Monday, October 5, 2020


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অসম্পূর্ণ  পাতা থেকে 
    মৌসুমী  নন্দী 

বুকের ভিতরে একটা নদী আছে ৷ একসময়  নদীটা হৃদয়নগরীর পাঁজর ঘেঁষে বয়ে যেত ৷সময়ের তোড়ে বিষন্নতার জলছবিতে বুকের ভিতর  কেঁদে কেঁদে  হারিয়ে যায় কোনো একসময় ৷ঢেউ ভেঙে চুরমার হতে থাকে ৷শেষে আকৃতি হীন  চাঁদের মতো একেবারে মুছে যায় ৷
           নদীর কান্না  শুনেছি কত রাত!কত রাত নৈঃশব্দ্যকে খান খান করে শুনেছি তাকে ৷ ভেতরে ভেতরে সেই কান্না বরফ জমায় ৷ তারপর সেই অপেক্ষা  উত্তাপের ৷ রাত্রে ঘুমের মধ্যে এক অদ্ভুত  চামড়া পোড়ার গন্ধ পাই প্রতিনিয়ত  ৷ নোনো ধরা শরীর নিয়ে বসে থাকি ৷ তীব্র খরা শরীর জুড়ে ৷ চারিদিকে বিষন্নতার  বাতাস ৷ সেই বাতাসে প্রেম নেই , বৃষ্টি  নেই ৷ রাতের আকাশের বোবা চাঁদটাও মাঝে মাঝে লুকিয়ে পড়ে ৷ 
         জীবনের সম্পর্ক গুলো যখন আকাশের নক্ষত্র হয়ে যায় তখন তাদের হাতড়াতে খোলা ছাদে যেতে হয় ৷ উজ্জ্বল নক্ষত্র গুলোকে দেখতে দেখতে একসময়  দেখি আকাশের অনেক নীচ  দিয়ে প্রেমেরা মেঘের সাজে পেরিয়ে যাচ্ছে ,কেউ একবারের জন্যও বৃষ্টি হয়ে ঝরছে না ৷  প্রেম অন্ধকারকে ভয় পায় তাই আলোর খোঁজে  রাতের আকাশ ছেড়ে যায় ৷ অন্ধকার নির্জন ছাদে আমি  দাঁড়িয়ে একাকী তখনো অমোঘ লবণাক্ত  মাধ্যাকর্ষণে ৷ কীভাবে যেন তবু বেঁচে আছি ৷ তবে রোজ কয়েকবার মৃত্যুর কামড় বদলে গন্তব্যের দিকে ছুটি
 ৷ বিকারগ্রস্ত  নস্ট্যালজিয়ায়   এদিক্‌-ওদিক্‌  উষ্ণতার খুঁজি৷ খুঁজতেই থাকি থাকি ৷ তারপরে একসময় ভুলে যাই কি খুঁজছি ৷  গন্তব্যের  পৌঁছানোর নেশায় পাই কিছু পরিচিত গন্ধ ৷ ঐ গন্ধ হাতড়ে বেশ কিছু ভুল হাত ধরে হেঁটেছি পৌনঃপুনিক ৷ একটা ভুল থেকে আর একটা ভুলে প্রবেশের মাঝে ঐ গন্ধই  আমায় বা‌ঁচিয়ে রাখে ৷ কিন্তু  প্রতিবার এক একটা মৃত্যু পেরিয়ে কবিতা লিখতে চেয়েছে নিউরোন  ----- আজ কাল বেশি ভেবে  লিখলে সমালোচনা হয় , তারচেয়ে  পাগলের প্রলাপ ভেবে আমার ডায়েরী  নিয়ে হাসাহাসি হোক ৷আমি অতীত থেকে  এই মুহূর্ত পর্যন্ত  একটা বড়ো নামচা লিখে যেতে চাই এলোমেলো  পাখির বাসার মতো ৷ সুইসাইড নোট বা আমার বেঁচে  থাকার কৈফিয়ত  ৷ কারো কাছে জবাবদিহি  করার দায় থেকে নয় নিজের ঘরের আয়নাটার প্রতি ভালোবাসায় ৷কেন জানি না একটু হাসতে ইচ্ছা করছে  ৷ একা একাই হাসতে থাকি পাগলের মতো ৷ তারপরে হঠাৎ  কয়েক মুহূর্তের নৈঃশব্দ্য ৷ ভাবনাগুলো সব বাক শূণ্য  হয়ে যায় ৷ একটু চুপচাপ  থাকি ৷ চুপের ভিতর ধীরে ধীরে চাপ সৃষ্টি  হয় ৷ চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে খুব ৷ কিন্তু কান্নারাও মাঝে মাঝে  আত্ম অভিমানী  হয় ৷ সারাজীবন  বিষাদ বইতে বইতে  এ যেন এক বিষাদের নদী ৷ তবুও তো স্রোত বয় তির তির করে ৷ চিনে চিনে একটা কিছু জেগে ওঠে বুকের ভিতর ৷ ঘোলা জলে আবছা দেখি সব ৷দুরারোগ্য  এক অসুখ বুকে ৷ যেমন স্কাইলাইনের মত আকাশ মাটিকে ছোঁয় না কেবল উঁচু উঁচু  বাড়ীর ছাদ ছোঁয় তেমনি আমি কাউকে দেখাতে পারি না সেই ছবি ৷ রাত গুলো শুধু রতিজলের মতো সংরক্ষণ  করে চলেছি একাকি ৷
               আমি শুধু একটা পাতা থেকে আরো এক পাতায় ......

No comments:

Post a Comment