মুজনাই সাপ্তাহিক
Sunday, February 14, 2021
মুজনাই সাপ্তাহিক
মুজনাই সাপ্তাহিক
সুন্দরী ডুয়ার্স
মুজনাই সাপ্তাহিক
বই
মুজনাই সাপ্তাহিক
আমার ডুয়ারস
নন্দিতা পাল
মুজনাই সাপ্তাহিক
আমার প্রিয় উত্তরি,
মুজনাই সাপ্তাহিক
মুজনাই সাপ্তাহিক
মুজনাই সাপ্তাহিক
কন্যের ডুয়ার্স যাত্রা
শ্রাবনী সেনগুপ্ত
ডুয়ার্স যাচ্ছে কন্যে
সঙ্গে আছেন বুড়ো চাকর
মাল বইবার জন্যে।
শখ যে তার ছোট্টবেলার
দেখবে সে জঙ্গলের বাহার
ঝর্ণা আর পাখপাখালির
কলতানের ছন্দে ,
মাতবে মন আনন্দে।
কিন্তু সংসারেরই চাপে
স্বপ্নটি তার পড়ে যাচ্ছিলো ফাঁকে।
এবার যাহোক সময় সুযোগ করে ,
বসলো সে রেলগাড়িতে চড়ে,
নামলো এসে নিউ মাল জংশনে।
সেখান থেকে ওয়াগনে করে
চললো কন্যে ডুয়ার্সের অন্দরে।
চারিদিকে সবুজের ঘনঘটা,
তারই মাঝে আলো-আঁধারির ছটা।
পথে মিললো দেখা নাগরাকাটা, মাটিয়ালী, চালসার
নামগুলি বেশ, মনে রয়ে যায় রেশ।
হঠাৎ পথ আটকালো দাঁতাল এক হাতি
এবং তার গুটি কয়েক সঙ্গীসাথী।
কন্যে ফটাফট ছবি তুললো ক্যামেরায়
বুড়ো চাকর খুশি বেজায়।
বেশ কিছুক্ষন পরে,
হাতির দল চলে গেলো রাস্তার ওপারে।
আবার শুরু হলো পথ চলা,
সৌন্দর্য তার ভাষায় যায়না বলা।
অবশেষে থামলো গাড়ি
সামনে হোটেল মস্ত ভারী,
মালপত্তর তাড়াতাড়ি নামিয়ে সেথায়
কন্যে আবার ঘুরতে চললো হেতায় হোথায় ।
চা বাগানের সবুজ আভায় চোখ ভরলো ,
অপূর্ব এক আবেশ মন কাড়লো।
মূর্তি নদীর ছুটন্ত জলরাশি
যেন শিশুর মতন হাসিখুশি।
পরদিন কন্যে চললো দেখতে জঙ্গল,
সঙ্গে টুরিস্ট আরো এক দঙ্গল।
চারিদিকে শাল-মহুলের বৃক্ষ সারিসারি
তারমধ্যে দিয়ে চলেছে জঙ্গল সাফারি।
দেখা মিললো একশৃঙ্গ গন্ডার,ময়ূর, হরিনের
সবুজ পাতার ফাঁকে চিতার হলুদ-কালো শরীরের।
শেষ হলো জঙ্গল সাফারি,
হোটেলে ফিরলো কন্যে
মন তার খুশি ভারী।
এবার বাড়ি ফেরার পালা ,
বুড়ো চাকরির সঙ্গে কন্যে করলো এক শলা।
যেভাবেই হোক প্রতিবছর আসবেই সে ডুয়ার্সে
মন ভরাবার জায়গা কন্যে পেয়েছে অবশেষে।
মুজনাই সাপ্তাহিক
মুজনাই সাপ্তাহিক
এই তো কাছেই
চিত্রা পাল
এই
তো কাছেই অথচ এতোদিন যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এবার সুযোগ পেয়েই বেরিয়ে পড়লাম গন্তব্য
স্থানের দিকে। আমি বলছি বক্সাফোর্টে যাবার কথা। বক্সা ফোর্ট আমাদের ডুয়ার্সের
মধ্যেই। জলপাইগুড়ি শহর থেকে রাজাভাতখাওয়া
পৌঁছতে আড়াইঘন্টা মতো লাগে, তবে আমাদের একটু বেশীই লাগলো।ওখান থেকে গেলাম
সান্তালাবাড়ি। সান্তালাবাড়ি থেকে বক্সাফোর্ট তিনমাইল মতো। সেই পাহাড়ের চূড়োয় উঠতে
হবে। খানিকদূর অবধি গাড়ি গিয়ে আর যায় না, তারপরে পদব্রজে। সমতলের থেকে এখানে হাঁটা ব্যতিক্রমী। ধীরে
ধীরে ওপরে ওঠা। সহজেই হাঁপ ধরে যায়। কিন্তু
যাবার আনন্দে তাকে পাশ কাটিয়ে চলেছি আমরা। চারদিকে সবুজ। পাহাড়ি ঝোরা পাশ দিয়ে বয়ে
চলেছে কুল কুল করে। নানারকমের ফার্ন গাছের
সঙ্গে বাঁশ গাছের ঝোপঝাড় বেশ বেশি। খানিক দূর গিয়ে পাহাড়িয়া পথের ধারে ছোট্ট চাএর
দোকানে বসে চা খেয়ে আবার চলা। বক্সার এই বনাঞ্চলে অনেক রকমের পাখি দেখা যায়। ময়না
কোয়েল ধনেশ তো আছেই, তার সঙ্গে আছে সবুজ বুনো পায়রা। শুনেছি অনেক বিপন্ন প্রজাতির
পাখীর ও বাস এখানে। পাখীদের কলকাকলিতে মুখর এ বনভূমি। এই পথে যেতে যেতে দেখা হলো
এখানকার পোষ্ট অফিস। এখানে এখনও ডাকহরকরা সমতল থেকে ডাকের বোঝা পিঠে বয়ে নিয়ে আসে।
এসব দেখতে দেখতেই পৌঁছে গেলাম বক্সা ফোর্টে।
এই সেই ফোর্ট যেখানে বিপ্লবীদের শাস্তি
স্বরূপ রাখা হতো। শুনেছি আন্দামানের পরেই কুখ্যাতি ছিলো এই জেলের। কবি সুভাষ
মুখোপাধ্যায় ১৯৫০ সালে এখানে বন্দী হয়ে ছিলেন। সামনের ফলকে উৎ্কীর্ণ রয়েছে
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কবিতা। সামনে শহিদবেদীতে
ফুল দিয়ে বাতি জ্বালিয়ে এ প্রজন্মের আমরা ক্ষণিক বিরতিতে নিঃশব্দ নিস্তব্ধ হয়ে
আমাদের প্রণতি জানালাম। যদিও ফোর্ট এখন ধ্বংস স্তূপ। তবু বিপ্লবী বীরদের স্মৃতি
বিজড়িত এই স্থানে আপনি নত হয় মস্তক। তারপরে আবার সেই আরণ্যক পথে অবতরণ। বনস্পতির
প্রাচুর্য্য এ পথের বড় সম্পদ।