Sunday, September 1, 2024


 

শহর জীবনে রবিবারের আড্ডা!
প্রদীপ কুমার দে

ভাবতে পারছেন কি আকর্ষণীয় বিষয়!
যারা আড্ডা মারেন তাদের বোঝানোর চেষ্টা অপ্র‌য়োজন। কিন্তু  যারা ব্যাপারটেকে নিয়ে অহেতুক জটিলতা করেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি, সখাদ আড্ডা মানুষের মনকে এক সুন্দর প্রলেপ মাখিয়ে দেয় যা তাকে বেশ অনেকটা সময় ধরে 
উদ্দীপিত করে রাখে। আর কত কি যে জানা যায়, ভাল মন্দ মিশিয়ে তার ইয়ত্তা নেই। আজ সেইরকমই এক আড্ডার গল্প বলছি, যেখানে
ইয়ং জেনারেশন টোট্যালি স্পয়েল্ড।

প্রেক্ষাপট --- 
শহর কোলকাতা, পাড়ার চায়ের দোকান।দোকানদার -আবুল। ইঁটের দেওয়ালে টিনের চাউনি। চারটে বেঞ্চ ,একটা শক্ত চারপেয়ে টেবিল -যার উপরেই চা বানাবার সরঞ্জাম।
সময় - সকাল দশটা, রবিবার।

খরিদ্দার বলতে সাতজন পাড়ার ছেলে। কাঁচের গ্লাসে চা ধরে সময়কে ধরে রেখে আড্ডা, খিস্তিখেউড় আর খবরেরকাগজ নিয়ে টানাটানি।

এরই মধ্যে দূর থেকে আসা বিলাইতবাবুকে দেখেই শিস্ বাজিয়ে দিলো হরা মানে হরেন। শম্ভু চিৎকার করলো -- ওস্তাদ - গুরু আইতাছে - আইতাছে --।

মদন দাঁত কেলিয়ে দৌড়ে গেল। বিকাশ একেবারে জাপটে ধরলো, সমর প্রশ্নের মধ্যে -- কোথা থাকো তুমি গুরু?  এতদিন ?

উত্তর দেওয়ার সময় দিলো না। রাকেশ টেনে চেয়ারে বসালো বিলাইতকে। বাদল একগ্লাস জল এনে দিল তার মুখের কাছে।

বাইরে বাইরে ঘোরার গল্প বলে তাই বিলাইতবাবু।সত্যি মিথ্যা কেউ যাচাই করেনি।সবাই সুযোগ নিতেই ব্যস্ত। আদার ব্যাপারী জাহাজের খোঁজ করে না।

বিলাইত লুঙ্গি খুলে একপ্রস্থ ঝেড়ে, ঘুরিয়ে কোমড়ে বাঁধে, - শালার পোলা আমাগো খসাবার লগে এত বাহানা? ছমাস ছিলাম না এহানে, প্যারিশ ঘুইরা আইসলাম।

-- ওহঃ তাই কন ! আমরা সব চিন্তায় ছিলাম আপনার লগে, বহুদিন দেখি নাই -তাই। আর কিযে কন না? আমরা হোলাম গিয়ে আপনাগো বন্ধু না?  -সমস্বর প্রতিবাদ ওঠে।

হ্যাঁ, হ্যাঁরে হারামখোর, চা খাবি কইলেই হয়, তার আবার ফিরিস্তি মারা -- ও আবুল ভাই আট গ্লাস বানিয়ে ফেল --যত্তসব ফালতু!দিনেদিনে কি সময় আসলো, ইন্ডিয়ারে শেষ কইরা ছাড়লি তোরা সব, ইয়ং জেনারেশন টোট্যালি স্পোয়েলড!

এইতো গুরু এইডা শোনার লগেই না আপনার -এতনাম - বিলাইতবাবু।

চেপে যা  -তোরা খাতির না করলেও চা পাবি, কেন এর আগে পাস নাই ? -- স্বীকার যা।

চা আসে। সবাই গ্লাস ধরে। পাশ দিয়ে এক মহিলা যায়, সবাই হা করে তাকিয়ে থাকে---।

বিলাইত বাবুর নজর এড়ায় না।ভালো করে মেপে নেয় মহিলারে,  ঝারি মারা শেষ করে চিল্লায় -- ওরে  লাথখোর তোদের চোখ যে একেবারে তলানিতে রে । আমরাও ইয়ং ছিলাম রে, এই বদ স্বভাব ছিল না কোনোকালে। দিনেদিনে কি কাল আইসলো, ইন্ডিয়ারে শেষ কইরা ছাড়লি তোরা সব , ইয়ং জেনারেশন টোট্যালি স্পয়েল্ড! 

No comments:

Post a Comment