বিকলাঙ্গ মুক ও বধির
আশীষ কুমার বিশ্বাস
এঁরা পারে না হাঁটতে
পারে না ভালো ভাবে কথা বলতে
চলতে ফিরতে অচল জীবন ।
জানে তাঁরা, প্রতি পদে পদে বাঁধা আছে
অ-পারার হাত ছানি আছে
অনুকুল অবস্তা নেই তাঁদের কাছে !
শুধু এইটুকু জানে , এইটুকু মানে
"পারবোনা নেই তাঁদের মনে "
অসম্ভব যা কিছু , পার হতে জানে ।
হেলেন কেলার , স্টিফেন হকিং
তাঁরা এক এক জনে
সে কথাটি রাখা আছে মনে ।
এঁরা বড় হোক , এঁরা সার্থক হোক
অ -পরাজিত জীবন
অক্ষয় হোক এদের সুধা সঞ্জীবন
পাঠ প্রতিক্রিয়া
মেঘ মেঘ বাদল বাদল: শৌভিক রায়
(ছোট গল্প সংকলন)
আলোচনা- অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী
আমাদের উত্তরের স্বনামধন্য সুপরিচিত লেখক শ্রীযুক্ত শৌভিক রায় সদ্য ত্রিবৃত্ত পুরস্কারে সম্মানিত হলেন তার ছোট গল্প সংগ্রহ 'মেঘ মেঘ বাদল বাদল' - এর জন্য। আমার মতো সাধারণ পাঠকের ক্ষুদ্র বুদ্ধি দিয়ে যেটুকু উপলব্ধি করি যে, পুরস্কারই কোন কিছুর ভালো মন্দ বিচারের সঠিক বা চূড়ান্ত মানদন্ড নয় যদিও, কিন্তু সাফল্যের এই উদযাপন কৃতিকে অনেকটা আনন্দ দিয়ে যায়, তাঁর মেধা, শ্রম ও ভালোবাসার ফসল তাঁর বইটিকে ছুঁয়ে এই সার্থকতা তাঁর আগামীকে আরো উজ্জ্বল করে।
আদপে 'মেঘ মেঘ বাদল বাদল' বইটি নিজেই একটি অনেক বড় পুরস্কার লেখকের তরফ থেকে পাঠকদের জন্য। মোট উনিশটি নানান রঙের গল্পে সাজানো এই বইটি সমস্ত পাঠকদের মনোরঞ্জন করবার মতো সুখপাঠ্য ও উপভোগ্য একটি গল্প সংকলন।'অমৃত বাবু আর লোকটা'- প্রথম যে গল্পটি দিয়ে লেখক এই বইয়ের যাত্রা শুরু করেন,সেটির সঙ্গে পাঠক একাত্ম হতে বাধ্য। নিজের পরিবার, পরিজন, প্রিয়জন ও নিজেকে আবিষ্কারের গল্প হয়ে শুরুর এই গল্পটি পাঠকের হাত ধরে আগ্রহভরে পৃষ্ঠা উল্টে দেয় পরবর্তী গল্পের। সাবলীল বলে চলায় পাঠকের মনোসংযোগ ধরে রাখবার এক অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন লেখক জীবনের চেনা ছবির বুননে এবং তাঁর ভিন্ন ভাবনার গল্পগুলিতে। সিরুই খাসঙের রিনসিমের ব্যথাতুর জীবন থেকে অনির্বচনীয় অসীমতায় উত্তরণ থেকে শুরু করে গাজনের সাধু তার ভস্মমাখা মহাদেবকে নিয়ে বা মাদেরু তার বাঘজীবনের প্রাণময়তা থেকে যন্ত্রণায় কিংবা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলা সুপ্রিয় লেখকের কলমের আঁচড়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে,রক্ত মাংসের চরিত্রে ধরা দিয়েছে পাঠকের মনে। অনেকখানি মেধা,বাস্তব অভিজ্ঞতা, ভিন্ন দৃষ্টিকোণ ও যথেষ্ট হোমওয়ার্ক থাকলে তবেই গাজনের সাধু, বাঘজীবন,পরমা,প্রহ্লাদের হাসি,ফেরা,বেহুলা উপাখ্যান ও ত্রয়োদশীর চাঁদ - এর মতো গল্প লেখা সম্ভব। `বাস্তুসাপ`, `সি -অফ`, `পাগল`, `মেঘ মেঘ বাদল বাদল`,`একটি মৃত্যুর প্রস্তুতি`, `বয়স`, `পড়াশোনা` এই গল্পগুলিতে অনুভবের গভীরতা ছুঁয়ে গেছে লেখকের কলম। কিছুটা হালকা মেজাজে লেখা গল্প `বিষাদপ্রতিমা` মন ছুঁয়ে যায় ও হাস্যরসের গল্প `কেউ খাবে আর কেউ খাবে না` গুরুগম্ভীর পাঠকের ঠোঁটেও হাসির রেখা আঁকবেই নিশ্চিত।
বর্তমান সময়, সামাজিক পরিকাঠামো,নারীজীবন, ভাবাবেগ বা অনুরাগ,টান, জীবিকার জন্য সংগ্রাম, ফিরে দেখা,ভালোবাসা,কল্পনা, জাতিভেদ সবকিছুর মিশেল এই বইটির গল্পগুলির পাতা জুড়ে। হয়তো বা পাঠক ভাবেন 'কেউ খাবে আর কেউ খাবে না' আর 'বেহুলা উপাখ্যান' এই একই লেখকের লেখা তো? এখানেই একজন লেখকের জিৎ, তিনি ভার্সেটাইল হয়ে ওঠেন নিজের কলমের ছন্দময় জাদুতে জীবনের সমস্ত রকম বিষয়ের গল্পে প্রাঞ্জল ও স্বচ্ছন্দ বলে চলায়। লেখকের সুচারু কলমে অমৃতবাবুর মুখটা যখন ছোটর নিজের মুখ হয়ে যায়, রিনসিম যখন সিরুই খাসঙের প্রজাপতি হয়ে সর্বত্র উড়ে বেড়ায়, গাজনের সাধু যখন বিষক্রিয়ায় নীল হতে হতেও নীলবর্ণ নীলকন্ঠকে দেখে বা গুরুপদবাবু বহুদিন আগের সেই বাস্তুসাপকে, মিমোসার আত্মমর্যাদাবোধ, বয়স্ক রিক্সাওয়ালার অস্তিত্বের সংকট, বছরের নির্দিষ্ট একটি দিনে হাউরির বুকে অদ্ভুত একটি পাথরে বসে কাঁদতে কাঁদতে পরমার বিড়বিড় বলে চলা, সনাতনের ঠোঁটের কোণে প্রহ্লাদের হাসি , সুবলের বোন নিভাকে ফিরে পাওয়া, আলগোখরোর জীবনের, যাপনের, ভ্রাতৃত্বের অনুভূতির আদিম রিপুর আশ্চর্য সুন্দর এক কথন, লেখকের কলমের এই সবকিছুই একসঙ্গে বলে ওঠে 'মেঘ মেঘ বাদল বাদল ' লেখকের এক সার্থক সৃষ্টি আর পাঠকের অমূল্য সংগ্রহ।
২০১৯-২০ সালে গাঙচিল থেকে প্রকাশিত এই বইটি নিয়ে অনেক বিদ্বজনেরা হয়তো মতামত দিয়েছেন বিগত দিনগুলিতে। গল্পগুলির ওপর আলোকপাত করেছেন নানান আঙ্গিকে। লেখকের কাছে সে প্রাপ্তি আপ্লুত হবার মতো, অনেক খুশির, গর্বের ও আনন্দের। যৎসামান্য বোধ ও অনুভবের আলোয় খুব সাধারণ ভাবে বইটি নিয়ে দুচার কথা বলতে ইচ্ছে হলো শুধুমাত্র সংগৃহীত এই বইটিকে যথার্থ, যোগ্য মর্যাদায় উন্নীত হতে দেখে। পাঠক হিসেবে এ একপ্রকার আনন্দ উদযাপন। যদিও মনের অন্দরমহলে সমকালীন এই বইটির স্থান ছিল সেরার শীর্ষেই।
অগণিত পাঠকের পড়া ও মনের কাছাকাছি এই বইটি নিয়ে আলোচনার ধৃষ্টতাটুকু ও লেখার ভুলভ্রান্তি লেখক সহ সমস্ত পাঠকদের কাছে ক্ষমার যোগ্য হবে এই আশা রাখি।
লেখকের সুযোগ্য সহধর্মিনী মাননীয়া শ্রীমতী রীনা সাহাকে উৎসর্গ করা এই বইটির প্রচ্ছদ পরিকল্পনা ও রূপায়ণ অত্যন্ত সুন্দর।
ভ্রমণ
বক্সা দুয়ার
চিত্রা
পাল
জলপাইগুড়ি থেকে বক্সাদুয়ার এতো কাছে, মনে মনে
ভেবেওছি কতবার যাব তাও যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এইবার একটা সুযোগ হতেই আর না করিনি, একবারে
বেরিয়ে পড়লাম ওই স্বাধীনতার তীর্থস্থানের উদ্দেশ্যে। স্বাধীনতার তীর্থস্থান বলছি
কেন, তখন স্বদেশী আন্দোলনের সবচেয়ে অপ্রতিরোধ্য বন্দীদেরই এখানে রাখা হতো। কেননা এ
জায়গাটা দুর্গম, আর ভয়ংকর এখানকার রক্ষীবাহিনী। শুনেছিআন্দামানের সেলুলার জেলের
পরেই ছিলো এর কুখ্যাতি।
যাই হোক
আমরা প্রথমে গিয়ে পৌঁছলাম রাজাভাতখাওয়া গেস্ট হাউসে। সেখানে একরাত কাটিয়ে পরের দিন
সকালে প্রাতরাশ সেরেই বেরিয়ে পড়লাম বক্সাদুয়ারের উদ্দেশ্যে। রাজাভাতখাওয়ার কাছেই
সান্তালাবাড়ি। সেখানে পৌঁছে আর একদফা চা খাওয়া হলো । সেখানে শুনলাম, পাশেই যে
রাস্তাটা চলে গেছে বক্সাদুয়ার সে রাস্তায় খানিক গিয়েই আমাদের গাড়ি থামাতে হবে।
কারণ ওই অবধি গাড়ি যাবে, তার পরের ওই পাহাড়ি দেড়দুমাইল রাস্তা স্রেফ পদব্রজেই যেতে
হবে। পাহাড়ি রাস্তায় অতখানি হাঁটতে পারবো কিনা জানিনা, তাও উত্সাহভরে চলতে শুরু
করলাম সবাই মিলে।
এই রাস্তা কিন্তু বড় সুন্দর। একেবারে সবুজেসবুজ
বনভূমি। খুব বেশি খাড়াই উত্রাই নেই। মাঝে মাঝে ছোট ছোট সাঁকো সেতু। আমরা সেই
সেতুর ওপরে বসে খানিক বিশ্রাম নিয়ে আবার চলতে শুরু করি। আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছিলো
এখানে প্রচুর পাখী দেখে। কত নাম না জানা পাখী
দেখলাম। যেতে যেতে দেখা পেলাম একটা গাছের গায়ে ঝোলানো একটা লাল রঙা ডাকবাক্সর। যেন
আমাদের ফেলে আসা জীবনের প্রতিভূ। সেখানেই ছোট্ট চায়ের দোকান। সেখানে বসে চা খেয়ে
আবার চলতে শুরু করলাম। এইভাবে পৌঁছে গেলাম বক্সাফোর্টে।
সেখানে পৌঁছে হলো এক অন্য অনুভূতি। এই দুর্গম
জায়গায় এইভাবে এখানে বন্দীদের রাখা হয়েছিলো। কত কষ্ট
পেয়েছে যে তারা সে কথা ভাবলেই কষ্ট হয়। শুনলাম এই দুর্গটা নাকি আগে বাঁশের ছিলো,
পরবর্তীতে বৃটিশরা এটিকে পাথরের দুর্গে রূপান্তরিত করে। শুনেছি এখানে নাকি নেতাজী
সুভাসচন্দ্রও বন্দী জীবন কাটিয়েছেন। পরবর্তীকালে কমুনিষ্ট বিদ্রোহীরাও এইখানে
বন্দী ছিলেন। কবি মুখোপাধ্যায়,বিনয় চৌধুরি প্রমুখ সব বন্দীরা
এখানে ছিলেন।
একবার এখানকার বন্দীরা সবাই মিলে রবীন্দ্রজয়ন্তী
পালন করে। রবীন্দ্রনাথ সে সময় ছিলেন দার্জিলিং-এ। উনি একথা জানতে পেরে তার
প্রত্যুত্তর দেন এইবলে,’’অমৃতের পুত্র মোরা কাহারা শোনালো বিশ্বময়, আত্ম বিসর্জন
করি আত্মারে কে জানিলো অক্ষয়’’। কালো
গ্রানাইট পাথরের স্তম্ভে উত্কীর্ণ করা আছে তাঁর বাণী। আমরা আমাদের সকল শ্রদ্ধা
অবনত মস্তকে জানিয়ে বিদায় নিলাম। আরও একটু
থাকার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু আবার ওই অতোটা পথ হেঁটে যেতে হবে, আসার সময় দেখার উত্সাহে
এসেছি, যাবার সময় সে উত্সাহে ভাঁটা থাকবে,আর আমরা ক্লান্তও, সময় বেশি লাগবে
খানিক। ওদিকে দিনের আলো নিবে গেলে হবে আর এক বিপদ। তাই আর দেরী না করে আবার রওনা দিলাম ফেরার পথে।
সঙ্গে নিয়ে এলাম এক অমলিন স্মৃতি যা কখনও ভুলে যাবো না।
শিল্পী- বাবুল মল্লিক
ছন্দে ভাসি
শীত এলে
তুমি ফিরে এসো মহারাজা,তোমার আসন আজও শূন্য
বটু কৃষ্ণ হালদার
তোমরা আমায় রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো
এই ছিল তোমার উক্তি
ভারত বর্ষ স্বাধীন হল কিন্তু মিললো কি তোমার যুক্তি?
যে অখণ্ড ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলে,তা অধরা রয়ে গেছে সুপ্ত হৃদয়ের মাঝে।
এখন ও মাঝে মাঝে দুর হতে ভেসে আসে, সেই চেনা প্রতিবাদী গান টা,"_মাগো ভাবনা কেন/
আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে/ তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি/ তোমার ভয় নেই মা/
আমরা প্রতিবাদ করতে জানি।
সত্যই কি এই সময় আমরা প্রতিবাদ করতে জানি?
না কি আজ ভুলে গেছি প্রতিবাদের ভাষা?
তুমি দেশ ছেড়ে যাবার পর প্রতিবাদের ভাষা,
মানচিত্রে মুখ থুবড়ে পড়েছে,
প্রতিবাদীদের শীরদাঁড়া ভেঙে দেওয়া হয় প্রকাশ্যে,
নয় তো বুলেটের গুলিতে বুক ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়।
সেই রক্তে হাত রঙিন করে খেলা হয় রঙিন বসন্তের দোল
তুমি ফিরে এসো হে বীর,অসীম,অনন্ত নীলিময় নীল হয়ে।
মিথ্যা স্বাধীনতার নামে কিছু স্বার্থবাদী বর্বর অসভ্য নোংরা ছেলে জুটে
তাদের উত্তর সুরীরা আজ দেশের সম্পদ খাচ্ছে লুঠে পুটে।
ভারত চীন,জাপান,জার্মান ঘুরে চলে গেছো আজ তুমি বহুদূরে
ফিরে এলে নাতো আর
আজকে যা কিছু আঙুল দিয়ে ছুঁয়েছি,উপভোগ করছি
মিছে নয় সবই কিছু তোমার সিংহ দুয়ার।তাই
তোমাকে যে ফিরে আসতেই হবে
কারণ তোমার সিংহাসন আজও শূন্য
আমরা যারা তোমায় ভালো বাসি,তোমার নামে মালা জপি সন্ধ্যা সকাল,
আমরা যারা তোমায় বিশ্বাস করি
তুমি অমর,তুমি আবার আসবে ফিরে স্বমহিমায়, সশরীরে, বীর বিক্রমে
তোমাকে যে আসতেই হবে ফিরে এই জরা জীর্ণ বঙ্গে
তোমার মৃত্যু আমরা মানি না,
কেঁদে কেঁদে চোখের জল শুকিয়ে গেছে,বঙ্গ জননী,
আজও দুয়ারে দাঁড়িয়ে,তোমায় বরণ করবে বলে প্রদীপ খানি জ্বালিয়ে রোজ অপেক্ষা করে।
নগরের প্রান্ত হতে ও প্রান্ত ঘুরে বেড়ায়, প্রতিটি অলিগলি, রাজপথ, ওই ঘুমন্ত ফুটপাথ বাসি,উলঙ্ পথ শিশুদের অনাহারে মৃত্যুর পরোয়ানা জারির মাঝে।
স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরে রক্ষকরা আজ ভক্ষক হয়ে উঠেছে
সভ্যতা,সংস্কৃতি আইন কানুনকে বিসর্জন দিয়েছে পচা নর্দমার জলে
নিজেরাই আজ পুতুল নাচের আসরের বিধাতা
দেশটাকে বিলিয়ে দিতে চলেছে বৈদেশিক মুদ্রার প্রলোভনে।
চলেছে আখের গোছানোর
প্রতিযোগিতার লড়াই
তবে তুমি কেনো আজ মুখ লুকিয়ে রাখবে?
কি ছিল তোমার অপরাধ?
জানতে চায়নি কেউ কোনোদিন
কেনো?
কিসের ভয়ে তোমাকে রাষ্ট্র সঙ্ঘের হাতে তুলে দেবার প্রতিশ্রুতির সময় ১৯৯৯ টা কে বাড়িয়ে ২০২১ করা হয়েছে?
প্রশ্ন করেনি কেউ,
তবে জাপানের তাইহোকু বিমান বন্দরে বিমান দুর্ঘটনায় তোমার মৃত্যুর রহস্য,এই সব যে মিথ্যা, বুজরুকি, ছেলে ভোলানো,সাজানো নিছক কাহিনী তা আমার মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।
বর্বর স্বার্থবাদীরা তো ভয় পাবেই
,যদি স্ব মহিমায় ফিরে আসো আবার তবে মিথ্যা হয়ে যাবে এই সব ইতিহাস,মহিমা মাটির ধুলায় লুন্ঠিত হবে,গৌরব অধ্যায় ম্লান হয়ে যাবে।
কারণ তুমি তো শিখিয়েছো, অত্যাচারীরা ভয় পাবে আর প্রতিবাদীরা শির দাঁড়া সোজা করে থাকবে।
কেঁচো খুঁজতে খুঁজতে কেউটে সাপ বেরিয়ে আসবে
বন্ধ হয়ে যাবে ছলনাময়দের ছল,চাতুরি,বুজরুকি মিথ্যা সাজানো ব্রজবুলি
বন্ধ হয়ে যাবে নোংরা রাজনীতির নামে লুঠ পাঠের খেলা
কুসংস্কারের আছন্ন থেকে মুক্তি পাবে এই সমাজ
আবার নতুন আন্দোলনের জোয়ার আসবে
অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জেগে উঠবে যুব সমাজ
তারই তো ভয়,এই ভয়, মিথ্যাটা কে সঙ্গী করে বয়ে নিয়ে চলেছি যুগের পর যুগ
বিশ্বাস করি তুমি আসবে ফিরে স্ব_মহিমায়, স্ব_ শরীরে
তুমি বীর, অসীম, অনন্ত
তুমি ফিরে এসো বঙ্গ ললনার বুক চিরে,কালো আঁধারে ঢাকা আকাশকে কঠিন বজ্রের দ্যুতি দিয়ে
তছনছ করে দাও আধারের বেড়াজাল।
তুমি ফিরে এসো ছত্রপতি শিবাজির তরবারি হয়ে
তুমি ফিরে এসো হে সত্য,ন্যায় এর তরবারি হয়ে
বন্ধ করে দাও সবার চক্রান্ত, রক্তে রাঙানো হোলি খেলা
রোজ রোজ তাজা তাজা রক্তে রঙিন হয়ে ওঠে কাঁটা তারের বেড়া
হাজারো মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিতে তুমি আবার আসবে ফিরে
তুমি ফিরে স্বার্থান্বেষী তুঘলকদের আত্ম অহংকার ধ্বংস করে নব বধূর বেশে সাজাবে
যে দেশটাকে মায়ের,ভাইয়ের,বোনের ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলতে চেয়েছিলে।
সত্য ন্যায় দিয়ে মুড়ে দাও,আমরা তার জীবন্ত সাক্ষী হয়ে থাকবো,তোমার হাতে ধ্বংস হয়ে পাপ মোচন করে নেবো।
সোনালী রঙিন খামে মোড়া চিঠি দিও,মেঘের ঠিকানায়/নয়তো দখিনা বাতাসের হাত দিয়ে
আমরা থাকব তারই অপেক্ষায়,
হয় তো কোনো এক রঙিন বসন্তের সকালে
তুমি এসে দরজায় টোকা দিয়ে বলবে
ওঠো, জাগো আমি এসেছি ফিরে তোমাদের মুক্তি দাতা হয়ে।।
যারা নেতাজি সুভাষকে ভালোবাসেন,তারা আমৃত্যু ভগবান নেতাজির জন্য অপেক্ষা করেছিল করছে এবং আগামী ভবিষ্যতেও করবে।কারণ তিনি সূর্যের ন্যায় সত্য। ব্রিটিশদের দালালি করবে না বলেই আইসিএস পদত্যাগ করে ও জীবনের সিংহভাগ দেশের স্বার্থে বিলিয়ে দেওয়ার পরও তাকে শুনতে হয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশন তাকে নাকি আইসিএস এর থেকেও বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে সাহায্য করেছে।কিন্তু আমরা জানি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস মানেই আত্মত্যাগ। তাই নেতাজি প্রেমীদের কাছে কয়েকটা প্রশ্ন এই জানুয়ারি মাসেই তুলে ধরা হলো, আমরা বাঙালি রাই নেতাজি সুভাষ বস কে কতটা মূল্যায়ন করতে পেরেছি? আর যদি করে থাকি তাহলে নেতাজি ভক্তদের বাড়িতে তাদের ছবি কেন টাঙ্গানো হয় যারা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসকে একেবারে আঁধারে ঠেলে দিয়েছিল?
দ্বিতীয়তঃ সুভাষ ঘরে ফিরে নাই,নাকি সুভাষকে ঘরে না ফেরার জন্য সুভাষ বিদ্বেষী মানুষদের সঙ্গে কোন বাঙালি কি জড়িত ছিল না?নেতাজি,আবেগ,বিশ্বাস, তাই এখনো চারিদিকে কান পাতলেই শোনা যায় তিনি নাকি ভারতবর্ষেই ছিলেন বহু বছর তাহলে আমরাই তাকে চিনতে পারি নি কেনো?তিনি কেনো স্বাধীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বীকৃতি পেলেন না?আর কেনো বা তিনি জাতির জনক নন?আজও কেনো ভারতের সব টাকায় তার ছবি নেই? এ সব কিছুর তো একমাত্র ন্যায্য দাবিদার হলেন বাংলার অগ্নি সন্তান,ভারতের মুক্তি সূর্য নেতাজি সুভাষের।
যিনি অনুশাসিত এবং সংস্কৃত; যার ব্যক্তিত্ব আছে, তিনিই নেতা। সবাই 'নেতা' নন, কেউ কেউ নেতা। সংগঠনের অনুশাসন মেনে চলতেই হয়,শৃঙ্খলা জরুরি।কিন্তু নিজের ব্যক্তিত্ব যদি না থাকে,যুক্তি-নিষ্ঠার অতল গভীরে যদি রাষ্ট্রবোধ না থাকে,তাহলে তার/তাদের উপর চেপে বসতে পারে ভ্রান্ত নির্দেশ।সৌকর্যের সঙ্গে দিকভ্রান্তি সরানোর নামই 'চরৈবেতি'।সবচেয়ে বড় কথা,মানুষের মধ্যে যতটা সম্ভব খাঁটি প্রভাব বজায় রাখা।কেউ কাউকে শূন্যতা থেকে নেতা বানিয়ে দিতে পারেন,কিন্তু নিজস্বতা ও সংগঠন-সততা না থাকলে সেই নেতৃত্ব আদৌ ধরে রাখা যায় না।নির্মোহ হয়ে পদ চালানো যে সহজ নয়,এটা আগে নিজেকে বুঝিয়ে তবে রাজনীতিতে আসতে হবে।কার্যকর্তাকে ভুল বোঝার সম্ভাবনা যেমন থাকে,ভুল সংশোধন করার ক্ষমতাও জন্মায় তার নেতৃত্বের সদর্থকতার গুণে। সব নেতাই 'নেতা' নয়।তবে বর্তমান সময়ে এখন নেতা হতে গেলে শিক্ষা,আদর্শ,নীতির দরকার হয় না।তাই তো নেতাজি নামক শব্দটি মরশুমের ফল ফুলের মত একেবারে শেষ হয়ে যায়নি, তিনি যুগ যুগ ধরে আলোচিত গবেষণার বিষয় ছিল আছে এবং থাকবে।
"বহু আগে একটা কথা প্রচলিত ছিল - ইংল্যাণ্ড নাকি ভয় পায় না, অন্যায় করেও নতি স্বীকার করে না, ক্ষমা চায় না ।কিন্তু একমাত্র নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু সেই নেতা তিনি অন্ধদের চোখেও আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ইংল্যাণ্ডের গালে কষে চড় দিতে পারলে তবেই সে ভয় পায়,অন্যায়ের ক্ষমা চায়, তার আগে নয়"।
সবথেকে লজ্জাজনক বিষয় হলো এই বাংলায় মহাসমুদ্রের মত কানায় কানায় আদর্শে পরিপূর্ণ মানুষটি ভোট ব্যাংকের স্বার্থে ব্যবহৃত হয়।নিজেদের নেতা মনে করা অযোগ্য ব্যক্তিরা ২৩ শে জানুয়ারি এলে রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে মূর্তিতে মাল্য দান করে। কারণ এই ২৩ শে জানুয়ারি এলে বহু জায়গায় শাহজাহান শেখদের মত নেতাদের আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া হয়।এ সব আমরাই বাঙালিরাই মেনে নিয়েছি। ভোট ব্যাংকের স্বার্থে তাকে নিয়ে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমরাই সমগ্র ভারতবর্ষের মানুষকে শিখিয়েছি। ভারতীয়দের দোষ দিয়ে লাভ কি? আপনি যদি সত্যি বাঙালি হন তাহলে আপনার বিবেককে প্রশ্ন করুন আমরা কতটুকু তাকে মূল্যায়ন করেছি? কতটুকু ভালোবেসেছি অন্তরে দেবতাকে? কারণ ওই মানুষটাই আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় হয়ে উঠুক সেটাই চেয়েছিলে। অথচ সেই মানুষটাকেই আমরা অন্ধকারে ঠেলে দিলাম?
No comments:
Post a Comment