মুজনাই
অনলাইন বৈশাখ সংখ্যা ১৪৩১
ক্রোড়পত্র
স্বপ্নের উড়োজাহাজ
সম্রাজ্ঞী
বহু দিন পরে আজ আবার বৃদ্ধাশ্রমের ঘরে বসে ললিতার চোখে জল এল। এত বছরেও কেউ তাঁকে চিনতে পারল না!
ছেলেমেয়েরা এখন যে যার সে তার। বিধবা মায়ের খোঁজ খবরটুকুও কেউ নেয় না। টাকা দিয়ে সবাই দায়িত্ব শেষ করে ফেলতে চায়।
দুপুরে মৃদুলা ফোন করেছিল। মাসতুতো বোনের ফোনটা তাঁর কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকটাই।
মৃদুলা চিরকালের মতো বিদেশে চলে যাবে। তার ছেলে এখন আমেরিকার নাগরিক। সেই সুত্রে মা-ও চলে যাচ্ছে সে -দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে!
তার সঙ্গে আর কখনও দেখা হবে না!
কিন্তু দুঃখটা সেইজন্য নয়। নিজের কথা ভেবেই ললিতা দুঃখ পাচ্ছিলেন।
তাঁর ছেলেও ওদেশে থাকে। ইচ্ছে করলে সে কি পারত না মাকে নিজের কাছে নিয়ে গিয়ে রাখতে?।
জানালার কাছে বসে জল ভরা দু' চোখে আকাশের দিকে তাকালেন ললিতা।
দূর নীল আকাশের বুকে উড়ে যাচ্ছে ছোট্ট একটা উড়োজাহাজ।
যদি এমন হ'ত যে, এরকমই কোনও একটা উড়োজাহাজ তাঁকে নিয়ে চলে যাচ্ছে ছেলের কাছে!
স্বপ্নের সেই উড়োজাহাজটা ঠিক কেমন দেখতে হ'ত?।
নিমেষে ছবিটা বদলে গেল।
উড়োজাহাজের বদলে মৃদুলাকে এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন তিনি।
হাসি- হাসি মুখে সে যেন বলছে, কাকের বাসায় কোকিলের ডিম পাড়ার গল্পটা মনে পড়ে?।
No comments:
Post a Comment