দোল
চম্পা বিশ্বাস
আজ দোল পূর্ণিমা। সত্তর পেরোনো রাজীব বাবু প্রতিদিনের মতো আজও সকালে পূজাপাঠ করে , চায়ের পর্ব শেষে বারান্দার ইজি চেয়ারে এসে বসেন। এখান থেকে বাইরের রাস্তা , মাঠ সব পরিষ্কার দেখা যায় । সকালের বেশ কিছুটা সময় তিনি এখানেই কাটান। খবরের কাগজ পড়া , বারান্দার টবে থাকা গাছগুলোর পরিচর্যা
করা , গান শোনা ও মাঝে মাঝে গলা মেলানো -- সবই চলে । স্ত্রী অমলার মৃত্যুর পর আজ প্রায় পাঁচ বছর হল এটাই তার রুটিন।
ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকেন তিনি । বেশ কিছু ছেলেমেয়ে সুসজ্জিত হয়ে রাস্তা দিয়ে চলেছে , হয়তো বসন্ত উৎসবে যোগদানের জন্য--- মনে মনে ভাবেন তিনি । স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে পুরোনো দিনের কথা । বিশ্ব ভারতীতে পড়বার সময় দোল উৎসবে অংশগ্রহণ করা ছিল তাদের কাছে খুবই আনন্দের। বসন্তের গানের ডালি নিয়ে সকলের দোল উৎসব উদযাপন-- সে এক অপূর্ব স্মৃতি । এর জন্য অনেক আগে থেকেই চলতো তাদের রিহার্সাল। বিশ্ব ভারতীর পাঠ শেষ করেও বেশ কয়েকবার তিনি শান্তিনিকেতনে গেছেন এই দোল উৎসবে। আজ সব অতীত। তিনি আপনমনে গেয়ে ওঠেন---- " ওরে গৃহবাসী , খোল্ দ্বার খোল্ । " তার এই গানের সুরে ছেলে , বৌমা আর ছোট্ট নাতনি তিন্নি এসে গলা মেলায় । থালায় রঙবেরঙের আবীর নিয়ে টেবিলের ওপর রেখে চারপাশে সকলে গোল হয়ে বসে চলে গানে গানে বসন্ত উৎসব উদযাপন।
মুজনাই সাপ্তাহিক বিশেষ সংখ্যা
'আনন্দ বসন্ত সমাগমে....`
No comments:
Post a Comment