রূপকথার পরী
জয়তী ব্যানার্জী
কেউ কি একা থাকতে চায় ?
তবু যেন কখনো কখনো
ভিটের মধ্যেও একা লাগে ;
কাছে থেকেও কেউ
থাকে না যে পাশে !
ঠিক এমনি ভাবেই
একদিন পাড়ি দেয়
অবলা এক নারী ।
হ্যাঁ অবলা ____
কেউ কি বলে সে কথা ?
কেন বলবে না গো ?
নারী তো অবলা ই,
তার তো সবেতেই বাধা -
হাসতে মানা ,
গাইতে মানা ,
পড়তে মানা ,
যেতে মানা
আর যে মানা প্রাণ খোলা হাসিতে ।
স্বপ্ন দেখাতেও তো তার নেই অধিকার ।
সে যে মাতৃগর্ভ থেকে বেরিয়েই
ললনা নামে ক'রে আত্মপ্রকাশ ।
তারপর, তারপর ভেলা দেয় ভাসিয়ে __
যে ভেলায় বেহুলা নিয়ে চলে
তার সতীত্ব কে।
কিন্তু সব কিছুই তো পাল্টে যায়।
উল্টে দেখো পাল্টে গিয়েছের মতোই, এক অচেনা অজানা রাতে তুমি চিনিয়ে দিলে
রাধার পর বাড়া আর বাড়ার পর রাঁধা ই শুধু নয়;
সে জানে কিভাবে স্বপ্ন দেখতে হয় !
আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে হয়।
যে দেশে তিলোত্তমা অভয়ার জন্য মোমবাতি মিছিলে
হই আমরা শামিল ,
এই দেশে র জিনকে কুক্ষিগত করে
স্বপ্নের ডানায় ভেসে বেড়ায় কঙ্কাবতী।
সফর শেষে স্বপ্নের ডানায় ভর দিয়ে ,
বলে হাসি মুখে _
"মহাকাশকে বড় করব যে মিস"!
তখনই যেন মনে পড়ে যায় ,
সার্থক জনম আমার
জন্মেছি এই দেশে।
সূর্যের দেশ ভারত বর্ষ ।
যে দেশে দ্রৌপদী পেরেছে
পৌরষত্বকে ধ্বংস করতে,
সীতা তার সতীত্বকে রক্ষা করতে আপোষ করেনি ,
আবার তিলোত্তমা পেরেছে
আপামর জনসাধারণকে
দুঃশাসনের বেড়াজাল দেখিয়ে দিতে ।
আর তুমি ,
তুমি দেখিয়েছো
যে বয়সে ঘরে বসে
কাটাকুটি খেলার সময় ;
সেখানে তুমি
নয় নয়টা মাস তোমার নিজস্ব পরিসর, সেই গহ্বর---- মাতৃগর্ভের থেকে বেরিয়ে এসে দেখিয়ে দিলে ,
দ্বিজ শুধু পুরুষরাই হয় না ;
হতে পারে
রূপকথার পরীরাও।।
No comments:
Post a Comment