইতেই হয়
রক্তপাত, বেওয়ারিশ লাশ, বিষাক্ত গ্যাস
চোখের নোনাস্বাদ, ক্ষত অন্তর!
তুমি তো বলতেই পার,
"তবে কী ভালো কিছুই দেইনি আমি?"
দিয়েছ সুনীল আকাশ, মুক্ত বাতাস
উজাড় করা প্রকৃতি, মানুষে মানুষে
প্রেম, বন্ধন, মহার্ঘ্য হাসি...
গাছেরাও শীতের কষাঘাতে
শাশ্বত ছন্দে ধূসর পাতা ঝরায়
কিশলয়ই তো বাঁচার নির্মল স্বপ্ন জাগায়!
বর্ষশেষে পশ্চিম আকাশে
ঘিরে আছে নীল বলয়
তবে কী সব বিদ্বেষ বিষ ঢেলে
সূর্য গেল আজ অস্তাচলে!
নতুন ভোরে হাতে হাত, মানবতার বন্ধনে
সে সেজে উঠবে রাঙা হয়ে?
লিখে রাখি, আমাদের সেরা প্রাপ্তি
মননের উর্বরতায়
'নুতন সূর্য আলো দাও..আলো দাও।'
নব আশা
মহাজিস মণ্ডল
নতুন বর্ষে নতুন জীবন
ভরুক আলোর গানে,
বিশ্ব ভুবন হাসুক অপার
অবাধ খুশির বানে।
পাতায় পাতায় স্বপ্ন সাজুক
সাজুক নব আশা,
হৃদয় মাঝে শপথ বাজুক
বাজুক যুগের ভাষা।
অঙ্গীকার
অলকানন্দা দে
বাঁধো বাঁধো মন সরল সুখে
লক্ষ্মীমন্ত বেলা,
আশা ভরসার প্রদক্ষিণে
পুবাকাশ জুড়ে খেলা!
অভিজ্ঞ সেই সূর্য ওঠে
নতুনে সাজে দিন,
স্বতন্ত্র হবে প্রতিটি প্রহর
দুঃখরা হবে ক্ষীণ।
পারিপার্শ্বিকে সুখের শস্য
ছড়ানোছেটানো হাসি,
লুটানো আলোয় উদ্যম নিয়ে
বাঁচতে ভালোবাসি!
সংকল্পের উঁচু ঢিবিতে
বোধের চারাগাছ,
পৃথিবীকে দেব সবুজ শান্তি
অনিবার্য কাজ।
মহানিমগাছ, নিরিবিলি ছায়া
অরণ্যকে ডেকে,
বলব আমি ভক্ত তোমার
তোমারই আদর মেখে!
বিশ্বকে দেব নতুন বিশ্ব
সহজিয়া ভাষা শিখে,
হরিৎ সাজাতে ব্যস্ত বেলা
মঙ্গল দিকে দিকে!
এমনই হোক না নতুন জীবন
সৃজনমত্ত প্রাণ,
যোজনদীর্ঘ দূরান্ত পথে
বিছানো অভিমান!
রেনেসাঁ আসুক দৃপ্ত লয়ে
সবুজ মাঝারে ঘর,
অলোকসামান্য মহাপৃথিবীর
ছোঁয়া যেন ঈশ্বর!
জীবন ভোরে
রূপক রায়
সময় বাঁচে নিজের মতো
ঘুরে চলি অবিরত
ঘড়ির কাঁটাকে আটকে দিয়ে
পৃথিবীর সব নিয়ম রচনা করি
নতুন করে, বাঁচতে শিখি আবার
আকাশ পাখি উড়ে চলে
জীবনের গান গেয়ে
সময়ের অপেক্ষায় বসে থাকি
আদি হতে অন্ত্য দিক-দিগন্তে
কত প্রহেলিকা কত অবিশ্বাস
কত অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে নিরন্তর
জীবনের গান শুধু গেয়ে যায় ওরা বারংবার।
নতুনের আহ্বান
বুলবুল দে
নতুন বছর নতুন সাজে চাই গো তোমায় পেতে,
নতুন সুরে নতুন গানে উঠুক সবাই মেতে।
দুঃখ বিষাদ যা আছে সব যাক চলে যাক দুরে,
সুখের হাওয়া প্রেমের গাথা আসুক ঘুরে ফিরে।
মান অভিমান ভুলে যাওয়ার শক্তি যেন পাই,
নতুন হাসি নতুন খুশি রাশি রাশি চাই।
নাই বা হল নতুন জামা দুঃখ তাতে নাই,
ক্ষুধার জ্বালা ঘুচুক সবার কামনা করি সবাই।
শত্রু যেন কেউ না থাকে মিত্র সবাই হয়,
নতুন করে কাছে টেনে মনের কথা কয়।
প্রবীণ প্রাণে পায়না আঘাত হয়না ব্যাথার ক্ষত,
ওরাও যেন বাঁচতে পারে ওদের নিজের মত।
নবীন প্রাণে আছে আঁকা যত স্বপ্ন আশা,
নতুন আলোয় সার্থক হোক পাক সে পরিভাষা।
ছোট্ট কুঁড়ি প্রাণগুলো সব খিলখিলিয়ে হেসে,
ফুলের মত উঠুক ফুটে নতুন হাওয়ায় ভেসে।
ভয়ানক ঐ কালো মেঘ যা ছাইছে নীল আকাশ,
নতুন কোনও যাদু মন্ত্রে হয় যেন তা নিকাশ।
যা কিছু সব অশুভ আছে মুখ থুবড়ে পড়ুক ,
নতুন বছর নতুন করে শুভময় হয়ে উঠুক।
নতুন আকাশ নতুন বাতাস বুক ভরা প্রশ্বাস,
নতুন করে নির্মল হোক এই টুকুই যে আশ।
বিবর্তন
বিজয় বর্মন
রং বদলের খেলায় আমিও সামিল,
দূরে দাঁড়িয়ে তুমি,
বোবা মিছিলে হাঁটো,
আমিতো জলরং চেয়েছিলাম,
জোছনা রঙে ডুবে যেতে যেতে,
তোমাকে চাঁদ ভেবে নিতাম।
সব রং শেষ,
শুধু সাদা কালো, আগুন রং দেখে,
একদিন তোমার আঁচলে সূর্য হবে আঁকা,
যেখানে সংলাপ থেমে যাবে,
সবুজ নীলের আলিঙ্গনে,
বদলে হবে নতুন সমীকরণ।
আয়না তুমি মুখ রেখে দিও দর্পণে,
ভেঙে যাচ্ছে সময় নিজের মতো,
চলো আপন আপনে দেখি,
তুমিও হাঁটো আমিও হাঁটি,
পাতায় পাতায় লেখা হয়ে যাক,
সময়ের সাথে, বিবর্তনের গান।
পারিনি
সুদীপ দাস
আমি পারিনি,
মেঘ হয়ে ভেসে গিয়েছি এপার হতে ওপার
কিন্তু, আমি আকাশ হতে পারিনি।
আমি ছড়িয়েছি আমার অহংকার
লুকায়েছি হাজারো কলংক,
কিন্তু, আমি পূর্নিমার চাঁদ হতে পারিনি।
আমি সময়ের স্রোতে ভেসে গিয়েছি
জন্জাল পাঁকে আস্টেপৃষ্টে জড়িয়ে
কিন্তু, আমি খরস্রোতা নদী হতে পারিনি,
আমি আনন্দে মেতে উঠেছি বার বার
আমি শুনতে পাইনি কারও বিকার,
যে জন, আমারে খুঁজেছিল আমাতে,
তার লাগি আমি, আমার মতো হতে পারিনি।
আমি ধূলিকণা ভেবে তারে, উড়ায়েছি ফুৎকারে
কিন্তু, আমি মরুভূমির খোঁজ রাখিনি।
আমি ভেঙেছি হৃদয়, গড়ে মিথ্যার অট্টালিকা
কিন্তু, ভালবাসায় গড়া ছোট্ট কুটির হতে পারিনি।
আমি বিবেকেরে করেছি ধ্বংস কত,
আত্মমর্যাদারে দিয়ে বলিদান, করেছি মস্তক নত,
কিন্তু, সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড় হতে পারিনি।
আমি আকন্ঠ বিষ পান করেছি, জীবন পারাবারে
কিন্তু জীবন দরিয়া খেয়া ঘাটের তরণী হতে পারিনি।
আমি পারিনি।
শুভ নববর্ষ
রীতা মোদক
তুষার শৃঙ্গে সূর্য্যেরশ্মির প্রথম স্পর্শ
ধূসর জীবনে রঙিন স্বপ্ন দেখায় ...
একটা আমন্ত্রিত বইমেলার বিকেল
নবীন প্রবীনের মিলনে
কবিতার অক্ষরগুলি ছন্দ খুঁজে পায় ।
অন্ধ বাগানে প্রজাপতির পাখা ভাঙা ব্যর্থ জীবন
হাড়ি বাঁধে খেঁজুর রসের আশায় ...
এক সময় হিমেল সকাল আসে
প্রাচীণ স্মৃতি ডুবে যায় খেঁজুর রসের হাঁড়িতে
পুরনো ব্যাথা ভুলিয়ে দিয়ে
নতুন করে বাঁচাতে শেখায় জীবন
হিমেল বাতাসে এসে কানে কানে বলে ----
"শুভ নববর্ষ ,
ইংরেজী বাংলায় মিলে মিশে
ভালো থেকো সবাই । "
নতুন বর্ষের নব আশায়
সৌমেন দেবনাথ
নতুন বছর নতুন আশায়
ভাসবো স্বপ্ন ভেলায়,
ভুলে যাবো হানাহানি
মাতবো রঙের মেলায়।
নতুন বছর বাঁচার মানে
খুঁজবো নতুন করে,
নতুন সাজে নতুন ভাবে
বাঁচবো চরাচরে।
হৃদয় থেকে হিংসা উড়ুক
জাগুক প্রাণে জোয়ার,
ভরুক হৃদয় ভালোবাসায়
খুলুক বদ্ধ দুয়ার।
নবরূপে সাজুক জগৎ
থাকবে না কেউ মন্দে,
বেদনার রং মুছে যাবে
বাঁচবো নব ছন্দে।
স্বপ্নিল সৃষ্টি ঘটুক ভবে
কাটুক নিকষ কালো,
নতুন সূর্য নতুন ভোরে
ঢালুক নতুন আলো।
নাম না জানা পাখি সারণ ভাদুড়ী
দেখে আসা সেই পাখি,
নাম জানিনি আজও,
রং টা কালো ,চোখটা লাল
আসা-যাওয়ার নেই কোন কাল।
বসে এসে গাছের ডালে
গান করে সে আপন তালে,
ধরতে গেলেই দেয় সে উড়ান ,
মনটা হয়ে যায় বিষাদ।
এখন শুধু মনের খাতায় তার ই ছবি আঁকি,
অনেক খুঁজেও আর পাইনি নাম না জানা পাখি।।
ইতি
দেবর্ষি সরকার
পুরানো সব স্মৃতি করে ফেলো ইতি।
পুরানো সব কষ্ট করে ফেলো নষ্ট,
পুরানো সব বেদনা আর মনে রেখো না।
পুরানোর হয়েছে মরন,
নতুন করে করো বরণ।
সবকিছু মুছে ফেলো মন থেকে,
তাকাও ওই নবসূর্যের দিকে।
সূর্যটা হাসে,
তোমায় ভালোবাসে।
তাই তোমাকে আমি জানাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
ছবি
অদ্রিজা বোস
তানভি দাম
মুজনাই অনলাইন পৌষ সংখ্যা ১৪২৮
No comments:
Post a Comment