রেপড কেস
ফিরোজ আখতার
একটি মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছিল কাল রাতে হাসপাতালে যখন নিয়ে আসা হল- নাম জানতো না কেউ তার… শুধু জানতো মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল । নার্স থেকে ডাক্টার, কেরানি থেকে ঝাড়ুদার সবাই জানলো, হাসপাতালে একটা রেপড কেস এসেছে ।
ডাক্তারবাবু এসে নার্সকে জিগ্যেস করলেন… রেপড কেসটা কত নম্বর বেডে আছে ? মেয়েটির মা-বাবা আত্মীয়রা যখন ছুটে এলেন… তাদের জিগ্যেস করা হল… আপনারা কি রেপড কেসের বাড়ির লোক ? চমকে ওঠার সময়টুকুও পেল না সেই রেপড কেসের বাড়ির লোকজন ! মেয়েটির নামটা যেন কি ছিল ?
পুলিশ এলো সেদিনই । সঙ্গে গুটিকয়েক সাংবাদিক… সবাই এসেছে রেপড কেসটি কভার করতে । ডাক্তারের অনুমতিতে পুলিশ রেপড মেয়েটির বয়ান নিয়ে বেরিয়ে গেলেন – আর, খুব ভালভাবে লিখে নিলেন, মেয়েটির কোথায় কোথায় আঘাতের দাগ ছিল… আর দাগগুলো কতখানি গভীর । শুধু রেপড মেয়েটির মনের দাগগুলি বাদ চলে গেলো । মেয়েটির নামটি যেন কি ছিল ?
পরদিন সকালের খবরের কাগজে প্রথম পাতায় স্থান পেল খবরটি । সকলে খুব মনোযোগ সহকারে পড়লেন রেপড মেয়েটির খবর অনেকে চাইলেন রেপিস্টরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় । মেয়েটির বাবা-মা পেলেন কত সহানুভূতি- তাঁরা যে এখন একটি রেপড মেয়ের বাবা-মা । পাড়ায় যে কোন লোকই একডাকে বলে দিতে পারবে রেপড কেসের বাড়িটা কোনটা ? মেয়েটির নামটা যেন কি ছিল ?
এরপর কেটে গেছে বেশ কিছু দিন… ধরা পড়েছে নরকের কীটগুলো । মনের জোর ছিল বটে রেপড মেয়েটির… আদালতে শনাক্ত করলো সবকটাকে আর, উকিলের জেরায় বলে গেলো সে পরপর ঘটে চলা ঘটনাগুলি বলতে হল তাকে ঠিক কীভাবে এবং কতবার… মেয়েটি যেন কতবার রেপড হল ?
No comments:
Post a Comment