Sunday, August 3, 2025


 





শব্দ হীন ন্যায় 

জয়তী ব্যানার্জী 


        নিশুতি শহরের কোলে 
কান্না নামে নিঃশব্দে,আলো নিভে যায় দালানে ----প্রতীক্ষার শূন্যদ্বারে।
 
           নিমেষে ছাই হয়ে গেল স্বপ্ন,
               রক্তিম সেই শহর ;
প্রতি রাতে আর জোছনা নামে না ক্যান্টিনের দরবারে।

              শ্বেত পাথরের দেয়াল লাগা কিশোরী মুখের হাসি, আর জি করের অলিন্দে বেজে ওঠে এক দুঃস্বপ্নের রাত্রি।

            সেই দুঃস্বপ্নের সব শীতল দেয়ালে জমে উঠে রক্তের প্রতিচ্ছবির কবর। 
         খুঁজি মায়ের চোখে আশ্বাস,
              বন্ধুদের মুঠোফোনে নিরাপত্তা যে বিহ্বল_____ নিঃশব্দে জ্বলে আলোর রোশনাই, 
          সতীর্থরা হাঁটে মাথা নত,
  প্রতিবাদের স্তব্ধ কণ্ঠে, নির্যাতনের ছায়া আজও ওড়ে সেই গগনে।
       প্রশ্ন জাগে, কতটা বেদনা ঢেকে রাখে সাদা চাদর ,
কতটা অন্ধকারে এসে ভবিষ্যতের নির্মাণ কবর ,
          পড়ে আছে যেন অজানা প্রতিক্ষা্য জাল বিস্তারে
সত্য হারায় খবরে খবরে,
       বিচারে বিলাপে দাঁড়িয়ে আছে জনতা 
            প্রতিবাদের দীপ্তি ওঠে।

 মেয়েটির স্মৃতিতে জেগে ওঠে____ ন্যায়ের অঙ্গীকারে,
       শব্দ নেই ;শুধু কাঁপে হৃদয় _____নিপীড়িতা নামের পাঁজরে ।

স্তব্ধ অলিন্দ এ হাহাকার 
           কার বিহান গড়ে, 
শুরু ছিল চিকিৎসার,
         শেষ টা রক্তাক্ত করিডোরে,
        সেই কন্যার যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা 
        লুটিয়ে গেল মাটির গভীরে।

      দেয়ালে আঁকা ভবিষ্যৎ চিত্র মুখের আলো নিশিলা রাতে 
        প্রাণের প্রচেষ্টায় ঝরল চোখ_____ সেই মৃত্যু পথের সাথে।

          কে বল বাতির নীচে আলো, প্রহরায় আস্তরণে নির্ভরতা, অন্ধকারে গুমড়ে কাঁদে এই শহরের বিবেক ও মমতা।
 তবু আশার আলো জ্বলে ওঠে জেগে থাকা চোখে 
           অন্ধকার যতই হোক_____ প্রতিবাদের শপথ কণ্ঠে বুকে___ চিৎকার মুখর পথে পথে,
         সকলে ই
                  চাই "সুবিচার "
দেখো ,
            প্রতিবাদ কখনো বৃথা যায় না ,হাজারোবার মনুষ্য জাতি দাঁড়ায় পাশাপাশি দীপ্ত শপথ নিয়ে ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে নারী এ নতূন দর্শন যাচে।

            তুমি ছিলে সূর্যসম
                  আজ হলেই দীপ্তস্মৃতি তোমার যে যন্ত্রনা জেগে থাক ভবিষ্যতের চেতনায়।

          ওই নারী 
          শত শিক্ষার আঁধার 
              স্বপ্নে গড়া ছিল ভবিষ্যৎ ধূসর সব শ্বাপদ নির্দিষ্ট ঘরে নিঃশব্দ এক মৃত্যু হল রচিত। 
        
          জড়ানো খবরের ভরে দেশ
             আহত আত্মার চিৎকার ন্যায়বিচারের শিকল ধরা 
           প্রতিবাদ ওঠে হাহাকার ।
      যদিও বা ফুটে ওঠে ঘাতকের ছায়া সেই রক্ষী ,সেই সংযত বাহার----
            এখনও কলঙ্কের ছাপ সারা গায়ে। রক্তাক্ত কাগজ বলে ____আঘাত যন্ত্রণায় বিখত দেহ
         কন্ঠের ভাঙ্গা হার  
               ক্ষতবিক্ষত মাঠ 
দাবি উঠেছে চতুর্দিকে____
            নারীর নিরাপত্তা,
                সুবিচার চাই
             মায়ের শপথ, মৃন্ময়ী নয় রক্তময়ীর হোক এই দায় ।
      বিদ্রোহী কবির অভিযোগ-----
          মা, তুমি এসো না,
                মানবেই পারি নি রক্ষা ভূতলে নারীর আমাদের 
              ঘুমোতে মানা। 

                মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রীদের অগ্নিগর্ভ প্রতিবাদ জ্বলে, চারিদিক থেকে তদন্ত আসে , দোষী পাক শাস্তি জনমানষে।

            উত্তাল স্পন্দন নগরে নগরে জনতার সমাবেশ ,সম্মানের, নিরাপত্তার স্বপ্ন বুকে----- আবার গড়ি নতুন দেশ।

         ওরে অন্ধকার,
             চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস তুই করিস কতো,তোর অমানুষতা হেরে যায় মানুষের সঙ্গে।
            ইতিহাসে আবারও যত, শোকের সুরে ভোরূআলোয় নতুন স্বপ্ন বোনে,
          " আর নয়"
             প্রতিজ্ঞায় এ হৃদয়
               বিচার চায় সকলে একসঙ্গে।

চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে আসে কালো কালো মেঘের ভিতর জন্ম নেয় প্রতীক্ষা ,
রবে না ভয়, রবে না সংশয়,
           শঙ্খ বাজে, জেগে ওঠে প্রজ্ঞা।

           সবাই মিলে গড়ি সমাজ----- যেথায় মর্যাদা নিরাপত্তা অটুট,
          তোমার মৃত্যু হোক সেতু,
ন্যায়ের অলংকার যত স্নিগ্ধ ও উজ্জ্বল।

No comments:

Post a Comment