একটি কাল্পনিক চরিত্র আর একটি বাস্তবিক জিজ্ঞাসা
সৌরভ দত্ত
কথায় বলে না 'শান্তির ঘুম'!
সদ্য প্রাপ্ত কোনো শান্তি যখন মনকে আহ্লাদিত করে
আমার না, রাতে বিছানায় শুয়ে কিছুতেই ঘুম আসে না।
রাত গড়িয়ে ঘুম আসার সময় প্রায় পেরিয়ে যায়।
শিল্পনগরী থেকে শিলিগুড়িগামী নাইট সুপার বাসগুলো
হয়তো বোলপুর রামপুরহাটের যানজটময় চৌহদ্দি পেরিয়ে
গভীর রাতে ঐ সেই ওমরপুর পৌঁছে
ঠান্ডা মোটা চালের ভাত, সাথে নেতিয়ে পড়া কাঁচা পেঁয়াজ,
অতি হলুদের ডালের জল, তরকারি কোনো,
চিকন মাছের পিস আর তার ট্যালটেলে ঝোলে
যাত্রী খদ্দেরদের লোকঠকানো নৈশভোজ খাইয়ে
নির্ধারিত সময়ের চার ঘণ্টা বিলম্বে লক্ষ্যে পৌঁছবে বলে
শেষরাত করে গঙ্গা পেরোনর তাগিদে ফারাক্কার পথ ধরে,
তবু ঘরের বিছানায় আমার কিছুতেই ঘুম আসে না।
আঁধার ঘরে আমি সুখের আলোকিত জগতে বাস করি
আর পরিতৃপ্তির বন্যায় নিজেকে দিব্যি ভাসিয়ে দিয়ে
ডুব সাঁতারে চলতে চলতে অলীক সুখে সময় কাটাই।
কী যে এক শান্তির বাতাবরণ শরীর ও মন জুড়ে চলে যে
বিস্মৃত হই কখন উপনীত হয়ে পড়েছি ভোরের দোরগোড়ায়।
অথচ, এই আমিই, এক গুচ্ছ চাপের মুখে যখন রীতিমতো
বিপর্যস্ত, ত্রস্ত, মানসিকভাবে অ-সুস্থ প্রায়,
এলোমেলো ঘুমিয়ে ভোর গড়িয়ে সকাল হলেও
চোখ মেলে চাপের পৃথিবীর দিকে তাকাতেই মন চায় না।
তখন অ-শান্তি থেকে বাঁচার ঠিকানাই যেন ঘুমের দেশ।
কেমন এক বৈপরীত্যের সমাহার না!
মেলে না আমার নিজের হিসেবগুলোঃ ঘুম নাকি অনিদ্রা!
শান্তি যদি কারণ হয়, বিনিদ্র রজনী তার ফল,
আর অ-শান্তি যদি কারণ হয়, ঘুমই তখন আশ্রয়।
... ... ...
কিন্তু তাহলে চির শান্তির জন্য না-ফেরার দেশের মানুষজন
চিরনিদ্রায় শায়িত হয় কেন?
No comments:
Post a Comment