মুজনাই
অনলাইন চৈত্র সংখ্যা ১৪৩০
বর্ষ শেষের প্রত্যাশা
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়
একটা করে দিন ফুরিয়ে যায় আর সেই সাথে সাথে একটা করে বছর গড়িয়ে যায়।
অমরত্ব লাভের আশায় প্রতি মুহূর্তে ফুরিয়ে যাওয়া জীবনের, এক একটা দিন কমার সাথে সাথে, জীবন থেকে আনন্দ, আল্লাদ, আশা আকাঙখার অনুভূতি গুলো ক্রমশ অবলুপ্তি ঘটে চলেছে। তবু্ও আশাই তো জীবনে বেঁচে থাকার একমাত্র রসদ। আশাই নবীন প্রবীণ সবাই কে একসুত্রে বাঁধতে সহায়তা করে। বর্ষ শেষে তবুও অজানা কোনো এক কারণে মনটা ভালো হয়ে যায়।
কলেজ জীবনের এক ঘনিষ্ট বন্ধু জানতে চাইতো, আগামী নতুন সালটা চোদ্দ'শ কত? একথা অস্বীকার করবার কোন উপায় নেই যে আমরা বাংলা ক্যালেন্ডারের পয়লা বৈশাখ এবং ২৫ শে বৈশাখ বাদে অন্য তারিখ গুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই খোঁজ খবর রাখি না।
আশা থেকেই প্রত্যাশার জন্ম হয়। প্রত্যাশা বা স্বপ্ন দেখার কোন সীমা না থাকলেও মনে প্রাণে চাই, অতিমারির মত ভয়ংকর দিন যেন আমাদের আর না দেখতে হয়। আমরা অনেকেই ঈশ্বর বিশ্বাসী। করোনা ভাইরাস মানুষের সৃষ্টি তাই এ বিষয়ে ঈশ্বরকে অযথা দোষারোপ না করাই শ্রেয়।
বর্ষশেষের সর্বপ্রথম প্রত্যাশা হওয়া উচিৎ মানুষের মূল্যবোধের বিকাশ। এই প্রজন্মের মূল্যবোধ তলানিতে এসে ঠেকেছে। এরা গুরুজন বা ঈশ্বর, কাউকেই ভয় পায় না। জলপাইগুড়ির মতো সংস্কৃতিমনস্ক শহরে হোলি উৎসবে চার কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। সংবাদপত্রে সে খবর বড় করে ছাপা হলেও, বইমেলায় কত বই বিক্রি হয়েছে, সে তথ্য কখনোই সংবাদ হয় না। এ বিষয়ে সরকার বা প্রসাশন এর দায় অস্বীকার করবার কোন উপায় নেই। নারী ধর্ষণ, খুন, অশ্লীলতার বিষয় গুলো জিরো টলারেন্স হওয়া একান্ত ভাবে কামনা করি।
পরিশেষে ভারতবর্ষের মতো গনতান্ত্রিক দেশে, গনতন্ত্র শব্দটাই পরিহাসের বিষয় হয়ে পড়েছে। এই বিষয় নিয়ে এখনই সদর্থক ভাবনা না ভাবলে ভবিষ্যতে গৃহযুদ্ধের আকার নিতে পারে, সেই অশনি সংকেতের কথা বর্ষশেষে না উচ্চারিত হওয়াই ভালো।
No comments:
Post a Comment