Wednesday, October 2, 2019







তৃতীয় পর্ব
(কবিতা, ছড়া )

সম্পাদকের কথা

শরতের আকাশে এখন সাদা মেঘের আনাগোনা। সবুজে ঢেকেছে চারদিক। সকালের বাতাসে শিউলি সুবাস। সূর্যের আলোতে মিঠে-কড়া ভাব। সব মিলে অদ্ভুত প্রশান্তি প্রকৃতিতে। 

মা আসছেন। 

দীর্ঘ উত্সব মরশুম। প্রকৃতি প্রশান্ত হলেও বর্ষার খামখেয়ালিপনায় জলমগ্ন দেশের নানা অঞ্চল। দুর্গতিতে মানুষ। পাশাপাশি নিজ দেশভূমে উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কায় বহু মানুষ। এদের কারো কাছে তাই এই উত্সব হয়তো আলাদা কোনো বার্তা আনছে না। 

তবু মা আসছেন। 

মা এভাবেই আসেন। সব ভুলে যাই আমরা তাঁর আগমনে। সরিয়ে রাখি আমাদের যাবতীয় সব বেদনা, কষ্ট। এভাবেই চলছি আমরা প্রতিনিয়ত। সমস্যার জীবনে ছোট ছোট টুকরো আনন্দ সম্বল করে আমাদের বেঁচে থাকা। আমাদের সব দুঃখের অবসান তাঁর চিন্ময়ী মূর্তি দর্শনে। 

মা আসুন তাই বারবার। এভাবেই... 



মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন আশ্বিন সংখ্যা ১৪২৬


যোগাযোগ- হসপিটাল রোড, কোচবিহার 
ইমেল ঠিকানা- mujnaisahityopotrika@gmail.com
প্রকাশক- রীনা সাহা 
সম্পাদনা, অলংকরণ ও বিন্যাস - শৌভিক রায় 


মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন আশ্বিন সংখ্যা ১৪২৬







এই পর্বে আছেন যাঁরা  

সুবীর সরকার, লক্ষ্মী নন্দী, বেলা দে  গীর্বাণী চক্রবর্তী, রাহুল গাঙ্গুলী, মোনালিসা রেহমান, 

 ধীরাজ কুমার রায়, রীনা মজুমদার, বহ্নিশিখা ঘোষ, মিঠু অধিকারী, রাখী বসাক, ফিরোজ

 হক, সুব্রত নন্দী,  চঞ্চরিকা ভট্টাচার্য, গায়েত্রী দেবনাথ, সৌগত রাণা কবিয়াল, তাপস দাস,

 সাহানুর হক, 

যীশু চক্রবর্তী, উত্তমকুমার পুরকাইত, সবুজ সরকার, পারমিতা রাহা হালদার, মাথুর দাস,

 রথীনপার্থ মন্ডল, স্বপনকুমার চট্টোপাধ্যায়, সোনালী সিং, প্রতিভা পাল সেন, সুজাতা মিথিলা,

 তানিয়া ব্যানার্জি, প্রিয়াঙ্কা ভুঁইয়া, সঞ্চিতা দাস, লুবনা আখতার বানু, মাম্পি রায়, 

শৌভিক কার্য্যী, সত্য মোদক




প্রচ্ছদ ছবি- ঋতভাষ রায় 



মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা অনলাইন আশ্বিন সংখ্যা ১৪২৬






গুচ্ছ কবিতা




সুবীর সরকার



প্রতিবেদন


প্রতিটি প্রতিবেদনের সামনে আমরা ঝুলিয়ে দিই
                                                 মৃতদের ছবি
তোমার চোখের জলে
আস্ত এক জলাধার
মিউজিক রুম থেকে হেঁটে এলে দেখি
                    তোমার ওড়না ভিজে যাচ্ছে         
আমার জীবন তো খোলা হওয়ার
                                 মধ্যে ভেসে যাওয়া
নিভে যাওয়া আগুন কখনোই ফিরে আসে 
                                                     না
ইদানিং ঘন ঘন প্রেমে পড়েছি
তোমার গানের পাশে খোঁড়া 
                                    খরগোশ




স্যরিডন

নদীর দিকে যাচ্ছি আর আমাদের পকেটে 
                  স্যারিডন
ধুসর বর্ণের এই দেশে 
জন্ম মরণের এই গ্রহে
পাপিতাপীদের হাতে হাতে চিমনি
                                              লণ্ঠন
কাঁদপন্থে সেই সব গান আজও ঘোরে
দেওয়ালচিত্রের সামনে খুব হোঁচট
                                          খাই
তোমার মুখের দিকে প্রাচীন কোন গল্পের
                                              ঘ্রাণ
বর্ষা বর্শার পাশে 
সেইসব বাতিল কামান
আমাদের শোক খুব সংক্ষিপ্ত
আমাদের ম্যানিকিওর করা আঙুলে
                    মেঘ বিছিয়ে দেয় ছায়া






বাহান্নঘর কলোনি থেকে


বাহান্নঘর কলোনি থেকে আমি আর্তনাদ তুলে
                                                  এনেছি
জোড়া পুকুরে ডুবে মরা সেই সাহেবের ঘোড়া
আজও মাঝে মাঝে বাংলোর মাঠে বেড়াতে 
                                                  আসে
আমার জীবনে কোন গনগনে দুপুর নেই
আমার জীবনে কোন অনন্ত আহ্লাদ নেই
সমস্ত ব্যর্থ প্রেমের গল্পে আমি ওডিকোলন
                               ছড়িয়ে দিতে জানি
তোমার ফর্সা বাহুতে আমি আঙুল রাখি
মোরগ লড়াই শেষে তুলে আনি 
                                         তির ধনুক




 চিঠি


অপেলবাগানে চাকরি করতে গিয়েও আমি কিন্তু
                                     তোমার কথা ভুলিনি
তোমার চোখ জুড়ে মস্ত জলাভূমি
গাছের ছায়ায় নিচে সারি সারি
                                         সাইকেল
শিকার উৎসব শেষে খুব ঝড় উঠেছিল
                                     পাহাড় জুড়ে
সেই কবে থেকেই তো আমি স্বর্গের কথা বলে
                                                  আসছি
জলে গা ডোবানো মহিষ
আরশোলার পেছনে দৌড়তে থাকা সাদা
                                            বেড়াল
শেষ রাতের স্বপ্নে নিজেকে পিরামিডের ভেতর
                                       ঢুকে পড়তে দেখি



 বরফকল


পৃথিবীর সমস্ত মরিচের খেতে আমি আগুন 
                                              জ্বলে উঠতে দেখি
দোকানে দোকানে বিক্রি হচ্ছে অন্ধদের 
                                                       চশমা
তুমি কান্না এনে দিলে আমার দু'চোখে
সতর্ক দাঁড়াশ হাঁটে আল আলির
                                       মাঝে
হেরে যাওয়া যুদ্ধের সেনাপতির সাথে দেখা
                                          করতে যাচ্ছি
ঠোঁটে বিদেশী সিগারেট
চারপাশে পুড়ে যাওয়া তাঁবু, কান্না 
                                  বারুদ
একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বরফকল
অগ্রিম শীত এসে পড়ছে আমাদের
                                           শহরে






দীর্ঘ কবিতা 

লক্ষ্মী নন্দী


আমি কর্ণপত্নী সুপ্রিয়া





"জবাকুসুম সঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্
ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ "


হে মহাভারত অহংকার
সূূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মুহূর্তে
দ্যুতিময় গভীর আহ্বানে ছিল
তোমার - অখণ্ড  মেধা ও ধর্মের
এই মন্ত্র উচ্চারণ।

যেখানে জ্যোর্তিমণ্ডলের 
স্মৃতি ভারের নির্মম সত্য তুমি 
রূপকথা কর্ণ। 
আজ এই একবিংশ শতাব্দীর
মাইলস্টোন পেরিয়ে তুমি  মিশে
আছো যার রথ আকাশ পরিক্রম
করে, সেই সূর্যরশ্মির স্পর্শে 
বিষন্ন করুণ ইতিহাসে। 
যা অনেক কাটাছেঁড়া করেও 
কোনও সিদ্ধান্তেই পৌঁছাতে 
পারিনাই  আমি আজও ।  

হে আদিত্য সন্তান, 
তুমি  তো রবাহূত নও?
তুমি তো নিজ ইচ্ছেতে স্বর্গের ডেরা 
ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসোনি?!

সবাই জানে তুমি নির্মোহ  নির্বিঘ্ন  
ঐহিক সূর্য তনয়। 
যার অন্বেষণে আমার সহন, 
প্রশান্ত বিষাদের মহানিস্তব্ধে 
হয়ে আছে সমর্পিত। 

নিজস্ব সত্তার কাছে বেদনা আচ্ছন্ন 
চরম আহ্বানে  এখনও আকুল 
তৃষ্ণাতুর রমণী আমি।   
সম্ভ্রমে চাতকের মতোন 
তাকিয়ে আছি ঐতিহাসিক প্রজ্ঞায়।

তোমার অভিমানের আঁচ আমার
বুকে চেপে বসে আছে । 
সেই অভিঘাতের যন্ত্রণায় এই  
উথাল পাথাল। নাই বা বললাম 
রমণ সুখ, কিন্তু  সূর্যের বীর্যে   
কুন্তী তো হল তোমার  ধারয়িত্রী। 
বিস্ময় জাগে! মিলনে সচল  ইন্দ্রিয়!
তবুও নাকি এ সঙ্গম নয়। 
এলোমেলো হয়ে যায় অনুমান। 


আবার  প্রশ্ন জাগে নিয়তি  রচিত 
তোমার অবশ্যম্ভাবী ভবিতব্য নিয়ে। 

এই পৃথিবীতে এখনও আদিগন্ত 
জুড়ে হাহাকার, কান্না, বিপ্লব, ঘৃণা, 
ক্রোধ, ব্যর্থতা, লোভ , ভ্রষ্টাচার  তবুও 
তোমাকে জড়িয়ে মহাভারতের ক্ষীণতা - 
ম্লানতার  যে নিষিদ্ধ ইস্তাহার। 
কেন যেন আমি  সামলাতে পারিনা । 
মধ্য গগনের গাঢ়  সূর্যটা ফ্যাকাশে 
করে তোলে আমার মাতন। 
গহন বোধের আড়াল থেকে বেরিয়ে 
আসে তোমার আবির্ভাব লগ্নের 
তোলপাড়।


আমি তোমার পত্নী সুপ্রিয়া যে,
তোমার জীবন  জট খুলতে খুলতে  
দেখছি জগৎ পোষকের বিবেক চেতনা।
যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমার গর্ভ ধারণের অযত্ন লালিত সমাচার, নিয়ন্ত্রণ করেছেন 
তোমার গতি - বিধির ভাগ্যলিপি, আর  আমাকে করেছেন নীরস মরুর বাসিন্দা। 

তবুও তুমি আমার  ভারতীয় মনে 
বোধ  ও বোধির বেলাভূমিতে 
ক্যাক্টাসের ফুল হয়ে আছো।
হে - কুন্তীর ধ্যানজাত সূর্যবীজ  
তুমি আলোর বীক্ষণ হয়েও কেন
হলে আঁধার পারের জ্যোতির্ময়।  
কেন  হলে মৌনতার গভীরে নিমগ্ন। 
তোমার গর্ভধারিণীর নির্ভুল মন্ত্রেই
তো তুমি স্পর্শ করেছিলে দ্যুলোক।
যেখানে ভরে আছে তোমার পিতা 
জগৎ পোষকের সোনালী উজ্জ্বল 
আলো। সেই প্রখর্য মণ্ডিত আলো কি 
চন্দ্রমার মতোন তোমারও প্রাপ্য ছিল না?

হে সৌম্য বদন অনিন্দ্য সুন্দর - ইন্দ্রের 
প্রার্থনা  পূরণের আশীর্বাদে দান মহিমায় 
প্রদীপ্ত তুমি - বিস্তৃত ও স্থায়ী হয়ে আছো 
যশে ।  রাজকীয় গুণ, বীরত্ব, শ্রদ্ধা 
ভক্তিতে  বিকশিত হয়েও সর্ব নিয়ামক 
জগৎস্রষ্টা  তোমার ঔরসজাত পিতা 
জগৎ প্রকাশে তোমাকে করেননি 
দীর্ঘজীবী। আমাকে দিয়েছেন বৈধব্য
উপহার। আমার ভীষণ ইচ্ছে করে 
তোমার ঐ যাপিত জীবনের তথ্য বৃত্তান্ত নিয়ে - পৌঁছে যাই  মেঘরঙা ঘোমটা খুলে 
- খোলা আঁচলে বৃদ্ধ আদিত্যের কাছে !
প্রশ্ন করি, তুমি - তুমি কেন বাজালে 
কর্ণের জীবনে অসময়ে মৃত্যু বীণ?? 
উপনিষদে কেন  লেখা হয়নি তোমার 
বিদ্যা অবিদ্যার নিস্তরঙ্গ সংকুচিত রূপ! 
টেনে খুলে দিতে মন চায় কুন্তির 
অবগুণ্ঠন। কিন্তু পারিনা। ক্ষত বিক্ষত 
বিদীর্ণ হয় হৃদয় আমার। শুধু গোপনে 
শ্বাস ফেলি, ভাবি তুমি কেন এসেছিলে 
ঐ অলৌকিক উৎসব থেকে মৃত্যুর ঘ্রাণ 
নিয়ে। কেন অদ্ভুত নিশ্চিন্ততায় 
তুমি তন্ময় মূর্তি দাঁড়িয়ে ছিলে মৃতের 
সারির মাঝে??! নাকি এটা বিধাতার 
নিষ্ঠুর নিধন। যেখানে আমার আর্তি বয়ে 
গিয়েছিল জলের স্রোতের মতোন। 

তুমি সূর্যালোকের পথ ধরেই 
জড় তাপহীন সহনশীলতায় 
অসম্ভব শক্তিতে রওনা হলে। 
আমি পড়ে রইলাম মানবতার বলয়ে। 
পরম করুণাময়  মৃত্যু এসে 
তোমাকে মুক্তি দিল। 

শুরু হল আমার ঈশ্বর বিশ্বাসের 
অন্তর দহন।
চির সখা,  আমি এখনো অনুভব করি
তুমি আমার কে? 
হিমালয়ের মত বিশাল হৃদয় পুরুষ, 
দেবরাজ ইন্দ্র নিয়েছিলেন যাঁর
কাছে মহত্তর ভিক্ষা , 
সমুদ্রের মতোন যাঁর  বিস্তৃতি,   
আমি শুনেছিলাম বিস্ময়ে, সেই তুমিই নির্দ্বিধায়  বলেছিলে শ্রীকৃষ্ণকে -- 
" হতে চাইনা আমি দ্রৌপদীর ষষ্ঠ স্বামী,  
পত্নীদের সঙ্গে আমার 
প্রেমের বন্ধন আছে "
তোমার ঐ মহাসুন্দর চোখে  সেদিন 
দেখেছিলাম এক অকৃত্রিম পুণ্য দীপ্তি। 
আজও যখন মনে হয় অর্জুন তোমাকে  
ঈর্ষা করেছিলেন, এমন কি ধর্মরাজ 
যুধিষ্ঠিও। এক অনাবিল প্রশান্তিতে 
শীতল হয়ে আসে আমার অস্থির মানস। 
উপলব্ধি  করি তোমার জীবন 
পরিচ্ছদে স্বভাবসিদ্ধ পুরুষের 
পৌরুষত্ব। হে স্বামী, 
তোমার আদর্শের বেষ্টনে 
আমি আজও জাগরিত হয়ে আছি। 
আমি জানি, তুমি কর্তব্যে অব্যাহতি নয় - 
একদিন তোমার সদর্থক ভাবনার 
মনন নিয়ে অভিমানের অহংকারেই  
খুঁজে পাবে হাজার  হাজার বছরের 
জ্যোতিদীপ্ত পথ।

হে মহাভারত অহংকার - মনে পরে 
আমার একাকিত্বের বেদনায় যখন 
কোটি কোটি  কণ্ঠের হুঙ্কার 
বজ্রধ্বনিতে এনে দিয়েছিল 
তোমার অনুপস্থিতি। তখন এক 
রাতজাগা উৎসবে আমার সম্মুখে এলো 
অদ্ভুত  সংশয়াতীত শুদ্ধ প্রাজ্ঞ 
এক স্পর্শময় রাত। আমার মৌলিক 
মনকে  সম্পৃক্ত করে  জা -নি -না  কোন দেবতা ঘটিয়ে দিয়েছিলেন ঐ
অনুভূতির যোগ সূত্র।
তুমি এলে সশরীরে আমার 
ঘুমের দরজা ঠেলে - নৈঃশব্দে 
পৃথিবীতে। তোমার আকাশে আমি 
এক নতুন আলোয় কোমল আচ্ছন্ন। 
সেই আলোতেই দেখলাম 
হিরণ্ময় তুমি, তুমি সন্ত, তুমি বুদ্ধ। 
যে আমায় নিয়ে গেলে আর্মানি গির্জা,
সেন্ট জন গির্জা, সেন্ট পলস্ ক্যাথিড্রাল - 
যেখানে শুধু ক্ষমা আর ক্ষমার নিদর্শন। 
মৃত্যু গন্ধীর তীব্র চাপে যিনি  
এক ফোটা বিচলিত হননি। 
তোমার ব্যাপ্তি ও গভীরতাও  তো 
তাই কর্ণ। যে,নিজের মৃত্যু দিয়ে 
অন্য মৃত্যুকে করেছিলে জয়। 



সেই  রাতে আবার আমি 
আত্ম সমর্পিতা হলাম।
দ্বিধা ও  সংকোচে সুরে সুরে বাধা 
হলাম তোমার আকর্ষণে।

আমি জানি, একদিন ঠিক তুমি 
আমাকে  নিয়ে যাবে  তোমার নতুন 
উঠানে মৃত্যুর দোসর করে। 
কিংবা তুমি আসবে সংবেদী মনে 
তোমার আকাশটিকে নিয়ে 
মৃত্যু কাব্যের লুকানো সৃষ্টি থেকে  
দেবে  ভালোবাসার অফুরন্ত ঐশ্বর্যের
ভাণ্ডার। প্রিয় বোধে দেবে সান্নিধ্য। 
নেমে আসবে স্বর্গ মর্তের  মেরুমিলনে 
এক অমৃত সৌভিক যোগ। 



হে প্রিয় , 
আমার জীবন ভাণ্ডারের সুরায় 
নাইবা হলো তোমার শরীরের শিহরণ। 
কিন্তু আমার যন্ত্রণাকে হারিয়ে দিয়ে, 
আমার ভাবনার  নিরাপদ নীড়ে তুমি 
সৌরভ সুষমায় বিকশিত হয়ে আছো 
ঈশ্বরের হাত ধরে। তোমার চিরায়ত 
আলোয়  আমি উপলব্ধি করছি, দেখছি 
প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ। 
দেখছি নিঃশব্দে গড়িয়ে পড়া  
ব্যথার শোকে আজকের সভ্যতা। 
ঘরে ঘরে বিচরণ করছে দ্রৌপদী, 
কুন্তি, কৈকেয়ী, মন্থরা-রা। 
দুঃশাসনও যেতে চাইছে সশরীরে স্বর্গে।
দেখছি সন্ত্রসবাদের মনস্তত্বের 
রক্তের গন্ধ শুঁকা ঘৃণার সরণীতে সরণীতে যুদ্ধের উল্লাসে মেতে ওঠা  আর 
এক মহাভারত। যেখানে আজকের 
কৃষ্ণ ছোট্ট গোপাল হয়ে ঠাকুর ঘরে 
বন্দী। কিন্তু আমরা পদ্মা, ভ্রুশালী, 
সুপ্রিয়ারা পর্দার আড়ালেই 
আদিম প্রেমের মৃদঙ্গ সুর বাজিয়ে 
চলেছি। প্রেরণা ও জাগৃতিতে হয়ে আছি
অনন্য স্বামীর ত্যাগের ভুবন প্রসারী 
গৌরবের গরিমা। 

আমাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে আছে 
এক অলৌকিক স্মৃতিভারে স্বাক্ষর 
বহন করা মহাভারতের শেষ্ঠ 
পুরুষ চরিত্র দানবীর কর্ণ। 
যিনি , নিষ্ঠুর নিদ্রিত যাত্রায় প্লাবিত 
হয়েও দুঃস্বপ্নের আতঙ্ক থেকে রক্ষা 
করেছিলেন পঞ্চপাণ্ডব জননী 
কুন্তিকে।তুমি পেলেনা স্নেহময়ী মা।


হে মহাভারত পুরুষ শ্রেষ্ঠ, 
তোমার ঐ  সহিষ্ণুতার বুকে 
মাথা রেখে খুব কাঁদতে  মন চায়। 
অজস্র কান্নায়  ধুঁয়ে দিতে ইচ্ছে হয় 
তোমার তন্ময় নিবিষ্ট কুয়াশা আবরণ।
আজকের সুপ্রিয়া আমি 
তোমার দুর্বার টানে তোমাকেই 
ভালোবাসতে ভালোলাগে কর্ণ। 
আমার প্রেম, আমার মন  
খুঁজে বেড়ায় তোমার  বীরত্বের 
জীবন উৎসব । 

মহাভারতের  বিশাল ধর্মগ্রন্থের 
এক কোণে লুকিয়ে রাখা 
তোমার সহধর্মিণী সুপ্রিয়া আমি, 
চাই সর্বসমক্ষে তোমার হাত ধরে 
যুগে স্বপনচারিণী হতে ।।।।







এখন শরৎকাল
বেলা দে  
          
 মেঘ ছিল যা সরে গিয়ে
       স্বচ্ছ নীলাকাশ অঙ্গন জুড়ে
          সাদা মেঘের ভেলা,
         চোখ খুলে সোনালী ভোরবেলা
         

          বর্ষাস্নাত  সবুজেরা ক্রমশ উজ্জ্বল
            এখন শরৎকাল,
        জোনাকবাগান ভরে 
        শিউলির  টুপটাপ সারারাত  
     
           মাঠভরা ধানবাগান
          ডাঙ্গাজলে প্রবৃদ্ধ কাশদাদু
         হাওয়ায়  দোলে, 
           পক্ককেশ মেলে।
  

তুমি তো আসছো মা অতিথির মতো,আপ্যায়ন পাবে চলে যাবে, 
রনং দেহি সে মূর্তি তোমার কোথায় গেলো,কবে দেখাবে, ধূসর
পৃথিবীতে যেদিন নেমে আসবে সন্তাপের শেষরাত।      








আলোরবেণু

গীর্বাণী চক্রবর্তী


থইথই রোদ উঁকি দিয়ে যায়
নিকানো দুপুরের এক চিলতে
বারান্দায়... সাদামেঘ, নীল আকাশ
হৃদয়ে কত না ছবি আঁকে
কাশ ফুল ছঁয়ে ছুঁয়ে আসা বাতাস
আগমনীর বার্তা দিয়ে যায় ___

মা দুগ্গা এলেন বুঝি!
ফুটফুটে এক ছোট্ট মেয়ে
বেণী দুলিয়ে যায় ঠাকুর দেখতে,
ছোট্ট মেয়ে মুখ ঘুরিয়ে হাসে
ভীষণ চেনা মুখ, আজীবন আমার
আয়নায় প্রতিফলিত হয়-------

হুইল চেয়ারের হাতল শক্ত করে ধরে
ওঠার চেষ্টা করি বৃদ্ধ সময়
পা জড়িয়ে ধরে কানে ভেসে আসে
এক অমোঘ কন্ঠস্বর, ফেরার সময়
হলো তবে নিস্তব্ধ একচিলতে
বারান্দায় তবুও কানে ভেসে আসে
বাজলো তোমার আলোর বেণু

বোধনেরমন্ত্রেআকাশবাতাসপবিত্রহয়েওঠে,
একাকারহয়েযায়বৃদ্ধসময়, হুইলচেয়ার, শৈশবস্মৃতিরা













মেটাফিজিক্যাল্ মেটারনিটি



শব্দরূপ : রাহুল গাঙ্গুলী



খোঁড়া হচ্ছে জোয়ার-ভাঁটার কবরোস্তান
এবার ____
                    নির্মিত আদিম ইমারৎ
বিগ্রহান্তরে
দেবতার জেগে থাকা শিবদন্ডটি

আঃহ বা উঃহ

সামান্তরিক ~ ০ ০ ০-ঘর
                 খাদ্য ও ভোজ তুলনীয় 



প্রস্তুত হচ্ছে ~ আনুমানিক স্পেসথিয়েটার
মৈথুনে ব্যাসার্ধ-অধঃক্ষেপ

এখানে
           ১টা   জলাশয়।ব-দ্বীপ।খামার

ফাঁসিকাঠে ঝুলছে ভিজে বারুদ



বেশ _____
তবে রিংটোনগুলো হয়ে উঠুক 
                             ক্রমশঃ কসমিক্যাল্
ফুল বা ফুলবর্ণ পেরিয়ে ~ শীতমাখা চশমা
উদয়াস্ত মাখামাখি
শিরা।উপশিরা।অস্থি।চর্বি।মাস্

প্রোডাক্ট মাটি থেকে মেশিন







এইসময় ক্লান্তিহীন বিপ্লব 

মোনালিসা রেহমান


অন্তরাত্মা থেকে বিকিরিত আলো 
রোজ একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে 
শব্দের ইশারা ও নিঃসঙ্গতার পাঠ 
মাঝে মধ্যে আমায় উন্মত্ত করে।
মেঘজন্মে জলের মত  ঝরে পড়ে 
কিছু অশ্রু বিন্দু ।


কিছু কিছু যুযুধান রেখাও হিজিবিজি অক্ষরে
লিখে চলে  অনুবাদ ।
শেষ দৃশ্য পর্যন্ত সাম্প্রতিক ইস্যু গুলোর 
প্রতিবাদে মুখর বিরোধী দলগুলোর
সস্তা রাজনীতি প্রেক্ষাপট।
তবুও ক্লান্তিহীন লড়ে যাচ্ছে এইসময় ।






কোনদিন বলিনি 
ধীরাজ কুমার রায়  


কোনদিন বলিনি তোর চিন্ময়ী আলিঙ্গন 
সমস্ত দুর্গম শৃঙ্গগুলো জয় করেছে বাধাহীন, 
বলিনি রাস্তার যীশু হয়েছিস কবে -
কারণ রাস্তাই ঠিক করে পরের যীশু কে হবে। 

অভিযোগ করিনি তোর শৃঙ্গার মেঘে -
কেন হলো না বৃষ্টির অকাল বোধন, 
আমার ব্রহ্মচর্য্যের শুকনো মাঠে -
কেন এলনা অনুশোচনা ভাসানো প্লাবন ? 

তোর বৈষ্ণবী আলিঙ্গনে -
বৃষ্টিহীন নিরামিষ শ্রাবণে, 
কেন আমার ধ্রুপদী চল্লিশ 
আজও নেচে ওঠেনি জানিস ? 

আমি হতাশাকে এমন ভাবে সাজাই -
আকাশে ঘুড়ি নয়, ঘুড়িতে আকাশ ওড়াই। 





দেবালয়ে একটি ধূপকাঠি 

             রীনা মজুমদার 

রহস্যের ভিতরেই অনন্ত
   সৃষ্টির গভীরে সৃষ্টি 
    করেছো বস্তুতঃ
সাজিয়েছো ধোঁয়ার কুন্ডুলীতে 
বানিয়েছো বৃক্ষতরুর রেচনে l

 দেবালয় ঘিরে শুধুই জ্বলন্ত মুখ
নিজেকে পুড়িয়েও অক্ষম সৌরভে 
দেবালয়ের মতো তোমাতে আমাতে 
      দীর্ঘ পরমায়ু...
সৃষ্টির গভীরে আমার পরম সুখ 

আমি পুড়ে ছাই হওয়া গন্ধময় ধূপ ..





এ উৎসব আমার নয়

বহ্নিশিখা ঘোষ


শূন্য এ পোড়াদেশে উৎসব আসে
অজস্র জ্বালা বুকে ঘুরছে পৃথিবী, 
উড়ছে টাকার ঘুড়ি শরৎ আকাশে
উৎসব যারা আনে জানে তারা সবই।

পূজো নিয়ে শোরগোল আমার শহরে
পূজো নিয়ে ভাবনাটা এখনও অসম,
পূজো নিয়ে তোড়জোড় শরতের ভোরে
সুখী মন,দুখী ঘর পথ দীর্ঘতম।

তবু আমি লিখে যাই পূজোর আবেশ
উৎসব নিয়ে তুমি লিখেছিলে কিছু,
আমার লেখায় ঝরে যতখানি শ্লেষ 
তোমার ভাবনা ঠিক, তবু মাথা নীচু।

পূজো আসে পূজো যায় কত
ধর্মের সুতো গায়ে কাটাই সময়,
ঐ দূরে ছলকায় না পাওয়ার ক্ষত
বিভেদের ধর্ম সে কারো নয়।

কি আছে উৎসবে? পূজো মহরমে?
ধর্মের ধ্বজা ধরে যত পারো সাজো,
উমা মা -ও ঘরে এসে মরেছে মরমে
মানুষ হয় নি কেন মানুষ আজও।





দানব  দলিনী        
মিঠু   অধিকারী 

এসো তুমি  নব নব রূপে
স্বাগত তুমি  চন্দন , ফুল, ধূপে,
এই ধরায় সকল মলিনতা কর দূর
বেজে উঠুক মঙ্গলের  শুভ সুর।
তুমি  ছড়িয়ে  দাও তোমার তাপ রুদ্র  
বলিয়ান কর ,অন্তর কর শুদ্ধ।
ধর তোমার   মূর্তি দানব দলিনী.
অশুভ শক্তি বিনাশ করে  শান্তি  আনো মালিনী 






শব়ত আসে
রাখী বসাক


হিরণ রোদ্দুর মেখে শরত আসে।
নীল শাড়ি বোনে স্বচ্ছ সীমানাহারা।
দিগ দিগন্তে আলোর বেনু।
ভোরের আভায় চোখ ধুয়ে ডুবে যাই পদ্মদিঘির পাড়ে।
শিউলি ঝরা উঠোনে মায়ের আগমনের মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসে।
কাশের বনে জয়ধ্বনি।
পূজোর ঢাক বাজছে দূরে।
খুশির তেপান্তরে হৃদয় দেয় পাড়ি।
শিরায়,শিরায়,বাঁধা পড়ে অন্তরঙ্গতার স্বাদ।






          দুর্গাপুজোর ঢাক
             ফিরোজ হক্


দুর্গাপুজোর ঢাক বেজে উঠলেই
কেমন যেন ভয় ভয় লাগে
কত দুর্গা চাঁপা পড়ে যায়
প্রতিমার আড়ালে।

মর্ত্তপুরিতে মা আসছেন
অথচ কত মাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়
চিরশান্তির দেশে।

অসুর ও মা দুর্গার লড়াইয়ে
দুর্গা মা জয়লাভ করলেও
মর্ত্তের মা দুর্গার সাথে অসুরের যে লড়াই
সেখানে মায়েরা তছনছ হয়ে যায়।

চারজনের মিলিত প্রয়াসে রক্তমাংসের দুর্গাকে
তছনছ করাতে উন্মাদ হয়ে পড়লে
দশটি হাতের সৃষ্টি হয়।
ভয় হয়না?

অথচ পরদিনই সাদা পাঞ্জাবি-ধুতি পড়ে
দশভুজা মাটির দুর্গাকে অঞ্জলি দিয়ে
কন্যাভ্রূণ হত্যা নিয়ে বড়ো বড়ো ভাষণ দাও...




না ফেরার দেশে উমা
সুব্রত নন্দী 

আপামর বাঙালির মননে উন্মাদনা,
বছর ঘুরে বছর আসে, ফিরে দেখার অধ্যায়,
বিকশিত মন রঞ্জিত হতে চায় নতুন আঙিনায়।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আবাহন মননে।
কিছু স্মৃতি স্মারক হ'য়ে ফিরে দেখা দেয়
হলুদ পাতার মর্মর ধ্বনিতে –
মর্মস্পর্শী অশ্রুসিক্ত আবাহনী বন্দনায়
নিস্তেজ হ'য়ে আসছে জৈবিক বিশ্লেষণের চেতনা,
আগমনী সঙ্গীতে করুণ মূর্ছনার সুর;
মনে করিয়ে দেয় মৃন্ময়ী উমার বিসর্জনের কালো ইতিহাস।





 মৃত্যুগন্ধী
চঞ্চরিকা ভট্টাচার্য


সেদিন...
ধুলো ধুলো ডালপালা, আর ডুবে থাকা
যমুনাবতীর রসকলি আঁকা হাতে করতাল,
জলের গভীরে হঠাৎ রোদ ঝিরঝিরে বসন্ত--
কী জানি কেন বাঁধলাম ঘর, ভালোবাসায়,
আমার চাঁদ দেখা রাতে
সাদামহলের বৈদেহী বলেছিল
দূরে দূরে কালো আকাশে নাকি নামবেই
ছাতিমের সিঁদূররঙা রোদ!
বোধ হয় নামল....
সিঁদূরগলা চাপ চাপ রক্ত
আর ছাতিমের মৃত্যুগন্ধ,
আমার ঘর মিলেছে "অফুরান" লন্ঠনে।




জীর্ণ আকাশ
গায়েত্রী দেবনাথ

পালক পরা মেঘ
মেঘের ভেতর আলোর প্রস্তুতি 
কাশবনে সব  বুনো মোষের ছোটাছুটি
চোখের জোণাকি উড়ে গেলে
মন কেমন করা শুকতারা জ্বলে ওঠে
তুলো জড়িয়ে বেজে ওঠে স্মৃতির শঙ্খধ্বনি
বন্ধ ঘর,তুলিতে নতূন রং
অন্ধকার জ্বালিয়ে  মায়ের  উজ্জ্বল মুখ
 ভেসে যায় পাহাড় নদী আকাশজুড়ে
হেসে ওঠে সমস্ত দূর্গা মায়েদের 
জীর্ণ আকাশ


                          

সময় সারথি----

 সৌগত রাণা কবিয়াল 


দেখা হবে .....!

যদি বলো, আকাশটা নেমে যাচ্ছে ক্রমশ মাটির শিশিরে..!

উপত্যকায় মিছিলে গুলিবর্ষণের ঝরে পড়েছে
পরপর দুটি তাজা প্রাণ...!

ত্রিশ বছর অপেক্ষার পরেও  মেয়েটির মনে পুরুষের প্রেম মরিচীকা...!

ছেলেটি "খুব ভালো থেকো" বলে 
যে চিঠি একদিন পুড়িয়েছিল রাতের সিগারেটে....!

ইঞ্চি দরে কেনা শহরের ঘরে আজকাল আর কেও 
এক বিছানায় কান পাতছে না,
নীরব আঁধারের জোনাকির স্রোত শুনতে...!

মেট্রোরেলের কামরায় গায়ে গা ঘেঁষে ফিসফাস কথা বলা 
আজকাল কাগজের পাতায় চরম অশ্লীলতা,
অথচ গুগলের হোমপেজে গেলে বড় বাবুর সেল ফোনে
রগরগে উপন্যাসের শরীরের চিত্র রুপ....!

পাড়ার মায়ের মন্দিরের সাথে পাল্লা দিয়ে
শহর ঘিরছে চকচকে প্রবীণ নিবাসে...!

ফুলের জন্য আলো খুঁজতে খুঁজতে 
সবুজের বুক ভুলে গেছে পূর্ব দিকের হিসেব...!

তথাপি,  দেখা হবে আমাদের...!

অক্ষমের আঁচলে ভীমড়ি খেয়ে পড়ছে ভবিষ্যতের গর্জন....!

স্কুল থেকে আনতে গিয়ে
নিঃখোজ মায়ের বিজ্ঞাপন...!

কাল থেকে শুরু করে পরশু পর্যন্ত যার ভবিষ্যত নেই,
সেই তার হাতে বিকলাঙ্গ শব্দে
কবিতাগুলোর মৃত্যু মিছিল....!

তথাপি,
আমাদের দেখা হচ্ছে,
নিশ্চিত জেনো তুমি,
আমাদের দেখা হচ্ছে....!

মৃত্যুর কূপে দাঁড়িয়ে, 
একমাত্র কৃতদাসই পারে,
হাসতে অনাবিল আনন্দের হাসি...!




আনন্দ
তাপস দাস

সবখানে কবিতা লিখব,  আমার মৃত শরীরের জন্য লিখব
আত্মাটি বাইরে এসে পড়বে সেই কবিতা
আত্মার মুখে এই নশ্বর হাতের কবিতা কেমন শোনাবে
আত্মার আলোয় কেমন চকচকে দেখাবে সেই কবিতা
শুধু ভাবছি, আর দুঃখের পৃথিবী থেকে একহাত উঁচুতে বসে থাকছি...
আমার ঘর আমাকে দেখে হাসছে, 
আমার বালিশের নীচ থেকে জনপদ তীর ছুঁড়ছে, রক্ত পড়ছে 
আমি কিছুতেই ব্যথা পাচ্ছি না...




স্বাদ বিষাদের স্মৃতিগুলো
সাহানুর হক

এখন আমার অন্ধকার ভালো লাগে...
ভালো লাগার প্রহরে সুখ-অসুখ,ভাব-অভাব,
পাপ-অপাপমাখা স্বাদ বিষাদের স্মৃতিগুলো
মনের আলমারিতে বহুযুগ ধরেই জমিয়ে রাখি ।

জং ধরা সেই স্মৃতিগুলো আমার অহংকার
বেঁচে থাকার পথখরচ !






দেবী
যীশু চক্রবর্তী 


১)আচমকাই আমার জানালা জুড়ে শরৎ, 
                        লেভেলিং করে সাঁটিয়ে দেওয়া রোদ্দুর।
             বৃষ্টির সপাট চড়ে টলো-মলো পাহাড়।।

২)নতুন সকালে প্লট হাতড়ে পাই বীরেন্দ্রকৃষ্ণকে,
        
নিংড়ে নেওয়া শৈশব সোল্ড-আউট।। 
রোজনামচা কবিতারা কেনাকাটায় ব্যস্ত..

৩) আমি তবে যাই দোজখের দরজায়,
                 মাটির ঢেলায় শেষ ফিনিশিং চলছে..

     জমজমাট চারদিনে ব্রাত্য ভিখিরি শিশু
মাকে বলি - "পৃথিবী সুখী হোক"। 

৪) কফি-কাপে গরম আর শীতের স্যান্ডউইচ, 
                    কুড়িয়ে পাওয়া একটা জীবন।।    

শেষ রাতে পথ আটকে দাঁড়ায়  ভেঙে যাওয়া প্রতিমা......





উষ্ণ প্রস্রবণ   
উত্তমকুমার পুরকাইত

শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আকাশের মতো চেয়ে ছিলে তুমি
শরীর জুড়ে তিনভুবনের কূল
শরীর জুড়ে সুগন্ধী বকুল;
এসব অতীত এখন
আদালত চত্বরে বাদী-বিবাদীর প্রহসন
আশেপাশে যারা আততায়ী ঝিকিমিকি চুল
দেখছিল তোমাকে
দেখছিল তোমার গোপন আকুল
রক্ত শ্রাবণ
নির্ভয়া, শরীর গেলেও চেতনায় তোমার
উষ্ণ প্রস্রবণ। 



গাছ দাদু

সবুজ সরকার 


একটু চমকে গিয়েছিলাম বৈকি ! 

বাবা, ছেলে, নাতি সবাই ওই নামেই চেনে।
পাড়ায় নতুন এসে বেশ চোখে লেগেছিল,
এখন সয়ে গেছে অটো -ফোকাস চোখ।
বাড়ির ছাদে যেন এক চিলতে পৃথিবীর ফুসফুস।
নিরভিমান অ্যামাজন।
গাছ দাদু কথা বলে প্রত্যেকের সাথে,
মান- অভিমান, খুনসুটি
দু'চারটে হালকা ঠাট্টা-তামাশা।

হেলে দুলে কথা কয় পাতার রাজকুমারেরা ;
ক্লোরোফিল ছুঁয়ে হালকা সুবাস,
আশ্বিনের বেহায়া বৃষ্টি  না জানিয়ে এলে 
চান করে ওঠে গোলাপ কুমার।
গাছ দাদু মাথা মুছে দেয় তার
অসাবধানে হতে পারে
ভাইরাল ফিভার।

গাছ দাদু বেশ আছে ।
' অ্যাডিকশনের'  নকল গন্ধে বিভোর যে ছলা-কলা
তাড়িত করে মোবাইল মন, 
গাছ দাদু বহু দূরে সে জগৎ থেকে।
 বুক ভরে শ্বাস নেয় :
জুঁই, হাসনুহানা আর বেলকুড়ি 
সিক্ত করে তাকে।

বাঁকা চাঁদ ডাকে, আয়, আয় ...।





তুমি যদি থাকতে 

   পারমিতা রাহা হালদার  


যুগান্তরের পরিবর্তন,অত্যাধুনিক সভ্যতার  আবহমান গতিতে মিশে,
কালচক্রের জালে বাঁধা জীবনের ইতিহাস,
বদলে যায়  ঘটনার বহুল ঘনঘটায় ।
দমন করেছ আসুরিক শক্তি ,নারী শক্তির জাগরণ , 
পথ নির্দেশক যে আমার পূজার থালায়।
তুমি যদি থাকতে পাশে থাকতো শান্তি, ঐক্য  ভ্রাতৃত্ব বোধের রেশ।

জীবনের হাহাকারে নিশি ডাকে কেটে যায় অগণিত রাত,
কয়েকশো হাড়ের উপর মাংসের দলা, পরিশ্রমী ক্লান্ত শরীর ,
নিশ্চুপে কেঁদে ওঠা নেই কোন চাওয়া পাওয়া আর সুখের আস্তানা ।
অন্ধকার জুড়ে নেমে আসে উলঙ্গ হবার পালা,
নিরুপায় নারীর  রূপ, অসহায়তা,
তুমি যদি থাকতে দমন করতে? বুক চিরে নেমে আসা আর্তনাদকে।

শুভ্র কাশে শরৎ আসে দ্বারে,পুজোর সানাই বেজে ওঠে শিউলি ঝরা প্রাতে ,
নগ্ন দেহ পথের ধারে আবাল বৃদ্ধ বনিতা, 
মূল্যবান অলঙ্কারে সুসজ্জিত তোমার নারীর ভূষণ , হায় মানবিকতা!
নিয়ন আলোর ঝলকানি তে সাজ সাজ রবেও প্রশ্ন একটাই-
তুমি যদি থাকতে ,পারতে তো সব ভুলে মজলিসে মেতে উঠতে?

একটু খানি বদলে যাওয়া পাল্টে গেছে রাজার শাসন ,
তবুও ধর্ষিতা নারীর কাতর চিৎকার ,গৃহবধূর নির্যাতন ।

কন্যা শিশুর ভ্রূণটি আজ পচা নর্দমায় ভাসছে দেখ, 
পতিতালয়ে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে দেখ দুর্গা এখন।
চারদিনের হৈ চৈ  আবার বিদায় ব্যথার সুর, 
আনন্দ উচ্ছ্বাসের মাঝেও বাজে করুণ আকুতি
তুমি যদি থাকতে ধরাধামে, 
অসহায় মানুষ বারেবারে মরতো না জীবন্ত লাশঘরে।



চীনে বাজী

মাথুর দাস


চীনে বাজী  চিনে নেওয়া   দুষ্কর  কাজ

দিনে রাতে কিনে পরে শিরে পড়ে বাজ ---

ফুলঝুরি   তারাবাতি    রোশনাই

যেন তাতে কোন কিছু দোষ নাই,

চকলেট দো-দমারও  চারু কারু-কাজ ।

তুবড়ির রোশনি,  ধোঁয়া তারও বেশি যে

হাউয়ের হাওয়াবাজি  মন করে খুশি রে ---

ছুঁচোবাজী    চরকি

বলে, ‘ক্ষতি তোর কী
,
চীনে বাজী হয়ে যদি  রাগ মনে পুষি রে’ !


ছিনেজোঁক ব্যবসায়ী বলে, ‘সব সস্তা,

এই দ্যাখো কম দামে পাবে এক বস্তা ---

বাজী দেশি দাম বেশি

পয়সার  একশেষ-ই,

লোকে তাই সস্তায়  কেনে চীনে মস্তা' ।







 পুজোর খবর
রথীন পার্থ মণ্ডল

শারদ রানি আসবে জানি
ঢাকের বাদ‍্যি বাজে,
পেঁজা তুলোর মেঘগুলো সব
চলছে শুভ্র সাজে।

হঠাৎ দেখি ঝর্না ধারায়
বৃষ্টি নেমে এলো,
সারা বছরের আবর্জনা
ধুইয়ে দিয়ে গেল।

সূয‍্যিমামা রূপোলি জামা
পড়ায় সবার গায়,
কাশ ফুলেরা দিচ্ছে সাড়া
মাঠের ডায়ে বায়।

সকালবেলায় শিউলি ঝরায়
গন্ধে সুবাস যাতে,
শারদ রানির ষষ্ঠী পূজা
শুরু হবে প্রাতে।



 আমার দুর্গা
স্বপন কুমার চট্টোপাধ্যায়


শরতের আদিগন্ত হরিত উল্লাসে
শিশির ভেজা শিউলি যখন
পড়ছে ঝরে মাটির পরে
পূজার গন্ধে উঠছে ভোরে
মৃন্ময়ী মা হাঁসছে যেন তোদের ঘরে।
আমার দুর্গা ঠিক তখনি
নদীর চরে কাশের বনে
হারিয়ে যাওয়া ছাগল খোঁজে
আকুল হয়ে ব্যাকুল স্বরে
নয়ত কোনো শিয়াল এসে
খুবলে খাবে ছাগল কিংবা দুর্গা মা কে।
তোদের দুর্গা কে তাই বলি আমি
তোর তিন দিনের ওই কোটি টাকার
অট্টলিকায় ঢুকিসনেমা ভুল করে।
পূজা যদি চাস নিতে তুই
আয় নেমে ওই প্রাসাদ ছেড়ে ত্রিশূল ধরে
যেথা আমার দুর্গারাসব ধর্ষিতা হয়
অন্ধকার  গলির মোড়ে।
নইলে তোকে মা বলে আর ডাকবনা কো
পূজার অর্ঘ দেবনা তোর 
রাঙা দুটি চরণ  তলে।



"আমার দুর্গা"

সোনালী সিং


আমার দুর্গা  -
 মহালয়ার শারদ প্রাতে, দশ হতে দশ অস্ত্র।
আমার দুর্গা -
রক্তধারা ত্রিশূল হাতে নারীরা হবে সশস্ত্র।।

আমার দুর্গার -
যোনিতে ঘা, রক্তবীজের ,দেখছে সারা বঙ্গ।
আমার দুর্গার  - 
এক কোপেতে খণ্ড হবে ধর্ষকের যৌণ অঙ্গ।।

আমার দুর্গার  -
ক্লান্ত শরীর, শুদ্ধ মনন।
আমার দুর্গার  - 
কলম জোরে, যুদ্ধ হনন।।

আমার দুর্গার -
দশভূজা র যুদ্ধ আবার।
আমার দুর্গার  -
শরীর লোভীর প্রাণ টি যাবার।।

আমার দুর্গার -
মহাতেজে আগুন হয়ে জ্বলে ওঠো।
আমার দুর্গার -
কাশের দোলায় পুজোর গানে ফুটে ওঠো।।







শরতের আগমনে....
প্রতিভা পাল সেন

শরতের আগমনে-
নিস্তব্ধ এক তপস্যা শেষে,
            তুলো-মেঘের স্বপ্ন হেসে,
নীলাকাশ যেন জেগে ওঠে-
      কোন অমৃতবাণী শুনে!

শরতের আগমনে-
হাওয়ায় ভাসা গান,
               শোনে ওই কাশবন!
মনে বেজে ওঠে শারদীয়া-সুর,
      আনন্দ-বীণার তানে!

শরতের আগমনে-
ব্যর্থতা খোঁজে ভাষা, 
        সংজ্ঞা পায় কিছু নিরাশা,
উৎসবের নতুন সাজে-
       প্রতিবার দিন গোনে!!

শরতের আগমনে....!!





শূন্যতা 
সুজাতা মিথিলা 

শূন্যতা, এসো সই। 
চলো, একটু পিঠে পিঠ দিয়ে বসি । 
একটু কান পাতলেই শুনতে পাবে কত রোশনাই, , 
কত হৈচৈ , কত সোহাগী খুনসুটি । 
অথচ আজ যেন শশ্বান পুরোপুরি -- 
এক ভয়ঙ্কর নির্জনতা আর চাপ চাপ দীর্ঘশ্বাস । 
অতীত বৈভব যেন আজকের নিঃস্বতাকে প্রকট করে ।। 
জানো , যখন প্রথম ভাঙনের শব্দ পেয়েছিলাম 
আমি যেন বোবা হয়ে গেছিলাম শোকে তাপে । 
যেন এক কাঙালিনী , রিক্ত , পরিতক্ত্য 



পুজো
তানিয়া ব্যানার্জী

তখন মিনি শিউলি তলা ভোর
  সানসিল্কের গন্ধে ভেজা চুল,
অষ্টমীতে সন্ধি পুজোর ঢাক
অল্প সল্প এদিক ওদিক ভুল।

এখন মিনি মিনতি উপাধ্যায়
জানলা দিয়ে দইওয়ালা কে চায়,
অকাল বোধন মাইকওয়ালা কয়
মূল মন্ত্র, থাকার চেয়ে ভালো রাখতে হয়।





সমাজজীবন

 প্রিয়াঙ্কা ভুঁইয়া

সমাজজীবন শৃঙ্খলিত, নিয়মবিধির বারুদ ঠাসা,
শিকলবন্দী ইচ্ছেগুলো, সংকীর্ণ ভাবনা সর্বনাশা।
ঢেউদের আনাগোনা, সৈকত নিভৃতে আঘাত সয়,
যন্ত্রণারা বদলায় ঠিকানা, ক্ষতরা তবু অক্ষত রয়।
শূন্য থেকে জীবন শুরু, পরিসমাপ্তিতে শূন্যে ফেরা,
মধ্যিখানের এই রঙ্গমঞ্চ, সুনিপুণ অভিনয়ে ঘেরা।
কল্পনা তো নিজস্ব, অধিকারবোধটা শুধুই একার,
বাস্তব বড় নির্মম, পারিপার্শ্বিক আদপে নির্বিকার।
কিছু পরিচয় থাক বেনামী, সব তো কপালে সয় না,
অনুভূতিরা সঙ্গে থাকুক, পূর্ণতা খোঁজা মানায় না।।





দুর্গা মা
সঞ্চিতা দাস

শিউলি সুবাস গন্ধ ছড়ায়
দুর্গা পূজো হবে,
সবাই থাকে দিন গুনতে
আসবে যে মা কবে?
এখন সবুজ নিধণ হয়ে
শিউলি গাছও নেই,
মায়ের গায়ের গন্ধ যে পাই
শিউলি ফুলেতেই
এখন পূজোয় শুধুই দেখি
কেনা কাটার ব্যাগ-
শাড়ী জামায় দুলতে থাকে
নতুন নতুন ট্যাগ
নদীর ধারে কাশের শোভা
নজর কাড়ে না,
খাওয়া-দাওয়া কেনা কাটায়
থাকেন দুর্গা মা




তিস্তা ও করলা

লুবনা  আখতার বানু


চারদিক স্তব্ধ ও শান্ত।
এই শান্ত ও স্তব্ধতার মাঝে,
কলকল রবে বয়ে চলেছে    
                           একটি নদী।
বহু যুগ ধরে বয়ে চলেছে সে-
আর সেই নদীর পাশেই,
ছোট্ট একটি চড়ায় বসে
                 আছেন বুড়ো দাদু।
মুখে তিনি কিছু বলছেন না-
তবু তার চেহারায় হতাশার     
                             ছবি স্পষ্ট।
কি করছেন সেই দাদু সেখানে 
                                   একা?
হয়ত বহু বৎসর পরও এই 
         স্থানই মনে করে দেয় 
                         তার পুরোনো     
                   ভিটেমাটির কথা।
এই নদীই গ্ৰাস করেছে বহু         
              মানুষের মুখের গ্ৰাস।
হয়তবা তারও!
তখনই সেখানে আগমন ঘটে             
                       দুই কিশোরীর।
হয়ত তারা শহরের কোন প্রান্ত             
                       থেকে এসেছে,
হয়ত তাদের নিকট এই নদীর 
                দৃশ‍্য বড়ই মনোরম।
কি আশ্চর্য!একই স্থানে 
      দাড়িয়ে কেউবা উপভোগ
      করছেন আনন্দ,কেউবা 
                                    দুঃখ।
সেখানেই বুড়ো দাদুর সঙ্গে 
                     তাদের পরিচয়।
তাদের সেই দাদু বলেন       
           তোমরা একা এসো না
                                 এখানে।
কি জানি আরোকি অমঙ্গল 
           ঘটার সম্ভবনা এখানে!







আগমনীর সুর   
  মাম্পি রায় 

  আশিনের ঐ দমকা হাওয়ায়
       পূব আকাশের মাঝে,
  মনের ফড়িং ডিগবাজী খায়    
        কাশবনের চরে;
    ধাই কুর কুর, ধাই কুর কুৎ
       ঢাকে কাঠি পড়ে।

   দূর্বা দোলে, পদ্ম ঘাটে
     শিশির ভেজা ঘাসে,
শিউলি ফুলের রং মেতেছে
     শরৎ শশী হাসে।

কালো ছায়া নিবভে এবার 
  সোনালী ঝলর আলোয়,
মা দুর্গার আগমনের সুর 
      লেগেছে পাড়ায়।






দশমী

শৌভিক কার্য্যী


সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ
বিষণ্নতা সবার মনে।
বিদায় দিনেও হাসি মুখে
খুশির আমেজ সর্বক্ষণে।
পাড়ায় পাড়ায় বাদ্যি বাজে,
সবাই সিঁদুর খেলায় মাতে।
ব্যথায় মায়ের চিৎকার 
মিলিয়ে যায় উলু ধ্বনির সাথে।
বিসর্জনের ঢাকের তালে 
মাতলে সারা পাড়া।
ডেকে ডেকে হাঁপিয়ে গেলেও
মা দেননি কোনো সাড়া।
ঘাটে যখন একদিকেতে মায়ের
সমারোহে বিসর্জনী পালা।
আরেকদিকে চিতার আগুন নিভিয়ে
দিল মায়ের ক্যান্সারের জ্বালা।



পুজো

সত্য মোদক


আজ যাবেনা? 
রাত হয়েছে বেশ
যানো মা পুজোর
সময় রাত হ'লে
কোন বকাবকি করে না
কিন্তু এখনতো পুজো না
হ্যাঁ কিন্তু  আজ-ই 
আমার জীবনে প্রথম পুজো 
তুমি যখন আমার কাঙ্খিত 
শীহরণ জাগিয়েছো 
পরম তৃপ্তির লুকানো কুড়ি
প্রস্ফুটিত ফুল-ই
জীবন পুজোর অর্ঘ৷





No comments:

Post a Comment