Sunday, June 2, 2024


 

ব্যক্তিগত গদ্য


 বাবা 

শ্রাবণী সেনগুপ্ত 

এই  সেদিন পর্যন্ত ওই বাড়ি গেলে সন্ধ্যে হলেই শোবার  ঘর থেকে যেন শুনতে পেতাম অফিস ফেরতা বাবার সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে  আসার আওয়াজ, আর তারপরেই আলমারির ড্রয়ার টেনে  ঘড়ি রাখা।
আদি বাড়ি ফ্ল্যাট হয়ে যাবার পর থেকে আর শুনিনি। আসলে বাবাই ছিলেন আমাদের এক সময়ের একান্নবর্তী পরিবারের প্রাণপুরুষ বাবা আর আমার এক জেঠিমা যারা দুজনে প্রায় সমবয়সী খুব কর্মঠ ছিলেন সমস্ত কিছুর রক্ষণাবেক্ষণ ,খেয়াল রাখার ব্যাপারে এঁরা ছিলেন সিদ্ধহস্ত। জ্যেঠিমা আছেন, কিন্তু বাবা চলে গেছেন ২৯ বছরের পার।  আজও সেই মানুষটার কথা লিখতে বসলে, চোখ জলে ভরে ওঠে।

মনে পড়ে জেঠতুতো দাদার বিয়ের ব্যাপারে বাবার কথা,"বৌদি,  আমার শরীর ভালো থাকতে থাকতে ওর বিয়েটা দিয়ে দাও।" যদিও জ্যেঠু তখন বেঁচে, তাও দায়িত্ব নিয়ে যজ্ঞি বাড়ির কাজ সামলানোর ব্যাপারে বাবা জুড়ি মেলা ভার। অথচ তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ের সময়েই উনি অনুপস্থিত। নিজে মাছ মাংস খেতেন না, কিন্তু মাছ মাংস কেনার ব্যাপারে ছিলেন খুব পটু। মনে পড়ে আমার খুড়তুতো ভাইয়ের  অন্নপ্রাশনের সময় সমস্ত মাছের বাজার উনি করেছিলেন । বাড়ির চাতাল এর একধারে সেই বড় বড় মাছগুলো কাট,তে বসেছিল রান্নার ঠাকুরের জোগাড়েরা, আর বলছিল," খুব ভালো মাছ"- এখনো যেন কানে বাজে, চোখের সামনে ভাসে। 

এতোগুলো ভাইবোনেদের মধ্যে একমাত্র উনিই ছিলেন নিরামিষাসী। আমার দিদা নাকি মায়ের সঙ্গে সম্বন্ধে হওয়ার সময় বলেছিলেন, "বড় জামাইরে কি খাইতে দিমু, সম্বন্ধ ভাইঙ্গা দাও।" বাবা জামাই হিসেবে খুব দায়িত্ববান ছিলেন। সব মাসিদের বিয়ের সম্বন্ধ দেখা, তাঁদের হবু শ্বশুর বাড়িতে কথাবার্তা বলা, সমস্ত বিষয়ে দাদুর ভরসাস্থল ছিলেন তাঁর বড় জামাই। বাবা সমস্ত দায়িত্ব পালন করে বাড়ি ফিরে আসতেন, তা সে যত রাতই হোক। মামাবাড়িতে বাবা গেলেও খুব জামাটি আড্ডা, মামাবাড়ির প্রতিবেশীদের কাছ থেকেই শোনা। সবার কাছে বাবা খুব ভালবাসার পাত্র ছিলেন। মনে পড়ে মায়ের পিসি, যিনি নাকি আবার মায়ের মামীও ছিলেন, বাবা মামাবাড়িতে গেলেই পাশে অবস্থিত মায়ের মামাবাড়িতে যেতেই হত, উনি  বাবা এসেছে টের পেলেই ওঁর জন্য এক কাপ দুধ রাখতেন, সেটি বাবাকে ওঁর সঙ্গে দেখা করে খেয়ে আসতেই হত। আমার বাবা চলে যাবার পর ওঁর নিজের জামাইরা থাকা সত্ত্বেও উনি বলেছিলেন যে, আমাদের বাড়ির শ্রেষ্ঠ জামাই চলে গেল। আজকাল এই শুধু নিজেরটুকু বোঝার যুগে বাবাকে যেন ব্যতিক্রমী মনে হয়।

বাবার আরেকটি পরিচিতি ছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সূত্রে। ছোট বড়ো সবার কাছেই তিনি পরিচিত ছিলেন নির্মলদা হিসেবে।আমাদের বাড়িতে ইস্টবেঙ্গল এর কর্মকর্তাদের গোপন মিটিং হয়েছে দরজা বন্ধ করে।আমার কিশোর জেঠতুতো দাদাদের খুব কৌতূহল সত্ত্বেও তাদের ওই ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মনে পড়ে তখন ভাল ভাল ফুটবল প্লেয়ারদের লুকিয়ে রাখা হত যাতে তাঁরা অন্য ক্লাবে সই করতে না পারে।বাবা এমন একজন বিশিষ্ট প্লেয়ারকে একটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন, পরে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে। আমাদের নাকতলা হাইস্কুলের মাঠে তখন যে ফুটবল খেলা হত, তার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন বাবা। মায়ের কাছে শুনেছিলাম রাত হয়ে গেলে বাবা অফিস থেকে না ফিরলে পাড়ার কেউ এসে বাড়িতে খবর দিয়ে যেতেন-  ইস্টবেঙ্গল হেরে গেছে, নির্মলদা মাঠে শুয়ে আছেন, মন খারাপ, ফিরতে দেরী হবে। কতদিন যে এমন খেলা খেলা করে দেরী হয়েছে, আর বাড়ির বড়রা অপেক্ষা করেছেন বাইরের বারান্দায় তার ঠিক নেই।

একবার,আমি তখন স্কুল বাসে করে যাতায়াত করি, আমাদের নাকতলাতে তখন চিমা ওকেরি ।আমাদের স্কুলের কিছু ছেলেরা ঠিক করল,বাস থেকে চিমার গলায় মালা দেবে। সে এক কান্ড বটে, বাবা চিমাকে নিয়ে দাঁড়ালেন বাস স্ট্যান্ডে, পাশে আমি, স্কুল বাস থেকে তাক করে চিমার গলায় মালা! আমাদের সময়ে ক্লাস টেন থেকে স্কুল বাস দেওয়া হত না, তাই পদ্মশ্রী পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে বাস ধরতে হত। কোনোদিন মা, কোনোদিন বাবা বাসে তুলে দিয়ে আসতেন। ওই রাস্তাতেই পরে সুকুমার সমাজপতির বাড়ি। একদিন বাবা আমাকে পৌঁছাতে গেছেন, বারান্দা থেকে দেখতে পেয়ে উনি ডাক দিয়েছেন বাবাকে।এখনও কানে ভাসে, "নির্মলদা,আপনার মেয়েকে বলে দেবেন কোনো অসুবিধে হলেই যেন এই বাড়িতে চলে আসে, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।" বাবা চলে যাবার পর উনি আমাদের বাড়িতে এসে বলেছিলেন, "নির্মল দা এত অসুস্থ তো জানতেই পারিনি তাহলে এসে একটু ওনার সাথে গল্প করে যেতাম। আর আমরা যদি কখনো ম্যাচ হেরে যেতাম খুব ভয়ে থাকতাম। কারণ নির্মলদা রয়েছে আমাদের কলার তুলে ধরে কিছু বললেও আমরা তার উত্তর দিতে পারতাম না । খুব ভক্তি করতাম আমরাও ওঁকে।" 

বাবার বন্ধুরা বলেছিলেন বাবা নাকি খুব ভালো গোল  দিতেন। একবার বইমেলায় দেখা হয়েছিল পিকে ব্যানার্জির সঙ্গে, উনি বাবা উনি আমাকে বলেছিলেন,"তুমি নির্মলদার মাইয়া, আগে কইবা তো !" পাক্কা ঘটি হয়েও উনি বাবার সঙ্গে বাঙাল ভাষাতেই কথা বলছিলেন এখনো মনে আছে। একবার টিভির পর্দায় বাবাকে দেখেছিলাম খেলোয়াড়দের নিয়ে মাঠে নামতে। সারা নাকতলা এবং অনেক পরিচিত মানুষই বাবার দৌলতে প্রচুর খেলা দেখেছেন মাঠে। শুনেছিলাম বাবার নাকি একটি আলাদা ছবিও আছে ক্লাবে।এইসবই আমাদের অন্যদের থেকে শোনা। বাবা নিজে কখনোই সে রকম ভাবে এইসব গল্প করেননি, তবে চোখে দেখেছি অনেক কিছু। বাবা যখন খুব অসুস্থ হাসপাতালে শোয়া, তখন বাবাকে একটি টিভির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল কেবিনে। সেখানে বাবা শুয়ে শুয়ে ফুটবল ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের খেলা হলে সেই প্রচন্ড যন্ত্রণা ভুলেও দেখতেন, এমনই ফুটবলের সঙ্গে ছিল তাঁর একাত্মতা। এ প্রসঙ্গে আরেকটি ঘটনার কথা না উল্লেখ করলেই নয়। বাবা তখন হাসপাতালে, খুব তাড়াহুড়ো করে হাসপাতাল থেকে বাবার সই নিয়েই আমার রেজিস্ট্রি হয়, যে বাবা সবার বিয়ে, অনুষ্ঠানে সব দায়িত্ব নিতেন, সেই তিনি নিজের একমাত্র মেয়ের রেজিস্ট্রিতে হাসপাতালে শুয়ে অন্যের মুখে সব শুনেছিলেন, আর বলেছিলেন একমাত্র মেয়ের বিয়ে ঘিরে তাঁর স্বপ্নের কথা। যাইহোক, যেটা বলার জন্য এই প্রসঙ্গের অবতারণা। আমার হবু মামাশ্বশুর গিয়েছিলেন বাবার সঙ্গে দেখা করতে, সেই প্রথম তাঁদের সাক্ষাত।তিনি বিছানায় শোওয়া বাবাকে দেখেই বলে উঠেছিলেন,"আরে, টুকরিদা না!" আমরা তো অবাক! সেই প্রথম বাবার এই নাম শুনলাম। বাবার সঙ্গে ওঁর পরিচয় সেই পল্টনের মাঠে। উনি বলছিলেন, "টুকরিদার সেই পায়ের জোর, গোলে শট মারা কি ভোলা যায়। এইভাবে এই পরিস্থিতিতে যে দেখা হবে ভাবিনি। ওই বিশাল লম্বা চওড়া এতো তাড়াতাড়ি ভেঙে গেল ভাবতেই পারছিনা।"

                    আমার প্রথম বইমেলা যাওয়া বাবার হাত ধরে।বইকে বন্ধু করতে শিখি তাঁরই প্রশ্রয়ে।আমাদের সংসারে একটি জিনিসেরই রমরমা ছিল, তা হল বইয়ের।বাবা আমার জন্য রাসবিহারী থেকে বই ভাড়া  করে নিয়ে আসতেন অফিস থেকে আসার সময়।নির্দিষ্ট সময় পরে, পড়া হয়ে গেলে তা আবার ফেরত দিয়ে আসতেন।এখন ভাবি,অফিস যাওয়া আসার সময় ঘুর পথ হলেও বাবা আমার পড়ার অভ্যেস তৈরি করার জন্য এত কিছু করতেন।পার্টির স্টল থেকে বই কেনা ছিল আবশ্যিক। এই সূত্রে কিছু সোনার খনিও পেয়েছিলাম, যেমন - আর্কাদি গাইদারের ইস্কুল।প্রচুর রাশিয়ান বই ছিল আমার।বাবা অফিসে আনাতেন মিশা। সীমিত আয়ের মধ্যে বাবা যতটা পেরেছেন বইয়ের প্রতি ভালবাসা তৈরি করে দিয়েছিলেন,পড়িয়েছিলেন
তখনকার দিনের এক ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়ে।আমার অনেক পরিচিতজনদের বাড়িতে দেখেছি ছেলেদের পড়াশোনায় বেশি প্রাধান্য দিতে,কিন্তু আমাদের বাড়ি ছিল সত্যিই ব্যতিক্রমী।ছেলেরা সব পড়েছে পাড়ার স্কুলে (যদিও সেই স্কুলেরও যথেষ্টই সুনাম ছিল)আর মেয়েরা দূরের একটু অভিজাত স্কুলে।কষ্ট করেই পড়াতেন,ওই একার আয়েই চেষ্টা করতেন ভবিষ্যতের সবটুকু সুখ যাতে আমাদের ভান্ডারে আসে তার।তার জন্য বাবার অসম্ভব কৃচ্ছসাধনের কথা মনে করে এই পরিণত বয়সেও অসম্ভব মনে হয়।
       আমাদের একান্নবর্তী পরিবারে দোল খেলা বা কালীপুজোতে বাজি ফাটানো সব কিছুতে বাবার খুব উৎসাহ ছিল। দোলের দিন আমাদের সব ভাইবোনদের নিয়ে বাবা সাদা পাঞ্জাবি আর ঢোলা পাজামা (এছাড়া বাবা চিরকাল ধুতি পাঞ্জাবি পরতেন)পরে যেতেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ঘোষ জ্যেঠুর বাড়িতে।ওখানে ছিল প্রতিষ্ঠিত  রাধাকৃষ্ণের মূর্তি,খুব মজা হত-পুজো,প্রসাদ।আর কালি পূজোর আগে ডালহৌসি পাড়া থেকে আনতেন সাধারণ বাজির সঙ্গে আরও কিছু সদ্য বাজারে আসা বাজি ।তারমধ্যে মনে পড়ে রে কথা -কত কসরৎ করে তার টাঙিয়ে সেটা চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।বাবা আমাদের সব ভাইবোনদের (আমরা ও জেঠতুতো,খুড়তুতো) কোলে করে সেই তার অব্ধি তুলে রেলবাজিতে আগুন দিতে সাহায্য করছিলেন।ছোটদের সঙ্গে খুব হৃদ্যতা ছিল বাবার। এতো মজা করতেন, আমার খুড়তুতো বোন বাবাকে জ্যেঠু না বলে বলত ' পাপ্পাপাপা',।এখন খুব খারাপ লাগে,আমার ভাইয়ের ছেলে এমন ঠাকুরদার সঙ্গই পেলনা ।খুব মজা করে কথা বলতেন বাবা।হয়ত একটা কুকুর খুব জোড়ে দৌড়ে যাচ্ছে,বাবা হঠাৎ বললেন,"সদ্য অলিম্পিকে দৌড়ে এলো তো,তাই এখনও জোশ রয়েছে।"আমি ভেবেছি কোনো লোক হয়ত,ওমা পাশ দিয়ে দেখি কুকুরটা জোরে দৌড়ে গেল । আমার স্কুলে অভিভাবকদের মিটিং এ বাবাই যেতেন,সেই নিয়ে মাকে বলতেনও যে,সব মেয়েরাই যায়,আর আমি যাই। প্রত্যেকবার যাবার আগে আমাকে বলতেন,"দেখতো ড্রেস ঠিক আছে কিনা।"একবার খুব শখ করে বাবা একটা কোট বানিয়েছিলেন,সেইটা আমায় দেখিয়ে বলেছিলেন,"এইটা পরে তোর শ্বশুর বাড়ি যাব।"আর বলতেন,"একটা ঝুল বারান্দা বানাব,তোর বিয়ে দিয়ে আমি আর তোর মা ঝুল বারান্দায় বসে থাকব।"বাবার সেই সখ পূরণ হয়নি।চিরকাল দায়িত্বর বোঝা মাথায় নিয়ে,দুশ্চিন্তায় ভুগে মানুষটা  কত তাড়াতাড়ি চলে গেল।
  
বাবা চলে যাবার কিছুদিন পর বাবার অফিসের একজন ভদ্রলোক দেখা করতে আসেন।আমি গিয়ে দাঁড়ালে তিনি বললেন যে,সব কিছুর মধ্যেও ওঁর একটা দোষ ছিল। সদ্য পিতৃহারা আমার সে কথা শুনে খুব রাগ হয়েছিল।একটু থেমে উনি বললেন যে, নির্মলবাবু স্টার্নলি অনেস্ট ছিলেন।ঠিক একথাটি উনি বলেছিলেন,এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করে।উনি এও বলেছিলেন যে,উনি রেলের যেই ডিপার্টমেন্ট এ কাজ করতেন,সেখানে থেকে লোকে লাল হয়ে যায়,সেখানে ওঁর মতন নির্লোভ মানুষ দেখা যায়না।সত্যি বলছি,আমি হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেছিলাম।মায়ের পেনশনের সময় ভাই সেটা টের পেয়েছিল।কিছু অসুবিধার জন্য বাবার ডিপার্টমেন্ট এ ও গিয়েছিল,তখন যেভাবে সবাই ওকে যত্ন করে সহযোগিতা করেছিলেন ভাবা যায়না।সেই কাজ একবারেই হয়ে গিয়েছিল। পাড়ার একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বলেছিলেন যে,এই কাজ করতে নাকি জুতোর সুকতলা ক্ষয়ে যাবার কথা। পরে লোকমুখে শুনেছিলাম বাবা নাকি অসময়ে বহু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।তাঁরা নিজমুখে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসে জানিয়ে গেছেন আর চোখের জল ফেলেছেন।আরেকটা ব্যাপার আমাকে আশ্চর্য করি, বাবাকে কোনোদিন কারোর সমালোচনা করতে দেখিনি ।নিজের লোকেদের থেকেও কম দুঃখ পাননি,কিন্তু মুখ ফুটেও কোনোদিন তা প্রকাশ করেননি। এখনো যখন ওই বাড়ি যাই, পরিচিত জনেরা জানতে চান কেমন আছি,তারপর নিজেরাই   বলেন , -"অত সৎ মানুষের ছেলে মেয়ে তোমরা,তোমাদের খারাপ হতেই  পারেনা।" মাথা উঁচু হয়ে যায়।

       হয়তো জাগতিকভাবে ধনী ছিলাম না, কিন্তু এমন বাবার মেয়ে হতে পেরে তাঁর মূল্যবোধ মনে
বপন করে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি ।একটাই সারাজীবনের আফসোস, বাবা আমার মধ্যে যা দেখতে চেয়েছিলেন,তার কিছুটা হয়ত ছুঁতে পেরেছি,কিন্তু বাবা দেখে যেতে পারলেন না,সেই সময় অপটু, অর্থনৈতিকভাবে কমজোরী আমি নিজের সাধ্যমতন চেষ্টা করেছিলাম ঠিকই, কিন্তু তোমাকে আজ অনেক যত্নে রাখতে পারতাম বাবা। তোমার সেই ক্ষয়ে যাওয়া চেহারা, কাউকে কিছু না বুঝতে দিয়ে সবটা নিজের মধ্যে বয়ে নিয়ে যাওয়া আমি যে ভুলতে পারিনা। আর লিখতে পারছিনা, সব ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে,এক আকাশ তোমাকে ছোঁওয়া আমার কলমের সাধ্যি নয়। ভাল থেকো,ভাল আছি। 

No comments:

Post a Comment