আন্তর্জাতিক কবিতায় বাঁকবদল এবং বাংলা কবিতায় তার প্রভাব ও সমকালীন সময়ে রবীন্দ্রকাব্য
রাহুল গাঙ্গুলি
ঝেড়েকেশে গৌরচন্দ্রিকা (পর্ব - ১)
:
:
ঠিক দিনদুয়েক আগে, এই বিষয়ক ১টি লাইভ অনুষ্ঠান করি ফেসবুকে।সেখানে বেশ কিছু তরুণ প্রজন্মের সন্ধানী শিক্ষার্থি বিষয়টি নিয়ে প্রচুর আগ্রহ বোধ করে এবং তা ব্যক্তিগত স্তরে, আমাকে জানায়, যার ভিতরে আমিও ১জন।যেহেতু ১টি লাইভ অডিও-ভিস্যুয়াল অনুষ্ঠানে সময়টি বড়ো নির্দিষ্ট থাকে, বেশি কিছু ব্যাখ্যা করা যায় না।সুতরাং, সেসব অনেককিছুই চিন্তা করে এই লেখাটির সিদ্ধান্ত।তবে, আরো ১টি উদ্দেশ্য আছে, যা এবং সমান্তরাল আরো কিছু জায়গা, এই শুরুর কথাপর্বেই স্পষ্ট করে দেওয়া উচিৎ।তা হলো, বিগত ২দশক ধরে বাংলা কবিতাকে নানান্ ভাবে দেখা এবং অনুভবের চেষ্টা করতে করতে, যখন বাংলা কবিতার চারপাশে তাকাচ্ছি ~ যেটা ব্যক্তিগতভাবে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণে প্রতিনিয়ত রেকর্ড হচ্ছে, তা হলো কোথাও না কোথাও বা আরো স্পষ্ট করলে কোনো না কোনো দশক পর্যন্ত গিয়ে আটকে যাচ্ছে।যদিও, এইরকম কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়ভার পাঠকের কাঁধে এখনই চাপিয় দিতে চাইছি না।যদি তাই হতো, তাহলে চর্চার কোনো গুরুত্ব থাকে না।আর, চর্চার প্রকৃত অভ্যাস প্রশ্ন করতে শেখায়।তাই চর্চার প্রয়োজনীয়তা চেয়ে চাইছি লেখাটিকে সর্বসম্মতভাবে স্বীকার না করে, অনেক অনেক প্রশ্ন উঠুক।এখন প্রশ্ন হলো, কিভাবে এবং কোথা থেকে বিষয়টি শুরু করা যাবে? এবং রবীন্দ্রনাথের নামকরণটিই বা এখানে এলো কেনো?শুধু তাইই নয়, বাংলা কবিতাকে আন্তর্জাতিক স্তরের তুলনায় দেখতে গেলে, কেনোই বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই বারবার আসছেন? এখানে "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর" নামকরণটির আগে, কোনো 'বিশ্বকবি' বা কবিদের গুরুদেব 'কবিগুরু' জাতীয় কোনো বিশেষণ দিচ্ছি না ইচ্ছাকৃত ভাবেই।আর সেটা একারনেই যে ~ এইরূপ বিশেষণ দিতে গেলে, আমাদের যে প্রশ্নগুলোর সন্ধান করতে হবে, আশা করাই যায় সেখানে বহু রহস্য উন্মোচন করা যাবে।অতএব কোনো ঈশ্বরীয় ব্যখাসম্মতো ভাবে নয়, বরং রক্তমাংসের মানুষ বিশ্বের বাদবাকি শিল্পীদের আমরা যেভাবে দেখি, এখানেও দেখবো সেভাবেই।আরো ১টা বক্তব্য পরিষ্কার করা ভালো, একটু আগে যে 'প্রকৃত চর্চা' প্রসঙ্গটি টেনেছিলাম, সে বস্তটি ঠিক কি রকম? কারন হিসেবে একথাই বলা যায়, যে আশা করেছিলাম আন্তর্জাতিক কবিতায় রবীন্দ্রকাব্য প্রসঙ্গটি নিয়ে সুআলোচনা, শুধুমাত্র ৪দেওয়াল বা ইউনিভারসিটি ক্যান্টিনে নয় ~ কেউ না কেউ ছড়িয়ে দেবে বাংলার সর্বত্র এবং তা কবি থেকে অ্যাকাডেমিশিয়ান যেকেউ হতে পারেন।কিন্তু বাস্তবে তা হয় নি।অ্যাকাডেমিশিয়ান বা বেশিরভাগ মূল ধারার কবিই মেনে নিয়েছেন ঈশ্বর-রবীন্দ্রনাথ বা বাঙালীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যবহৃত শেষ আইকনিক ব্র্যান্ড (অবশ্য, এই ২য় অংশের মধ্যে যে বেশ কিছুটা ব্যবসায়ীক্ স্বার্থ আছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না)।আর যারা রবীন্দ্রচর্চার শৈল্পিক তাৎপর্য নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবেন, তাদের কাছে ঈশ্বর যৌক্তিকতা ঠিক বাজারী পণ্যের মতো নয়।কিন্তু এই সংখ্যাটি নিতান্তই ভীষণ নগন্য।আর এই তাৎপর্যকে দাঁড়িপাল্লায় রেখে তুল্যমূল্য বিশ্লেষণ
যারা করার চেষ্টা করেন ~ গড় বাঙালীর কাছে : বিদ্রোহী ও স্রোত বিরুদ্ধ।অর্থাৎ, এই একবগ্গা ও একনায়কতন্ত্রের বাজারে, অচলায়তনের বিরোধীতা নিয়ে, কোথায় কোনো প্রশ্ন ওঠাতে নেই।ওঠানো যাবে না।তাই, ইচ্ছে না থাকলেও ~ অন্ততপক্ষে বাংলা কবিতাকে ও ভাষাকে ভালোবেসে লেখাটির অবতারণা।লেখাটি যদিও ধারাবাহিকভাবে চলবে, তবুও মোট কটি পর্বে সম্পূর্ণ বিষয়টিকে উপস্থাপিত করতে পারবো, তা এখনই আমি বুঝতে পারছি না।এসবকিছু ছাড়াও, যা বলাটা গুরুত্বপূর্ণ ~ তা হলো, লেখাটি লেখবার সময় হাতের সামনে থাকা বই ও পত্রপত্রিকা ছাড়াও, যেটির ওপর সাংঘাতিক ভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে, তা ইন্টারনেট।বর্তমান সময়পর্বে হাজারো তথ্যের ভীড়ে, প্রয়োজনীয় এবং সঠিক তথ্য বেছে নেওয়াটা যে অতিরিক্ত গুরু দায়িত্ব, তা নিশ্চিতভাবে বলার অপেক্ষা রাখে না।তাহলে, আসুন গৌরচন্দ্রিকার অবসান ঘটিয়ে, প্রবেশ করা যাক মূল প্রবেশদ্বারে।
(ক্রমশ)
No comments:
Post a Comment