শ্রদ্ধেয় সোনম ওয়াংচুক স্যার,
আগামী বাংলা নববর্ষের প্রণাম নেবেন। গনতন্ত্র এবং বাস্তুতন্ত্রের ওপর যে আঘাত লাদাখের মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে তার প্রতিবাদে আপনি ২১ দিন অনশণ করে মৃত্যুর মুখ থেকে প্রাণটুকু নিয়ে বেঁচে রয়েছেন। আপনার প্রেরণায় লাদাখবাসী যে ভাবে প্রতিবাদী হয়ে রাস্তায় নেমেছেন, তা আজ বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে। আপনি নতুন করে প্রতিবাদের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছেন। বিপুল পুলিশ বাহিনী, ব্যারিকেড, স্মোক গ্রেনেড কিছুই আপনার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কে ব্যাহত করতে পারে নি। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পশমিনা মার্চের ভাবনা আপনার মস্তিষ্ক প্রসুত। সারা ভারতবর্ষের সব সামাজিক এবং গনসংগঠন গুলো আপনার পাশে তাদের মানসিক সমর্থন জানিয়েছে। আজ সংবিধানের প্রস্তাবনায় বর্ণিত গনতন্ত্রের অধিকার ভুলুন্ঠিত। আপনিই পারেন সেই গনতন্ত্রকে বাঁচাতে ভারতবাসীদের পথ দেখাতে।
আপনি ভালো থাকুন। আপনার মধ্যে দিয়ে আমাদের না হেরে যাওয়া স্বপ্নের মানুষ ফুংসুক ওয়াংড়ু বেঁচে থাকুক।
শ্রদ্ধা সহ
একজন ভারতীয় নাগরিক
শ্রদ্ধেয় আম্বেদকর স্যার,
শুভ জন্মদিনের প্রণাম নেবেন। আপনার অক্লান্ত পরিশ্রমে স্বপ্নের ভারতবর্ষের যে পবিত্র সংবিধান কনস্টিটিউয়েন্ট এসেম্বলিতে পেশ করেছিলেন। সর্বসম্মতিক্রমে যে পবিত্র সংবিধানটি আমরা ১৯৫০ সালের ২৬ শে জানুয়ারি তারিখে আমরা ভারতবাসীরা নিজেরা নিজেদেরকে অর্পণ করেছিলাম। যে পবিত্র সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল, " আমরা ভারতীয় নাগরিকরা ভারতবর্ষকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, ধর্মনিরপেক্ষ, গনতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে..." .ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু স্বাধীনতার পরে সাতাত্তর বছর পেরিয়ে আসবার পর গনতন্ত্র নামক এই শব্দটা বার বার অসম্মানিত হচ্ছে। শাসকদের দ্বারা লংঘিত হচ্ছে বাক স্বাধীনতা, বিপন্নতার মুখে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সর্বপরি " নানাভাষা নানা দেশ নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান" এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে একতার যে সুর বহনকারী " ধর্মনিরপেক্ষ " শব্দটা আজ বাস্তবে অবলুপ্তির পথে।
ভেবেছিলাম আজ শুভদিনে, এসব কথা আপনাকে জানাবো না। কিন্তু বাংলার নববর্ষ এবং ঈদের অবসরে ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটা একটা প্রশ্ন চিহ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। একান্ত অবসরে লিখবার অবকাশ হল তাই আপনাকে মনের কথা লিখে জানালাম। আপনি যেখানেই থাকুন ভালো থাকবেন। প্রণাম নেবেন।
ইতি
একজন ভারতীয়
পার্থ বন্দোপাধ্যায়
No comments:
Post a Comment