বাইরের গেটে সাইকেলের শব্দ হতেই বছর চারেকের রাজু এক ছুটে ঘর থেকে উঠোনে এসে দাঁড়ায় । রতন গেট খুলে সাইকেল নিয়ে ভেতরে আসতেই ছোট্ট রাজু বলে ওঠে -- বাবা, মা কালকে সারারাত বাড়ি ফেরেনি । একথা শুনে রতন তাড়াতাড়ি সাইকেল রেখে অবাক হয়ে ছেলেকে প্রশ্ন করে -- মা কখন বেড়িয়েছে আর কোথায় গেছে তুই জানিস ? ছেলে পরিষ্কার জানায় -- না তো বাবা !
রতন পেশায় ড্রাইভার। একজন মালিকের গাড়ি চালায় সে । গতকাল বিকাল পাঁচটা নাগাদ মালিককে নিয়ে শিলিগুড়ি গিয়ে আজ সকাল সাতটায় বাড়ি ফিরে এসে শোনে এই দুঃসংবাদ। কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে মাকে প্রশ্ন করে -- মীনা কোথায় গো মা ? কি হয়েছে গো ?
মা -- কাল তুই বের হওয়ার ঘন্টা খানেক পর বৌমা বের হয় , বলে একটু কাজ আছে , আসছি। তারপর আর আসেনি । তুই একটু খোঁজ কর না বাবা , কি হল ? আমার মোবাইলটা তো নষ্ট হয়েছে কয়েক দিন হল , তাই তো তোকে ফোন করা গেল না ।
ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে যায় রতন। নিজেকে একটু সামলে নিয়ে এবার একে একে আত্মীয় স্বজনদের কাছে ফোন করে সে । কিন্ত কোনও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেই তো মীনা যায়নি । এমনকি বাপের বাড়ির লোকও তো কোনও খোঁজ খবর জানে না ওর । এবার কি করবে ও ! কিছুই বুঝে উঠতে পারে না ।
কোথায় যেতে পারে ভাবতে গিয়ে মনে পরে ওদের পাড়ারই একটি বাড়িতে মীনা মাঝে মাঝে যেত । ঐ বাড়ির মেয়েটির সাথে মীনার বন্ধুত্ব ছিল। আর একথা মীনার মুখেই শুনেছিল ও । তাই আস্তে আস্তে পা বাড়ায় ঐ বাড়ির দিকে । ওদের বাড়িতে গিয়ে শোনে -- ঐ মেয়েটির দাদার সাথে গতকাল মীনা পালিয়ে বিয়ে করেছে । ঐ বাড়িতে ওদের ঢুকতে দেয়নি । মুহুর্তে ওর পায়ের তলার মাটি যেন নড়ে ওঠে । ওদের এই সাত বছরের সংসারের কত স্মৃতি সব চোখের সামনে ভেসে ওঠে । আর ওর ছোট্ট ছেলে রাজুর কথা ভেবে দুচোখ জলে ভরে ওঠে । বাড়ি ফিরলেই ছোট্ট রাজুর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ভেবে , পা যেন ওখানেই শক্ত হয়ে আটকে আসে । নিজেকে একটু সামলে নিয়ে পা বাড়ায় বাড়ির দিকে । নিজের সাজানো সংসার ছেড়ে কি করে মীনা চলে গেল আর কেনোই বা নিজের সন্তানকে এত কষ্টের মধ্যে ফেলল কিছুই যেন বুঝে উঠতে পারছিল না রতন। বাড়ি এসে মাকে সব জানায় সে । ছোট্ট রাজু বারংবার প্রশ্ন করে জানতে চায় ওর মা কোথায় ? কিন্ত কোনও উত্তর নেই ওর । এবার সে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে বিয়ে করে জলপাইগুড়ি শহরেই একটি ঘর ভাড়া নিয়ে আছে ওরা ।
এবার শুরু হয় রতনের নতুন লড়াই। ছোট্ট রাজাকে বোঝাতে হয় ওর মা আর আসবে না । আর ছেলের সবকিছুই খেয়ালও তাকেই রাখতে হয় । বৃদ্ধা মায়ের দেখাশোনার দায়িত্ব তো ওর আছেই। এভাবেই চলে রতনের ছোট্ট সংসার -- মা আর রাজুকে নিয়ে । সময়ের সাথে সাথে ছোট্ট রাজুও বেড়ে ওঠে বাবা আর ঠাকুমার সহচর্যে। কিন্ত ওর মা আর ফিরে আসে না ওদের জীবনে । আস্তে আস্তে মায়ের স্মৃতির আবছা হয়ে আসে রাজুর জীবনে । রাজু আজ অনেকটা বুঝতে শিখেছে । ভালো রেজাল্ট করে , বড়ো হয়ে বাবার পাশে দাঁড়াবে এই আশায় গভীর মনোযোগী হয়ে ওঠে পড়াশোনায়। এভাবেই রাজু প্রতি বছর ভালো রেজাল্ট করে , আজ মাধ্যমিকের দোরগোঁড়ায় দাঁড়িয়ে ।
এদিকে বিয়ে করে চলে যাওয়ার কয়েক মাস পরেই রাজুর মা অনুভব করে তার ভুল। কিন্ত ফিরে আসার কোনও পথই যে আর খোলা নেই। ক্ষণিকের ভুলের কারণে নিজের সন্তানের সামনে এসে দাঁড়ানোর মুখ যে তার নেই। তাই সে মাঝে মাঝে এসে গোপনে দূর থেকে ছেলেকে একবার চোখের দেখা দেখে যায় । ছেলে তা বুঝতেও পারে না ।
আজ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন। বাবা , ঠাকুমার আশীর্বাদ নিয়ে রাজু পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় । দেখতে দেখতে পরীক্ষা শেষ হয়ে প্রায় তিন মাস অতিক্রান্ত। টিভিতে ঘোষণা করা হচ্ছে রেজাল্ট আর প্রথম দশজন স্থানাধিকারীর নাম। রতন আজ সকাল থেকেই কাজে না গিয়ে টিভির পর্দায় চোখ রাখে -- কখন রেজাল্ট বের হবে আর তারপরেই ওর ছেলের রেজাল্ট সে জানতে পারবে ।
অবশেষে আসে সেই ক্ষণ ! প্রথম থেকে দশম স্থানাধিকারীর নাম ঘোষণা চলছে । নবমে এসে রতনের চোখ আটকে যায় । এ যে রাজুর নাম ই দেখছে আর শুনছে ! যুগ্মভাবে নবম হয়েছে রাজু । কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন আসা শুরু হয় রতনের। আর মুহুর্তে সাংবাদিকরা এসে উপস্থিত হয় তার এই ছোট্ট বাড়িতে । চলে ছবি তোলা , মিষ্টি মুখের পালা । আর সকলেই রাজুর সাথে কথা বলতে চায় । আর রাজু হাসি মুখে সকলের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকে । সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজু জানায় তার অনুপ্রেরণা হল তার বাবা আর ঠাকুমা । অনেক কষ্ট করে তাকে তার বাবা মানুষ করেছে । আর মায়ের অস্তিত্ব তার জীবনে নেই।
টিভির পর্দায় আজ যখন রাজুর সাক্ষাৎকার চলছে তখন গর্বিত হওয়ার বদলে তার মা নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে চেয়ে থাকে টেলিভিশনের পর্দায় ।
শত্রু নাশ
মনোমিতা চক্রবর্তী
শত্রু কত রকমেরই না হয় ।আমার তিরিশ বছরের জীবনে যেমন অনেক বন্ধু পেয়েছি ,তেমনি শত্রু সংখ্যা ও কিন্তু কম নয়। যতবার শত্রুর মুখোমুখি হয়েছি,শত্রুদের এড়িয়ে গেছি।
কিন্তু এবার যে শত্রুর পাল্লায় পড়েছি একে দেখছি এড়িয়ে গেলে চলবে না ।
না একদম এড়িয়ে গেলে চলবে না।মাঝে মাঝে তো মনে হয় ওকে ডেড বডিতে পরিণত করে দিই ।কিন্তু মুশকিল হলো এই শত্রুটি বেশ চালাক চতুর গোছের ।দেখা হলেই চোখে চোখ পড়তেই কেমন যেন আমায় বোকা বানিয়ে নিমিষে উধাও হয়ে যায় ও।
আমি যে বদলা নিতে চাই এটা হয়তো ও বুঝে গেছে, তাই হয়তো আমাকে দেখলেই প্রত্যেকবার পালিয়ে বাঁচে।
আমি আজীবন নিরীহ গোছের ছেলে। কারো সাতে পাঁচে বিশেষ থাকি না ।সেখানে কিনা আমি মনে মনে কাউকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছি !এটা ভেবে আমি সত্যিই অবাক হয়ে যাই ।
তবে একটা ঘটনার পর আমি বুঝেছি যে অপমান এবং শত্রুপক্ষের বাড়াবাড়ি কোন পর্যায়ে গেলে একজন নিরীহ ব্যক্তিও কাউকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে পারে।
কি ভাবছেন তো,কি এমন ঘটনা ?
তবে শুনুন ।
তিন মাস হয়েছে বিয়ে করেছি ।ঘরে এসেছে আমার ডানা কাটা সুন্দরী ,কচি বউ ।
জানি ,আমি অতটা দেখতে সুন্দর নই।তবে আমার স্ত্রী ভাগ্য নিয়ে অনেকেই আমায় ঈর্ষা করেন ।তাদের ঈর্ষার ব্যাপারটা আমি পরিষ্কার বুঝতে পারি।
অনেক বন্ধুই আমার স্ত্রীর সাথে আলাপ করতে ,একবার হাত মেলানোর ছলে আমার স্ত্রী কি ছুঁতে উদগ্রীব হয়ে থাকে। যেটা আমার একদম পছন্দ না।
কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারি না তাদের ।
স্ত্রীকেও সবটা খুলে বলতে পারিনা ।পাছে ও ভুল বোঝে আমায়, এই চিন্তায় ।
বললাম যে সবে বিয়ে হয়েছে আমাদের ।দুজন দুজনকে বোঝা এখনো ঢের বাকি ।
আমি স্বয়নে ,স্বপনে সব সময় শত্রুকে মারার পরিকল্পনা করছি।
আসলে আমার শত্রু যে সাহসটা দেখিয়েছে না, সেটা জাস্ট সহ্য করা যায় না।
তার সাহসের কথাও বলছি শুনুন।
আমি তো বললাম আমার স্ত্রী একেবারে ডানা কাটা সুন্দরী পরী।তাকে দেখে পাগল হয়ে যায় প্রায় সকলেই। তো এই শত্রু করেছে কি ,সেদিন চুপিচুপি আমাদের বাড়িতে এসে হাজির ।
সেদিন অবশ্য বাড়িতে আমি ছিলাম না।
বাড়ি ফাঁকা দেখে ভীষণ সাহসী হয়ে গিয়েছিল শত্রুটি সেদিন ।
এমন সাহস ওর যে ও সোজা চলে গেছিল আমাদের বেডরুমে। বেডরুমে গিয়ে আমার ঘুমন্ত সুন্দরী ডানা কাটা স্ত্রীকে দেখে ওকে ছোঁয়ার লোভ সামলাতে পারেনি। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন ও আমার স্ত্রীকে চুম্বন করেছিল।
আর এমন চুম্বন করেছিল যে চুম্বনের জ্বালায় আমার স্ত্রীর ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল ।বেচারার কাঁচা ঘুম ভাঙলে এমনি বিরক্ত হয় তার উপর মুখ ধুয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতে দেখে ওর বাঁদিকের ভ্রুটা কেমন যেন বিশ্রী রকম হয়ে গেছে ।
আমি বাড়ি ফিরতেই আমার সুন্দরী কচি বউয়ের কি কান্না !
যেমন করেই হোক যে তার এই অবস্থা করেছে তাকে শাস্তি দিতেই হবে এবং প্রতিশোধ আমাকে নিতেই হবে।
সেই থেকে তক্কে তক্কে আছি ।ব্যাটাকে ধরে আচ্ছা সে শাস্তি দেবো। শাস্তি মানে মেরেই ফেলবো ওকে ।মেরে ওর ডেড বডি আমার স্ত্রীর পায়ের কাছে ফেলে দেব ।নাহলে আমার নামটাই পাল্টে দেবো বলে প্রতিজ্ঞা করেছি।ব্যাটার এত বড় সাহস ,আমার স্ত্রীকে চুম্বন করে। ওর মুখের বারোটা আজ বাজাবো আমি ।দারা তোকে দেখাচ্ছি মজা।
হ্যাঁ ঐ তো ব্যাটা বারান্দার কোনাতেই লুকিয়ে আছে মনে হচ্ছে। ভেবেছে আমার স্ত্রী ঘুমাচ্ছে এই সুযোগে যদি আজও কিছু করা যায়।
ওতো আর জানেনা আমার স্ত্রী আজ বাড়িতে নেই, বাজারে গেছে।
আমি ইচ্ছে করে টিউবলাইট টা অফ করে নাইট বাল্ব জ্বালিয়ে রেখেছি। আর সাথে দরজাটিও খোলা রেখেছি, যাতে সহজে আমাদের বেডরুমে ঢুকতে পারে ।
আমি দরজার আড়ালে লুকিয়ে ওর কান্ড দেখছি ।
ও কখন ঘরে ঢোকে এই অপেক্ষায় আছি।
ওকে মারার জন্য অস্ত্র টাও হাতে নিয়ে নিয়েছি।
ভাগ্যিস আমার স্ত্রী আজ বাড়িতে নেই। না হলে এই দৃশ্য দেখলে ও ভয় পেয়ে যেত আর কি।
একি, এখানেই তো ছিল। এক্ষুনি কোথায় গেল ?
আলোটা জ্বালানোর পরেই উধাও হয়ে গেল নাকি?
আলোটা জ্বালালাম কারণ শিওর হতে হবে তো? ওকেই যে মারবো আমি।
যদি ভুল করে অন্য কোথাও অস্ত্র চালাই, এই ভয়ে আলোটা জ্বালিয়েছিলাম আর কি ।
তা ব্যাটা আচ্ছা বদমাশ দেখছি তো।
বিচ্ছুও বটে !
ঐ তো আবারও দেখলাম মনে হল। ওই তো ওই দিকটাতেই তো রয়েছে ঘাপটি মেরে ।
বাড়ির কেউ দেখছে নাকি আমায় এই ভেবে মুখটা ফেরাতেই আবার দেখি শত্রু টি উধাও।
কিছুক্ষন বাদে আবারো একঝলক দেখলাম মনে হলো মুহূর্তের জন্য মনে হল আমি ভুল দেখছি নাতো ?অমনি বুঝলাম না ভুল দেখিনি, সন্ধ্যার নিস্তব্ধতায় তার আসার শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছিলাম। এবার আমি নিশ্চিত ওই ব্যাটাই আসছে এদিকে।
আর কোন সন্দেহ রইল না। এবার তাকাতেই দেখি ব্যাটা একা নয়। আজ আবার সঙ্গী নিয়ে এসেছে একটা।
বুঝে গেছি আজ আমার হাতে ডবল মার্ডার হবে।
এই দাঁড়া বিচ্ছুর মহা বিচ্ছু তখন থেকে ব্যাটা আমাকে বিরক্ত করেই ছাড়ছিস।তবে এইবার হাতের অস্ত্র না মানে হাওয়াই চটিটা দিয়ে শত্রুকে এবং শত্রুর সঙ্গীকে এমন মার মারলাম যে ব্যাটারা দুজনেই কুপোকাত। মানে একদম ডেড বডি।
আমার মুখে তখন শান্তির হাসি ।
ডেড বডি দুটো নিয়ে অপেক্ষায় বসে আছি ।কখন আমার স্ত্রী আসবে আর তার শত্রুদের মানে মৃত আরশোলা দুটো তার পায়ের সমর্পণ করব।
একটা খাস্তা কঙ্কাল
প্রদীপ কুমার দে
সন্ধ্যাবেলায় লোডশেডিং হয়ে গেল। প্যান্ট জামা গায়ে সেঁটে বেড়িয়ে পড়লাম। হঠাৎই যেন সব কালো অন্ধকারে মুড়ে গেল। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কয়েক পা এগিয়েছি, পিছন থেকে ডাক এলো,
-- কি প্রদীপবাবু রাগ করেছেন ?
ঘুরে দেখি পিছনে কাকের মতো চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে নিলয়দা। উনি আমার প্রতিবেশী এবং লেখালেখি করার সুবাদে ঘনিষ্ঠ। কিন্তু ওনার ব্যবহার এযাবৎ আমাকে ভীষণই পীড়া দিত তাই এড়িয়ে চলতাম। একবছর ধরে এড়িয়ে চলছি ওনাকে আর অবশ্যই উনিও আমাকে। উনি পিছুডাক দিয়েছেন, আমি উত্তর দিয়েই দিলাম,
-- এ বয়সে আর রাগ?
-- তাহলে চলেন না আমার ঘরে, বসে আমি আর আপনি মিলে কবিতা আর গল্প পাঠ করি ?
-- এই লোডশেডিং অন্ধকারে আলো কোথায় পাবেন?
-- আপনার সাথে অনেকদিন পর দেখা হল তাই জানেন না, আমি একটা এমার্জেন্সি লাইট কিনেছি। অসুবিধা হবে না।
-- কি বলেন ? এমার্জেন্সি আলো? তাতে কি হবে?
-- প্রচুর আলো। কোন অসুবিধা হবে না, বলছি তো। নচেৎ অন্ধকারে কোথায় যাবেন?
কথাগুলো বলে দাঁত বার করে হাসলো নিলয়দা।
চললাম ওনার সাথে। ঘুটঘুটে অন্ধকার কাটিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম। উনি ঘরে আমাকে নিয়ে ঢূকেই দরজায় চিটকানি দিয়ে দিলেন। ঘরের মধ্যে ঢুকতেই কিরকম একটা পচা গন্ধ নাকে এল। আমি বললাম,
-- নিলয়দা আগে লাইটটা জ্বালান।
-- হ্যাঁ এই যে …
আমি একপাশে অপেক্ষায়। লাইট কই। একটু অন্ধকার সহ্য করে নিলে যা হয় চোখ যেন কিছু দেখতে পেল। দেখি কই নিলয়দা তো নেই। ওমাঃ কি দেখছি? একটা লিকলিকে কঙ্কাল তার সরু সরু আঙুল দিয়ে একটা বই তুলে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে।
ভয়ে চিৎকার করে উঠলাম,
-- নিলয়দা? নিলয়দা?
বিকট শব্দ হল। কেমন ' হে -হে ' শব্দে নেকো সুরে হাসলো কেউ।
ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম। অন্ধকারে দরজার চিটকিনি খুঁজতে লাগলাম। মুখে রামনাম।
বরাত জোরে বেঁচে গেলাম। হঠাৎই আলো চলে এল। ঘরে আলোর সুইচ অন করাই ছিল। আলো জ্বলতেই দেখি বিছানায় শায়িত একটি লিকলিকে কঙ্কাল।
চিটকিনি খুলে পড়িমড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামছি। আওয়াজে নীচের ফ্ল্যাটের বৌদি বেড়িয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন,
-- কি ভয় পেয়েছেন তো? ইদানীং আমরা সব্বাই পাচ্ছি।
কবিতা
ছবি
মাথুর দাস
ক্লিক্-ক্ল্যাক্ তোলা ছবি
ঠিকঠাক রাখি অ্যালবামে,
ছবি তুলি হাজারো,
চাপ দিয়ে সেল-এর বোতামে ।
আঁকা ছবি রাখা থাকে
যত্নে কত যে সংগ্রহশালায়,
মায়াময় ছায়াছবি
কায়া ধরে পর্দায় ত্বরিতে পালায় ।
সকাল
দেবদত্তা লাহিড়ী
কাল আসবে বলে কথা দেয়নি কখনও।
তবু দিন কাটে তার ই অপেক্ষায়।
কালো কাটাবে বলে তার জন্ম অনিবার্য
এমন টা স্বপনকল্প নামে উড়িয়ে দিতে
স্পর্ধা দেখায় যে সেই তো রাত।
রাতের সঙ্গী পিশাচ সিদ্ধ।
আলোর ভয় লুকিয়ে আস্ফালন নিত্য।
নির্বিবাদী কীট পতঙ্গ নর্দমা থেকে উঠে এসে
পদ তলে সেলাম ঠোকে ভিড় করে বসে।
শীর্ণ নিভু আলো ক্ষমতা হারায়,
অভুক্ত হাত এগিয়ে দেয় কুয়াশার দিকে।
ডানা ছেঁটে দেবদূত সেই কুয়াশা ঘিরে হাঁটে
তার উড়ান হবেই বলে আলো হাত বাড়িয়েই রয়।
তারপর, একদিন সব অন্যরকম -
তারপর একদিন কি সকাল হয়?
নিভৃত যাপন
রীতা ভদ্র দত্ত
কবিতা আমার গহীন মনের নিভৃত যাপন
গোধুলি রাঙা মেঘতলে হরিয়ালী ক্ষেত,
ডুবুরি মনের সিন্ধু সেচন মুক্তা যেন,
হঠাৎ বৃষ্টি, কিম্বা রোদ জীবন ভর।
কবিতা শরীর, নিঁখুত গড়ন,আখর যাপন
প্রভাত বেলার শিশির শিক্ত কুন্দ কুসুম,
মেঘ মদির কোনো স্বপ্নের দেশ কবির যেন,
এক জীবনের ভালোবাসা ভরা মুক্তি ডোর।
কবিতা শায়র বর্ষা রাতের ফুলেল বাসর
দোলন চাঁপার গন্ধে আবিল মায়াবী রাত,
অভিসারে চলা শ্রীরাধিকার চপল চরণ যেন
চন্ডিকবির বিরহ-মিলনের প্রিয় পদাবলী সুর।
কবিতার সাথে দু:খ সুখের অভিমানী ঘর কন্না,
পাহাড়িয়া মেঘ ভর করে ভাসা সুখের চুনী পান্না।
সবুজের কোলে মাথা রেখেদীপাঞ্জন দত্ত
ঐখানে যাবো, আরো একবার যেতে চাই।
যেখানে ছিল নীলাভ এক খরোস্রোতা নদী।
চারিদিকে সবুজ পাহাড়।
পাহাড়ে ঘেরা জনহীন প্রান্তর।
জীবন যেখানে ধাবিত হয়, নতুন জন্মলাভের আশায়।
পাহাড়টার গায়ে দেখেছি প্রাণময়তার ছোঁয়া,
আবার সেই ছোঁয়া পেতে চাই।
আর সেই গাঢ় নীলাভ জলে ভাসিয়ে দেব আমার সব গ্লানি।
মন্দ হয় না, নিজেকে যদি না ফেরাই।
সবুজের কোলে মাথা রাখার পর
শান্তি শান্তি আর শান্তি,,,,
একাই যাবো সেই পাহাড়ের কোলে।
আমায় ডাকছে।
যেখানে সবুজে, পাগল করার মতন নিজের জীবন আঁকা যায়।
এই কোলাহলে আর থাকতে চাই না।
হে চির সবুজ!
আমি একাই যাবো তোমার কাছে।
সন্ধ্যা আসিছে মন্দ মন্থরে
দেবযানী সেনগুপ্ত
নিরালা নিঝুম চা বাগিচা
কথকতা বুনে চলে।
শান্ত দিঘির স্তব্ধ জলে
অতীতের স্মৃতি ভাসে।
দিকচক্রবালে সূর্য তখন
অস্তাচলের পথে ,
একলা পথিক ঘরে ফিরে চলে
ক্লান্তির গান গেয়ে।
বৃষ্টি গাছেরা চারপাশ ঘিরে
স্তব্ধ প্রহর গোনে ,
পাখি- পাখালির কলরব ওঠে-
পাতার আড়াল থেকে।
আকাশের কোণে দূরে উঁকি দেয়
সাজবাতির রূপকথা।
জনহীন বাড়ি স্বজনবিহীন
একা একা দিন গোনে !
সন্ধ্যা আসছে ধীর লয়ে তালে-
মন্দ-মধুর তানে,
দূর দিগন্ত সুর তোলে আজ
পূরবীর রাগিনীতে।।
তুমিও দেখোনি ! আমি জানি সারণ ভাদুড়ী
হ্যাঁ ,তুমিও কেঁদেছো !
আমি দেখেছি!
কপল বয়ে নেমে আসা তোমার চোখের নোনা ।
- তুমিও ভীত !
আমি দেখেছি!
নরকের কিট যারা তোমায় তিল তিল করে মেরেছে ,
- না আমিও দেখিনি মূর্চ্ছে যাওয়া আমার মায়ের মুখ
তুমিও দেখোনি ,আমি জানি ।
মরতে গিয়ে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছো
তোমার সব গুনগুলো...
মাটিতে বসেছো ভিক্ষা পাত্র নিয়ে ।
" রাজ লক্ষ্মী আজ ভিক্ষা পাত্র নিয়ে!"---
একি শোভা দেবে?
আমি তো সেদিন ই চলে গিয়েছিলাম যবে,
ভীত তোমায় কাঁদতে দেখেছিলাম ।
আমি তো সেদিন থেকেই মৃত যবে,
তোমায় টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়তে দেখেছিলাম...।
দাগ
শ্রেয়সী সরকার
ভোরের আলো অনেক দূরে চক্রবৃহের কানন তখনো আঁধার ,
তারা খসে যাবার অপেক্ষা শুধু মাত্র
আমি রাতকানা পাখি , কদম ফুলের গন্ধে বিভোর।
সুরের সুবাসে , ব্যস্ত ট্রামলাইনএ জলনুপুরের শব্দ শুনতে !
অবিরত বৃষ্টিধারার মত নৃত্য পরিবেশন
আমার জীবন পাতায় একে ওঠে তোমার ভঙ্গিমা ,
ঝিমিয়ে পড়ে যাচ্ছি , হটাত বানভাসি আসে ,
কোথায় কখন বুঝে উঠতে পারিনি!
চিত্রিত সেই পত্র ছিন্ন ভিন্ন ,
রক্তের ফোঁটার মত , বয়ে গেছে বহুদূর
আমি এক নতুন জলসা ঘরের পথে
অজ্ঞান চৈতন্য , তবু ফেলে আসা দাগ খুঁজে বেড়ায়।।
পাহাড়ি নদীর রূপকথা
এস,সাহা (সঞ্জয় )
তিস্তা, আমাকে কি তোমার মনে আছে ?
মনে না থাকারই কথা ।
তোমার কাছে থেকে কবেই চলে এসেছি কোন শৈশবে!
অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি কর্মব্যস্ততার যান্ত্রিকতায়।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার কি জানো!
যখন ওই পাহাড়ি নদীর জীবন ই আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে।
একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেই তোমার কথা মনে পড়ে।
তোমার কথাটা মনে পড়াটাই আমার কাছে হয়ে ওঠে, চাবাগানের বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার মত।
শহর ছেড়ে অনেকটা দূর পাহাড়ি পথে ছোট্ট কুঠির ছায়া আসতে থাকে পাথুরে নদীর ধার বেয়ে।
টোটো আদিবাসীরা গুটি কয়েক কুঠির শুকনো পাতায় ছাইতে থাকে....
অন্তরে গভীর ভালোবাসা আর পাহাড়ি বনলতা চারিদিকে ভাসে বনপক্ষীরা ডাকে কোমল সুরে।
গাঁয়ের মরদ হাঁড়িয়া খেয়ে বাড়িতে করে মাতলামি,
বধূরা চলে চায়ের বাগানে পিঠে সাজি নিয়ে চা পাতা তুলতে...
শ্রাবণের ধারা বাগানে সবুজ পাতায় ভরা
কোমল হাতে ছেঁড়ে দুটি পাতা একটি কুড়ি সযত্নে তুলে রাখে পিঠে বাধা ঝুড়িতে ।
চারিদিকে জনহীন, বাড়ি ফেরার তারা!
বিজলি আকাশে চমক দেয় এসে!
কত সোনালী রোদ্দুর, বসন্তের কত উতল, মাতাল মধুর হাওয়া, কত রঙের পাহাড়ি প্রজাপতি ওড়া কমলা বিকেল।
সবুজ পাইন গাছের সতেজ, সজীব নিঃশ্বাস।
জোৎস্না রাতের পাহাড়ি নদীর রূপকথা।
উন্মত্ত
অজয় অধিকারী
অশ্রাব্য কুটিল স্বপ্নেরা অদম্য,
রক্তচোষা লোভাতুর স্বাপদের লালায় ঝরে পড়া বিষের ঘ্রানে মত্ত,
উন্মত্ত চেতনারা সব,
সায়ানাইড এর বাস্পে বিভোর।
পদাতলে আরাধ্যার সৃষ্টি মাড়িয়ে,
উন্নয়নের সড়ক ধরেছে,
খামখেয়ালি মনন আর মোহো লাভের তারি,
ছেঁড়া একটা জামা,
আর তার ছেঁড়া বুক পকেট, উঁকি দিচ্ছে ছেঁড়া হৃদপিন্ড,
উচ্চতার নেশায় বুঁদ লালিত্য বিহীন সেই হৃদপিন্ড,
শিরায় শিরায় তার উন্মত্ততা।।
সর্বগ্রাসী কুহেলিকার লিপ্সায়
আমাজন ও হয়েছে নিশ্বেস,
আর কত, আর কত তার উদ্যোম!
সর্বহারা ভবঘুরের দলে পা মিলিয়েও, চেতনারা চির উন্মত্ত।
উন্মত্ত উন্মাদ সেই কবি,
সলিল সমাধি প্রাপ্ত ডুবোজাহাজের গোপন কক্ষে বসেও,
স্বপ্নরা তার অদম্য,
নাছোড়বান্দা সে অশরীরী,
চেতনারা তবু উন্মত্ত!!!
ফিরে আয়
চন্দ্রানী চৌধুরী
আকাশে তারাদের ভিড়ে খুঁজে চলেছি অবিরাম
মনে পড়ে সেই ‘রান্নাবাটির দিন’
একসাথে পথচলা ভালোবাসা কথা বলা
শেষ হল আজ
একদিন ছিল আমাদের সোনাভরা মেয়েবেলা
তারপর
জীবনের গতি দিক বদল করলে
আজীবন ছুঁয়ে থাকার শপথ
মিথ্যে হয়ে যায়
অচেনা পথের স্রোতে হারিয়ে যায় দিশা
আয় বন্ধু ফিরে আয়
আগের মতো খানিক কাটাই খোলা ছাদে
জ্যোৎস্না রাতে দেদার খুশি ছড়াই
পাওয়া না পাওয়ার হিসেব না কষে
তুই আমি মিলে
ভেসে যাই আনন্দে , গানে, হাসিতে , খুশিতে
ভুলে থাকি দুঃখ, ব্যথা, ক্ষোভ, অভিমান ।
ত্রিভুজঅভিজিৎ সরকার
ত্রিভুজের মাথায় দাড়িয়ে রয়েছে বাবা
আমি আর মা সমতলে
আমদের বট বৃক্ষের ন্যায় ছায়া প্রদান করছে,
বাবা আস্তে আস্তে সমতলে নেমে আসছে
আমি উপরে ওঠার চেষ্টা করছি,
উপরে ওঠার চেয়ে সেখানে দাড়িয়ে থাকা বড়ো দুর্গম
মাথার উপর দাড়িয়ে থাকতে প্রতিনিয়ত এক খেলা খেলতে হয়,
সে এক মজাদার খেলা,
এই খেলায় রক্তকে জল করতে জানতে হয়।
কালের রথরীতা মোদক
খট খট শব্দ
মন্থর গতি
লাঠি হাতে হেঁটে চলে
ঠনঠনে বুড়ি এক
ঝর ঝর বৃষ্টি
কর্দমাক্ত পথ
তারই মাঝে হেঁটে চলে
লিকলিকে বুড়ি
কখনো কোমরে হাত দিয়ে থেমে যায়
নিজের জং ধরা রথখানি
পড়শীরা ফেলে যায়
কেউ হেসে গড়াগড়ি খায়
তিনি ধরবেন আজ জগন্নাথের রথ?
দূর থেকে খোল করতাল আর
হরি ধ্বনির আওয়াজ আসে কানে
এদিকে রাজপথে ভক্ত সমাগম
জগন্নাথ বলরাম আর সুভদ্রা
চলছেন আপন আপন স্বর্ণ রথে
দড়িতে টান পড়লে
ঠনঠনে বুড়ির লাঠির শব্দের মত
রথ এগোয় মন্তর গতিতে
বুড়ি থেমে গেলে রথ ও থেমে যায়
রাশি রাশি ফুল ফল
আর ভক্তের হরি ধ্বনিতে ও
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে জগতের নাথ
প্রাণপণে হেঁটে আসে তুত্তুরে বুড়ি
চারদিকে প্রহরী ,
নিষেধাজ্ঞা কড়াকড়ি
কাঁপা কাঁপা হাতে
রশি ছুঁতে চায় সে
কৃপা চায় জগন্নাথে
হঠাৎ কোথা থেকে
এক বালক আসে ছুটে
বুড়ি ছুঁয়ে দ্যায় রথের রশি
জয় জগন্নাথ ধ্বনি শুনে
কালের রথ চলছে --- গড়গড়িয়ে
ছড়া
গ্ৰাম ভালোবাসি
বিপ্লব গোস্বামী
গ্ৰাম ভীষণ ভালোবাসি
তাইতো গ্ৰামে থাকি,
ভালোবাসি গ্ৰামের মানুষ
গ্ৰামের পশু-পাখি।
গ্ৰামের মানুষ সহজ সরল
ভালোবাসি তাই,
নিঃস্বার্থ-খাঁটি ভালোবাসা
গ্ৰামের মাঝেই পাই।
ভালোলাগে গ্ৰামের মেলা
পূজা-পার্বন উৎসব,
ভালোলাগে ধামাইল আর
গ্ৰামের নৃত্য যত সব।
ভালোলাগে গ্ৰামের মাঠ
নদ-নদী আর পাহাড়,
ভালোলাগে পুষ্প কানন
নানা রঙ্গের বাহার।
ভালোবাসি গ্ৰামের কৃষ্টি
ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি,
দাগ কাটে গ্ৰামের প্রেম
ভালোবাসা আর প্রীতি।
আষাঢ় মাইসা বৃষ্টি মজনু মিয়া
আষাঢ় মাইসা বৃষ্টি আহা
ঝমঝমাইয়া পড়ে,
আমার ভাঙা ঘরে-
থালা বাসুন দিয়া ঢাকি
তবু্ও তা ঝরে।
ঘুম আসে না শুইলে পরে
বৃষ্টি ফোটা ঝরে,
মন আনচান করে-
কোথায় গেলে শান্তি পাবো
বলছি বন্ধু তরে।
জামাই আইছো ভিজছ কেন?
নাহাও আইসা ঘরে,
তোমার বাড়ি চরে-
খবর রাইখো তলায় না যেন্
বানের জলে পড়ে।
সাম্য দ্রোহ প্রেমের কবি
রেজাউল করিম রোমেল
তুমি সাম্যের কবি
চির উজ্জ্বল রবি ,
তুমি মহান
চির অম্লান।
তুমি বিপ্লবী
তুমি বিদ্রোহী
গীতিকার সুরকার উপন্যাসিক
গল্পকার নাট্যকার তুমি সফল সাংবাদিক।
তুমি গায়েন স্বরলিপিকার
প্রেমের কবি তুমি চলচ্চিত্রকার
তুমি সকল জাতির সকল ধর্মের
প্রেরণা সকল বর্ণের।
বিদ্রোহী কবি কাজী
নজরুল ইসলাম যার নাম,
চির স্মরণীয় ও বরণীয় তুমি
ভুলবেনা এ মানবজাতি তোমার নাম।
বর্ষাকালে
সালমা আক্তার চাঁদনী
বর্ষাকালে চারপাশে অথই পানির চলাচল,
কৃষকের মুখে হাসি ফসল ফলাতে বারে বল।
বছর শেষে সুখ কুড়িয়ে ঘরে তুলে সোনালী ফসল,
যা খেয়ে বেঁচে থাকে এতবড় জনবল।
বর্ষা এলে জেলে খুশি ইলিশ ধরবে পদ্মাতে,
এখন বুঝি অভাব অনটন থাকবেনা আর ঘরেতে।
জাল নিয়ে জেলে ভাই ছুটে চলে নদীর পাড়,
তার কাঁধে যে চলে বউ ঝি মা বাবা ও তার বার।
বিকেল বেলা নীল আকাশে দেখা যায় মেঘের গর্জন,
ধান তুলতে যায় বউ ঝিরা উঠুনে সব তর্জন।
দিন শেষে হাসি খুশি থাকে অসহায় গায়ের লোক,
বর্ষা এলেই অভাব মুছে আরো মুছে মনের দুখ।
আমার মা
বাবলি বর্মন
সবাই বলে ঠাকুর বড়ো
আমি বলি মা।
সবার থেকে আপন যিনি ,
তিনি আমার মা।
মা হছে সব চেয়ে আপন,
মা হছে সব চেয়ে প্রিয়।
মায়ের মতো এই দুনিয়ায়
আর আপন আমি যানি হবে না কেও।
যত ই আসুক বন্ধু বান্ধব
হবে না কেউ মায়ের চেয়ে প্রিয়।
বন্ধু তো আজ আসবে
কাল যাবে ফিরে।
মা কিন্তু কোনো দিন
আমায় একা ফেলে যাবে না ফিরে।
বন্ধু আমার শত্রু হতে পারে
মা কিন্তু কোনো দিন হবে নারে!
মা আমার মা তুমি আমার বেচেঁ থাকার
আমার এক মাএ ভরʼসা।
মুজনাই অনলাইন আষাঢ় সংখ্যা ১৪৩০
No comments:
Post a Comment