আশার আষাঢ়
সুপর্ণা চৌধুরী
"তপের তাপের বাঁধন" কাটিয়ে এল আষাঢ়। প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চে হল পালাবল। আগুন ঢালা তেজস্বী সূর্যকে ঢেকে দিল ঘন কালো মেঘ। গম্ভীর গুরুগুরু ধ্বনিতে মুখরিত হল চারিদিক।
যেন "বহুযুগের ওপার হতে আষাঢ় এল" আশার ঝুলি পূর্ণ করতে। মানুষের জীবনধারণ তথা মানুষের মনোজগতের জাগরণ আষাঢ়ই যেন সম্ভব করে তুলবে এই অসুস্থ পৃথিবীর বুকে।... আষাঢ়! "তোমার মন্ত্র বলে পাষাণ গলে ফসল ফলে"। হে আষাঢ়, অসুখ-ক্লিষ্ট এ পৃথিবীতে তুমি "সবুজসুধার ধারায় প্রাণ এনে দাও তপ্ত ধরায়।"
আষাঢ়ের সূচনায় আকাশে নবমেঘের গম্ভীর রূপ দেখে প্রাচীন কালে যক্ষ খুঁজে পেয়েছিল জীবনের অবলম্বন। অভিশপ্ত, নির্বাসিত, ক্ষমতা বিলুপ্ত, প্রিয়াবিরহী যক্ষ তাই অচেতন মেঘকে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে দূত করে পাঠাতে চেয়েছিল দাক্ষিণাত্যের রামগিরি থেকে সুদূর উত্তরে অলকায় তার প্রিয়ার কাছে। "আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে" যক্ষ যেমন আশার আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছিল, তেমনি আমরাও আশায় বুক বাঁধছি
আষাঢ় তার অযুত বৃষ্টিধারায় ধুয়ে শুদ্ধ করবে
ভাইরাস-আক্রান্ত আমাদের এই পৃথিবীকে।
"আষাঢ়ে নব আনন্দ, উৎসব নব", তাই নতুন ধান রোপন করেন কৃষকেরা। "শতেক যুগের কবিদল মিলি গেয়ে ওঠেন শতেক যুগের গীতিকা"। আষাঢ় আশা নিয়ে নেমে আসুক শ্যামল সুন্দর ভঙ্গিতে এই দুঃখী পৃথিবীর বুকে।
(মুজনাই অনলাইন আষাঢ় সংখ্যা)
No comments:
Post a Comment