Thursday, May 2, 2024

 

। মে দিবসে মুজনাই ।।


"ডেলিভারি বয় যীশু "
রীনা সাহা
বো ব্যারাক থেকে অ্যালেন পার্ক
পাঁচ টাকার বাপুজি কেকের
ডেলিভারি বয় যীশু।
শহরের আস্তাবলে মহীনের ঘোড়া
ঘোড়ার বিছানা, ঘোড়ার মিলেট
ডেলিভারি বয় ম্যাজাই।
যুদ্ধের বছর তাই চাঁদনী চক মলে
যীশুর গায়ের মাপের
কাঠের ক্রুশের পাইকারি।
মে ডে , কেকের বরাত
মাইল জুড়ে মিছিল
যীশু কোত্থাও নেই।
জোড়া গীর্জা, গণশক্তি
মাঝ বরাবর আট ঘন্টা শুয়ে
ম্যাস্ট্রিক্স পিচ, ব্যালট গাড়ির নীচে।
বো ব্যারাক, অ্যালেন পার্ক , চাঁদনী চক
ক্রুশ সওয়ার ডেলিভারি বয়
সেন্ট জেভিয়ার্স যীশু।
বাংলায় গা, বাংলায় হাস , বাংলায় কাঁদ
উচ্ছিষ্ট ঠোঁট , সাদা-মাথা, ঝাঁকের বক
মে দিবস, ফুল স্যালুট--- বাংলার যীশু।









বক্তা- শ্রী দীপায়ন ভট্টাচার্য





লাল আঁচল
সঞ্জয় সাহা
ঐ যে লাল শাড়িটি আজও ওড়ে,
লাল ঝান্ডাটা পায়নি রক্তঝরা সংগ্রামের সেই দিনটিতে!
ছেঁড়া আঁচলটা উড়তে উড়তে সেও আজ আকাশের শেষ সীমানায়...
সংগ্রামী মজুরের রক্ত |
উপর-নীচে কত বিভেদ
মানুষ আজ বোঝেনা,
শুধু বোঝে প্রাপ্ত অধিকার |
আকাশে আজ কেন ভাসছে আবির ?
রক্তে রাঙানো সেই আবির
এগারোটা প্রাণের হিসেব দিতে পারবে কি ?
লাল-কালো-সবুজেরা আজ বড় বিদঘুটে
নিজেরাই করছে মারামারি |
দুচোখে রক্ত ছিল সেইদিন
সূর্যটা সেদিন ছিল প্রখর,
আজ আর নেই!!
রক্তঝরা সংগ্রামের পথ পেরিয়ে....
শহিদের রক্তে !










বক্তা- শ্রী মানিক দে



মে দিবস

শ্রাবণী সেনগুপ্ত

"এই ভোলা কই যাস ?
চল চল বাজার যাবি
বাড়ি ভর্তি লোক -অনেক বাজার
সময় নেই শ্বাস ফেলবার!"
কিশোর ভোলা চলল রায় বাড়িতে
মোট বইবে আজ প্রায় ফ্রি -তে।
একবেলার পেট ভাতা, সারা দিনের কাজ।
বাবুর বাড়ি আজ সকাল থেকেই সাজ।
ছুটির দিনের মজা ভারি।
বাজার হবে কাঁড়ি কাঁড়ি।
হেঁসেল ভরা হাঁড়ি হাঁড়ি
মণ্ডা মিঠাই সারিসারি।
অবাক ভোলা ক্লান্ত পায়ে
ভারী বোঝা টেনেই বেড়ায়।
বসার সময় নেই আজ তার
দু'চোখে ঘুম ,মাথা যেন ভার ।
গাড়ির আওয়াজ হয়েই চলে
মান্যিরা সব এলেন বলে।
ঘর ভর্তি চেয়ার টেবিল
জোড় বিতর্কে সবাই সামিল ।
গ্লাস গ্লাস চা ,দামি সিগারেট
জুতো মোজা আজ সবই ব্র্যান্ডেড।
উঁকি মেরে দেখে ভোলা ঘোলা চোখে
অমনি গিন্নির চড় পড়ে মুখে -
"যা শিগগিরই ভরে আন গ্লাস
সঙ্গে বরফ ,যদি ভুলে যাস-"
কাঁপা কাঁপা পায়ে দ্রুত ছুটে যায়
ভয় ,ভয় আর খুব খিদে পায়।
হঠাৎ শব্দ ! "কিরে কি হলো !"
দুর্বল হাত ,গ্লাস পিছলালো।
শীর্ণ শরীরে পড়ল দু'ঘা
" দাম জানিস, বেজন্মার ব্যাটা!
দূর হয়ে যা যেখানে পারিস
আজ নো খাওয়া, নো বকশিস।"
ঘর থেকে ওঠে শোরগোল ভারী-
"আরে রায় বাবু, আসুন তাড়াতাড়ি
মে দিবসের আড্ডাটা আজ
এদের জন্যই হবে বরবাদ!
ছাড়ুন তো, এরা মর্ম কি বোঝে ,
ছোটলোক সব ,অজুহাত খোঁজে ।"
অপমানে ভোলা দুই চোখ মোছে
মে দিবসের অর্থটা বোঝে।

No comments:

Post a Comment