সম্পাদকের কথা
শ্রাবণের জলছবি হারিয়েছি অনেক আগে। এবার বোধহয় বর্ষাকেই হারাতে চলেছি।
জলকষ্টের এই সময়ে সাবধান হতে দেরি হলেও সময় আছে। সময় আছে ঘুরে দাঁড়াবার।
ঘুরে দাঁড়াতে হবে বিভেদকামী সেই সব শক্তির বিরুদ্ধেও যারা দেশের ও দশের সুস্থিতি নষ্ট করছে।
শ্রাবণ আসলে বপনের মাস। ক্ষুদ্র বীজ এই সময়েই মাটির ভেতর গিয়ে সৃষ্টি করে ফসল, জন্ম দেয় মহীরুহের।
এই শ্রাবণে আমরা কি মানবতার সেই বীজ বপন করতে পারি না যা আমাদের সুন্দর পৃথিবীকে তার সেরা সৃষ্টি নিয়ে সুন্দরতর করে তুলবে?
মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন শ্রাবণ সংখ্যা ১৪২৬
এই সংখ্যার দ্বিতীয় পর্বে আছেন যাঁরা
রীনা মজুমদার, রুদ্র স্যান্যাল, গায়েত্রী দেবনাথ, যীশু চক্রবর্তী, সত্তাপ্রিয় বর্মন, দীপ্তিমান
মোদক, সুস্মিতা পাল কুন্ডু, বিজয় কুমার বর্মণ, সুব্রত নন্দী, কাজী জুবেরী মোস্তাক, রীতা
মোদক, অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়, সফিকুজ্জামান, বটু কৃষ্ণ হালদার, সঞ্চিতা দাস, মজনু
মিয়া, দীপঙ্কর মুখার্জী, রোমানুর রোমান, শৌভিক কার্য্যী, সব্যসাচী নজরুল, ডাঃ সঞ্জয় কুমার
মল্লিক, মাথুর দাস, আশীষ দেব শর্মা, আসিফ আলি, শ্যামল কুমার রায়
মোদক, সুস্মিতা পাল কুন্ডু, বিজয় কুমার বর্মণ, সুব্রত নন্দী, কাজী জুবেরী মোস্তাক, রীতা
মোদক, অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়, সফিকুজ্জামান, বটু কৃষ্ণ হালদার, সঞ্চিতা দাস, মজনু
মিয়া, দীপঙ্কর মুখার্জী, রোমানুর রোমান, শৌভিক কার্য্যী, সব্যসাচী নজরুল, ডাঃ সঞ্জয় কুমার
মল্লিক, মাথুর দাস, আশীষ দেব শর্মা, আসিফ আলি, শ্যামল কুমার রায়
মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন শ্রাবণ সংখ্যা ১৪২৬
যোগাযোগ- হসপিটাল রোড, কোচবিহার, ৭৩৬১০১
ইমেল -
প্রকাশক- রীনা সাহা
সম্পাদনা, অলংকরণ ও বিন্যাস- শৌভিক রায়
কবিতা
সব পেয়েছির শব্দঘর
মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন শ্রাবণ সংখ্যা ১৪২৬ দ্বিতীয় পর্ব
কবিতা
সব পেয়েছির শব্দঘর
রীনা মজুমদার
সেদিন আকাশে শ্রাবণ
ভেজা শ্রান্ত দুপুর
চোখ মোছে পৃথিবী l
সে আমায় নিবিড়ে ছুঁয়েছিল
অক্ষর- ছোঁয়ায় !
সব পেয়েছির শব্দঘরে, কখনো
নিজেকে সাজাই আপন করে
"আমি চিত্রাঙ্গদা ! রাজেন্দ্রনন্দিনী.. "
প্রতিক্ষণে শব্দেরা বারবার
স্বেচ্ছায় যে দখল করে
দূরে সরিয়ে রাখি সাধ্য কী !
সে সুরের বাঁধন
"যখন পড়বে না মোর
পায়ের চিহ্ন এই বাটে .."
বিসর্জনে শূন্য দেবালয়,
ধানকাটা ন্যাড়া মাঠ
দেখেছো কখনও !!
আজও গুমরে কাঁদে আমার সাথে
সব পেয়েছির শব্দঘর l
খুদ-কুঁড়ো ফাঁক রাখনি যে !
একটি শব্দে তোমাকে সাজাই
মানি না শ্রাবণ ! ফুলস্টপ মানি না ...
আলোর পথ
রুদ্র সান্যাল
পৃথিবীটা আজ বড় বেশি ম্রিয়মান!!
সূর্যের আজ মন খারাপের আলো!!
রাতের আকাশে তারা গুলো শুধু কাঁদে!!
চাঁদের মুখেতে হাসি নেই, শুধু কালো!!
ঈশ্বর তুমি আছো কি কোথাও আজ?
চারিদিকে আজ শুধুই যুদ্ধবাজ!!
পাখি গুলো আজ গায় না কেন যে গান?
প্রকৃতি আজকে শুধুই যে ম্রিয়মান!!
সবারই মধ্যে কেন আজ হতাশা?
চারিদিকে শুধু ঘনঘোর কুয়াশা!!
মানুষে মানুষে শুধুই হানাহানি!!
প্রেম প্রীতি আজ ভীষণ রকমই দামি!!
তবুও আজ এই অন্ধকারের সময়!!
আশা রাখি পাবো নতুন আলোর পথ!!
আগামী কালের সূর্যের আলো যেন,
তৈরি করুক, নতুন জীবন রথ!!
ঋণ
গায়েত্রী দেবনাথ
শ্রাবণের গা চুঁইয়ে পারদ ঝরে
স্নান শেষে কবিতার অঞ্জলি
আজন্মের ঋণ তাঁর কাছে
শতাব্দী পেরুনো দীর্ঘশ্বাসের টুকরো স্মৃতি
জলের সামনে দাঁড়ানো অসম্ভবের স্হিরচিত্র
অক্ষরবৃত্তের মাঝে সুরের লহরে
কলমের পরিধি বেয়ে
কবি তুমি
সভ্যতা
যীশু চক্রবর্তী
শেষ থেকে শুরু আরেকটি নতুন বছরের কেমিস্ট্রি,
বায়োস্কোপে চোখ লাগিয়ে দেখি কবিতা ছোটে মিটারগেজ লাইনে।।
আর অক্ষরের নগ্ন নাচ ,
কাঙ্ক্ষিত ছোটো গল্পের রেশ ধরে ভালোবাসা,
ঘড়ির কাটায় অবক্ষয়ের ডঙ্কা।। চেতনা ছোঁ মেরে তুলে নেয় বাজপাখি,
নির্বিকারে নেশায় টান দেয় পেশাদারি শব্দটা।।
শিয়রে তখন ক্রুর নয়নে নিশির ডাক,
চিতাবাঘ ছিঁড়ে খায় মানবিকতা।।
লোভ তো ফিনিক্সের মতোই, ভস্মীভূত হয়েও জন্মায় আবার,
প্রলয়নাচন নাচে অসভ্য জুলু সভ্যতা।।
আগুন আছে তোর বাসন্তী রঙা হৃদয়ে
সত্তাপ্রিয় বর্মন
আজ শহর জুড়ে ক্লান্ত বাতাস বইছে
নিভে গেছে রৌদ্র,
ওই দূরে দেখা যায় দিগন্ত রেখায়
যেখানে জোনাকিরা বাসা বেঁধেছে
কারা যেন সেই প্রান্তরে জ্বলন্ত কয়লা রেখে গেছে।
ফুটপাথে আজ একা হাঁটি আমি
ভোরের নক্ষত্রের মত আগামী সূর্যের বিশ্বাসে,
পাথর ফাটিয়ে বেরিয়ে ছিল যে গাছটি
শুকনো বসন্তে ঝরে গেছে তার পাতা,
আবিরের রঙে তাকে চিনতে পারিনি বলে
সেদিন পাশে চেয়ে ছিলাম,
চাতকের মত আকাশের পানে চেয়ে
আজ ঘর ভাঙা বিকেলে
রাত নেমে আসে।
তবু আগুন লুকোনো আছে কৃষ্ণপক্ষের রাতে
আগুন লুকোনো আছে দিগন্তের মাঠে
আগুন লুকোনো আছে তোর বাসন্তী রঙা হৃদয়ে
সে আগুনে আজ আমি পুড়ে যেতেও রাজি।
শহরের সীমানায় রাত নেমে আসে
আমি আগুন জ্বালালাম।
তিনটি রঙ
দীপ্তিমান মোদক
লাল রঙের বিনিময়ে যাঁরা এনেছিল
তিনটি রঙ।
যাঁদের ত্যাগে কত মায়ের কোল হয়েছিল ফাঁকা
কত নারী রয়েছিল সাদা শাড়িতে ঢাকা।
তারপর? আরও কতজন
তাদেরও পাথর হয়েছিল মন।
জানি সে হিসেব তুমি রাখবে না,
নেই যে সেখানে অংকের লাভ ক্ষতি
তুমি চাও সিংহাসন তোমার
ক্ষয়রোগ থেকে বাঁচুক।
তবুও স্মরণ করিয়ে দেই
চেয়ে দেখো,তিনটি রঙ
কীভাবে ত্যাগের বাতাসে চলছে উড়ে
তাঁদের ত্যাগে আমরা স্বাধীন
তিনটি রঙ তাই আমাদের দেশ জুড়ে।
" তবুও স্বাধীনতা... "
সুস্মিতা পাল কুন্ডু
স্বাধীনতা তোমায় দিলাম
অনেক ভালোবাসা ,
সাথেই থেকো হাত ছেড়ো না
দেখাও নতুন দিশা ;
স্বাধীনতায় অপার সুখ
অনুরণিত আশা ,
স্বাধীনতায় বলিষ্ঠ প্রাণ
নির্ভীক স্বাধীনচেতা !
স্বাধীনতার অনুভূতি
উদ্যমী মনে স্বপ্ন দেখায় ,
ব্যর্থতা-পরাজয় সামলে দেয়
সম্ভাবনায় ... দৃঢ়তায় ;
মুক্ত চিন্তা , স্বাধীন ভাবনা
উত্তাল পথে সাহসিকতায় --
দুখেও সুখ , সুখে অপরূপ
ধ্বনিত কেবল স্বাধীনতায় ...৷৷
সুস্মিতা পাল কুন্ডু
স্বাধীনতা তোমায় দিলাম
অনেক ভালোবাসা ,
সাথেই থেকো হাত ছেড়ো না
দেখাও নতুন দিশা ;
স্বাধীনতায় অপার সুখ
অনুরণিত আশা ,
স্বাধীনতায় বলিষ্ঠ প্রাণ
নির্ভীক স্বাধীনচেতা !
স্বাধীনতার অনুভূতি
উদ্যমী মনে স্বপ্ন দেখায় ,
ব্যর্থতা-পরাজয় সামলে দেয়
সম্ভাবনায় ... দৃঢ়তায় ;
মুক্ত চিন্তা , স্বাধীন ভাবনা
উত্তাল পথে সাহসিকতায় --
দুখেও সুখ , সুখে অপরূপ
ধ্বনিত কেবল স্বাধীনতায় ...৷৷
শ্রাবণের একদিন
বিজয় কুমার বর্মন
টাপুর টুপুর সকাল দুপুর ,
আঙিনায় তোমার তাথৈ নুপুর !
মেঘলা আকাশ , সিক্ত বাতাস ,
আঁধার কালো নেইগো প্রকাশ !
খিচুরি গরম , ইলিশ ভাজা ,
গরম চা -এ প্রাণটি তাজা !
বরষাতি আর কালো ছাতা ,
শীতের আমেজ ,পাতলা কাথা !
ভরাট নদী , পুকুর , বিল ,
পার ভাঙা ঐ উতাল ঝিল !
জল কাদা আর মন্দবাসা ,
ভরা গাঙে ভেলায় ভাসা !
রবি গীতে , মনে প্লাবন !
মন ভারি আজ বাইশে শ্রাবণ !!
কিছু কথা কিছু স্বপ্ন
সুব্রত নন্দী
কফি শপে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ,
নিমেষে উধাও পুরাতন স্মৃতির ব্যথা,
ঋণের মাঝে বিশ্রুত মরূদ্যানের উদয়,
আলেয়ায় ফিরে দেখা আস্তরণের সংসার।
মনে পড়ে যায় ফেলে আসা দিনলিপি,
শিউলি সকালের সদ্যোজাত কুঁড়ি,
প্রস্ফুটিত অনুরাগের অতৃপ্ত ছোঁয়া!
সবুজের সমারোহ, অফুরান আন্তরিকতা।
সময়ের মাঝে সময় নিয়েছে কেড়ে,
উত্তরোত্তর জাগ্রত অসংখ্য ব্ল্যাকহোল,
দিনান্তে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সন্দিহানের গভীরতা,
সাঁঝের বাতিতে আঁধার কাটেনি আজও।
একটাই পৃথিবী
কাজী জুবেরী মোস্তাক
সেদিন ওরা বাঁচবে বলে চারিদিকে আগুন
জ্বেলেছিল ;
অস্ত্র আর গোলা বারুদের পশরা সাজিয়ে
বসেছিল ;
মানুষকে কোন ঠাসা করে নিজেকে প্রচার
করেছিল ।
সেদিন ওরা ভুলেছিল সেখানেই ওদেরও
ঘর ছিল ;
সেই অস্ত্র যে তাদের দিকে তাক হতে পারে
ভুলেছিল ;
একদিন ওরাও সংখ্যালঘু হতে পারে ভুলে
গিয়েছিল ।
সেদিন ওরা অস্ত্র হিসেবে ধর্মকেও ব্যবহার
করেছিল ;
ধর্মের অমোঘ বাণী ভুলিয়ে রক্তাক্ত করতে
শিখিয়েছিল ;
কিন্তু প্রতিটি ধর্মের অহিংসটা বাণী ঠিকই
গোপন করেছিল ।
সেদিন গোলাবারুদের মিছিলে নিজেকেও
হারিয়েছিল ;
হিংসা বিদ্বেষে ছড়িয়ে বিশ্বটার দখল নিতে
চেয়েছিল ;
ভালোবাসার চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র হয়না
ভুলে গিয়েছিল ।
সেদিন ওরা গণতন্ত্র নামে আধুনিক দাসত্বে
বন্দী হয়েছিল ;
ভেবেছিল গণতন্ত্রটা দাসত্বর মুক্তির জন্যই
এসেছিল ;
কিন্তু ওরা জানতোনা এই গণতন্ত্র দাসত্বকে
বৈধ হয়েছিল ।
সেদিন আর বেশি দুরে নাই যেদিন সবারই
ঘুম ভাঙবে ;
হিংসা বিদ্বেষ হানাহানি ভুলে এক হয়ে পথ
চলবে ;
একটাই মানচিত্রেই সেদিন একটা পৃথিবীও
ঠিক হবে ।
জল বাঁচাও
রীতা মোদক
এসো ভাই জল বাঁচাই
জলেতে জীবন বাঁচাই ,
বৃষ্টির জল ধরে রেখে
সেচের কাজে লাগাই ।
ঐ দেখো ট্যাপের থেকে
পরছে জলধারা ,
দৌড়ে গিয়ে বন্ধ করো
ছুটে চলো বাঁধন হারা ।
ছাদের জলকে আটকে রেখে --
জল ভান্ডার পূর্ণ করো ,
কাপড় কাঁচা বাসন মাঝা
সেই জলেতেই সব সারো ।
আর করোনা জল অপচয়
বৃষ্টি ধরে কাজে লাগাও ,
গাছ লাগিয়ে সবুজ আনো
সবাই মিলে জল বাঁচাও ।
রীতা মোদক
এসো ভাই জল বাঁচাই
জলেতে জীবন বাঁচাই ,
বৃষ্টির জল ধরে রেখে
সেচের কাজে লাগাই ।
ঐ দেখো ট্যাপের থেকে
পরছে জলধারা ,
দৌড়ে গিয়ে বন্ধ করো
ছুটে চলো বাঁধন হারা ।
ছাদের জলকে আটকে রেখে --
জল ভান্ডার পূর্ণ করো ,
কাপড় কাঁচা বাসন মাঝা
সেই জলেতেই সব সারো ।
আর করোনা জল অপচয়
বৃষ্টি ধরে কাজে লাগাও ,
গাছ লাগিয়ে সবুজ আনো
সবাই মিলে জল বাঁচাও ।
নীরা
অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়
কাল হঠাৎ নীরার সাথে দেখা ,
এ নীরা , সুনীলের নীরা নয় , এ নীরা
আমার ছোটবেলার খেলার সাথী ।
ভাবিনি আর কোনো দিনও ওকে
দেখতে পাবো ? আজ ত্রিশ বছর পর
ওকে দেখলাম হাওড়া স্টেশনে , স্মৃতিহীন
ভিখারিনী বেশে ।
জীবন ছায়া
সফিকুজ্জামান
এই পড়ন্ত বিকেলে বসে
জীবনের ছায়া মাপি আমি
কখন সে ক্ষুদ্র ছায়া
ধীরে ধীরে বড়ো হয়ে গেছে
কালের সুতোয় তার
পরিমাপ হয়ে যাবে শেষ।
কতো রোদ-ঝড় চলে যায়
মাথার উপর দিয়ে বয়ে
কখনও বা ঊর্ধ্বমুখী সিঁড়ি
হঠাৎ নামিয়ে দেয় খালের ভিতর
জীবন কেবলই এক
অপূর্ণ বাসনার জীর্ণ বসন।
নিবন্ধ
শিশু ধর্ষণ বন্ধ করো
বটু কৃষ্ণ হালদার
নারী ছোট্ট একটা শব্দ। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই শব্দের মধ্যে লুকিয়ে আছে অন্তর্নিহিত ভবিষ্যতের বীজ। বিশ্ব ব্রম্ভান্ড এ একটা নারী জীবের সৃষ্টি করে। যুগের পর যুগ বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রজননের মধ্য দিয়ে বংশানুক্রমে। দশ মাস দশ দিন নিজ গর্ভে জ্বলন্ত অগ্নি পিণ্ড কে লালন পালন করতে থাকে। আমরাঅতি সামান্য আঘাতে কাতর হয়ে পড়ি, কিন্তু একটা মা হাজারো কষ্ট সহ্য করে ও হাসি মুখে একটা সম্ভাবনাময় জীবের জন্ম দেয়। এক নারির পক্ষে সম্ভব, একদিকে সংসার অন্যদিকে নিজের সন্তানকে সুস্থ ভাবে পরিচর্যা ওপরিচালনা করা। কিন্তু বিগত পরিসংখ্যান অনুযায়ী দিন দিন বেড়ে চলেছে কন্যা শিশু ধর্ষণ। এ সভ্য সমাজে রেহাই পায়নি ৮ মাসের দুধের শিশু। দিন দিন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মানসিকতা,মানবিকতা। কবির ভাষায় আজ যারা শিশু আগামী তে তারা অবশ্যম্ভাবী ভবিষ্যত। আজ যারা চারা গাছ আগামী তে তারা বৃক্ষ। ফল, ফুল, ছায়া, বীজ, বিশেষ করে প্রাণীকুলের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অক্সিজেন দান করেন। ঠিক তেমনি এক কন্যা শিশু আগামী দিনে সে মা হয়ে ওঠেন।একটা মায়ের গুরুত্ব বা অবদান সমাজ বা পরিবেশে তা বোধ হয় কারোর অজানা নয়। শিশুরা ঈশ্বর, আল্লাহ কিংবা গড এর অন্য রূপ। অথচ সেই শিশুরা আজ সভ্য সমাজে নির্যাতিত ও ধর্ষিত। তার ওপর এ সময় শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ সামাজিক মারণ ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। বন্ধ হওয়া দরকার শিশুদের উপর এমন পাশবিক অত্যাচার। তানাহলে থমকে যাবে সভ্য সমাজের উন্নতি বিকাশের ধারা। এ পৃথিবী একদিন বন্ধ্যা তে পরিণত হবে। যারা এমন ফুলের নরম কোমল পাপড়িগুলোকে ক্ষতবিক্ষত করার চেষ্টা করে, প্রশ্ন করি তাদের ওরে পাশবিক অমানবিক হায়নার দল তোদের জন্ম কোন মায়ের প্রসবের দার দিয়ে, এ ধরা ধামে আগমন,কেমনে ভুলে যাস সে কথা? প্রায় প্রতিনিয়ত হচ্ছে শিশু কন্যা ধর্ষণ। সমাজের বুদ্ধিজীবী মহল রা মোমবাতি জ্বালিয়ে মৌন মিছিল করে রামলীলা ময়দানে, মনুমেন্টের পাদদেশে কিংবা ধর্মতলার মোড়ে। কিন্তু ওই লেলিহান শিখার মাঝে লুকিয়ে থাকে শিকারি হায়নার নীল চোখ। সমস্যা গোড়া থেকে নির্মূল হওয়ার বিশেষ প্রয়োজনীয়তা আছে। তাই আমন পাশবিক পিশাচদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি জন্য হোক আন্দোলন হোক মোমবাতি মিছিল।নারীদের অবস্থান বর্তমান সমাজে যে কি তা আজ আর কারো অজানা নেই। সুবিচারের আশায় নারী প্রাচীন পৌরাণিক যুগের সময় হতে আজও । পৌরাণিক যুগে উপেক্ষিত দুই সতী সীতা ও দ্রৌপদী।প্রাচীন ইতিহাস থেকেও আমরা বহু মহীয়সী নারীর কথা জানতে পারি, তারা সে যুগেও স্বমহিমায় উজ্জ্বল ছিলেন। লোপা মুদ্রা মৈত্রী ও অপালা ঘোষা বিশ্ব বারার মতোনারীরা ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছিলেন তেমনি উনবিংশ শতকে বহু নারী তার আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। আবার এসময় মেরিকম ,পিটি ঊষা, কল্পনা চাওলা, দীপা কর্মকার, আরতি সাহা, সাইনা নেহওয়াল, ঝুলন গোস্বামী, হিমা দাস এর মত নারীরা তারা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন বিশ্বের দরবারে।তবুও এ অত্যাধুনিক সু সভ্য যুগে নারীরা ভোগ্য,পণ্য, আমদানি, রপ্তানি ,বিলাস বৈভবএর চিহ্ন মাত্র।ঘটা করে কুমারী পূজা বরণ করা হয়। তার সামনে মাথা নিচু করে মনস্কামনা পূরণের প্রার্থনা করে। এসব লোক চক্ষুর সম্মুখে ভ্রষ্টাচার, প্রহসন। কারণ সেই সমাজে দুধের শিশু মাঝবয়সী এমনও ষাটোর্ধ্ব নারী ও হয় বেআব্রু প্রতি পদে পদে। শিক্ষিত সমাজের অর্জুন রা আজ নির্বিকার অবিচল। আসুন সবাই মিলে আমরা এই সামাজিক অপরাধ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি, এই পৃথবীতে শিশুদের বাসযোগ্য করে তোলার অঙ্গীকার বদ্ধ হই।
গল্প
জবা গাছ
সঞ্চিতা দাস
এগার বছরের ডলি রাস্তায় পড়ে থাকা একটা জবা গাছের ডাল কুড়িয়ে এনে বলল, “মা দেখ এইটা আমি বসাব। এখন তো বর্ষাকাল। গাছটা দেখবে কত ফুল দেবে। তোমার পূজো হয়ে যাবে”।
মা বলল, “আজ ২২শে শ্রাবণ”।
-হ্যাঁ বাবা বলেছে আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু দিন। মা, তাহলে গাছটার নাম রাখব রবীন্দ্রনাথ।
মা বলল- না ওটা তো জবা গাছ। গাছের নাম কি রবীন্দ্রনাথ হয়? ওর নাম জবা গাছই থাক। কিন্তু বসাবি কোথায়?
-কেন? বাগানে।
- তোর বাবা তো বকবে। যেখানে সেখানে গাছ পুঁতলে খুব রাগ করবে।
- তুমি দেখই না। বাবা বুঝতেই পারবে না।
অনেক খুঁজে বাবার গাছ লাগাবার যন্ত্রপাতি গুলো পেলই না। শেষে কাটারি নিয়ে একটা জায়গা দেখে নরম মাটীতে অনেক খোঁচাখুঁচি করে ভাল গর্ত বানাতে পারল না। শেষে পুকুরের পাড়ে একটা গর্ত দেখতে পেল। গাছটাকে সেখানে বসিয়ে কাটারির কোপান মাটি গুলো গাছটার চারপাশে চেপে চেপে দিয়ে বাগানে পড়ে থাকা খুরিটাতে করে গাছের গোড়ায় জল দিল। কিন্তু ডলির মনটা দুটো কারণে খারাপ হয়ে গেল। গাছটার একটা নাম দিল। মা বলল- ও নাম গাছের হয় না।
গাছটাকে
বাবার ভয়ে একটা ভাল জায়গায় বসাতেও পারল না। একটা গর্তে ভরে দিল।
মা বলেছে, “ওটা ইঁদুরের গর্ত”। ইঁদুর যদি নীচের থেকে উঠে কামড়ে দেয়, তাহলে তো গাছটা মরেই যাবে। আর বাঁচবে না।
প্রতিদিন
সে একবার দুবার করে গাছটাকে দেখে, গাছটা ঠিক আছে কি না, ইঁদুরে নষ্ট করল কি না। ভাবে- বাবা আবার উপ্রে ফেলে দেয়নি তো?
বর্ষাকাল। ঝম্ ঝম্ বৃষ্টি। রোজ গাছটা ওই জলেই স্নান করে। তার পাতাগুলো বেশ ঝকমক করে। গাঢ় সবুজ পাতা বৃষ্টিস্নাত জলে বেশ চকচকে।
বাবা গাছটা দেখেছে। ডলির মাকে বলেছে, “তোমার কি কাণ্ড জ্ঞান হবে না? যেখানে সেখানে গাছ পুঁতলেই হল?”
-আমি কি আর পুঁতেছি? ওটা তো তোমার মেয়ের কাণ্ড।
সব শুনে বাবা আর কিছু বলেনি। কিন্তু দিনে দিনে গাছটি বড় হচ্ছে। প্রকৃতিই যেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
আস্তে আস্তে গাছটার কথা সবাই ভুলেই গেছে। ডলিও ভুলে গেছে। প্রায় পাঁচ ছয় মাস পরে গাছটায় কুঁড়ি হয়েছে পাঁচটা কেউ খেয়াল করেনি।
পরের দিন সকালবেলায় মা জানালায় দাঁড়িয়ে দেখতে পেলেন পাঁচটা সাদা জবা ফুটেছে আর তার ভিতরে লালের বৃত্তটা ফুলের উজ্জ্বলতা বাড়িয়েছে। হাওয়ায় দুলছে ফুলগুলো। কি সুন্দর যে লাগছে।
মা ডাকলেন ডলিকে, “ডলি, ডলি তোর গাছে রবীন্দ্রনাথ ফুটেছে”।
ডলি গাছের কাছে গিয়ে ফুলগুলো দেখল। হাওয়ায় মাথা দুলিয়ে যেন ওকে কিছু বলছে।
ডলি মাকে বলল- মা, গাছের নাম তো রবীন্দ্র্রনাথ হয় না। ওটা লাল চক্র সাদা জবা মা।
মা বললেন, “ তুই একদম ঠিক বলেছিস মা। ওর নাম লাল চক্র সাদা জবা”।
তাল পাতার বাঁশি
মজনু মিয়া
বাবার হাতে ধরে হাটে যায় আনু, হাটে গিয়ে তিলের খাজা,নইট্যা টানা কিনে দিতে বলতো
বাবাকে।বাবায় মিষ্টি কিনে দিতে চাইতো কিন্তু আনু মিষ্টি খাইতো না।
বাবার পাছে পাছে ঘুরতো,তেলের দোকান ডালের দোকান পিঁয়াজ রসুন শব্জিসহ মাছের
দোকানে আনু সাথেই থাকতো।নতুন জুতা বা শার্ট প্যান্ট মাঝে মাঝে কিনে দিতো কইতো।
বাবার কাছে সব সময় টাকা থাকতো না তাই, অনেক সময় কিনে দিতেও পারতো না।আনু
গুনগুন করে কাঁদতো বাবায় তখন কইতো আর এক হাটে এসে আরো সুন্দর দেখে কিনে দিমু।
তখন আনু কান্না থামাতো।আসতে পথে নানান কিছু জানতে চায় আরো নানান রকম কথা
কইতে কইতে বাড়ি আসে।
বাড়ি আইসা মায়ের কাছে বাবার নামে শত অভিযোগ করে তখন মায়ে মুচকি মুচকি হাসে
আর বাহানার রাগ করে কয় তোমার বাবাকে বকে দিমুনি।তখন আর কিছু কইতো না।
এক উৎসবের হাটে গেলো আনু,যা যা চায় একে একে সব কিনে দেয় আনুর বাবা।এদিক
সেদিক এখানে সেখানে নিয়ে যায় নানান কিছু দেখায় নাগর দোলায় উঠায়, বাড়িতে ফিরে
আসবে তখন রাস্তার পাশে এক জন লোক বসে বসে একটা বাঁশি বাজাচ্ছে, বাঁশি দেখে আনুর
পছন্দ হলো তাকে বাঁশি কিনে দেওয়ার জন্য আবদার করে কিন্তু আনুর বাবায় কয় এটা
পাতার বাঁশি বাড়িতে নেওয়ার আগের নষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু আনু মানে না শোনে না কথা তখন
পাঁচ টাকা দিয়ে একটা বাঁশি কিনে দেয়।
বাঁশি বাজাতে বাজাতে হাঁটছে আর বাড়ির দিকে আসছে মাঝে মাঝে খুশিতে তাকে নাচতেও
দেখা যায়। বাবার কাছে তার হাতে যা যা ছিলো একে একে সব দিলো আর বাঁশি বাজাতে
লাগলো। বাড়ির কাছে আসছে হঠাৎ বাঁশি বাজে না তখন বসবাকে কয় বাবায় কয় আমি
তো কইছিলাম এটা পাতার বাঁশি নষ্ট হয়ে যাবে তখন আবার কাঁদতে লাগলো, আর কইতে
লাগলো আমার পাতার বাঁশি দাও।পাতার বাঁশি নষ্ট হলে আর ঠিক হয় না। বাবায় আর কি
করবে আনুকে আবার পাতার বাঁশি এনে দেয়।
কবিতা/ছড়া
মানুষ চাই
দীপঙ্কর মুখার্জী।
মানুষ চাই, মানুষ। হরেক রকম মানুষ।
সাদা মন, নরম চোখ, আর ভিজে বুক হলেই চলবে।
তবে তাদের হাত দু'টো যেন প্রসারিত না থাকে দু'পাশে। প্রসারিত হাত শুধুই দখল চায়....
বাড়ি গাড়ি টাকা কড়ি মান সম্মান যশ খ্যাতি প্রতিপত্তি....
ঐ প্রসারিত হাতে রক্তের দাগ লেগে থাকে....
তার চেয়ে ভালো হাত দু'টো না হয় জোড় করেই রাখা থাকবে ছাতির ওপরে। ডাক্তার বাবু যেখানে কল লাগিয়ে দেখেন.... মানুষটা জ্যান্ত, না মড়া।
ঐ হাত দুটো জন্মদিনের মতই মুঠো করা হলেও চলবে, বজ্র কঠিন প্রত্যয় ভর্তি মুঠো নীল আকাশে তুলে ধরা। মানুষের পাশে দাঁড়াবার প্রত্যয় নিয়ে গোটো করবো রাশি রাশি মানুষ।
সে মানুষেরা বলবে আমার মা'য়ের কথা, দেশের কথা, দেশের ব্যাথা আর যন্ত্রণার কথা। হাত জোড় করে বলবে, মা আমরা তোমায় আর রক্ত ঝরাতে দেবোনা, দেবোনা তোমার গোটা স্বপ্নকে টুকরো হতে, দেবোনা তোমার ছেলেমেয়েদের আর অনাথ হতে।
বলবে দেশের সব মন্দির গুলোকে হাসপাতাল বানাবার গল্প, সব মসজিদ গুলোকে স্কুল বানাবার গল্প, সব গুরুদ্বার গুলোকে শষ্য ভান্ডার বানাবার গল্প, সব থানা গুলোকে অ্যাম্পিথিয়েটার বানাবার গল্প।
যে গল্পের পালকি চড়ে তুমি যাবে করিম চাচার বানানো হাতপাখার হাওয়া খেতে, গণেশ কাকুর বাড়িতে ঈদের কোলাকুলি করতে, গুরপ্রিতের খামারে সোনালী গম আনতে, কীরথানার বাড়িতে নবান্নের পায়েস রাঁধতে।
আর আমরা, মা তোমার শ'য়ে শ'য়ে হাজারে হাজারে ছোট্ট ছোট্ট 'বীরপুরুষ' আর 'ক্ষুদিরাম'-এর দল 'সুভাষ'-এর ঘোড়ায় চেপে যাবো মা তোমার পাশে পাশে।
আর একদম সামনে থেকে আমাদের পথ চিনিয়ে ভারতভ্রমন করাবে 'নরেন' আর 'কালাম'।
আমরা তোমাকে নির্ভয়ে ঘোরাবো মা সমস্ত নদী পাহাড় আর সবুজ গ্রাম।
ফলাফল
রোমানুর রোমান
ভালো খারাপ মেডিয়াম
কেউ পাবে না রেডি আম
কেমনে খাবে বলো?
আসল কথা বুঝতে হলে
জলদি করে চলো।
আমরা কজন গাঁধা, আর
নিজের দোষে ভুল করে দেই
দোষটা ঘাড়ে দাদার।
ভাগ্য তবে আছে বটে
কর্মফল ও গুণে,
আশা যেটা পায় না সেটা
মনে গুনে বুনে।
কেউ খুশি আর কেউ দুখি এই
ফলাফলের জন্য,
কেউবা ঘুরে হণ্য হয়ে
কেউবা নামে ধন্য।
হোক না যেটাই শুকর করে
বাড়াই মনোবল
ভবিষ্যতে পেয়েই যাবো
আসল ফলাফল।
স্বাধীন
শৌভিক কার্য্যী
রাজা আজো চাবুক হাতে,
নির্বিচারে করছে শাসন ।
তোমরা যাকে ভুল ভেবে
বলছো ভাষণ !
ধর্ম যখন রক্ত ঝরায়,
জনসাধারণ পালায় ডরায় ।
বাকরুদ্ধ ঘরে বসে,
তুমিও কি ফুঁপছ রোষে !
তোমরা যাকে স্বাধীন বলো,
চোখ মেলে এবার দেখবে চলো ।
কি ভাবছো ?
এখনো হয়নি দেড়ি !
পিছনে ফিরে দেখো তোমার
পায়েও পরানো বেড়ি ।
খুকুর যে আজ মন খারাপ
সব্যসাচী নজরুল
প্রখর তাপ ও গরম মাঝে
বর্ষা এলো আষাঢ়ে
ঝুপঝুপাঝুপ বৃষ্টি ঝরে
ভিজল খুকুর বাসা রে।
চাদর বালিশ শীতল পাটি
ভিজল নকশী কাঁথা রে
গাঁয়ের বধূ, পাখপাখালি
ভিজল গাছের পাতা রে।
টবের গোলাপ খুকুর টিয়া
গাঁদা ফুলের পাতা রে
রংপেন্সিল ছড়ার বই আর
ভিজল আঁকার খাতা রে।
টিনের চালের ফুটো দিয়ে
চুপচুপিয়ে পানি পরে
খুকুর যে আজ মন খারাপ
বসে আছে রাগ করে।
স্বাধীনতা
ডাঃ সঞ্জয় কুমার মল্লিক
স্বাধীনতার মানে জানতে চাও?
অন্ধকারের বুক চিরে বেরিয়ে আসা আশার আলোর নাম স্বাধীনতা।
মানুষের জীবনের মৌলিক অধিকারের নাম স্বাধীনতা।
মানুষের জীবনের সমমূল্যের নাম স্বাধীনতা।
স্বাধীনতার মানে জানতে চাও?
একবার জিগ্যেস করে দেখতে পার সেই সব অতৃপ্ত আত্মাদের-
যারা দেশের জন্য ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দিয়ে গেল!
যারা সেলুলার জেলের কুঠুরিকে জীবনের শেষ আলোটুকু দিয়ে আলোকিত করে গেল।
যারা স্বাধীনতা সংগ্রামীর খাতায় নাম না তুলেও প্রাণ দিয়ে গেল!
স্বাধীনতা মানে জানতে চাও?
স্বাধীনতা মানে-
বিভেদহীন এক জাতিস্বত্তা।
সবার জন্য সমান আইন।
সবার জন্য হবে কর্মসংস্থান।
গ্রাম-শহরের ব্যাবধানহীন সম সুযোগ-সুবিধা।
আমি-তুমি একাকার,
ভারত আমাদের দেশ,
আমাদের একটাই নাম-আমরা ভারতবাসী।
সৈনিক-ভাই
মাথুর দাস
সৈনিক-ভাই দৈনিক তুমি অতন্দ্র প্রতি পল
দেশরক্ষার পরম ব্রতে কর্তব্যে অবিচল,
ভারত আমার মহান ভারত চির-উন্নত শির
পেয়েছে যখন তোমার মতন দৃপ্ত-চিত্ত বীর ।
সৈনিক-ভাই দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক তুমি
দৃঢ়-শপথে শৌর্যের পথে বাঁচাও মাতৃভূমি,
সৈনিক-ভাই সই নিক তবে দেশভর ভালোবাসা
জড়িয়ে রয়েছে তোমার সঙ্গে স্বপ্ন-মেশানো আশা ।
সৈনিক-ভাই সয়ে নিক যত দুঃখ কষ্ট জ্বালা
সৈনিক-ভাই তোমার গলায় পরাবো বিজয়মালা,
সৈনিক-ভাই স্বজন তোমার সবাই থাকুক সুখে
বিঘ্ন-বিপদ শত্রু-শ্বাপদ জয় করো হাসিমুখে ।
সৈনিক-ভাই জন্ম সফল তাই তোমাদের পেলাম,
ভালোবাসা আর শুভেচ্ছা দিয়ে জানাই লাখো সেলাম ।
মা
আশীষ দেব শর্মা
মা-তুমি কি বলতো,এতো কথা শোনো আমার জন্য,
সবাই ঘুমোচ্ছে-দেখছ তো,কত রাত বলে মুখান্ন দেওয়ায় তুমি ধন্য ।
রাগের মাথায় কত বকি,কষ্ট পাও তবু তোমার সজাগ আঁখি,
মোদের কথায় যত লাথি,গর্ভস্থ যন্ত্রনার কথা চর্চায় তোমার সখি ।
মোদের স্বপ্ন যত আছে, তা তুমি কর পূরণ ,
অন্তর দৃষ্টিতে বিপদ বুঝে,কোথাও যেতে কর বারণ ।
মোদের কষ্ট আর শুকনো মুখ জেনো তোমার ভগ্ন পাজর,
দুনিয়ার মুখ দেখাতে,অর্ধভুক্ত ছিলো মাগো তোমার উদর ।
কত কষ্টের সাক্ষী পৃথিবীর যত সব মা,
বয়স শেষে বৃদ্ধাশ্রম ঠাইয়ে মনে জোটে ঘা !
"আমি চাই"
আসিফ আলী
না,আমি প্রেমের জন্য প্রিয়া চাইনা,
আমি চাই আমার একটা তুমি।
যে তুমিতে থাকবে হাসি মুখ,
যার মাঝে খুঁজবো আমি হারিয়ে যাওয়া সুখ।
যার কথায় সকাল হবে
নেমে আসবে সন্ধ্যা,
রাত পোহাবে হবে ভোর
জাগিয়ে দেবে মনের জোর।
না,আমি প্রেমিকা চাইনা,
আমি চাই এমন একজন কেউ
যার মধ্যে ছড়িয়ে রবে ভালোবাসার ঢেউ।
যার ছোয়ায় থাকবে জাদু,
থাকবে একটু রাগ।
বলবে আমায় দুষ্টু সোনা
এবার তুই ভাগ।
একটু পরে রাগ কমলে
বলবে আমায় হেসে,
ছুইয়ে দেবো আমার ঠোঁট
তোমায় ভালোবেসে।
জিয়নকাঠি
শ্যামল কুমার রায়
প্রশংসাটা খুব ভাইটাল,
সবার কাছে।
এমনকি ব্যর্থ, হতাশাগ্রস্থ
মানুষটার কাছেও।
এই সেদিনও মুখ ঘুরিয়ে
ঘুরত পথে, ঘাটে।
দেখা হলেই -
সেই চেনা, দায়সারা জবাব
ভালো তো?
সৌজন্যের মোড়কে -
লুকিয়ে ফেরা।
কোথাও যেন টোল খেয়ে গেছে
আত্মবিশ্বাস।
আসলে সবই দশা, অন্তর্দশার-
সাড়ে সাতি যোগ।
জ্যোতিষীর ঘরে ঘুরে ঘুরে -
হদ্দ, শ্রান্ত,ক্লান্ত,অবসন্ন।
অথচ জটে আটকে থাকা-
যোগ? আজ বাস্তবায়িত।
খোটা দেওয়া মানুষগুলো
আজ কেমন চুপসে গেছে।
আর যারা ডরায় না?
সাদা কে সাদা, কালো কে কালো বলতে?
স্মিত হেসে বলে-
সাবাশ! সাবাশ! সাবাশ!
কিন্তু, অসময়ে?
চাই সুহৃদ।
সত্যি, সত্যিকারের সুহৃদ।
ছোট্ট প্রশংসা যেন কুলোর বাতাস
বাঁচার জিয়নকাঠি।
মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন শ্রাবণ সংখ্যা ১৪২৬ দ্বিতীয় পর্ব
No comments:
Post a Comment