Saturday, April 29, 2017

মৃত্যু পরবর্তী এক বাই-সাইকেল
 রাহুল গঙ্গোপাধ্যায়

মরচে পড়া পেন্ডুলামের সূত্র অনুযায়ী
নাড়ি কাটার যৌনগত দায় কেবল পুরুষঘটিত।
কেচ্ছা ও পেন্সিল স্কেচে যৌবনা মহাপুরুষ
টায়ার ফাটল।আশঙ্কা বাড়ে।সিস্মোগ্রাফিক্স।
চায়ের গ্লাসে চাঁদ-ডুবুরীর গ্রাহকযন্ত্রী পালাগান।
চ্যারিটেবল বিদ্রোহ ছোঁড়া শিশুটের লিঙ্গে
পরবর্তী মোম-পুরুষের চ্যাটিচ্যাট বালি।
অ্যান্টিক্লক ওয়াইজে ফিরছে ঘুনপোকারা।

অরাজনৈতিক এজলাসে ১-ক্রিস্টাল ফুলদানী 
চিনামাটির ঘোড়সওয়ারের সাথেই তুলনীয়।
কারন - আমরা X ফর্ম বলতে ওটুকুই বুঝি।
যে সমস্ত জুয়ালামুখী কুটকুট - পিঠ চুলকায়
ডিজনি ল্যান্ডের প্যাঁকপ্যাঁক থেকে নির্বাচন অবাধ। 
জ্বালানী মশকরায় আলোছায়া শেড্ অ্যান্ড শেড্।
আম পাবলিকের গা উপচে : পচাগলা ডাইনোসর।
অতিরিক্ত বেগ আবার যাদের বেশী : মৃত্যুকূপ ফাঁদ
ছিঁড়ে উপবৃত্তীয় এনার্জি সংরক্ষনে তারাই রাখেল্।
আদপে একগাদা জোনাকিপোকার প্রতিআক্রমন।
গুনেগুনে ১২টা পলাশ।গুমখুনে ছিটকানো লাভা।

হাহুতাশ মরুভূমিতে কুড়ুল-কোপ পড়লে
ফুলেলু কাঁটাদের লং-জার্নি & পিঁপড়েদের সারি।
এসব নিয়ে বিধানসভায় কথা নেই।অথচ বন্ধ চোখে
ঝিঁঝিঁপোকার দায় - মাফিয়া চোরা-ইঙ্গিত।
রিয়েলি বলছি মাইরি : সেতুবন্ধনে কাঠই ১-মাত্র___
ফিল ইন দি ব্ল্যাংকস্ ও নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন.......
ব্যাখাজনীয় গাছ ছেঁড়ার রাজকীয় মানসিকতা???
গাছ - গাছ।ফুল - ফুল।বীজ - বীজ।
ভাঙা বোতামের আকর স্পর্শে : মা চাইলে
আমরা এইবেলা নিরাপদ হাজার ওয়াট রহস্য।
লিখে ফেলি কিশোরী গাছ ধর্ষিতা হবার পর 
খুনজনিত অ্যাবস্ট্রাক্ট তদন্ত।
খবর পড়ছি FM (ধ্যুর এলোপাথাড়ি উল্লাস)

গতানুগতিক শবযাত্রায় ভাঙাচোরা শ্মশান-বোতাম
২-আঙুলের ফাঁক দিয়ে চাঁদচূড় মাতাল বুলেট
     ছিটকে যাওয়া রেডিয়াস্ ব্যবচ্ছেদে
লরেল অ্যান্ড হার্ডি অথবা চার্লি চ্যাপলিন
সেই____টুপি।ছড়ি।ছাতা।লুকিয়ে ফেলা রেইনকোট
উপকূলবর্তী আবহাওয়ায় শুকনো ঘাম
পোষাক খুলে নৃত্যরত অর্ধনগ্ন আধপোড়া ফানুস
      ভিকটিম শুধুমাত্র ভিকট্রি ল্যাপ
সম্ভ্রান্ত বেশ্যার সম্ভ্রম 
       এখনো রাজনৈতিক ভুল
ইতিহাস পেরিয়ে গিয়ে তামার পয়সায় বেচা
বরাহমিহিরের মঙ্গল-অভিযান
জারজ সমুদ্র ভাসে - পিদিমের আলাদিন তেল

এ পর্যন্ত চিঠি বা ঠিকানায় অপর্যাপ্ত অসুখ
অসুখী ধারাপাত মূলরোম ধরে চলে - ভিজতনু 
সিলেবাস ছেড়ে ঋতুগ্রস্ত ধান
রাত ১১-টার পরে ফোন করলে / হয় সরাসরি প্রেম
মরফিন মৈথুন বালিকায় বিবাহ নেকলেস্।
প্রমাণ করতে পারি না।অসৎ অববাহিকায় রাহুল
ঘূর্ণাবর্ত জুড়ে ভগ্নাংশ প্রেম কেবল কথার সুদ
নাচনী আলেয়া ঘোরে - মরুভূম আষাঢ়ী কাব্য
মরশুমি ঘোড়ার ক্ষুরের হ্রদ।
আঙুল উষ্ণ হলে - চৌম্বকীয় যাবতীয় প্রতিরোধ
অভিশপ্ত বুদবুদ কল্পনায়

যদি কেউ বলে?কিভাবে অবসর সময় কাটাই
অকপট উত্তর - কবিতা বা নীল ছবির অকপটে
আসলে নীলের আলপথ বেয়ে স্তব্ধ মৌনতার জ্বালা
অবুঝে দেখি - কমলা পাপড়িতে গোটা রাত সঙ্গমে
কিভাবে চোরা ব্ল্যাকহোলস্ - গোলাপী বুদবুদ
তোমার ঠোঁটের কামড় কেন যে অস্পৃশ্য?
হতে দেয় না - অগোছালো রাতের পশমি তাঁবু?
সৎ ভাবে খুজি।বাতিল শকুনের ভাগাড়

কারা কারা পাথর কেটে    ছড়িয়ে দেবে মোম
মেঘ।মদ।জল।আকাশ।ব্যাস।
কাদের নদীতে স্নান     ফুলেন বাঁশিতে পরাজয়
কাচ।বালি।মধূ।শব্দ।উপহার
কারা কারা       গাছ কেটে খুঁজে নেবে যোনীপ্রেত
আমি।আাামিি।রোদ।রাত।ছায়া।

কেউ কেউ ডুবে যাবে      ভারী কোলাহলে
মুখ।মুখ।মুখোশ।মুখোশ।সেতু-ভয়।

যে সমস্ত চুমুগুলোতে সর্পিল গন্ধ
তোমার গোপনে।গোপন তাঁবুর সাবুদ।
সেখানেও স্বাদু ল্যাভেন্ডার।
ফুলফুল মৃত হলে
হেলাফেলায় এঁকে ফেলো পরবর্তী উল্কি।
অক্লেশ মাদক ঘোরে  লাগিয়ে দি কবিতায় আগুন।
তারপর।না জানি কতো লাভা।ভিজছো তুমিও
প্যারালাইজড হাত জানে না 
কিভাবে চুরি করলে ক্লিটোরিস 
তুমিও পেতে পারো অসুখ ছোঁয়া।

মন্দিরে ছুঁড়ে মারি সীতাসতী রুদ্রাক্ষ।
ব্যর্থ ওয়েসিস।ব্যর্থ প্যারানয়েড
নক্ষত্র গপ্পো শোনায় শুকনো কামরসে।

ভাবছি এবার সমুদ্র হাতে করে
গিলে ফেলবো সাপঠোঁটের - চুমুক আনুবিশ।



Friday, April 21, 2017

বিরহিণী  ও তার রাজপ্রাসাদ 

মন্দিরা ঘোষ

আর্নো নদী তীরে তোর আঙ্গুল  ছুঁয়েছিলাম 
কোনো  এক বিকালের আলোয়।
তাস্কানির রাজপ্রাসাদের এককোণে 
আমিই ছিলাম দেবী  ভেনাসের করুণাধন্যা হয়ে।
তোর বিভোরতায় ডেভিডের সারল্য ছিল বলে 
আজও  পাথর  হয়ে চেয়ে আছি 
তাস্কানির বুক চিড়ে জন্ম নেওয়া  রেনেসাঁর দেশে।
একবার তো ছুঁয়ে দ্যাখ  পাথরের বুক!
নবজন্ম পাক বিরহিণী আর তার রাজপ্রাসাদ!

Thursday, April 13, 2017

ঘুমের মধ্যে

মন্দিরা  ঘোষ

ঘুমের মধ্যে কখন যে এলে
জড়িয়ে নিলে আমার আঙ্গুল
তোমার ভেজা আঙ্গুলে
চোখ মেলে দেখতে চাইলাম 
তোমার ঘামে ভেজা মুখ
এমন মমতা মাখালে মায়ায়
চোখের পাতায় কপালে চিবুকে
কতদিন ভেজা আঁচলের গন্ধ
নিয়ে মাথা রাখিনি তোমার বুকে
আলস্য মেখে জড়িয়ে আছে
মাকড়সার জাল সর্বাঙ্গে আমার
ছিঁড়তে গিয়ে ঘুম সরে যায়
শুধু আঙ্গুলে লেগে থাকে
তোমার আঙ্গুলের ভিজে দাগ
 অবাস্তব ইচ্ছে 
আলামিন ইসলাম


প্লাস্টিকে মুড়িয়ে গেছে আমাদের মগজ,
রৌদ্রে উত্তপ্ত হয় মুঠোর তলোয়ার ৷
হিংসের ফেরিওয়ালা সবার ব্রেন ওয়াশ করছে,
তবু সভ্য সমাজ পাহাড়ের ভূমিকায় ৷
চোখে দূরবীন দিয়ে দ্যাখো  ঘাসফড়িং এর দেশটাকে ৷
সীমান্তের প্রান্তভাগে শত্রুর কনভয় !
আর দেশের তরীতেই হাজারো মিরজাফর মাঝি ৷
প্রাচীনতার মধ্যে সেঁধিয়ে যাচ্ছি আমরা .....
ভুলে যাচ্ছি নিজেদের আসল পরিচয় ৷
পশুর চেয়েও হীনমানসিকতা ,আজ আমাদের ৷
নিত্য নতুন ফতোয়ার কফিনবন্দী স্বাধীন চেতনার পাখি ,
অন্ধ ধর্মান্ধতার বুলেট বিদ্ধ চোখ!
মৌলবাদীদের ঘর থেকে খেলার মাঠ জুড়ে উৎপাত ৷
ছোট্ট শিশুর থেকেও ওরা বড্ড অবুঝ!
ধর্মনিরপেক্ষতার শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ,
আর সবার হৃদয়ে প্রতিহিংসার উলগুলান ৷
মুহুর্তেই উল্কাপিণ্ডের আবির্ভাবের দুশ্চিন্তায় পুড়ে যাচ্ছে কবির বিবেক ....
এই সময়ের পালে  মানুষের তাজা রক্ত শুষে খাচ্ছে ভোগীদের দল ,
অধার্মিক তাদের পরিচয় ৷
মরণ ডানা গজানো পিঁপড়েদের বিশৃঙ্খল নাচ দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে।
এবার একটা বিদ্রোহের প্রয়োজন! 
এই সমস্ত নগ্নতা আর ভন্ডামির প্রাচীর ভেঙ্গে নতুন এক ভারতবর্ষের স্বপ্ন জাগ্রত হোক্ ৷
সবার হৃদয়ে এই অবাস্তব  ইচ্ছেটাই বারেবারে নাড়া দিক্ ৷
বিবেকানন্দ আর রবি ঠাকুরের দেশে !
প্রতিটি সৎ নাগরিকদের হৃদয়ের গহীনে .....

Monday, April 10, 2017


।।বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষের লোকসংস্কৃতির অপর একটি নমুনা।।
লোক-চিত্র
ছবি সংগ্রহ ও অঙ্কন- শ্রীমতি সুচন্দ্রা ভট্টাচার্য
পর্যায়- বসুধারা
সময়- বৈশাখ মাস
কামনা- পৃথিবীকে সরস ও উর্বর রাখা
স্থান- বাংলাদেশ
মাধ্যম- চালগুঁড়ো
অনামিকা
=======
- ফিরোজ আখতার
==================                     
।। এক ।।

কাকলি রায় । বয়স ৪৭ । সহ শিক্ষিকা । চৌবানি গার্লস হাই স্কুল । বিবাহিতা কিন্তু নিঃসন্তান । অনেক চেস্টা করেছিলেন একটি সন্তানের জন্য । কোন লাভ হয় নি । তাই তাঁর অপত্যস্নেহ তিনি প্রকাশ করেন তাঁর স্টুডেন্টদের মধ্যে দিয়ে । যদিও তা প্রকাশ পায় ভিন্নরূপে । ভীষণ কড়া শিক্ষিকা তিনি । ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গঠন করতে চান তিনি কঠোর নিয়মশৃঙ্খলার ও অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে । সেখানে পান থেকে চুন খসলে ভীষণ রেগে যান তিনি । প্রতিদিন স্কুলের প্রেয়ার লাইনে সবার আগে উপস্থিত হন তিনি । তারপর প্রতি সারির ছাত্রীদের হাতের নখ থেকে শুরু করে চুলের বিনুনি পর্যন্ত কঠোরভাবে পরীক্ষা করেন । কোন ছাত্রীর কপালে টিপ দেখলে, বা কানে একটু বড় বা ঝোলা দুল দেখলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি তা বাজেয়াপ্ত করেন । ছাত্রীরা তাঁকে ভীষণ ডরায় । 
শ্রেণী নবম । অনামিকা লাহা । ক্লাসে প্রথন হয় একেবারে প্রথম শ্রেণী থেকে । সুন্দরী চঞ্চলা সদ্য কিশোরী । দুচোখ ভরা স্বপ্ন । ইদানীং মাঝে মাঝেই বিনা কারণে গা শিরশির করে তার । স্কুলে ঢোকার আর বার হবার সময় পাশের বয়েজ স্কুলে ছেলেগুলো যখন হাঁ করে তার দিকে চেয়ে থাকে গা টা শিরশির করে ওঠে তার । একটা অব্যক্ত ভালোলাগা বয়ে যায় শরীরমন বেয়ে । মাঝে মাঝে সেও আড়চোখে দেখে আর মুচকি হাসে । সাহসটা বরাবরই বেশি তার । 
আজ ইচ্ছা করেই কপালে একটা মেরুন টিপ আর চোখে একটু আই-ব্রাশ করে এসেছে অনামিকা । দাঁড়িয়েছে একেবারে লাইনের প্রথমে । মুখে মিটিমিটি হাসি । পেছন থেকে সেকেন্ড গার্ল সরসী আঙুল দিয়ে পিঠে একটা গোঁজা দিল । 
“কি হল রে?”, শুধায় অনামিকা ।
“মুখ ধুয়ে আয় শিগগির…। এখুনি লেডি হিটলার আসবেন । দেখতে পেলে তোর আর রক্ষে নেই…”, ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল সরসী । কাকলি ম্যাডামকে আড়ালে লেডি হিটলার বলে ডাকে সব ছাত্রী । 
“ও…!”
“তুই আজ মার খাবি মনে হচ্ছে !”
“অত ভয় খাস না । আমাকে কিছু বলবেন না দেখিস…” বলতে বলতেই কাকলি ম্যাডামের প্রবেশ । দশম শ্রেনির লাইন থেকে পাঁচজনকে লাইনচ্যুত করলেন তিনি । নবম শ্রেনির লাইনের সামনে এসেই দাঁড়িয়ে গেলেন তিনি । 
“এটা কি ?”…গনগনে দৃষ্টি হানলেন অনামিকার দিকে চেয়ে ।
“কি ম্যাড্যাম ?”, মিনমিনে সুরে বলল অনামিকা ।
“চোখে কি মেখে এসেছিস ? যত্তসব ! যা, লাইনের বাইরে গিয়ে দাঁড়া ! ভালো করে মুখ ধুয়ে তারপর ক্লাসে ঢুকবি ।”
মাথা নিচু করে ঘাড় বেঁকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো অনামিকা । ভ্রু কুঁচকে মাটির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে ।
“কথা শোন…!”, রুক্ষস্বরে বললেন কাকলিদেবী ।
“তো কি হয়েছে… আমি যাব না ।”, চোখে চোখ রেখে বলল এবার অনামিকা ।
থাপ্পড়ের আওয়াজটা বোধহয় রাস্তা থেকেও শুনতে পেল পথচলতি মানুষজন । ছুটে আসলেন বড়দি । ফর্সা গালে পাঁচ আঙুলের দাগটা দেখে মনে হচ্ছে এই বুঝি গাল ফেটে রক্ত গড়িয়ে পড়বে । পেছনে সরসীকে ইশারা করলেন বড়দি । সরসী অনামিকাকে ধরে ধীরে ধীরে টয়লেটের দিকে নিয়ে চলে গেলো…

                                  ।। দুই ।।
ক্লাস শুরুর ঘন্টা পড়ে গেছে । চক-ডাস্টার আর নাম ডাকার খাতা নিয়ে নবম শ্রেনীতে ঢুকলেন কাকলি দিদিমনি । চেয়ারে বসতে গিয়ে লক্ষ্য করলেন বোর্ডে কিছু লেখা আছে । চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বোর্ডের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন তিনি । বোর্ডের উপরে বামকোণে স্পষ্ট অক্ষরে লেখা রয়েছে দুটি লাইন – 
“ লেডি হিটলারের কোন ছেলে-মেয়ে নাই,
  তাই তার মনে কোন দয়া-মায়াও নাই ।”

হাতের লেখা অত্যন্ত পরিচিত । ক্লাসের দিকে ঘুরলেন তিনি । সারা ক্লাস মাথা নিচু করে বসে আছে । চোখ দিয়ে টপটপ করে দু-ফোঁটা জল পড়ল তাঁর । ধীরে ধীরে নাম ডাকা খাতা খুললেন । নাম ডাকতে গিয়ে দুবার গলা বুজে এলো । গলা খাঁকারি দিয়ে পরিষ্কার করলেন গলাটা । নাম ডাকা হয়ে গেলে ধীরে ধীরে বেরিয়ে গেলেন ক্লাসরুম থেকে ।
একটু পরে গ্রুপ ডি স্টাফ্ কমলা এসে অনামিকাকে বললেন…
“বড়দি তোমায় ডাকছেন…” ।
মুখ শুকিয়ে গেলো অনামিকার । ছলছল চোখে উঠে দাঁড়াল সে । তারপর ধীরেপায়ে বড়দির ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়াল সে । ভেতরে বড়দি আর কাকলি ম্যাডাম বসে আছেন । 
“আসব ম্যাডাম ?”, কাঁপা কাঁপা গলায় প্রশ্ন করলো সে ।
“এসো”, গলদ্গম্ভীর স্বরে ডাকলেন বড়দি তাকে ।
ভেতরে ঢুকতেই কাকলি ম্যাডাম উঠে দাঁড়ালেন । এক পা পিছিয়ে গেল সে । হঠাৎ প্রবল বেগে জড়িয়ে ধরলেন তিনি অনামিকাকে । হাউহাউ করে কাঁদতে লাগলেন ।
“বিশ্বাস কর, আজ থেকে আর তোদের কাউকে কিছু বলবো না রে…। আর কাউকে কোনদিন বকব না । আমার ছেলেমেয়ে নেই তো কি হয়েছে ? আজ থেকে তুই আমার মেয়ে…!”, কথা জড়িয়ে গেলো শেষের দিকে । এদিকে অনামিকাও কাঁদতে লেগেছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে ।

Sunday, April 9, 2017

                                           লোকসংস্কৃতি নিয়ে আমরা কমবেশী সবাই জানি। সাহিত্য, শিল্পকলার শুরুটাই লোকসংস্কৃতি থেকে। এই নিয়ে  দ্বিমত নেই কারো। কিন্তু দুঃখ এটাই আমরা ভুলতে বসেছি নিজেদের শেকড়টাকেই।  
                                      বিশিষ্ট লোকসংস্কৃতি কর্মী কোচবিহারের শ্রীমতি সুচন্দ্রা ভট্টাচার্যের কথা অনেকেই জানেন। লোকসংস্কৃতির ওপর পাঁচটি বইয়ের লেখিকা শ্রীমতির সুচন্দ্রা ভট্টাচার্যের লেখা প্রকাশিত হয়েছে ও হচ্ছে বাংলার বিভিন্ন ম্যাগাজিনেও।                                                                        "মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা" গর্বিত তাঁর কাছ থেকে কিছু লোক-চিত্র উপহার পেয়ে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত লোক-চিত্রকে তিনি নিজের মতো ক'রে এঁকেছেন তিনি।  
                           
ধারাবাহিকভাবে "মুজনাই" সেগুলি প্রকাশ করছে নিজের টাইমলাইন, ব্লগ ও গ্রুপে। আজ এমনই একটি ছবি।

Thursday, April 6, 2017

সতীত্বের পর্দা
ফিরোজ আখতার

নারী তোমায় বলছি ...
তোমার সতীত্বের পর্দাখানি আছে তো অক্ষুণ্ণ?
হয়নি তো প্রাক্-বিবাহ মিলনে তা ছিন্ন? 
কিংবা জোরপূর্বক বলাৎকারে তা বিচ্ছিন্ন ? 
সতীত্ব যে তোমার মাপকাঠি... 
সেটা দিয়েই আমরা পুরুষজাতি 
যুগ-যুগান্তর ধরে যে তোমায় মাপি .... 

বিবাহোত্তর সতীত্ব যদি হয় লাল রক্তে রাঙা, 
সে যে পরম সৌভাগ্য তোমার ... 
নতুবা সবার কাছে তুমি বারেবারে পাবে শুধু ধিক্কার ৷ 
কুলটা রমনী তুমি, হবে সবে সোচ্চার, 
অগ্নিপরীক্ষা তোমায় দিতে হবে বারেবার | 

পুরুষ তোমার পুরুষত্বের পর্দাখানি আছে কি কোথায় লুকানো ? 
নারীর সতীত্ব ছিন্নকারী পুরুষ তুমি নিস্পাপ কেন ? 
অসতী রমনীর মতো পুরুষ তুমি
হবে না কেন অপুরুষ, ঘৃণাভারে ছিন্ন-ভিন্ন ?
ওরা আজও বাঁচে
মৌসুমী  চৌধুরী 


তারপর..... সেই এক ভোরে
ভোর এসে বিস্ফারিত চোখে
দেখলো দহনে স্তব্ধ এই শহরের বুকে
লুকোনো আর এক শহর! 
খাক হয়ে যাওয়া প্লাস্টিকের চাল,
পুড়ে যাওয়া রক্ত -মাংসের বোটকা গন্ধ। 
ভোর বড় বিভোর হয়ে দেখলো
 ছাই হওয়া ওদের দিনগত পাপক্ষয়।  
ভোরের বাতাস ভারী হলো 
ওদের নীরব কান্নায়, 
আর ফয়দার প্রতিবাদে,
ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিতে.....! 
তবুও ওরা রক্তবীজ হয়,
তবুও ওরা নিয়ম করে
ফি পাঁচ বছর তর্জনীতে কালি মাখে।
ওরা বড্ড  বেহায়া, পুড়তে পুড়তেও 
বেঁচে উঠে প্লাসটিকে চাল বাঁধে। 
আর ওদিকে প্রোমোটারীয় বুলডেজারে
 আমাদের মধ্যবিত্তীয় স্বপ্ন সাধ
" এতটুকু বাসা "!
"ইথারিয়ালাইজড্"
উদয় সাহা

"আজ হাওয়া যেমন পাতায় পাতায় ... "
যন্ত্রণাদীর্ণ আকাশ , তপ্ত বাতাস
এক ফালি চাঁদ
কালো মেঘের পথে ভ্রাম্যমাণ
হেঁটে চলেছি , আগলে রাখছি কায়া
আমার শৈশবের বইটা খোলা
পাশে মাটির প্রদীপ
আমার আমিকে ভুলে যাই
নিজের ছায়াকে আরও কাছে পাই--
আমি আর ছায়া
নির্ভয়া বসুধা
স্কুল ব্যাগ , পেন্সিলবাক্স
ফর্মাল সাজ , কর্পোরেট ছোঁয়া
ইথার মেখেছে আসমুদ্র মায়া।

বিষ-মেঘ
 শিবু

মেঘেরা আজ দল বেঁধে কোথায় চলেছে
কালো ঘন মেঘ, হাত ধরাধরি করে
ছুটেছে কোন সম্মেলনে । ইচ্ছেতো হয়
ঘর থেকে বেরিয়ে আমিও যোগ দিই ভীড়ে ।

অতীতে তো হামেশাই বেরিয়ে যেতাম
সূতোয় বাঁধা মেঘের পিছনে নিজেকে
গেঁথে দিতাম
স্ফটিকের ন্যায় বৃষ্টির ফোঁটায় মেখে নিয়ে
কাগজের নৌকো বানিয়ে উঠোন-জলে
           দিয়েছি ভাসিয়ে ।

আজ ঘেন্না ধরে গেছে মেঘের রুপ দেখে,
চলনের অসঙ্গতি ভীষণ দৃষ্টিকটু
স্বপনে উড়তাম যার গন্ধ ডানায় মেখে
সে যে আজ আর ভরসা দেয় না এতটুকু !

মেঘ তবে কি আপন দোষেতে দুষ্ট,
নাকি যুগ বদলের বিষেতে পুষ্ট !