অতিমারি অতিক্রান্ত। জীবন আবার স্বাভাবিক গতিতে। তবে আগের সেই ছন্দ নেই আর। তাই নিউ-নর্মালের এই পুজো একেবারেই অন্যরকম এবার। প্রত্যাশিতভাবে সকলেই অপেক্ষা করে আছে তার। ইতিমধ্যে ইউনেস্কোর বিশেষ স্বীকৃতি পাওয়ায় বিশ্ববাসীর দৃষ্টি রয়েছে এই উৎসবের দিকে। তাই সব মিলে উৎসবের আবহ শুরু হয়ে গেছে। নিজের মতো করে পুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সবাই। মুজনাই পুজোর আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। প্রার্থনা করছে, সকলের পুজো ভাল কাটুক। একই সঙ্গে আশা রাখছে, মা দুর্গার আশীর্বাদে অশুভ দূর হবে। শুভশক্তি সকলের মঙ্গলবিধান করবে। প্রতিনিয়ত যে টালমাটাল পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে মানবকূল, তা কেটে গিয়ে আসবে এক নতুন দিন।
রেজিস্ট্রেশন নম্বর- S0008775 OF 2019-2020
হসপিটাল রোড
কোচবিহার
৭৩৬১০১
ইমেল- mujnaisahityopotrika@gmail.com (মাসিক অনলাইন)
- mujnaiweekly@gmail.com (সাপ্তাহিক)
প্রকাশক- রীনা সাহা
সম্পাদনা, প্রচ্ছদ ছবি, অলংকরণ ও বিন্যাস- শৌভিক রায়
মুজনাই অনলাইন পূজা সংখ্যা ১৪২৯
সূচি
আফতাব হোসেন, শিবির রায়, অলকানন্দা দে, স্বপন কুমার দত্ত
প্রবন্ধ
বাংলার সংখ্যালঘু সমাজ আর বুদ্ধিজীবী কুমিরকান্না
আফতাব হোসেন
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে
" ঘুঁটে পোড়ে , গোবর হাসে "…
বতর্মান বাংলা তে এই প্রবাদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । বিশেষ করে সংখ্যালঘু সমাজের ক্ষেত্রে । শুরু হয়েছিল বেশ কয়েকমাস আগে । আফগানিস্থানে তালিবানি শাসনের উত্থানে মুসলমানদের কি হবে , তাদের স্বাধীনতা কিভাবে ভবিষ্যতে লুন্ঠিত হবে , কিভাবে সভ্যতার ক্রমবিকাশ থেকে তাদের পুরুষরা হারিয়ে যাবেন কিংবা কিভাবে আফগান নারীরা ক্রমশ জড় পদার্থে পরিনত হবেন সে নিয়ে কান্নাচোখে নেটপাড়া বেশ কয়েকদিন মশগুল ছিল। বাস্তব । জঙ্গিগোষ্ঠীর পাল্লায় পড়া একটা দেশের মানুষ , যে দেশের আবার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই সংখ্যাগুরু সেখানে মুসলিমদের ভয়ে মুসলিমরাই সন্ত্রস্ত এটা অনেকের কাছে বিস্ময়ের আবার অনেকের কাছে ব্যঙ্গাত্মক ছিল । এর মাঝেই আবার এখন পয়গম্বর বিতর্কে নেটপাড়া মশগুল । অনেকে গলার স্বর বাড়িয়ে গর্ব করে শোনাচ্ছেন ' মুসলমানরা ' এদেশে বেশ আছেন ' তাই অযথা বিতর্ক থাক । কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে । হুমকি - 'এখানে অসুবিধা হলে একবার ওদেশে ঘুরে আসুন ' ।
তা হোক । সংবিধান সকলকেই মুক্ত বাকস্বাধীনতা দিয়েছে । এখন প্রশ্ন হল বছরভর দেশে বিদেশে টি আর পি তে থাকা সংখ্যালঘু সমাজের এ বঙ্গে অবস্থা কি ?
কয়েকশ বা কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের সংখ্যালঘুদের নিয়ে কুমিরকান্না করা লোকজন কিি এবঙ্গের সংখ্যালঘুদের হাল হকিকতের খবর রাখেন ? আসুন দেখি ।
নিজস্ব তথ্য না । বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত অন্তর্জালের তথ্যগুলোকে একজোট করে সাজালে কী দাঁড়ায়। দেখি ।
প্রায় পনেরো বছর আগে সাচার কমিটির রিপোর্ট আসার পর একটা হইচই হয়েছিল যখন জানা গেল গণতন্ত্রিক বাংলায় স্বাধীনতার এত বছর পরেও মাত্র ২.১ শতাংশ মুসলিম সরকারি চাকুরিজীবি ।
প্রায় ১৬ বছর কেটে গেছে সে রিপোর্টের ।
বছর কয়েক আগে অমর্ত্য সেনের প্রতীচী ট্রাস্ট ও কয়েকটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর সার্ভে করা একটা প্রতিবেদন আবার প্রমান করছে পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি । ওনাদের রিপোর্টগুলো থেকে স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা যে তিমিরে ছিল, প্রায় সেই তিমিরেই রয়ে গেছেন। তাদের অবস্থার সেভাবে বিরাট আকারে পরিবর্তন হয়নি ।
প্রতিবেদনের চিত্রটা খানিকটাএ রকম ...
শিক্ষা ক্ষেত্রে যদি পশ্চিমবঙ্গে গড়পড়তা প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য ১০.৬ টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে, সেখানে মুসলমানপ্রধান তিন জেলা মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে এই হার যথাক্রমে মাত্র ৭.২, ৮.৫ ও ৬.২ । বাকি জেলাগুলোর কথা আর বললাম না । সরকারি স্বীকৃত হাই মাদ্রাসার সংখ্যা দশ বছর আগেও ৬১৪ টা ছিল । এখনো , মানে ২০২২ সালেও তাই আছে । যেখানে আদিবাসী দিবসে কয়েকশো আদিবাসী স্কুলের কথা বা আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগের কথা ঢালাও করে ঘোষণা করা হয় সেখানে এই ১০ বছরেও নতুন কোন সরকারি স্বীকৃত হাই মাদ্রাসা বা সিনিয়র মাদ্রাসা এ বঙ্গে হয়নি । অথচ প্রান্তিক সংখ্যালঘু প্রধান অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে , বিশেষ করে সংখ্যালঘু মহিলা শিক্ষা বিস্তারে এই সরকারি মাদ্রাসার একটা বিরাট ভূমিকা আছে । স্কুল সার্ভিস কমিশনের খবর যেখানে প্রায় প্রতিদিন ব্রেকিং নিউজে থাকে সেখানে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন নিয়ে সক্কলে নিশ্চুপ । অথচ সরকারি মাদ্রাসা গুলোতে শিক্ষক দের একটা বড় অংশ কিন্তু সংখ্যাগুরু সমাজের । তাও ' মাদ্রাসা ' শব্দটি এখনও সাম্প্রদায়িক নজরেই রয়ে গেছে জনগণের মধ্যে । ফলে সরকারি স্কুল বা মাদ্রাসা ছুটদের নিয়ে করা একটি পরি সংখ্যান বলছে ৬ থেকে ১৪ বছরের মুসলমান ছেলেমেয়েদের ১৫ শতাংশই আর স্কুলে যায় না। তাদের মধ্যে ৯.১ শতাংশ স্কুলে ভর্তিই হয়নি আর বাকিরা ভর্তি হলেও পরে স্কুলছুট । তাদের এক-তৃতীয়াংশ মনে করে, স্কুলে গিয়ে তাদের আখেরে কোনো লাভ হবে না। মহামারিতে দীর্ঘদিন স্কুল মাদ্রাসা বন্ধে তাদের ওপর কি ভয়ানক প্রভাব ফেলবে ভাবুন ।
বড়দের অবস্থাও আরো শোচনীয়।
সাবির,আলমগীর, লিয়াকত,জাহাঙ্গীর টাইপের । এদের নাম শুনেছেন ? চিনলেন না তো ?
একবার গুগুল করে দেখুন ।
কলকাতায় ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজে কয়েকবছর আগে যে কয়েকজন মারা গেছেন তাদের নাম এগুলো। আপনি জানতেন না । না জানার ই কথা । এনারা কিন্তু কলকাতায় ' কাম ' করতে এসেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত সংখ্যালঘু অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের ' কাম ' করার খুব বেশি অপশন এখনও নেই। বেশিরভাগই রাজমিস্ত্রি কিংবা পরিযায়ী নির্মাণ শ্রমিক । শুনতে খারাপ লাগলেও ইহা বাস্তব । ছেলে মেয়ে বড় হয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে বলা সংখ্যালঘুরা প্রিভিলেজড শ্রেণীর । তাদের সংখ্যা দশমিকের থেকেও কম। তাই দেখবেন পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই সংখ্যালঘু । তথ্য পরিসংখ্যান তাই বলছে । বিরোধী নেতৃত্ব এ নিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসেওছিলেন ভোটের আগে । তা রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাক । বাস্তবে আসি ।
তথ্য বলছে চাকরি ক্ষেত্রে অবস্থা আরো ভয়াবহ ।
গ্রামবাংলার মুসলমানদের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশর কাছাকাছি বেসরকারি ক্ষেত্রে নিয়মিত অল্প বেতনের চাকরি করছেন। সরকারি ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৬ শতাংশ এর কাছাকাছি । পূর্বতন সরকারের তুলনায় এই আমলে বেড়েছে ঠিকই কিন্তু অতি সামান্য মাত্রায় ।পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্ৰকাশীত শেষ তথ্য অনুসারে সরকারি চাকুরিতে মুসলিম প্রতিনিধিদের প্রান্তিক বৃদ্ধির হার এক শতাংশের ও কম । রাজ্য সরকারি প্রশাসক, ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র, চিকিৎসক আর পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদে মুসলিম প্রতিনিধি হাতেগোনা ।
সামাজিক অবস্থানের দিক থেকে যদি দেখা যায় তাহলে রিপোর্ট বলছে অন্তত ১০ শতাংশ মুসলমানের আবশ্যিক সঠিক পরিচয়পত্র নেই। থাকলেও বানানে ভুলে ভরা । এই ভুল বানানের ইতিহাস এর সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া এখনো যায়নি । সরকারি ডেটা এন্ট্রি করা মানুষজন যেখানে জটিল সংস্কৃত এমনকি ক্রিস্টিয়ান ইংরেজি নামের বানান নির্ভুল আর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে টাইপ করতে পারেন সেখানে সংখ্যালঘু নামের টাইপের এত ভুলভ্রান্তি মেনে নেওয়া কষ্টকর । রিপোর্ট বলছে ১২ শতাংশ মুসলমান পরিবারের বাড়ি পয়ঃপ্রণালির সঙ্গে যুক্ত নয়, যদিও রাজ্যে গড়ে ৩১ শতাংশ বাড়িতে তা আছে। আমার নিজের তথ্য নয়, অন্তর্জালের তথ্য তাই বলছে ।
আর্থিক উন্নতির সঙ্গে তাল রেখে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসার ক্ষেত্রেও মুসলমানরা পিছিয়ে। গোটা রাজ্যে যেখানে এই হার গড়ে ৩২ শতাংশ, সেই জায়গায় মুসলমানদের ক্ষেত্রে মাত্র ১৯ শতাংশ। পরিসংখ্যান গুলো কয়েকবছর আগের । যদি এই সময়েরও পরিসংখ্যান নেওয়া যায় তাতেও সংখ্যা গুলো দশমিক অংশেও পরিবর্তন হবে কিনা সন্দেহ আছে ।
রিয়েল এস্টেট বা আবাসন শিল্পে সংখ্যালঘু ক্রেতা বা বিক্রেতার সংখ্যা হাতে গুনে বলে দেওয়া যাবে । এখনো শহর বা শহরতলিতে সংখ্যাগুরু অঞ্চলে শুধুমাত্র সংখ্যালঘু বলে আবাসন কেনা কত কষ্টের তা সংখ্যালঘুরাই জানেন । বঙ্গের রাজধানীতে তো কয়েকদিন আগে পর্যন্ত্য সংখ্যালঘু নামেই হোটেল থেকেই তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল । মিডিয়া কদিন দেখিয়েছিল । তারপর সব চুপ । বাঙালি প্রথম সারির সংখ্যালঘু শিল্পপতির নাম কুইজে প্রশ্ন হতে পারে । উত্তর দিতে অনেকেই দাঁত ভাঙবেন । সর্বভারতীয় NEET, IIM ,IIT বা ইঞ্জিনিয়ারিং এ বঙ্গের সংখ্যালঘু মুখের পরিসংখ্যান ঘাটলে চোখ কপালে উঠবে । তাও ভাগ্যিস আল আমিন মিশনের মত কিছু সংস্থা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । এই মিশন গুলো বাদ দিলে বাকি পরিসংখ্যান লেখার মত নয় । সর্বভারতীয় IAS বা রাজ্য সরকারি WBCS এ সংখ্যালঘু মুখ এর কথা আর উল্লেখ করলাম না । তাও OBC A ক্যাটাগরিতে সিট চেপে দেওয়ার ঘটনা মাঝে মাঝেই খবরে । বহুজাতিক IT কোম্পানিগুলোতে বাঙালি মুসলমান চাকুরিজীবি দের তথ্য বাংলাদেশ এর সংখ্যালঘু লজ্জা দেবে । বাংলা এন্টারটেন্টমেন্ট জগতেও এই সংখ্যাটা আরো নগন্য । অঞ্চল বা ব্লক স্তরে রাজনৈতিক প্রতিনিধি থাকলেও রাজ্যব্যাপি বা দেশব্যাপী বা মন্ত্রী সংখ্যাতেও সংখ্যা টা চোখে পড়ার মত নয় । পড়লেও আনুপাতিক হারের অসাম্য দৃশ্যমান ।
স্বাধীনতার এত বছর পরেও বড় বড় মিডিয়া গোষ্ঠী পাঁচতারা হোটেলে সংখ্যালঘু লেখক সমৃদ্ধ একগুচ্চ ' পুজো সংখ্যা ' নামক সাহিত্য পত্রিকা বের করতে পারলেও সাহিত্য ' ঈদ সংখ্যা ' এখনো সার্বজনীন নয়। অথচ শুনেছি ধর্ম যার যার , উৎসব সবার। ব্যাখ্যা এখনো অজানা ।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অবস্থাটা আরো শোচনীয় ।
স্ন্যাপ-গিল্ড এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে সব ব্লকে মুসলমান জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশের কম, সেখানে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের জন্য ২.৩ টি হাসপাতাল রয়েছে। অথচ, যে-সমস্ত ব্লকে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মুসলমান মানুষের বাস সেখানে প্রতি লক্ষ মানুষের জন্য হাসপাতাল রয়েছে মাত্র ১.৪ টি । তথ্য বলছে নাবালিকা বিয়ের ক্ষেত্রে আর নাবালিকা প্রসূতির সংখ্যার হারেও খুব একটা পিছিয়ে নেই নারী সমাজ ।
মজার ব্যাপার হল এই ২০২২ সালেও দশমিকের ঘরে আটকে থাকা সমগ্র জাতিটার স্থান কিন্তু জনসংখ্যার নিরিখে বঙ্গে দ্বিতীয় । প্রায় তিরিশ শতাংশ ।
তথ্যগুলো সব মুসলিম নারী পুরুষ নির্বিশেষে । যদি শুধুমাত্র মুসলিম নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আর সামাজিক বা অর্থনৈতিক অবস্থান আর চাকরি নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয় তাহলে অর্য্ভট্ট মহাশয়কে শূন্যের পাশাপাশি দশমিকের ও ভগ্নাংশের নতুন কোন নগন্য একক আবিষ্কার করতে হবে ।
এতগুলো তথ্য দিলাম কারন এতগুলো তথ্য ' দাবি ' হয়ে উঠতে পারতো । দুর্ভাগ্য পারেনি । এতগুলো ' দাবি ' এর কয়েকটাও পূর্ন হলে তার প্রতিফলন প্রায় সব ' দাবি ' কেই অনেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতো । এগিয়ে যেতে পারতো পুরো একটা সমাজ ,একটা বর্তমান ,একটা ভবিষ্যৎ । দুর্ভাগ্য ভ্রান্ত রাজনীতিতে এগুলো একটাও ' দাবি ' না হয়ে ' ঈদের ছুটি ' দাবি হয়ে ওঠে । আর সেই ছুটির আনন্দে চাপা পড়ে যায় একগাদা তথ্য ।
বতর্মান প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে সুদূর দূরদেশের সঙ্গে তুলনা বা মেকি কান্নার সাথে সাথে নিজের পারিপার্শ্বিক সমাজের অবস্থানেরও মাঝে মাঝে ময়নাতদন্ত করা দরকার । বিশেষত যখন একটা বৃহৎ অংশের ভবিষ্যৎ এর ওপর দাঁড়িয়ে । তবে এটাও ঠিক শুধুমাত্র সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ একা কিছু করতে পারবে না । সামগ্রিক সমষ্টি উন্নয়নে সমষ্টিকেও সামগ্রিক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে ।
শুধুমাত্র ভুল ও যুগ অনুপযোগী শিক্ষা সাথে অন্ধ ও ভ্রান্ত রাজনৈতিক ধর্মবিশ্বাস কিভাবে একটা দেশ কে ,বা একটা দেশের একটা গোটা জাতিকে অস্ত্বিত্বহীন করতে পারে পাশের কয়েকটি দেশ থেকে সেই শিক্ষা নিয়ে নতুন ভাবে শুরু করুক বাঙালি মুসলিমরা , এই প্রার্থনা রাখি । তবেই মিলিত ভাবে বাংলা এক নতুন বাংলায় রূপান্তরিত হবে । সারা বিশ্ব তথা ভারতবর্ষ ব্যাপী যে অস্তিরতা চলছে তার অনেক কারনের মধ্যে একটা কারণ অবশ্যই ' অসাম্য ' । অর্থনৈতিক, সামাজিক , রাজনৈতিক , সাংস্কৃতিক ও চাকুরিগত অসাম্য । সমতা রক্ষার শুরুটা বাংলা থেকেই হোক ।
কারন কথায় আছে - 'আজ বাংলা যা ভাবে …….'
তথ্যসূত্র : অন্তর্জাল ।
ভাবনা
রূপরস গ্ধন্ধ স্পর্শহীন পুজো
শিবির রায়
পুজো মানে আনন্দের পাহাড়চূড়া ... বুকের মধ্যে ছলাৎ ছলাৎ... খুশির হাওয়ায় ভেসে যাওয়া... কাশের বনে দোদুল দোলা, শারদমেঘের রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা রে ভাই.... উড়ু উড়ু দুরু দুরু মন ঢুড়ে... স্বপ্নের জগৎ ঘেরে... নানা রঙের হাতছানিতে দিল উদ্বেল... বুকের ভিতর ঢাকের কাঠি, বোল বাজে কড়াম কড়াম.. কুরুর কুরুর তাক্... মন লাগে না...
মন লাগে না আর পড়ার টেবিলে, বাংলা ইংরিজি মখস্থ করা,ইতিহাস ভূগোল, কতো কঠিন বিজ্ঞান, সুদকষার জট কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট জটিল ততো, নীরস গ্রামার -- ভাল্লাগে না আর...
এতোক্ষণে চন্ডিদালানে মাটি পড়ে গেছে খড় কাঠামোয়, শ্বাসে ভেসে আসে সোঁদা গন্ধ, ভিড় করে শৈশবের চোখ মনের দলেরা... আহা কী আনন্দে দিনগোনা... ক্রমশ রং তুলির টান মোটা কাজলটানা আয়তাক্ষী, ... বিরঙি বসনভূষণ, ঝলমল মুকুটচূড়া ডাকের সাজে মা আসছে, আসছে সম্বছরের প্রতীক্ষার পর...
'পুজোয় চাই নতুন জুতো ( বাটা কোং বিজ্ঞাপন ) ঘরে ঘরে নতুন পোষাক সংগ্রহ , নেকার বুকার ( বক্লেস গ্যালেজ দেয়া বাচ্ছাদের জামা প্যান্ট) , ঝিলমিল সিতারা ট্রুইংকেল ফ্রক বাহারী রংছটা নাইলন শাড়ী , লেটেস্ট ফ্যাসান চমকদারি....
শেষ প্রস্তুতিপর্ব। অব দিন হামারা আয়া প্যায়ারা...
রাতের পুজোর আকাশ মুগ্ধমোহ,... পাড়ায় পাড়ায় প্যান্ডেলের বিচিত্র বিন্যাস, আলোর রৌশন ঝলক ঝলক, উচ্চগ্রামে লাউড স্পিকার, HMVর হিট পূজাসংখ্যা, হেমন্তিয়া মানবেন্দ্র তরুণ কিশোর গীত সুকন্ঠ সুদাম ( অলির কথা শুনে বকুল হাসে... )
সাতভাই চম্পা জাগোরে গাইছে লতাকোকিলে,আশার বায়না --এনে দে রেশমি চুড়ি,নইলে যাবো বাপরে বাড়ি., সন্ধ্যা-আকাশে জ্বলছে -- এ শুধু গানের দীপ, এ লগন গান শোনাবার... ইত্যাদি ইত্যাদি ।
স্মৃতিটুকু থাক ! ফিরে এলাম ৭০বছরের বাস্তবেের ভারাক্রান্ত বারান্দার নিভৃত কোণে, অবক্ষয়ের সমাজসংসারের কোলাজ এবং শেষ যাত্রাপথের দিকে কদম বাড়িয়ে...
পৃথিবীর আনাচে কানাচে দেখতে পাই নিয়ত অসাম্য অশান্ত দৌলতদারি জৌলুষভারী অহং দম্ভ কাপট্য পেশিবাহুল্য সব ছবি,... মন আর গাইতে পারছে না ' আজ নয় গুন গুন গুঞ্জন প্রেমে... ওগো প্রিয় মোর, খোলো বাহুডোর, পৃথিবী তোমারে চায় '
আশংকায় রাত যাপন, ধর্ম শানায় ধর্মকে-- বন্দুক লাও সড়কি লাও, রণহুংকার শস্ত্র ঝংকার ভাইরাস মগজাস্ত্র, পরমানুবিষোদ্গার -- মারণমন্ত্রের তুরীয় উচ্চারণে আজ ছেয়ে আছে শান্ত শুভ্র শরৎ আকাশের এ প্রান্ত ও প্রান্ত... দেশের মাটিতে ধর্ম কাড়াকাড়ি, কাদা ছোড়াছুড়ি , আকাছোঁয়া আগুনদাম নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র, দিশাহীন কর্মহীন শিক্ষিত মেধার দল, দীনদরিদ্র দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের হাহাকার.... বাংলার মাটি আজ কলুষিত জালজোচ্চুরি লালসার ধনে... স্বার্থের বন্ধনে বেঁধে থাকে ওরা.... নেই কোনো ব্যথার স্পন্দন,বলে না ওরা-- কার ঘর আালোহীন,কার বাছার দুধ মেলেনি, আশ্রয় নেই কাদের ঘন বর্ষায়, দিন কাটে ভাগ্যের ভরসায়... শুনতে পাই না মসনদের জোরালো কন্ঠস্বর -- আমরা আছি সদা তোমাদের পাশে, আমরা আছি সকলের সাথে শরতের মহামিলন উৎসবে....
বনেদী নীলে
অলকানন্দা দে
শরৎ তার আদিম ঐশ্বর্য নিয়ে চৌকাঠে হাজির হয় ধোপদুরস্ত রোদের পোশাক পরে। একটি বিলসিত শরতের সান্নিধ্য পাওয়ার বাসনা প্রায় প্রতিটি মনেই বাতাস হয়ে ওড়ে বছরভর।কিন্তু কেন এত ভালোবাসি এই ঋতুর সচ্ছল সূর্যরশ্মির সখিত্ব গা-এলানো সবুজের সাথে! কি আছে সূর্যবহ শরতের ঊষায় যা মনের শরীরে পাখনা জুড়ে দেয়! চোখের চলা চলে সবুজের আল বেয়ে, ডরায় না থমকায় না ডাইনে বাঁয়ে কোথাও! যেন এক নববিশ্ব এসেছে যা কোনদিন হয়তো সাজিয়ে থাকবে রাতের স্বপ্ন! কিন্তু এই শরৎ শরীরে মনে বাসা বাঁধে প্রতি বছর নির্ভুল নিয়মে। অথচ সে চিরনতুন এক এক বর্ষ তীরে! অতি সরল এর নেপথ্যের কারণ যা চিরটাকাল আশার শিশির ঝরায় মনমাঠে! আছে এক সাবেক মায়া যা শুষে নেয় ক্ষত; অভাব-মলিন মনের! আবেগবিধুর ধোয়ানীলের প্রলেপ দেয় দিনের শুরু থেকে শেষ সূর্যরশ্মি মিলিয়ে যাওয়া অবধি। মন যেন বল পায় তাকে দেখে! গানে ভেজা মেঘ ভাসে শোলার মতো! ঘর জুড়ে সাম্রাজ্য সাজায় শরৎ! বঙ্গমনে শরৎ খিদে বেড়েই যায় বছর বছর!
তার বেশি ভালো যেন কেউ বাসতে পারে না- এই ধারণায় বসবাস করে প্রতিটি মন! পল্লী জাল বোনে, দুহাতে রোদ্দুর নিয়ে করবে খেলা!
পাতে পড়ে ঢাকের তাল, চেটেপুটে নেওয়া পরিষ্কার করে যেন পড়ে না থাকে এতটুকু খুশি! শরতের হেঁশেলে সুখের পাক হয়! সুখলোভী খিদে বাঁচার আশা বাড়িয়ে তোলে পুণ্য মনে! হৃদয়ের পাশাপাশি হাঁটে স্বপ্নেরা! বাঁধিয়ে রাখা স্মৃতি আর চলতি দিনের যা কিছু সবটা নিয়ে শরতের পথ হাঁটা ছায়া থেকে ছায়ার ঠিকানা দেয়! কাশের ময়দান, শিউলির গান সমস্ত দুঃস্বপ্ন মুছিয়ে দেয় যারা জীবনের শত্রু। আমৃত্যু অক্ষয় তাই শরৎ মহিমা! শুভ্রতার অন্তহীন আলস্যে ঝিমোয় কাজলকালো চোখ! এই স্বল্পমেয়াদী ছুটির প্রগাঢ় কুমকুম কপালে আঁকতে কে না চায়!
রম্য রচনা
পেশা যখন ডাক্তারী
স্বপন কুমার দত্ত
ডাক্তারবাবুদের নিয়ে নানা ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য, অরুচিকর উপাধি প্রদান এবং ক্ষেত্র বিশেষে নানা প্রকার হামলা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।ডাক্তারদের পক্ষে উমেদারী নয়,নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গী নিয়ে বলতে গেলেও মনে হয়, এ ধরনের নেতিবাচক মন্তব্যই শুধু নয়, আচ রণ ও সংযত করা প্রয়োজন।ভুলে গেলে চলবেনা, এনারাও আমাদের মত মানুষ। প্রত্যেকেরই ঘর সংসার পূত্রকণ্যা রয়েছে।তাই তারাও নন নির্দয়।পুনর্জীবন ফিরে পেতে ও সেই
ডাক্তারবাবু।
শুধু কী তাই ? গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো এমনকি মহকুমা ও সদর হাসপাতাল গুলোর যে পরিকাঠামোর মধ্যে ডাক্তারবাবুদের কাজ করতে হয়, তা এককথায় অমানুষিক এবং অমানবিক। কিন্তু শুধু রোগী দেখাই নয়, উপযুক্ত চিকিৎসাও দিতে হবে ডাক্তারবাবু দের।পাবলিক কিছু বুঝতে নারাজ। হল্লা বাজি,হামলা বাজি যেন জনতার একচেটিয়া অধিকার।
যাহোক আমার এক পরিচিত ডাক্তারবাবুর জবানিতেই শোনা যাক,একখানা মজার
গল্প। কিন্তু এটা গল্প হলেও সত্যি!
রোগীর সাথে যারা আসেন চিকিৎসালয়ে তাদের আমরা বলি ' পেসেন্ট পার্টি '।অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পেসেন্ট পার্টি র সংখ্যা --- দুই থেকে পাঁচের মধ্যেই থাকে সীমাবদ্ধ। তবে মাঝে মধ্যে তার ব্যতিক্রম হয়েই থাকে। আর পেসেন্ট পার্টির সংখ্যাধিক্য মানেই চিকিৎসা বিভ্রাট। পারলে ডাক্তারবাবু কে সরিয়ে দিয়ে তারা নিজেরাই চিকিৎসার ভার নিয়ে নেয়। `ইনজেকশন দিন, অক্সিজেন দিন,স্যালাইন দিন, এসবতো আছেই।` এর সাথে আছে নানা কুরুচিকর মন্তব্য,-- " এখনকার ডাক্তাররা নাড়ি টিপতে জানেনা, জানে রোগীর গলা টিপতে।" অবশ্য এতেও গরম করা যাবেনা মাথা। সব নীরবে সহ্য করে
নিজের কাজ করতে হয়।আর নিতে হয় কিছু উপস্থিত বুদ্ধির সহায়তা।
কখনো কখনো পেসেন্ট পার্টি আসতো, ট্রাক বোঝাই করে।এদেরকে স্বাস্থ্য কর্মীরা বলতাম ``বৌদি কেস "। পাড়ার জনপ্রিয় কোন বৌদি অসুস্থ হলে হই হই রই রই করে " দুপুরবেলার ঠাকুরপো " রা আসতো পাড়া ঝেঁটিয়ে।আর বৌদি একটু বেশি সুন্দরী এবং সবার সাথে গায়ে পরা হলেতো আর কথাই নেই। মানে সেসময় পাড়ায় কোন কারণে যদি অগ্নিকাণ্ড ঘটে যায়, তাহলে এক মগ জল নিয়ে ছোটার মত থাকবেনা একটিও প্রাণী। যাহোক ট্রাক থেকে নেমেই সেই পেয়ারের ঠাকুরপোদের শুরু হত চিল চিৎকার, -- " কোথায় ডাক্তার ! কোথায় ডাক্তার !`` আর নিরীহ টেবিলের উপর পড়ত অবিরাম চড় চাপড় --- " দুরুম দারাম "।
এসব ঐ ডাক্তারী পড়ার সময় ছাত্রজীবনে হয়ে গিয়েছিল গা সওয়া। ঠাকুরপোবাহিনীকে বিন্দাস হ্যান্ডেল করে,গম্ভীর মুখে রুগী দেখতাম আমরা। নিতে হতো বিশেষ ব্যবস্থা। একদল ঠাকুরপো কে অমুক ওষুধ আনতে দিতাম তো অন্য দলকে তমুক, এইসব করেই ,মাঠ ক্রমশঃ ফাঁকা হ'ত।
এগুলো হলো, আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রধান পাঠ এবং এই প্রধান পাঠের পরীক্ষাটি তে ডিস্টিংসন সহ পাশ করেছিলেন আমাদের এক সিনিয়র। তাঁকে অবশ্য আমরা চোখে দেখিনি। কিন্তু তাঁর পেসেন্ট পার্টি হ্যান্ডেল পৌঁছেছিল এক কিংবদন্তি পর্যায়ে।
তাঁর নাম ধরা যাক পিন্টুদা। সেই পিন্টুদার ই গল্প বলব এখন।
একবার এক " বৌদি কেস " এসেছে। বৌদি গায়ে আগুন দিয়েছেন স্বামীর সাথে ঝগড়া করে ভগবানের অসীম করুণা, একাধিক ঠাকুরপো তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নিভিয়েছেন সেই আগুন। আগুন জাস্ট চুম্বন করে গেছে ডান পায়ের পাতা । কিছু টি হয়নি। আমাদের ডাক্তারী পরিভাষায় পেটিকেস। কিন্তু ঠাকুরপো দের বোঝায় কার সাধ্য। বৌদির কাছে একটা করে প্রমাণ দিতে হবে, কার প্রেম কত গভীর! তাই চললো হুংকার।
" এই শাল্লা, ডাক্তারের বাচ্চা, দ্যাখ ভালো করে " --- এর সাথে বরাহ,সারমেয় প্রভৃতির বাচ্চার সাথে ডাক্তারের তুলনা।
এসব আমরা এখন আর গায়ে মাখিনা। এসব উক্তি করা পেসেন্ট পার্টি র জন্মগত অধিকার। তাছাড়া আমি মনে করি,ডাক্তার আর শুয়োরের বাচ্চার মধ্যে বিশেষ তফাৎ নেই।দু`দলই চারপাশে ভরে যাওয়া পাঁকের প্রতি উদাসীন থেকে কাজকর্ম করে।
তা সে যাক। খানিকবাদে দেখা গেল, আজকের ঠাকুরপোরা বেশ একটু মরিয়া। কিছু একটা ভাঙচুর হবেই,যদি না এই মুহূর্তে বাহিনীকে করা যায় ছত্র ভঙ্গ।
ইতিমধ্যেই ওষুধের স্লিপ ধরানোর ট্যাকটি্স ফেল মেরে গেছে। প্রহরারত পুলিশ নিয়মমাফিক প্রাণের ভয়ে মাথার টুপি আর হাতের লাঠি লুকিয়ে বাহিনীর মধ্যে মিশে গিয়ে " আমি তোমাদের লোক " সেজে দাঁড়িয়ে আছে।
ঠিক এরকম একটা এভারেস্ট অভিযানমার্কা সময়ে আবির্ভূত হন পিন্টু দা। এসেই প্রথমে ঠাকুরপোদের নেতাকে ডেকে বলেন,
" শুনুন কেস খুব সিরিয়াস। পা হয়ে যেতে পারে নষ্ট।আপনারা এক কাজ করুন, এক এক করে আসুন পাশের ঘরে।"
গুরুগম্ভীর গলায় পিন্টুদার ঐ আদেশ শুনে সবাই একটু থমকালো। নেতা বললো, --
" না আসলে পুড়ে যাওয়া চামড়া পাল্টাতে হবে। আসুন আপনাদের এক এক করে, চামড়ার স্যাম্পেল নিয়ে দেখি কারটা ম্যাচ করে।"
ঠাকুরপোরা এরকম কথা আগে শোনেনি, বুঝতেও পারছেনা ----- সত্যি নাকি গাঁজা ! পিন্টুদাও একেবারে নিক্তি মেপে চেঁচিয়ে উঠলেন, " কই আসুন।দেখবেন পেসেন্ট খারাপ আছে।"
মিনিট খানেকের মধ্যেই ফাঁকা ময়দান। ট্রাক,এবং সাধের বৌদিকে ফেলে রেখেই প্রাণপ্রিয় ঠাকুরপোরা উধাও।
মুজনাই অনলাইন পূজা সংখ্যা ১৪২৯