Wednesday, November 29, 2017

  





  









   সুকন্যা সামন্ত 

       শান্তি

এসো এসো হে প্রিয়া,
বিশ্ব মাঝে বাহির হয়ে এসো,
থেকো না আর লুকিয়ে মানবের অন্তরালে,
শুনেছি তোমার নূপুরের রুণু রুণু শব্দ,
একবার দেখি তোমায় দুচোখ ভরে

আছো তুমি-
শিশুর বাঁধন ছাড়া হাসিতে,
শিশুকে ভালোবেসে মায়ের তৃপ্তিতে,
কর্মশ্রান্ত পিতার হাসিমুখে গৃহে ফেরার মাঝে

অনুভব করেছি তোমায়-
নিস্তব্ধ প্রকৃতির মাঝে,
সূর্যকিরণের হাসিমুখে পৃথিবীকে আলোয় ভরিয়ে দেওয়ায়,
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায়,
পাহাড়ী নদীর কুল-কুল শব্দে।
খুঁজেছি তোমায় সত্যকে প্রতিষ্ঠার মাঝে,
দেশের দশের উন্নতির পথে

আজও পাইনি দেখতে ,
চিরদিনই রইলে অধরা,
বিশ্ব রয়েছে তোমার প্রতীক্ষায়,
অশান্তিকে তাড়াতে তুমি -


,আজ এসো প্রিয়া ।।
  সুপ্রীতি বর্মন
নগন্য চাহিদা






















পকেট আমার গড়ের মাঠ, নেইকো কানাকড়ি।
তবুও অহংকারে মাটিতে পা পড়েনা আমার।
ছোট পকেটে যে রয়েছে তোমার আমার ছবি।
ঐটুকুই বাড়ায় আস্কারা, তোমার প্রেমের চড়া দাম।
নাইবা পেলাম বাজারের বিক্রীত পণ্য, তবুও
শুধু তোমাকে একান্ত নিজের করে পেয়ে সুখী।
যদিও তৈলাক্ত, লেগেছে ঘুন বীর্যপাতে, 
বিছানায় মুখ থুবড়ে উর্দ্ধমুখী দৃষ্টিপাত।
স্তনবৃন্তে যেন কোন ফোটা কুসুম।

বহু যত্নে ফেলে রেখেছি তোমার আদর, 
ব্যস্ততার সরানি যখন হৃদয়ের নাব্যতা, 
দেয় আস্তে আস্তে পলি জমিয়ে, 
তখন কেমন যেন অস্তাচলের শোক।
নোঙ্গর ফেলে চুপটি করে বসে থাকি, 
কিংবা অবসাদের চাদরে কাপুরুষের, 
সদম্ভ বিচরন শয্যার কালসাপে।

হঠাৎ প্রেম তখন পর্নমোচী বৃক্ষ ঝরাপাতা, 
হৃদগগনে ফেলে যাওয়া বসন্তকে খোঁজে।
গলাফাটা চীৎকারে তোমাকে কাঁপায় বিষে।
ক্রন্দিত নয়নে জলসার ঔজ্জ্বল্য, না, 
তোমাকে না পাওয়ার যন্ত্রনায় বারি অপচয়।

বুঝতে থেকে ক্লান্ত আমি, 
কিছুটা ফেলে রাখি তোমার চোখে।
ধার নিই আমি একটু আলো, 
আমি তো আজ বছরের পর বছর গ্রহদোষ।
কিংবা অপরের আলোকে ঋনী।
আমার কি বা আছে নিজের কাছে, 
শঙ্খের আওয়াজে চেনা ঘর তোমায়, 
স্বামী বলে ডাকে,,,,,,,,,,, ওগো শুনছো।
এসো না এসো একটু জিরিয়ে নাও আমাতে।
যেখানেই অশ্বমেধের ঘোড়া দৌড়াও তুমি, 
দিনের শেষে তুমিই তো কালজয়ী সম্রাট অশোক।
ফিরবেই ফিরবে একদিন আমার কাছে গৃহশোকে।

Monday, November 20, 2017

.
 অনিমেষ
ভালো আছি.....















ভালো আছি ভালো থাকার চেষ্টায়,
কখনো ভাবিনি কি আছে সমান্তরাল,
চৌকাকারের নীল সমুদ্র পাছে হারায়,
তাই বীরত্বে করেছি বরন মরু সাহারায়৷
আগুনের খন্ডনে একটুকরো ছোট্ট জমি,
বেঁচে থাকার চেষ্টায় জোরালো ভূমি,
 উষ্ণ প্রস্রবণ ধিক্ ধিক্ জ্বলে ,
খোঁজার চেষ্টা জন্মভূমি  বালুচরে ৷৷
ভালো আছি ভালো থাকার চেষ্টায় ,
কবিতা কত শত অপেক্ষায়,
নিরপেক্ষ অন্তর চাহনি,
বাঁচার চেষ্টায়  অপহরণ করতে হয় যদি৷৷
পলাতক গরবন্দীপুরের জবানি,
পালানোর আশায় একশ আসামী,
হঠাৎই হাতে পরল একখান দড়ি,
বেঁচে থাকার চেষ্টায় খুনী হয়েছি আমি৷
লড়াইটা যখন সময়ের সাথে,
পলাশীর প্রান্তরে হাজার হাজার সৈন্য,
আমি যাযাবর ছারখার করে দেব,
বেঁচে থাকার মনোমালিন্য ৷৷
কোথাও আছো কেউ দেখছো কি আমায়,
গুটি গুটি পায় কারা পালায় ,
জলপুঞ্জ রাশি রাশি ,
মরুভুমির দরিয়ায় আমি বাঁচি৷
ভালো আছি  ভালো থাকার চেষ্টায়,
শেষ করেছি সব আজ কিছুক্ষনের প্রচেষ্টায়,
আগমনের সুরে আসব আমার আমি,
যতদিন পারব পলাতক রইব ,
ভালো আছি ভালো থাকার চেষ্টায়৷৷
  সুকন্যা সামন্ত
     ইচ্ছে



















আবার যদি ইচ্ছে করে
মোদের মাঝে আবার এসো ফিরে ,
কান্না হাসির সুখ-দুঃখের এই সাগরে
দুঃখের মাঝেও গাহিবো মোরা গান ,
ধরবো মোরা সুখের তান ,
রঙীন হয়ে উঠবে তখন ভাবের আকাশ ,
ফুটবে কুসুম  সাগর তীরে

পেয়েছি যা তোমার কাছ হতে,
আবার যেন তা পাই ফিরে বারেবারে ,
আপনারে দেব উজাড় করে ,
জীবন হবে ধন্য
তোমার পরশ পেয়ে
পুরবে মোদের সকল সাধ
তখন তোমায় ভালোবেসে

না পেয়ে খেলার সাথী ,
একলা বসি নিরালায় দিবসরাতি ,
ফেলেছি অশ্রুজল
ফিরবে যখন তুমি ,
আবার মোদের মাঝে ,
করবো তখন তোমায়
মোদের সাথী ,
ঘুচবে তখন খেলিবার
 সকল ভাবনা ।।





Thursday, November 16, 2017

     সোমনাথ গুহ 
       সত্তা 


















হাত বাড়াও তুমি যত ইচ্ছে আকাশের দিকে
শুধু খেয়াল রেখো যেন পা থাকে মাটিতে
বন্ধু এই তোমার শিকড়
তুমি আলগা হয়ে যেওনা নিজের থেকে।
অন্ধকার রাতে যে আলোর প্রদীপ দিয়েছিল
সে ঘরে স্মৃতির প্রহরী একলা বসে থাকে
তুমি শুধু চোখ মেলাও একবার
দেখবে এখনো আরশির ভেতর নিজেকে।

দেবব্রত তাঁতী

রাতের শহরঃ


















শহরে রাত নামে নগ্ন কবিতার গা ঘেঁসে 

মেট্রোর পাশের গলিতে হাত টানাটানি
শাড়ীর আঁচল ধরে ঝোপঝাড়
কাগজ দিয়ে শুধায় কতই যাবি ? 

সেদিন বলতে শুনলাম কাকে চাই ? কাকে চাই ?
মুচকি হেসে দিল মেয়েটি 

শব্দ বড়ই গোলমেলে ঠেকে এখন 
মুখ ফস্কে কত না বলা মনের কথা বেরিয়ে পরে 

রাতে দাঁতাল প্রাণী পাঁচিল ভাঙ্গে 
মনের ভাব ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায়
যতটা পেরেছে সযত্নে কুড়িয়েছে কাগজ কুড়নি
মন পড়ে থাকে ডাস্টবিনে কিংবা নর্দমায়

পাতা খসে পড়ে ; শাড়ি নেচে ওঠে 
চুল খোলা রাস্তায় কবিতার বাড়াবাড়ি মেনে নেয় নি 
চোখ রাঙ্গানিই সার 
রাতের শহর ফিসফিস কথা বলে 
আড়ি পাতে অন্ধকারে ; কার গোপন কথা কে বলবে কাকে ?

কার এত বড় সাহস প্রতিবাদ জানাবে 
রাত নষ্ট নয় সতী নারী ! 


সেই ছেলেটাঃ
প্রতিদিন সন্ধ্যেতে স্টেশনে অপেক্ষা 
কে আসবে ? কেন এত প্রতীক্ষা ?

তুই আশায় থাকিস না , সে আসবেনা 

কথা কেবল কথায় বলে 
কথা পড়লে কথা বাড়ে । 

প্রেম আসবে ! এই তো মিঠে রোদে ভিজে গেছে 
দেখা করার পর ফিরবে আদৌ ; তাই এত প্রতীক্ষা
কিন্তু সে যেন প্রেমিকের মতো 
কথা দিয়েও কথা রাখল না , ফিরল না । 

সবকিছুতেই ভেজাল এখন ; ফাঁপা শুধু 
শুধু মা শব্দটি অ-ভেজাল থেকে গেল 
ছেলেটা সেই যে বাড়ি ছাড়ল আর ফিরল না । 

সূর্যাস্তের পরঃ
চাঁদ জোছনাকে ছড়িয়ে দিয়েছে , নিজের কাছে রাখেনি 
এটা তার আশীর্বাদ নাকি অন্য কিছু 
অন্ধকারে জোনাকিও আলো বিচ্ছুরণ ঘটে 
জলে চাঁদের প্রতিছবি না নতুন এক চাঁদ জন্ম নিল । 

শব্দ তো চুপচাপ এখনও 
প্রতিবাদী মিছিলে তার দেখা নেই ; কি করবো 
বিনোদনের আসর ভাবনা কেড়ে নেয় তাই 
সব বোকাবাক্সতেই থেকে যায় আমরা 
তাই ভোরের আলো বলছে... মানুষ হ 
সেই তো সূর্যাস্তের পর মারা যাবি । 
                     অতনু চ্যাটার্জী

গোলাপ বেচতে আসা ছেলেটি তোমাকে আমার প্রেমিকা ভেবেছিল...


গোলাপ বেচতে আসা ছেলেটি 
তোমাকে আমার প্রেমিকা ভেবেছিল-  
তার কোনো যথাযথ কারণ 
আমার জানা নেই !                                                    

                                                                                                    
হয়তো সে শহরের ক্লান্ত দুপুরে হঠাৎই 
আমাদের আবিষ্কার করেছিল,  
খুঁজে পেয়েছিল তোমার ইতস্তত চোখে   
ভালোবাসার আশ্রয়স্থল I
কে জানত হয়তো 
সে ফুটপাথের অকাম্য মেয়েটিকে ভালোবেসেছিল
যাকে আমি নোংরা আঙুলের ব্যাস্ততায় 
চারটে পয়সা গুনতে দেখেছিলাম I
হয়তো সে মানুষের হৃৎপিণ্ডে কোদাল চালিয়ে জেনেছিল
ভালোবাসা কুষ্ট রোগীর মতো অচ্ছুত, 
ইলেকট্রিক তারে ঝুলে থাকা ছেঁড়া ঘুড়ির মতো নিঃসঙ্গ 
অন্ধকারে নিষিদ্ধ বিছানায় অসার অন্তর্বাস খোলা I


গোলাপ বেচতে আসা ছেলেটি 
তোমাকে আমার প্রেমিকা ভেবেছিল
আর যেতে যেতে শহরের পাঁজর ফাটিয়ে বলেছিলো-
"বিশ্বাস করুন স্যার, চেষ্টা করেও ফিরে যেতে পারি নাই !
যতবার তার কথা মনে পড়ে, 
কষ বেয়ে ঝরে পরে প্রাগৈতিহাসিক বাসনা I
বিশ্বাস করুন, জীবন এভাবেই বয়ে যায়
বৃষ্টিতে ধাবমান ফাঁকা গাড়ির কাঁচ তুলে 
এভাবেই কত ভালোবাসায় যবনিকা নেমে আসে"

Wednesday, November 8, 2017

মধ্যরাতের খণ্ডকবিতা
       পর্ব -২১
                               
      লক্ষ্মী নন্দী           






















তোর খোলসের  অন্তরালে
স্বপ্ন - জবার অন্তরীক্ষ
দেখে ফেলেছি অামি।
তোর মৌনতা ভেঙেছি 
কুঁড়ি প্রস্ফুটিত বসন্তের
নিষিদ্ধ সংলাপে।
দুলেছি দুজনায় 
চঞ্চলা কিশোরী
ছন্দায়িত নৃত্যের দোলায়।
বিমূর্ত মৌনতা ভেঙেছে
অনাবিল সুখে। 
অন্ধকারের স্থাপত্যের মতো
দু - জনেই হয়ে উঠেছি 
মধ্যরাত।।
প্রাণের শহর-----
রাখী বসাক


















ছোট্ট হলুদ প্রজাপতিটা আলতো ছুঁয়ে কানে,কানে বলে গেলো নতুন শহরের ঠিকানা।
পাল্টে গেলো জীবন ধারা----
যে শহর ঘিরে একটু, একটু করে বেড়ে ওঠা, সেই আনন্দ ঘন, বেদনা সব বাক্স বন্দি করে লুকিয়ে রেখে নতুন শহরে আসা।
অমল স্মৃতির শহর পরে থাকলো পিছনে, যে শহরের ছাদ ছিলো নির্ভরতায় ঢাকা।
চারিদিক মোড়ানো ছিলো ঝকঝকে বিশ্বাস, আর আবেগ মাখা ভালোবাসা দিয়ে।
সময়ের সাথে হেঁটে হেঁটে নতুন শহরের মুখ গুলি নিজের করে নিলাম।
সুখ,দুঃখের ভাড় নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে শেখা।
এলোমেলো শহরটিকে গুছিয়ে রাখা নিজের মতো করে।
একটু, একটু করে ভালোবাসতে গিয়ে আজ যে প্রাণের শহর টিকে বড্ড বেশী ভালোবেসে ফেলেছি।