গল্প
নতুন দিনের সূর্য
আকাশলীনা ঢোল
পর পর কয়েকদিন অসহ্য দাবদাহের পর আজ ভোররাত থেকে বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে। সকালে বেশ জোরেই পড়ছিল, বেলা বাড়ার পর বৃষ্টিটা একটু ধরে এসেছে, কিন্তু থামেনি। এখনও টিপ টিপ করে পড়েই চলেছে। রাস্তায় লোকজন অন্যদিনের তুলনায় কম, সামনের সবুজ লনটাও আজ ফাঁকা। অন্যদিন এই সময় কয়েকজন বুড়বুড়ির আড্ডা জমে ওঠে, আসর ভাঙে দুপুরে খাওয়ার বেল শুনে। আজ ভিড় নেই, তাই আশ্রমের সামনের রাস্তাটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল। জানলা দিয়ে সেইদিকেই এক দৃষ্টিতে চেয়েছিলেন সুকান্তবাবু। তাঁর বয়স এখন পঁচাত্তরের কোঠায়, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছে, ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে স্মৃতিশক্তিও। তবু, এমন বৃষ্টির দিনে সুকান্তবাবুর অনেক পুরনো কথাই মনে পড়ে। নিজের ছোটবেলার কথা, প্রথম যৌবনের কথা, স্ত্রী উমার সঙ্গে বৃষ্টিতে ভিজে সিনেমায় যাওয়ার কথা, ছেলে টুবাইকে নিয়ে স্কুল থেকে ফেরার কথা, আরও কত কী! বৃষ্টির পর রাস্তায় জল উঠলে এক পাও হাঁটতে চাইত না টুবাই, কত দিন সুকান্তবাবু ছেলেকে কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাজ পড়লে বড্ড ভয় পেত টুবাই, কী যেন, এখন সে কেমন আছে? ভাবতে ভাবতে চোখ পড়ল বেডসাইট টেবিলের ওপর রাখা ছোট্ট সেলফোনটার ওপর। গত এক মাসে একটাও ফোন আসেনি, টাকা ভরা হয়নি বলে তিনিও ফোন করতে পারেননি কাউকে, এখন বোধহয় ইনকামিংও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হোমের ল্যান্ডলাইনটা বেজে উঠলে কখনও কখনও সুকান্তবাবুর বুকের ভেতরটা উথালপাথাল করে ওঠে, এই বুঝি তাঁর ডাক পড়ল। কিন্তু না, এযাবৎ একবারও ফোন রিসিভ করার জন্য সুকান্তবাবুর ডাক পড়েনি ম্যানেজারের ঘরে। অবশ্য তিনি নিজেও কাউকে ফোন করার জন্য যাননি, আজকাল কারোর সঙ্গেই বিশেষ যোগাযোগ রাখতে ইচ্ছে করে না তাঁর। অন্যমনস্ক হয়ে ফোনটা ছুঁড়ে ফেললেন বিছানার ওপর, ড্রয়ার খুলে বের করলেন কয়েকটি ফটো অ্যালবাম। এই বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতিচারণই তাঁর একমাত্র সম্বল। ফটো দেখতে দেখতে স্মৃতির গভীরে প্রায় হারিয়েই গিয়েছিলেন, এমন সময় পাশে রথীনবাবুর ঘর থেকে ভেসে এল গানের কলি- ‘যে কথা এ জীবনে/ রহিয়া গেল মনে/ সে কথা আজি যেন বলা যায়’। সত্যিই তো, কত কথাই রয়ে গেল মনে, কত কিছু বলার ছিল, কত কিছু শোনাবার ছিল, কিছুই তো বলা হল না। সুকান্তবাবুরও অনেককিছু বলতে মন চায়, একেকবার তাঁরও মন প্রতিবাদে গর্জে উঠতে চায়, কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারে না। সেইকারণেই তো, গতবছর পিতৃদিবসের দিন ছেলে যখন এল, বাবাকে নতুন জামা পরিয়ে, কেক কেটে, ছবি তুলে, ফাদার্স ডে সেলিব্রেশনের ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে মিনিট দশেকের মধ্যে বেরিয়ে গেল, তখন সুকান্তবাবুরও বলতে ইচ্ছে করেছিল, 'এমন লোকদেখানো পিতৃভক্তির কোনও প্রয়োজন নেই। তোমার জীবনে পিতার প্রয়োজন যখন ফুরিয়েছে, তখন পিতৃদিবস পালনেরও প্রয়োজন নেই। কিন্তু তিনি বলতে পারেননি, বলতে পারেননি মা মড়া ছেলেটাকে এতগুলো নির্মম কথা, বাৎসল্য স্নেহে অন্ধ হয়ে কেবল চোখের জল ফেলেছেন। দুপুরের পর বৃষ্টির প্রাবল্য হঠাৎই বেড়ে যায়। খাওয়াদাওয়ার পর ঘরের আলো নিভিয়ে চুপচাপ শুয়েছিলেন সুকান্তবাবু, আর ভাবছিলেন ঠিক কতদিন আগে শেষবারের মতো গিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে? শেষ কবে দেখেছিলেন ছোট্ট নাতিটাকে? সবকিছু তো কত সুন্দর হতে পারত, হল না কেন? সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে কি কোনও খামতি ছিল তাঁদের? কই, তেমন তো মনে হয় না। টুবাইকে ভাল স্কুল-কলেজে পড়িয়েছেন তাঁরা, বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিয়েছেন, খেলাধুলায় উৎসাহ দিয়েছেন, বেড়াতে নিয়ে গেছেন, অসুখ-বিসুখে চিকিৎসা করিয়েছেন, রাতের বেলা বুকের কাছে টেনে গল্প শুনিয়েছেন, মন খারাপ হলে মাথায় হাত রেখে সান্ত্বনা দিয়েছেন, কই, কোথাও তো খামতি নেই। একদিনও ছেলেকে কোনও অভাব বুঝতে দেননি, এমন দিন কখনও আসেনি যে টুবাই তাঁর মা-বাবার কাছে কিছু চেয়ে পায়নি। তবে, বাবার প্রতি এত বীতশ্রদ্ধ কেন হল সে? সম্পত্তির লোভ কি মানুষকে এতটাই পাষণ্ড করে তোলে? নাকি অন্য কিছু? ছেলের বিয়ের সময় খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন সুকান্তবাবু, উমা আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, ‘ চিন্তা কোরো না, বউ আমাদের বড় লক্ষ্মীমন্ত। এই মেয়ে ঘর আলো করে থাকবে’। ভুল কিছু বলেননি উমা, সত্যিই বড় ভাল মেয়ে রিনি। সেই দেড়বছর আগে উমা যখন অসুখে পড়ল, দিনরাত এক করে রিনি শাশুড়ির সেবা করেছে। হসপিটালে খাবার পৌঁছনো থেকে শুরু করে ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে কথা বলা, ওষুধ কেনা সবই করেছে রিনি একা হাতে। অবশ্য টুবাইও তখন কম দৌড়াদৌড়ি করেনি। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি, টানা কুড়িদিন শয্যাশায়ী থাকার পর ইহলোক ত্যাগ করেন উমা। আর তারপর থেকেই কেমন করে যেন বদলে যেতে লাগল টুবাইয়ের ভাবমূর্তি। বাবাকে সে সহ্যই করতে পারত না, সব কথাতেই মেজাজ, সব কথাতেই বিরক্তি। অবশেষে একদিন সরাসরি বলেই ফেলল, নবদম্পতির পক্ষে বাবার সঙ্গে একই বাড়িতে থাকা সম্ভব নয়, হয় বাবা কোথাও চলে যাক, নইলে তারাই আলাদা সংসার পাতবে। সেইসময় টুবাইয়ের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছিল সুকান্তবাবুর ভাইয়ের মেয়ে চিত্রা, বলেছিল- ‘ দাদা তো ঠিক কথাই বলেছে, সদ্য বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে জেঠু থেকে কী করবে? তার চেয়ে এই ভাল জেঠু কোনও বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে থাক। সেখানে নিজের একটা লাইফ পাবে, চাইলে লাইফ পার্টনারও’। বলেই তির্যক হেসেছিল চিত্রা। আর বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন সুকান্তবাবু। এই ঘটনার বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল রিনি, কিন্তু শেষপর্যন্ত সুকান্তবাবুর ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রমই।
আশ্রমে আসার পর প্রথম প্রথম রিনি খুব আসত শ্বশুরের সঙ্গে দেখা করতে। টুবাইও আসত কালেভদ্রে। অবশ্য টুবাইয়ের সময়ই বা কোথায়? মস্ত বড় ইঞ্জিনিয়ার সে। তবে, সুকান্তবাবু এইটুকু বুঝতেন যে টুবাই তার বাবার কাছে আসে স্ত্রীর ইচ্ছেতেই। তিনি এও বুঝতেন যে, রিনির আশ্রমে আসার খবর টুবাইয়ের অজানা। এমনভাবেই দিন চলছিল, হঠাৎ একদিন দুপুরবেলায় রিনি এসে কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে সুকান্তবাবুর পায়ে। বলে, ‘ আমি আর আসতে পারব না বাবা, ওর মনে সন্দেহ জেগেছে আমি নাকি এখানে আসি আপনাকে দিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নেওয়ার জন্য। আমার এখানে আসার খবরটা জানতে পেরেই ও বাড়িতে তুমুল অশান্তি করেছে’। তারপর থেকেই আর আসে না রিনি। অবশ্য আসবেই বা কীভাবে? এর কিছুদিন পরেই তো রিনির কোল আলো করে টুবুল এলো। টুবুলের অন্নপ্রাশনে শেষবারের মতো বাড়ি গিয়েছিলেন সুকান্তবাবু। তারপর আর দেখা হয়নি নাতিটাকে। ভাবতে ভাবতে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন সুকান্তবাবু। চিন্তায় ছেদ পড়ল হোমের কাজের মেয়ে মালতীর ডাকে, ‘কাকাবাবু, একটা লোক এসছে, আপনার খোঁজ করছে’।
সুকান্তবাবু, ‘লোক? কোথা থেকে?’
মালতী, ‘তা তো বলতে পারবনি কো, নাম বললে, মিন্ময় সাহা, এ যে কাড দিছেন’।
কার্ডটি হাতে নিয়ে দেখলেন সুকান্তবাবু, ইংরেজি হরফে লেখা, মৃন্ময় সাহা / সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন তিনি, কে এই মৃন্ময় সাহা? যে দিনে-দুপুরে তাঁর খোঁজ করতে এসেছে? অনেক চেষ্টা করেও এই নামের কাউকে চেনেন বলে মনে করতে পারলেন না
সুকান্তবাবু, তবু মালতীর মালতীর সঙ্গে রিসেপশনে এসে উপস্থিত হলেন। কী যেন চেনাজানা কেউ হতেও পারে, স্মৃতিতে তো আজকাল মরচে পড়েছে, দেখলে হয়তো চিনতেও পারেন। রিসেপশনে গিয়ে দেখলেন সেখানে এক দীর্ঘকায়, ছিপছিপে চেহারার গৌরবর্ণের যুবক দাঁড়িয়ে আছে, মুখটি বেশ শান্ত, ঠোঁটে মৃদু হাসির আভা। ছেলেটির বয়স টুবাইয়ের মতোই কিংবা তার থেকে একটু বেশি। ছেলেটির হাতে দু-তিন রকমের মিষ্টির প্যাকেট। একবার দেখেই যুবকটিকে চিনতে পারলেন না সুকান্তবাবু, তবু কেমন যেন চেনা চেনা মনে হল। কিন্তু, ছেলেটি টুবাইয়ের কোনও বন্ধু বা পাড়ার ছেলে যে নয়, সেই বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। তবু, চেনার চেষ্টা করতেই আরও এক পা এগিয়ে গেলেন সুকান্তবাবু, আর তখনই ছেলেটি সহাস্যমুখে তাঁর দিকে তাকিয়ে ডেকে উঠল, ‘বাবা’!
এবার সুকান্তবাবুর আরও একবার অবাক হওয়ার পালা। একটা অচেনা-অজানা ছেলে তাঁকে ‘বাবা’ সম্বোধন করছে কেন? সুকান্তবাবুর হাবভাবে কিছু যেন অনুমান করতে পারে ছেলেটি, আর তারপরেই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে তাঁকে, বলে ওঠে, ‘বাবা! বাবা, আমি মৃন্ময়, মিতুল’। মিতুল নামটায় ঘোর কাটে সুকান্তবাবুর, মিতুল! অফিসের সহকর্মী দুলাল সাহার ছেলে! দুলালবাবু কাজ করতেন সেলসে, বাইরেই থাকতেন বেশিরভাগ সময়, তাঁর ছেলে মৃন্ময় ওরফে মিতুল একরকম সুকান্তবাবুর হাতেই মানুষ। মিতুলের পৈতের সময় ভিক্ষে বাবা হয়েছিলেন তিনি, তারপর থেকেই মিতুল বাবা ডাকে তাঁকে। সেই ছোট্ট মিতুল বড় হল, ইঞ্জিনিয়ার হল, চাকরি করতে চলে গেল বিদেশে, তাও প্রায় পাঁচ-সাত বছর আগের কথা, এর মধ্যে মিতুলের চেহারায় বেশ পরিবর্তনও এসেছে। কিন্তু, মিতুল এখানে কেন? কাঁপা কাঁপা হাতে মিতুলে মুখ স্পর্শ করে প্রশ্ন করলেন সুকান্তবাবু, ‘তুমি তো লন্ডনে ছিলে না? এখানে এলে কবে?’
মিতুল, ‘মাসখানেক হল, পুরোপুরিই চলে এসেছি। মেয়েটার পড়াশোনার অসুবিধা হচ্ছিল, ওয়াইফেরও একই ইচ্ছে, চলে এলাম। কলেজ স্ট্রীটের বাড়িটা বিক্রি করে দিয়েছি, ওখানে এখন আর কেউ নেই...ভাবলাম শুধু শুধু পড়ে আছে তাই... ফ্ল্যাট কিনেছি নিউটাউনে, ওখানেই থাকব। তুমিও থাকবে আমাদের সঙ্গে, তোমাকে আর এখানে কষ্ট করে থাকতে হবে না’।
সর্বনাশ! ছেলেটা বলে কী? সুকান্তবাবু কেন ওদের বাড়িতে থাকবেন? প্রতিবাদী স্বরেই বলে উঠলেন তিনি, ‘তুমি এসব কী বলছ মিতুল? তোমাদের সুখী পরিবারের মধ্যে শুধু শুধু আমি কেন?’
মিতুল, ‘কেন বাবা? আমার নিজের বাবা বেঁচে থাকলে কি আমাদের সঙ্গে থাকতেন না?’
সুকান্তবাবু, ‘সেটা আলাদা কথা। আমি তো তোমার...’
মিতুল, ‘তুমিই আমার বাবা। মা’কে হারিয়েছি কোন ছোটবেলায়, বাবা থাকতেন বাইরে। তুমিই তো আমায় মানুষ করেছো, সঙ্গ দিয়েছ, বিপদে-আপদে পাশে থেকেছো, তাহলে নিজের বাবার থেকে কম কীসে?’
সুকান্তবাবু, ‘তা হয় না মিতুল, তোমার স্ত্রী-এর আপত্তি থাকতে পারে’।
মিতুল, ‘তার কোনও আপত্তি নেই বাবা, সে খুব খুশি তোমায় নিতে আসব জেনে’।
সুকান্তবাবু, ‘তবু, আমি তোমার রক্তের সম্পর্কের তো কেউ নই। কেন তুমি আমাকে...শুধু শুধু...’
মিতুল, ‘বাবা, জন্ম যিনি দেন তিনি জনক। আর পালন যিনি করেন তিনি পিতা। সেইদিক থেকে দেখতে গেলে তুমিই আমার পালক পিতা। নিজের বাবাকে হারিয়েছি বলে কি আরেক বাবার সান্নিধ্য থেকেও বঞ্চিত হতে হবে?’ এরপর আর কিছু বলতে পারেন না সুকান্তবাবু, চোখ থেকে জল বেরিয়ে আসতে থাকে, দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন মিতুলকে। আর তখনই মিতুল তার হাতে করে নিয়ে আসা মিষ্টির বাক্সগুলো খুলে ধরে সুকান্তবাবুর সামনে। এগুলির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি যেগুলি সুকান্তবাবুর খুব প্রিয়। আবেগে আপ্লুত হয়ে জান তিনি, আর তখনই মিতুল বলে ওঠে, ‘আমি সবটাই জানি বাবা। যে ছেলে তোমার মতো বাবা পেয়ে স্বেচ্ছায় হারায়, তার জন্য কষ্ট পেও না। আমি কাল সকালেই তোমায় নিতে আসব, তৈরি থেকো’। এই শেষ কয়টি কথা বলেই মিতুল দ্রুত বেরিয়ে যায় বৃদ্ধাশ্রম থেকে।
এখন সকাল আটটা। আজ আকাশ বেশ পরিষ্কার, ঝলমলে রোদ উঠেছে। মিতুল অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে রিসেপশনে, সঙ্গে তার ছোট্ট মেয়ে সুমি। ধীরে ধীরে নিজের ঘর থেকে সুটকেস নিয়ে বেরিয়ে এলেন সুকান্তবাবু। সুমি এসে তাঁর হাত ধরল, ‘চলো দাদান’। মিতুল এসে তুলে নিল সুটকেসটা। নাতনির হাত ধরে ধীরে ধীরে লনে পা রাখলেন সুকান্তবাবু। সামনে গাড়ি প্রস্তুত, গাড়ির ভেতর বসে রয়েছে পুত্রবধূ, তাঁকে দেখে নেমে এসে পদধূলি মাথায় নিল। এমন জীবনই তো চেয়েছিলেন সুকান্তবাবু, যা নিজের আপনজনেরা তাঁকে দিতে চায়নি, তা পর দিতে প্রস্তুত হল। গাড়িতে ওঠার আগে একবার আকাশের দিকে তাকালেন সুকান্তবাবু, বেলা হলেও সূর্যটা এখনও বেশ স্নিগ্ধ, নতুন দিনের মতোই। আসলে আজ তাঁর জীবনে যে সূর্যের উদয় হয়েছে, সেই সূর্য নতুন দিনেরই.....
No comments:
Post a Comment