" বেলা অবেলার গদ্য পদ্যের কাব্য " ০৩-১২-২০১৬।
প্রবীর কুমার চৌধুরী ।
(গদ্য-১ )
চল না একবার চেষ্টা করি ,
একবার চেষ্টা করে দেখি এলাকার যত আবর্জনা -
যত নোংরা, ব্যর্থ রাতে পাক খেতে খেতে-
কুণ্ডলী পাকাচ্ছে প্রতিটি মনের অন্দরে।
সদ্যজাত সমস্ত শিশুর বেড়ে ওঠার পথকে করছে অবরুদ্ধ।
আমি তুমি আমরা কজন , বিবেকটাকে খুঁচিয়ে -
জীবনের গান গাইতে গাইতে ,
মনুষত্বের ঝাঁটা হাতে বেরিয়ে পড়ি-
অবক্ষয়ের পোকাগুলোকে বিদেয় করতে ।
( পদ্য-১ )
লোভের পারদ চড়ছে , ক্রোধের সীমা বাড়ছে -
অসহায়ের কান্নায় আকাশ বাতাস ভরছে।
ছয় বিধাতা আড়াল থেকে মিটিমিটি হাসছে,
পেটের ক্ষিধে পেটে চেপে লক্ষ্য শিশু কাঁদছে ।
সুখিরামের সেই মেয়েটা চোখের সামনে বাড়লো,
সিঁদুর মুছে আজ দেখি সে আমার কাছে কাঁদল ।
স্বামী নামের পশুগুলো টাকায় ভীষন লোভ -
পন না পেয়ে লোকঢ়োকানোর , দেয় বেশ্যা হওয়ার টোপ।
( গদ্য -২)
চল না প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে একবার বলি-
একতায় বাঁচো , বিভেদের বেড়াজাল টপকে-
প্রলোভনের ফাঁদে পা না দিয়ে , আত্মবিশ্বাসের ভাতকে-
দুইজনের টা তিনজনে ভাগ করে খাই ,
আনন্দটাকে সবার মাঝে ভাগ করে নাও ।
জীবনের আবশিষ্ট সুখ ,শান্তি-
ঘরের আয়রন চেষ্ট থেকে বের করে ছড়িয়ে দাও-
এঁদো গলির অন্ধকারে ।অসংখ্য কান্নাকে -
শান্তির জলে ধুয়ে, তৃপ্তিগুলো ছড়িয়ে দিয়ে ,
মুখে মুখে হাসি ফেরাও
একবার অন্তত মানবতার মুখ দেখুক এ দুঃখি পৃথিবী ।
(পদ্-২য )
জাত, ধর্মের অন্ধকারে সৃষ্টি হয় অস্পৃশ্য-
অশিক্ষার এতো দাপট সয়না এ দৃশ্য,
পথে ,ঘাটে মার খাচ্ছে দলিত অসহায় -
ফেসবুকেতে দেখছি ছবি দেশ ভরেছে অবক্ষয়।
কত আইন শিশুর জন্য তবু চলে শিশুশ্রম ,
চায়ের দোকান ,পথের হোটেল অবাধ পরাক্রম ।
পনপ্রথা বন্ধ কর দেশ জুড়ে স্লোগান -
সোনার মেয়ে খুন হচ্ছে তুমি আছো ভগবান ?
( গদ্য -৩)
পড়ন্ত বেলায় যারা ধুঁকছে না পাওয়ার ব্যর্থতায় -
চল নিঃশব্দে দ্বিতীয় বসন্তকে -
ঘারে ধরে পৌঁছে দিয়ে আসি তাদের অশান্ত জীবনে ।
যে সুখের স্বপ্নগুলো অকালে ঝড়ে যায় প্রতিটি প্রভাতে,
অনাহূতের মত বারে বারে ফিরে যায় যত নীলকণ্ঠ পাখি ,
সব পাওয়ার আনন্দগুলো মালা গেঁথে তাদের ফিরিয়ে দিয়ে আসি ।
দরজার কড়া নারি অনাথাশ্রমের ,
ঘুম থেকে তুলে কোলে নিয়ে-
চুম্বনে মুছে দিই দুচোখের বেদনার জল ,
নিষ্পাপ হাসি খেলে যাক প্রতিটি অনাথ শিশুর মুখে ,
যারা প্রতিটি বোবা রাতে কান্না লুকিয়ে স্বজন খোঁজে নীরবে...।
চল না একবার উঁকি মারি বৃদ্ধাশ্রমে -
দেখি শেষবেলার মানুষগুলো কিসের প্রতিক্ষায় -
অধীর আগ্রহে দিন গুনছে । হয়তো নাড়ির টান-
দশ্ মাসের গর্ভজাতকে শেষ দেখার ব্যকুলতা,
স্মৃতির পাতাকে জাগিয়ে তুলছে , ভারাক্রান্ত সন্ধ্যায় ।
চল না সান্তনায় কোলে মাথা দিয়ে একবার বলি -
মাগো এসেছি ফিরে , চোখ মেলে দেখ ,
মুখ ভরা হাসি, বুক ভরা আসা,চোখে গঙ্গা- পদ্মার প্লাবন,
উচ্চারিত হবে ব্যকরন " এতদিন বাদে পড়ল মাকে মনে ?
তোকে না দেখে কেঁদে কেঁদে আজ হয়েছি অন্ধ ...।
( পদ্য-৩ )
চোখের জলে স্নান করাবো মুখে দেবো মিষ্টি ,
মনের সুখে মা বলবো আমরা তোমার সৃষ্টি ।
একখানি থান পড়িয়ে দিয়ে দেখবো তোমার অরুপ -
জন্মকালে মা হাড়িয়েছি , বুঝিনি তোমার সরূপ ।
তোমার কাপড় জড়িয়ে মুখে শুঁকবো মায়ের গন্ধ ,
চোখের জলে রাত কেটেছে মা ডাক ছিল বন্ধ ।
পথে ঘাটের সকল নারী সবাই দেখি মা-ই-
বোকারা সব বিভেদ দেখে । মায়ের কোন জাত নাই ।
( গদ্য -৪)
সন্ত্রাস বাদের হাওয়া এসে ছিড়ে দেয় সুখের নিশান ,
বন্ধুর নামে শোষন করে প্রতিবেশি।
হাল ভাঙা , পাল ছেঁড়া নৌকায় উল্টো স্রোতের জীবন -
কোনমতে বেঁচে থাকার অন্বেষণ ।
তবু ,মৃত্যুকে দুহাতে চেপে
দুঃসহ বিপদের পাহাড় টপকাই, -
প্রতিটি সকালে উল্লসিত কলরব,
দুহাতে প্রদীপ জ্বালাই । প্রতিবাদের মিছিল চলে এখনও
প্রতিদিন নিরুদ্বেগ শান্ত মনে জন্মায় শিশু, ফোটে ফুল ,ফল ,
প্রান আছে , প্রান আছে , ব্যর্থ বুলেট , সন্ত্রাস ...।
No comments:
Post a Comment