Thursday, May 2, 2024


 

মুনা 

অনলাইন বৈশাখ সংখ্যা ১৪৩১

ক্রোড়পত্র 



মা বলে জেনেছি যাকে

শ্যামলী সেনগুপ্ত 


আমি তো হাত পেতে বসে আছি
কবে তুই তোর দুটি হাত
পেতে রাখা করতলে রেখে বলবি,
"উঠে আয়।ঘরে ফিরি।"

কণকাঞ্জলি থেকে ঢেলে দিয়েছি
যে চাল,তাতে তোর এদ্দিন কী করে কাটল!
তুই কি পক্ষী-মায়ের মতো একবার 
এক ঠোঁটে একটিই দানা...
ঠোঁট থেকে কাঁসার বৃন্দাবনীতে
একটি একটি চালে
আমাদের সকলের এক মুঠো ভাত
আমাদের তৃষ্ণার কলস ভরে
ঘুঙরির খোঁজে তুই গ্রাম থেকে
অলীকের দিকে...
মায়ার মলম থেকে এক টিপ 
নিয়ে আমাদের জীবনের সব
ওঠাপড়া মলমল কাপড়ের মসৃণতা পায়।

তবু তোকে ঘিরে রাখে বাক্য দূষণ
তবু তুই দেবী থেকে,
মাতৃস্বরূপা থেকে
মেয়েমানুষই বটে।
কোন লোকে কী বলবে ভেবে
কর্ণকে সূতপুত্র পরিচয়ে 
সমৃদ্ধ করালে
কোন এক নির্জন ইস্টেশনে
তাকে আবরণহীন 
ছেড়ে দিলে চতুষ্পদের নালেঝোলেজিভে...

কে তোকে দিল অভিশাপ
কে তোর শ্রোণীদেশে মেরেছে
মদনের তীর
কে তোকে পুষ্প ভেবে
ডলেমলে থুয়ে গেল শেষে...
কোন সে সভ্যতা তোর বুকে
ঠেকিয়েছে দোনলা পিস্তল 
স্তন্যদুগ্ধে রক্ত মিশে
বয়ে গেছে পৃথিবীর নদী...
তবু তোকে বাক্যবাণে বারবার 
জর্জরিত করি,কোন ঘরে 
দিয়েছিস ঠেলে
এতই কাঙাল তুই, 
ঐ কটা কণকধান্যে তোর কেটে যাবে
বাকিটা জীবন!

শেষমেশ সেই তো ফেরালি
তবে,কোন ঘরে মা
তোর কোন ঘর?
গতকাল তুই যাকে ছেড়ে এসেছিলি
না কি যাকে তুই ঘর ভেবে
অন্ন ও জল দিলি সন্তানের মুখে...

ঘর ও বাহিরের চৌহদ্দি ভেঙে
পটু ও অপটু হাত যে গৃহ গড়েছে
হাত ধরাধরি করে চল ফিরি
সেই নদী
সেই বৃক্ষ 
স্নেহের ছায়ায়।

No comments:

Post a Comment