Monday, October 5, 2020


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

গ্যাঁজাদার জ্ঞান

 প্রসূন সমাজদ্বার

--এইতো গ্যাঁজাদা।আরে জায়গা ছেড়ে দে-দাদা বসবে।
--হেপু মালাই মারকে‌ দুকে তিন দিস। দাদার ধূপকাঠি একটা।
--হুঁম। তোরা যা খাতির করিস এরকম আর একজনই করেছিল
--জানি--স্বয়ং কৈলাসপতি!তা এসেই ঝাঁপি খুললে?একটু রয়ে সয়ে নিলে হতো না?
--না হতো না।পড়িসনি 'ঢেঁকি সগ্গে গেলেও ধান ভানে' । আমি গ্যাঁজা!গ্যাঁজাবো না তো কি রোদে শুকোবো?

--একদমসত্যি।তা গ্যাঁজা দা আপনার নামকরণের পেছনে  কি কারণ ছিল?

--দ্যাখ চুকলি কাটিস না।এই যে বড়ো বড়ো সাহিত্যিক,নামি নামি চরিত্র খুঁজে দ্যাখ অনেকটাই গ্যাঁজা। নমস্য ডম্বরুধর থেকে ঘনাদা কি গ্যাঁজাই মেরেছেন সেখেনে আমি--
--মহাকাশের একটি ছোট্ট গ্রহাণু।
--এই, এই, আবার চুলকাচ্ছিস!
--চুলকালাম কোথায়? সুড়সুড়ি দিলাম।তা আজ বোমভোলা ঠেকে উঁকি দিবেন কখন?অনিলের গলা শুনছি, এতক্ষণে জমে গিয়েছে।
--ধুর, ধুর! ও নেশাড়ু।সত্যিকারের গ্যাঁজারু অন্যরকম‌।
--যেমন??
--দ্যাখ অন্যসব বাদ দিলেও তিন ধরণের গ্যাঁজারু হয়।এক 'ব্যোম গ্যাঁজারু'।এরা নেশা করেই গেঁজিয়ে থাকে। বেশি গেঁজিয়ে গেলে হুঁশ হারিয়ে ফেলে। অনর্থক বকবক করে।হ্যালুসিনেশনে ভোগে। দেখিসনি খেজুরের রসে ফেনা গেঁজিয়ে গেলে বাড়িতে ফেলে দেয়।এদেরকেও সমাজ ফেলে দেয়।

দুই হলো ‌'থম গ্যাঁজারু'।এরা থম মেরে থাকে। তুই যত জিজ্ঞেস কর দেখবি উত্তর নেই, চোখের দৃষ্টি তোকে ভেদ করে দূরে হারিয়ে গেছে। ঝিম কাটলে সব ভুলে যায় অথবা কিছু কাল্পনিক স্মৃতির পাঁশে আটকে পরে।
--আর তিন নম্বর?
--এরাই সেরা।এরা উচ্চ কোটির।এরা ঐ সময়েই পৃথিবীর যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে ফেলে।স্বর্গ,মর্ত্য ,পাতাল কিংবা টাইম ডাইমেনশনে যথেষ্ট সাচ্ছন্দে যাতায়ত।বুঝলি বাহ্যিক অনুপ্রেরণা বা উদ্দীপক দরকারি হয়না , এমনিতেই এতো সুইফ্ট গ্যাঁজা। বলতে পারিস গেঁজিয়ে ক্ষীর।এরা গ্যাঁজা সম্রাট। দার্শনিক।প্রণম্য।
--ঐ অতুল ঠেকে বৈরাগী যে সেদিন বলছিল মুই কৈলাশত গেনু---শিব বাবা মিটিমিটি চাহছে--ও কোন ধরণের?
--অতি নিম্ন শ্রেণীর। এভাবেই উল্টো পাল্টা বলে যারা লোক ঠকায় তাদের মান বুঝতেই পারছিস।গ্যাঁজায় দম থাকতে হবে। মনে প্রাণে তুই বিশ্বাস করবিইই। তোদের ফেসবুকে কিন্তু অনেকে উঁচু ধরণের ছাড়ে দেখিসনি, তারপর পুলিশ,কেসকাবারি কত কি।
--তা গ্যাঁজা দা, তুমি তো তিন নম্বরের কাছাকাছি।তা বলো না মরে গেলে হরিনাম করে কেন?
--হে হে পরীক্ষা নিচ্ছিস? শোন ,পাপ টাপ‌ কর, চাই না  কর ,মরে গেলেই যমের বাড়ি পাক্কা। ঝেঁটিয়ে যমদূত নিয়ে যাবেই । তারপর চিত্তস্যারের হিসেবে কে নরক আর কে সগ্গে ঠিক হবে।এখন ধর হরিনাম চলছে -কি হবে জানিস?
--জানলে কি তোমাকে বলতাম।
--এক্সট্রা লিফ্ট। অনেকটা তোদের ঐ জেড ক্যাটাগরির সিকিউরিটি --বৈকুন্ঠ থেকে স্পেশাল ফোর্স চলে এসে আত্মাকে গার্ড দিয়ে পুরো যমালয় বাইপাস-সোজা বৈকুন্ঠধাম।ব্যাস ঐ নরকের ছ্যাঁকাট্যাকার কষ্ট লাঘব।এটা একটা সোস্যাল সার্ভিস। আত্মার উপকারে লাগে।
--যাঃ।হেব্বি বদমাশ ,সবার ক্ষতি করেছে এমন লোকেরও বাইপাস হবে।
--আরে না না।জেড প্লাস কি সব নেতা পায়।ওখানেও ক্যালকুলেশান। তবে চান্স নিতে অসুবিধা কি?শিকে ছিঁড়ে গেলেই চিত্তির।
--অতো ভয় কিসের গ্যাঁজাদা। আত্মার যদি শরীর নাই থাকে তবে ঐ পোড়া,কাঁটার ভয় কি?
--একদিকে ঠিক বলেছিস। শাস্ত্র তাই বলে। আমিও শ্রী শ্রী কৈলাসপতিকে এটাই জিজ্ঞেস করেছিলাম।উনি কি বললেন জানিস?
--আবার কৈলাস!
পাত্তা না দিয়ে--এই যেমন ঘন্টুর ব্যাপক সুড়সুড়ি সবাই জানে। এবার এই দ্যাখ ওর কাছে না গিয়েই কি হয়--
--ওরে বাবা!মরে যাব।প্লীজ এরকম করো না।
--দেখলি? আমি ওকে সুড়সুড়ি না দিতেই উল্টে পরে গেল।এটা হলো আ্যাবস্টাক্ট্র সুড়সুড়ি।ঐ রকমই ওখানে। দেখানো হচ্ছে পোড়ানো হবে--ঐ আ্যাবস্টাক্ট্র পোড়া,কাঁটার  টেকনোলজিতে যমের এতো পারফেকশন যে আত্মা কেঁদে, কঁকিয়ে দিস পায় না।
--তার মানে কিন্তু গ্যাঁজাদা তুমি যখন জেনেই গেছো‌ তাহলে যা খুশি করতে অসুবিধা নেই। তোমাকে যম কিস্সু করতে পারবেন না।
--তা কি হয় পাগলা। এখানে আইন আছে না।মরি নি এখনো ভাই।আর তুইও তো সব অঙ্ক জানতি,একশয় একশ পেয়েছিলি? জানা আর‌ মেসির মতো দক্ষ হওয়া আলাদা। তবে পুরোপুরি তিন নম্বর হতে পারলে শুনেছি এসব ধারে কাছেই আসেনা।
--ও‌। তুমি তাহলে সেরা গ্যাঁজারু হবার সাধনা করছো।আ্যাডভান্স শুভকামনা রইল।

No comments:

Post a Comment