অসম্ভব কথামালা...১৫
ভয়
শৈবাল মজুমদার
শ্মশানেও কেউ কেউ হেসে ওঠে নিদারুন ভয়ে
লেলিহান চিতার সামনে বোঝা যায় জীবনের সামান্যতা
ক্ষমাহীন অনিত্য সময়কাল ছুঁয়ে ভয়ে হেসে ওঠে কারা
জীবনকে খুব ভালবাসে যারা...ইঁট কাঠ ধাতু ও রমণী
ভালবাসে.কুকুর আর প্লাষ্টিক ফুল
তারা খুব ভয়ে হো হো হা হা হাসে আর কাঁদে অবশেষে
শ্মশান প্রবেশপথে উবু হয়ে বসে থাকে মা মরা কমলীর বাপ
পাগলা নগেন একা বসে কী যেন বিড়বিড় করে আর
চিতার আগুনে ভাত সেদ্ধ করে খায় নির্ব্বিকার
অন্ধকার নেমে এলো পৃথিবীর আকাশে বাতাসে
এবার সময় হলো
এখন খোলস বদল করে সুসভ্য হও...রং আর অভিনয়ে
ঢেকে দাও বুকের ভেতরে সিফিলিস স্মৃতিচিহ্ন যতো
সারাদিন নতজানু অবসন্ন কেটে গেছে দহনে অপমানে
ক্রুর ও কুটিল যতো জীবনের অদ্ভুত নিয়মকানুন ঘিরে
শিকল শিকল শুধু শিকলের সাইরেন গান
অতএব অন্ধকার নেমে এলে আত্মায় চোখের পাতায়
আর রক্তহীন শিরা উপশিরাজুড়ে নোংরা অন্ধকারে
বোতলের মুখ খুলে ফেনা উপচায় অনর্গল বমির মতন
দমিত খিস্তির ফোয়ারায় ডুবে ভেসে বিষণ্ণ মানুষগুলো
পৃথিবীর বুকে সরল দুই পা পুঁতে টানটান দাঁড়াতেই চায়
নিজস্ব ঈশ্বরের মুখোমুখী...টলে যায় শালা পা টলে যায়
ছিঁড়ে যায় শীর্ণ রমণীর ক্ষুধাতুর ছিন্ন আঁচল ছিঁড়ে যায়
উলঙ্গ শুয়ে থাকে অবোধ শিশুর দল জল কাদা মাটিতে
শ্মশানেও অন্ধকার
এখানে শোক নেই লোভ নেই নেই রমণীয় নেশা
অন্ধকারে জ্বলে ওঠে চিতার আগুন
চোখের সামনে পুড়ে যায় আত্মা,চোখের পাতা
যতো পাপ যতো পুণ্য অনাচার আর না পাওয়ার
সুদীর্ঘ তালিকা মহোল্লাসে পুড়ে পুড়ে যায়
ভয় হয় ভয় হয়...কি ভীষন ভয় করে ওঠে
নিভে আসা চিতার সম্মুখে হাঁটু ভেঙে আসে
অসম্ভব ভয়ে
হা হা করে হেসে ওঠে এমহান এসামান্য মানবজনম