Monday, January 2, 2017


" বেলা অবেলার গদ্য পদ্যের কাব্য " ০৩-১২-২০১৬। প্রবীর কুমার চৌধুরী ।
(গদ্য-১ ) চল না একবার চেষ্টা করি , একবার চেষ্টা করে দেখি এলাকার যত আবর্জনা - যত নোংরা, ব্যর্থ রাতে পাক খেতে খেতে- কুণ্ডলী পাকাচ্ছে প্রতিটি মনের অন্দরে। সদ্যজাত সমস্ত শিশুর বেড়ে ওঠার পথকে করছে অবরুদ্ধ। আমি তুমি আমরা কজন , বিবেকটাকে খুঁচিয়ে - জীবনের গান গাইতে গাইতে , মনুষত্বের ঝাঁটা হাতে বেরিয়ে পড়ি- অবক্ষয়ের পোকাগুলোকে বিদেয় করতে ।
( পদ্য-১ ) লোভের পারদ চড়ছে , ক্রোধের সীমা বাড়ছে - অসহায়ের কান্নায় আকাশ বাতাস ভরছে। ছয় বিধাতা আড়াল থেকে মিটিমিটি হাসছে, পেটের ক্ষিধে পেটে চেপে লক্ষ্য শিশু কাঁদছে ।
সুখিরামের সেই মেয়েটা চোখের সামনে বাড়লো, সিঁদুর মুছে আজ দেখি সে আমার কাছে কাঁদল । স্বামী নামের পশুগুলো টাকায় ভীষন লোভ - পন না পেয়ে লোকঢ়োকানোর , দেয় বেশ্যা হওয়ার টোপ।
( গদ্য -২) চল না প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে একবার বলি- একতায় বাঁচো , বিভেদের বেড়াজাল টপকে- প্রলোভনের ফাঁদে পা না দিয়ে , আত্মবিশ্বাসের ভাতকে- দুইজনের টা তিনজনে ভাগ করে খাই , আনন্দটাকে সবার মাঝে ভাগ করে নাও । জীবনের আবশিষ্ট সুখ ,শান্তি- ঘরের আয়রন চেষ্ট থেকে বের করে ছড়িয়ে দাও- এঁদো গলির অন্ধকারে ।অসংখ্য কান্নাকে - শান্তির জলে ধুয়ে, তৃপ্তিগুলো ছড়িয়ে দিয়ে , মুখে মুখে হাসি ফেরাও একবার অন্তত মানবতার মুখ দেখুক এ দুঃখি পৃথিবী ।
(পদ্-২য ) জাত, ধর্মের অন্ধকারে সৃষ্টি হয় অস্পৃশ্য- অশিক্ষার এতো দাপট সয়না এ দৃশ্য, পথে ,ঘাটে মার খাচ্ছে দলিত অসহায় - ফেসবুকেতে দেখছি ছবি দেশ ভরেছে অবক্ষয়। কত আইন শিশুর জন্য তবু চলে শিশুশ্রম , চায়ের দোকান ,পথের হোটেল অবাধ পরাক্রম । পনপ্রথা বন্ধ কর দেশ জুড়ে স্লোগান - সোনার মেয়ে খুন হচ্ছে তুমি আছো ভগবান ?
( গদ্য -৩) পড়ন্ত বেলায় যারা ধুঁকছে না পাওয়ার ব্যর্থতায় - চল নিঃশব্দে দ্বিতীয় বসন্তকে - ঘারে ধরে পৌঁছে দিয়ে আসি তাদের অশান্ত জীবনে । যে সুখের স্বপ্নগুলো অকালে ঝড়ে যায় প্রতিটি প্রভাতে, অনাহূতের মত বারে বারে ফিরে যায় যত নীলকণ্ঠ পাখি , সব পাওয়ার আনন্দগুলো মালা গেঁথে তাদের ফিরিয়ে দিয়ে আসি । দরজার কড়া নারি অনাথাশ্রমের , ঘুম থেকে তুলে কোলে নিয়ে- চুম্বনে মুছে দিই দুচোখের বেদনার জল , নিষ্পাপ হাসি খেলে যাক প্রতিটি অনাথ শিশুর মুখে , যারা প্রতিটি বোবা রাতে কান্না লুকিয়ে স্বজন খোঁজে নীরবে...।
চল না একবার উঁকি মারি বৃদ্ধাশ্রমে - দেখি শেষবেলার মানুষগুলো কিসের প্রতিক্ষায় - অধীর আগ্রহে দিন গুনছে । হয়তো নাড়ির টান- দশ্ মাসের গর্ভজাতকে শেষ দেখার ব্যকুলতা, স্মৃতির পাতাকে জাগিয়ে তুলছে , ভারাক্রান্ত সন্ধ্যায় । চল না সান্তনায় কোলে মাথা দিয়ে একবার বলি - মাগো এসেছি ফিরে , চোখ মেলে দেখ , মুখ ভরা হাসি, বুক ভরা আসা,চোখে গঙ্গা- পদ্মার প্লাবন, উচ্চারিত হবে ব্যকরন " এতদিন বাদে পড়ল মাকে মনে ? তোকে না দেখে কেঁদে কেঁদে আজ হয়েছি অন্ধ ...।
( পদ্য-৩ ) চোখের জলে স্নান করাবো মুখে দেবো মিষ্টি , মনের সুখে মা বলবো আমরা তোমার সৃষ্টি । একখানি থান পড়িয়ে দিয়ে দেখবো তোমার অরুপ - জন্মকালে মা হাড়িয়েছি , বুঝিনি তোমার সরূপ । তোমার কাপড় জড়িয়ে মুখে শুঁকবো মায়ের গন্ধ , চোখের জলে রাত কেটেছে মা ডাক ছিল বন্ধ । পথে ঘাটের সকল নারী সবাই দেখি মা-ই- বোকারা সব বিভেদ দেখে । মায়ের কোন জাত নাই ।
( গদ্য -৪) সন্ত্রাস বাদের হাওয়া এসে ছিড়ে দেয় সুখের নিশান , বন্ধুর নামে শোষন করে প্রতিবেশি। হাল ভাঙা , পাল ছেঁড়া নৌকায় উল্টো স্রোতের জীবন - কোনমতে বেঁচে থাকার অন্বেষণ । তবু ,মৃত্যুকে দুহাতে চেপে দুঃসহ বিপদের পাহাড় টপকাই, - প্রতিটি সকালে উল্লসিত কলরব, দুহাতে প্রদীপ জ্বালাই । প্রতিবাদের মিছিল চলে এখনও প্রতিদিন নিরুদ্বেগ শান্ত মনে জন্মায় শিশু, ফোটে ফুল ,ফল , প্রান আছে , প্রান আছে , ব্যর্থ বুলেট , সন্ত্রাস ...।

No comments:

Post a Comment