বিতর্ক–আন্দোলন হয়, প্রতিবাদ হয়
তবু বিচার অন্ধকারেই রয়...
বিপক্ষে
বেলা দে
মেয়েটা সমাজসেবী হতে চেয়েছিল, হতে চেয়েছিল একজন ভালো ডাক্তার, বরাবরের মেধাবী ছাত্রী পূরণ করতে চেয়েছিল নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা মায়ের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে, কিন্তু অধরাই রয়ে গেল জীবন। দুর্মতি শাসকের নেকনজরে পড়ে চলে যেতে হল দুনিয়ার বাইরে, এমন এক অসভ্য রাজনীতির এঁদো ডোবায় পড়ে নিজেকেও অপরাধী বলে মনে হয় হায়রে পোড়া কপাল কপট রাজনৈতিক খেলায় পাশার ঘুটি হয়ে ঘুরছে মানবদল। কোনোদিন কি এর সমাধান হবে না। পুত্তলিকা বানিয়ে রেখেছে পুলিশ প্রশাসন থেকে আইন আদালত, ডাক্তার থেকে হাসপাতালের অধ্যক্ষ পর্যন্ত। টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছে মানবিক ধর্ম সংস্কার রাজপাট। ওদের শাস্তি কেউ কি দিতে পারবে না কুরুক্ষেত্রের কৃষ্ণ হয়ে কেউ আসতে পারে না। প্রাণ হারালো মানবিক ধর্ম পালন করতে গিয়ে অসহায় মেয়েটা, ও যে আপনার আমার ঘরেরই কন্যা। ওদের বর্বরোচিত কার্যকলাপ
টের পেয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর সাক্ষী হল। রাজ্য তথা দেশ, দেশ থেকে বিদেশ নাড়িয়ে দিয়েও সুবিচার পেল না মেয়েটা। প্রমাণ লোপাটের মত অহিতাচার করেও ধামাচাপা দিয়ে দিল। সেমিনার কক্ষে ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ পড়ে ছিল জেনেও কিছুই করার ছিল না বাবামায়ের, মৃত সন্তানের মুখখানি দেখতে চেয়েছিল একবার, তড়িঘড়ি প্রমাণ লোপাটের জন্য এত নীচ হতে পারে কোনো রক্তমাংসের মানুষ। এই বিপথগামী দুরাচারী আজও সমাজের বুকে দেশেবিদেশে বুক চেতিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উচ্চ আদালত সি বি আই অব্দি মুখে সেলোটেপ আটকে লুকিয়ে পড়েছে সরকার জুজুর
ভয়ে, এর মধ্যে ওদেরও নিশ্চয়ই ভাগ বাটোয়ারা আছে। হাইকোর্ট তুলে দিল তদন্তের ভার CBI এর হাতে তাতে কি হল চরমতম অপরাধী সন্দীপ ঘোষ ছাড়া পেয়ে গেল। একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসার পরেও কেন CBI পিছু হটে গেল?
কি হয়েছিল সেদিন ৯ই আগস্ট সকাল ৭টায় সেমিনার কক্ষে এক অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্ব উত্তাল হয়ে পরলো? ৩৬ ঘন্টা ডিউটির পর রাত ১২টায় খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে ডাক্তার মেয়েটা, সারাদিন কাজের পর একটু ঘুমোবে বলে সেমিনার রুমে গিয়েছিল, সকাল বেলা সে হয়ে গেল মৃত লাশ, সমস্ত কক্ষে সিসি টিভি থাকা সত্বেও সেমিনার রুমে কেন ছিল না? মৃতদেহের পাশে যে হেডফোন পাওয়া গেছে সেটা সঞ্জয় রাই এর পরে তাকে সেই রুমে দেখা যায় সেটা খোঁজ করতে। সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় ৪৫ মিনিট মদ্যপ অবস্থায় সেমিনার রুমে ছিল সে প্রমাণও মেলে, কেন ছিল?
এ মৃত্যু আত্মহত্যা বলে বাবা-মা কে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিশ্বাস করেনি তারা, মেয়েকে ওরা জানে বলে বিশ্বাসের সাথে কথা বলে "আমাদের মেয়ে আত্মহত্যা করার মেয়ে নয় ওর মনোবল প্রবল" পুলিশের এই উদাসীনতা কেন? বুঝতে বাকি নেই জনগণের। MLA থেকে কাউন্সিলার পর্যন্ত পৌঁছে যায় শ্মশানে যাদের মেয়ে তারা কেন হল বলির পাঁঠা, মেয়েকে কাটাছেঁড়া করার আভে দেখতেও দিল না। রাত পোহাতেই শুরু হল সেমিনার কক্ষের ভাঙ্গাচোরা কি ছিল সেখানে লুকানো? গজনানন্দের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় শতেক আঘাতের চিহ্ন ছিল মেয়েটার শরীরে অথচ পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে কিছুই পাওয়া যায়নি। রাত দখল করেছে মেয়েরা সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ লাঠি চার্জের মত ঘৃণ্য কাজ করে। we for Justice/ Justice for RGkar স্লোগানে স্লোগানে দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মিছিলের পর মিছিল দিন নেই রাত নেই ঘর সংসার সব ছেড়ে রাস্তায় নেমেছে জনতা _শৈশব থেকে কৈশোর আবালবৃদ্ধবনিতা কৃষক মজুর থেকে আধিকারিক অশক্ত পঙ্গুত্ব পর্যন্ত, এখনো আমজনতা কি ভাবছে আমরা এই রাজত্বেই থাকবো একবার আসুন না সুচিন্তক মানুষ কি বলে।
No comments:
Post a Comment