Sunday, September 4, 2022


 

পর্ব -তিন 
কবিতা /নাটক/ছবি 



সম্পাদকের কথা

অতিমারি অতিক্রান্ত। জীবন আবার স্বাভাবিক গতিতে। তবে আগের সেই ছন্দ নেই আর। তাই নিউ-নর্মালের এই পুজো একেবারেই অন্যরকম এবার। প্রত্যাশিতভাবে সকলেই অপেক্ষা করে আছে তার। ইতিমধ্যে ইউনেস্কোর বিশেষ স্বীকৃতি পাওয়ায় বিশ্ববাসীর দৃষ্টি রয়েছে এই উৎসবের দিকে। তাই সব মিলে উৎসবের আবহ শুরু হয়ে গেছে। নিজের মতো করে পুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সবাই। মুজনাই পুজোর আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। প্রার্থনা করছে, সকলের পুজো ভাল কাটুক। একই সঙ্গে আশা রাখছে, মা দুর্গার আশীর্বাদে অশুভ দূর হবে। শুভশক্তি সকলের মঙ্গলবিধান করবে। প্রতিনিয়ত যে টালমাটাল পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে মানবকূল, তা কেটে গিয়ে আসবে এক নতুন দিন।  


  

মুজনাই সাহিত্য সংস্থা 

রেজিস্ট্রেশন নম্বর- S0008775 OF 2019-2020

হসপিটাল রোড 

কোচবিহার 

৭৩৬১০১

ইমেল- mujnaisahityopotrika@gmail.com (মাসিক অনলাইন)

- mujnaiweekly@gmail.com (সাপ্তাহিক) 

প্রকাশক- রীনা সাহা 

সম্পাদনা, প্রচ্ছদ ছবি,  অলংকরণ ও বিন্যাস- শৌভিক রায়  

মুজনাই অনলাইন পূজা  সংখ্যা ১৪২৯



সূচি 

বিলোক শর্মা, কুমকুম ঘোষ, শ্রাবণী সেন, বিদ্যুৎ রাজগুরু, রুদ্র সান্যাল, রীনা মজুমদার, 
মাথুর দাস, পার্থ সারথি চক্রবর্তী,  অমৃত দেবনাথ, শ্রাবণী সেনগুপ্ত, বিজয় বর্মন, 
উমা শঙ্কর রায়, চন্দ্রানী চৌধুরী, আকাশলীনা ঢোল, বটু কৃষ্ণ হালদার, 
সার্বজনীন মাটি, সৈকত দাম, দেবর্ষি সরকার, সারণ ভাদুড়ী, ম্যাসিভ প্রধান, 
সোমনাথ সাহা, রীতা মোদক, 
তানভি দাম, শৌভিক কার্য্যী 





অনুবাদ কবিতা


পরিচয়ের সূত্রপাত (নেপালি কবিতা)
            -কবি মহেশ কার্কী ক্ষিতিজ
             অনুবাদ-বিলোক শর্মা


হারিয়ে যায় জলস্রোত-নদীতে পৌঁছানোর পর

নদী আর নদী থাকে না-সমুদ্রে মিশে যাওয়ার পর।

সময়ই পরিচয় খোয়াতে থাকে নিরন্তর
পরিবর্তনশীল ঋতুদের সঙ্গে

ঝরে পড়ে মুকুল-ফুলের দেশে পৌঁছে
ঢিপি থেকে নেমে আসে তুষার-জলের রূপে

সবকিছুই
নিজস্বতা হারিয়েও
বেগবান হয়ে উড়ে চলেছে স্বাধীনতার খোঁজে
আর হারিয়ে ফেলছে নিজের পরিচয়ের সূচিপত্র।

হারিয়ে যেতে থাকে মানুষের পরিচয়ও।

আমি বাচ্চা, বৃদ্ধ বলতে-বলতে
বৃদ্ধের পরিচয় দেওয়া মানুষটির মৃত্যুর পর
দহন না হওয়া পর্যন্ত
লাশে পরিণত হওয়া-সে
দহনের পর 'স্বর্গীয়' শব্দ থেকেই শুরু হয়
তার পরিচয়।

                          

(কবি পরিচয়:
মহেশ কার্কী ক্ষিতিজ: কাঠমান্ডুর সাহিত্যিক মহেশ কার্কী ক্ষিতিজ মূলত আলোচক ও কবি হিসেবে পরিচিত। যুব কবি মহেশের একটি কবিতা সংকলন ও দুইটি আলোচনার বই প্রকাশিত রয়েছে।

বিলোক শর্মা: মাদারীহাট, ডুয়ার্সের বিলোক শর্মা কবি ও অনুবাদক হিসেবে পরিচিত। কবির নেপালিতে একটি কবিতা সংকলন ও একটি বাংলায় নেপালি কবিতার অনুবাদ সংকলন প্রকাশিত রয়েছে।)




কবিতা 


শ্রাবণ- তিথি -২২ শে
              কুমকুম ঘোষ

তোমার সাথে প্রথম দেখা প্রভাতবেলায় ;
অক্ষরে আর বর্ণমালায়।
দিনে দিনে বেড়েই গেলো ঋণ
রক্ত- মাতাল ; শ্রাবণ ধারায়
তোমার সাথে পথচলায়।

 রেখে দিলাম মুঠোয় ভরা
ভোরের বাতাস; তোমার কাছে 
হৃদ- প্রবাসে ;
বকুল- ঝরা ব্যাকুল পথে
সিক্ত -যূথী চাঁপার সাথে।

কিংবা কিছু রইলো পাশে
হঠাৎ চাওয়া কবির ছাঁচে :
অ-ঋণ হয়ে অপ্রবাসে
শ্রাবণ তিথির মুক্ত সাঁঝে।



শরতের অমল মহিমা
শ্রাবণী সেন

শরতকাল জুড়ে মনের উঠোনে বাজে 
ভৈরবীর সুর
সেই সুরে সন্ধ্যাকালে তারার মত শিউলি ফুল ফোটে  ভোরের বেলায় ঝরে, 
ফুলে ফুলে ঢাকা পড়ে সবুজ ঘাসের আঙিনা।
সেই আনন্দভৈরবীর সুর  আগমনী
 গান হয়ে বাজে
গৌরী আসেন আঙিনায়, বড়ো মায়া ভরে!
পঞ্চমীর ভোর হলে সানাই বাজিয়ে 
আলপথ ধরে চলে বাদ্যকর অজানা সে মন্ডপের দিকে! 
কাশফুলে ছাওয়া নদীচর!
আরাধনা পূর্ণ হলে প্রতিমার বিসর্জন শেষে
মনে বাজে সকরুণে উদাসভৈরবী।
পুনরায় এসো তুমি আরাধ্যা শরণ্যা।




দিনলিপি 
বিদ্যুৎ রাজগুরু

প্লাটফর্মে থিকথিকে ভিড়,আলোর সারি
স্বপ্নের ট্রেন সবুজ বাতি ছুঁয়ে,চলে গেছে দূরে
নৈঃশব্দ স্টেশনে একাকী আমি, অপেক্ষায়
ঘন কুয়াশাও আলো জ্বেলে মুখে,
দাঁড়িয়ে আছে , লেটট্রেন আসবে বলে
সন্ধ্যার পাখি জানে না সেসব কথা,
আলোর উত্তাপ মেখে সে
ফিরে গেছে চুপিচুপি।
আর আমি, লিখি দিনলিপি
খসেপড়া পাখির পালকে
নদীর মোহনায় , বীজ বপন করে স্বপ্ন
পারফিউমের গন্ধমাখা ঘামের মতন৷




ভাইরাস
রুদ্র সান্যাল

তেতে ওঠা বিষাক্ত অভিমানে,
আর কত নিঃসঙ্গ হবে?
রোগজীর্ণ শীর্ণ পৃথিবী!

ভাঙা দেয়ালে একফালি অন্ধকার।
যেন গিলে খায় ঝলসানো রুটি!
পোড়া মাটির গন্ধ লেগে আছে আজ।

কোন এক অন্ধকারে কারা যেন বুনছিলো প্রেম।
হয়তো বা ঈশ্বরের বাগানের খোঁজে এসেছিল,
রাতজাগা পরীদের কেউ!

এক জ্যোৎস্নাহীন অন্ধকারে ফুটে ওঠে আদিম চাঁদ!
আর সর্বাঙ্গে ভাঙন নিয়ে ভেসে যায় বিষণ্ণ বেদনা।
শিকড় ছেঁড়ার আর্তনাদ!

মুখোশের আড়ালে পরগাছা শ্যাওলায়,
এখনো জন্ম নেয়-
বর্ণহীন অচেনা ভাইরাস.....




নয় শুধু কাগজের টুকরো
   রীনা মজুমদার

কাগজের নৌকো বানিয়ে
বৃষ্টির প্রতীক্ষা ছিল,
ছিল উঠোনে ভাসিয়ে জয়ের হাততালি

নাবিকের অনুভব আর অনন্ত পথ পাড়ি
এভাবেই ছিল গোছানো দুরন্ত শৈশব।

কাগজ তাই টুকরো নয় আজও

সময় তো অন্তহীন নদীপ্রবাহ
এখনও বৃষ্টি আসে বাইরে ও ভেতরে
জল জমে রাস্তায় ও অন্তরে,

আলপথে হেঁটে যাই নদীর কাছে
টুকরো টুকরো কাগজে লিখি
  আবহমানের দিনলিপি

জীবনের স্রোতস্বিনী দলিল
তুলে দেব সমস্ত উত্তরাধিকার

নয় শুধু কাগজের টুকরো...




বর্ণাতীত

মাথুর দাস


আদিতে ছিল না বর্ণমালা, কর্ণ ছিল ঠিক,

শব্দের স্বননে ছিল ইঙ্গিত, দ্বৈরথ, চক্রব্যুহ ;

মনে মনে ভাব ছিল  'ভাব'-এরও সমধিক,

আবছায়া-ঘেরা প্রেম, প্রীতি, বৈরিতা সমুহ ।


তখনো মানুষ ছিল যথারীতি মানুষেরই মত,

বয়ে যেত বায়ু জল কালের প্রবাহ নিজস্বরে ;

প্রকৃতি-নির্ভর দিন, মধুরাত স্বপ্নিল চন্দ্রাহত,

বর্ণ নয়, ভাষা ছিল বর্ণাতীত শব্দের অক্ষরে ।


ভাষা কি এখনো বোধ্য, সর্বদা মানুষে মানুষে ?

না-বোঝা কথার স্রোত ওতপ্রোত বয় বিশ্বময় ;

হাজারো ভাষা, তবু বোধ-ও হয় বুঝি স্থানু যে,

শব্দ দিয়ে ধ্বনি দিয়ে প্রায়শ ইঙ্গিতে কথা হয় ।




চারাগাছ 
পার্থ সারথি চক্রবর্তী


বিন্দু বিন্দু কপালের ঘাম
উদ্বায়ী হাওয়ার কাছে হেরে যায় 
            কোন এক সময়।

লোকালয়ের ভিড় যেমন 
হারিয়ে যায় একাকিত্বের কাছে 
  জীবনের কোনো মুহূর্তে।

আলপথের মধুর আলাপ 
মায়াশিস দিয়ে যখন ডাকে,
তুচ্ছ হয়ে যায় সব ফাটল-
মাটির আর মনের।

চারাগাছ জন্মাতে থাকে 
মনজমিতে,একে একে- বেশ দ্রুত।



বাইপাস ধরে..
অমৃত দেবনাথ

চলন্ত বাইপাস ধরে হাঁটতে হাঁটতে..
হাঁটতে হাঁটতে
আমি গাছবাড়িকে একবার ছুঁইয়ে দেখতে চাই।

গাছবাড়িঃ আমার যাবতীয় প্রেম। 
গাছবাড়িঃ আমার আনন্দ -বিষাদ। 
গাছবাড়িঃ আমার প্রথম আশ্রয় শিবির।
গাছবাড়িঃ আমার আমিই এখনও..

যতবার ভুলে থাকার ভান করেছি ততবার উচ্ছিষ্ট জমেছে বুকে।
যতবার ছুঁয়েছি নখ থেকে চুল..
ততবার বৃষ্টিফোঁটা ছুঁয়েছে শরীর।

বাইপাস করে যতবার ভেবেছি যাব..
বেঁধেছে ছায়া আর মায়ায়।

একদিন সব টান ছিঁড়ে চলে যাব
এমনকি মাধ্যাকর্ষণকেও পিছনে ফেলে

টানহীন..
বাইপাস ধরে শূণ্যে...       




ঢাকির ছেলে
শ্রাবণী সেনগুপ্ত

দুগ্গা মায়ের মাঝে
সকাল থেকে সাঁঝে
ঢাকির ছেলে দেখে
ফেলে আসা মাকে।
ছোট্ট দুটি হাতে
বাজায় বাবার সাথে,
মন থাকে তার গাঁয়ে 
শাল পিয়ালের ছায়ে।
পূজোর কদিন পরে
ফিরল যখন ঘরে,
নিয়ে মায়ের শাড়ি
আনন্দ তার ভারি।
শেষ বিকেলের আলোর রেখা 
মায়ের মুখে দিল দেখা,
ঢাকির ছেলে অবাক হল
দুগ্গা মাকে ফিরে পেল।




ছাই টিপ
বিজয় বর্মন  

কতশত স্মৃতি কুড়োতে কুড়োতে,কত দহন,কত শ্রাবণ পার হয়ে যাচ্ছি,
এক শরতেও মেঘ হওয়া হলো না,
নগরের নান্দনিকতায়,
কত রং মাখামাখি,

এবার আগমনী বার্তায় সব নদী পেরিয়ে যাব,
পেরিয়ে যাব,সব গাছ সারি সারি,
সবুজ বাঁশ ঝাড়,

যারা আমাকে ছেড়ে যেত,একে একে,
সেই ছোট্ট বেলায়,
আমি তাকিয়ে থাকতাম,বাস, ট্রেনের জানালা ধরে,

ছুটছে ট্রেন দুরন্ত গতি,
তিস্তা ব্রিজের ছন্দ বাজনায় আমি তাকিয়ে থাকি গোধূলি আকাশ দিগন্তে,

সূর্য তখন পাটে বসা, 
নীল দিগন্তে, হালকা ধোঁয়া ধোঁয়া ,
মনে হয় আগমনীর কপালে লাল টিপ, 
মা,মা দেখ, মা বলে উঠে দুগ্গা দুগ্গা কি মনোরম,

হ্যাঁ এবার যাব, যাব পেরিয়ে মাঠঘাট,
পুকুর দীঘি, বালা পুকুরি,
যেখানে আমার শৈশব এখনো কাশবনে সাঁতার কেটে ছুটে যায়, 

সকাল জানে শিউলি ফুল, মাটির গন্ধ,
দোলা বাড়ি, আল পথ, যুবতী ধান গাছ ছুঁয়ে যায়,
সতী নদী জানে, এক বুক জলে প্যান্ট বাঁচাবো না গেঞ্জি,
অবশেষে দাদুর পিঠে ভর,

ঢাকের বাজনার কোন পরিবর্তন হয়নি,
বটের ছায়া তলে বেজে ওঠে ঢাক,
ঢ্যাঙ্কুরা কুর,ঢ্যাঙ্কুরা কুর,

যেখানে কোন চাওয়া নেই,
একটা স্যান্ডো গেঞ্জি আর একটা হাফপ্যান্ট ব্যাস পকেটে দশ বিশ পয়সা,

সকাল সকাল অঞ্জলি,
জোর হাতে সমোচ্চারিত মন্ত্র পাঠ,
ও মা জানো, কতদিন মায়ের হাসিমুখ দেখি না,

কিযে আনন্দ ,কিযে আহ্লাদে কেটে যেত দিন,
সারিবদ্ধ ভাবে পাত পেরে ভোগের প্রসাদ,কিযে স্বাদ, কিযে স্বাদ..

আর,কপালে যজ্ঞের,  ছাই টিপ,
রেখে দিতাম যত ক্ষণ রাখা যায়.....!




সার্কাস

উমা শঙ্কর রায়


একটা মস্ত তাঁবুর মধ্যে আছি

অনেকদিন পাখিদের নীলাকাশের বায়না।


দড়ির মই বেয়ে উঠি তাঁবুর উপরে যাব বলে,

মইয়ের দুলুনি ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেলে

দড়ির জালে ভরসা জাগে।


দোল খেতে খেতে এখন 

পকেটে জড়ো করেছি সম্পর্ক যত!

আত্মস্হ করেছি ভীষণ ব্যালেন্স--


দড়ির উপরই এখন চাকা ঘোরাই আমি।

পকেটস্হ সম্পর্করা হাততালি দিলেও-

আমি ভরসা রাখি দড়ির মই আর জালে।


বিষাদের সামনে এখন অনায়াসে দাঁড়াই,

জানি এই তাঁবুর আমি ব্যালেন্স বিশারদ!




মোহ

চন্দ্রানী চৌধুরী


এক আকাশ আলোর আয়োজনে 

ভেসে আসে ভালোবাসার গান

আদর সোহাগ ঝাঁপি ভরে নিয়ে 

বুকের কাছে সদ্যজাত প্রাণ 


গোপন মনের রূপকথাদের নিয়ে

সব পেতে চায় বেহিসাবী মন

বাবা মায়ের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে 

আঁকা হল ছোট্ট ছেলের ভুবন 


আসমানি রং ইচ্ছেগুলো সব

লাগাম ছাড়া দামাল হতে চায়

দূরের পাখির নাগাল পাবে কবে

রোদ্দুর ছুঁয়ে দেখার অপেক্ষায়।


স্বপ্নগুলো সাজিয়ে নিল ছেলে

পূরণ হল বাবা-মায়ের সাধ

যোগ্য ছেলে দূর বিদেশে যাবে

উঁচু হবে পরম্পরার কাঁধ।


বিদেশ যাত্রা সফল হল তার

পড়ে রইল দেশের ভিটেবাড়ি

সত্যি হল স্বপ্ন মা - বাবার

সাক্ষী হয়ে রইল নিঝুমপুরী 


নতুন জীবন-জীবিকার টানে 

ব্যস্ত ছেলে মায়ের আঁচল ছাড়ে

চোখের ভাষা হারায় এখন ভীড়ে

বয়স্ক প্রাণ একাকিত্বের অন্ধকারে।


চোখের জলে এখন শুধুই 

বুকফাটা হাহাকার

নাম-যশের মোহে হারায়

সন্তানকে ছুঁয়ে থাকার অধিকার 


নাম যশের মোহে হারায় 

মা বাবা কে জড়িয়ে থাকার আব্দার  





এক মহালয়ার ভোর
আকাশলীনা ঢোল


ঘাসের আগায় দু-এক ফোঁটা
শিশিরের কণা,
আকাশের বুকে কোথাও সাদা
কোথাও বা ঈষৎ কালো মেঘ,
ঘরে ঘরে বেজে চলেছে একটানা
আগমনীর সুর-মহিষাসুরমর্দিনী।
নদীর ঘাটে ঘাটে ভিড়, তর্পণ চলছে-
তেমনই কোনও ঘাটের এক কোণে
দাঁড়িয়ে, ছোট্ট একটা ছেলে,
সদ্য ঝরে যাওয়া শিউলি ফুলটার মতোই
সেও পিতৃ-মাতৃহীন।
পুজোর আনন্দ তো দূরে থাক,
তর্পণের সাধ্যটুকুও তার নেই-
চোখ জলে ঝাপসা হওয়ায় সে
দেখছে না কিছুই,
তাকেও দেখছে না কেউই।
দেখছে কেবল অন্তরীক্ষে থাকা একজন,
যাঁর আগমন-বার্তায় মুখরিত এই পৃথিবী-
সেই মহামায়ার দুচোখ বেয়ে
দু-এক ফোঁটা জলের ধারা বুঝি
নেমে এল বৃষ্টি কণা হয়ে-
স্পর্শ করল সেই অনাথ শিশুটির
মাথার কালো চুল, যেন পরমেশ্বরীর চুম্বন-
এক মহালয়ার ভোর হাত বাড়িয়ে দিল
আরও এক মহালয়ার ভোরের দিকে।



আমার দুর্গা আজ অসহায়
বটু কৃষ্ণ হালদার

তোমার দুর্গা, বিশ্রাম নেয় সোনা বাঁধানো খাটে
আমার দুর্গা ফিরছে বাড়ি,রক্ত পায়ে হেঁটে।
তোমার দুর্গা পাত পেড়ে খায়, সরু চালের ভাত
আমার দুর্গা ক্লান্ত হয়ে,রাস্তায় কুপোকাত।
তোমার দুর্গা বায়না ধরে, হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন
আমার দুর্গা ঘরে ফিরে,কোয়ারেন্টাইন হোম।
তোমার দুর্গার নতুন জামায়,সেজেছে পরিপাটি
আমার দুর্গা ভিক্ষা করে,হাতে ভাঙ্গা বাটি।
তোমার দুর্গা এসিতে থাকে, স্বপ্নে পূর্ণিমার চাঁদ
আমার দুর্গার বাড়ির পাশে,ভেঙেছে নদীর বাঁধ।
তোমার দুর্গার চলার পথে,পিছু নেয় সারা পাড়া
আমার দুর্গা বিনা দোষ, সংসারের লক্ষ্মীছাড়া।
তোমার দুর্গার ছাতনা তলায় বাজে সানাই বাঁশি
আমার দুর্গা পণ প্রথায়, দুই বেলা হয় ফাঁসি।
তোমার দুর্গার সুখ স্বপনে, বছর ভর পৌষ মাস
আমার দুর্গার আশ্বিনেতে, নিদারুণ সর্বনাশ।
তোমার দুর্গা না চাইতে ই, রয়েছে দুধে-ভাতে
আমার দুর্গা জীবনযুদ্ধে,মরছে অপঘাতে।
তোমার দুর্গা প্লেনে চড়ে,মাটিতে পড়ে না পা
আমার দুর্গা রাস্তাঘাটে,হারিয়েছে তার মা।




মাতৃচরণ 
 সার্বজনীন মাটি 

সবার উপরে মা'ই সত্য
   তার উপরে নাই,
মা বিহিন তোর কর্ম ধর্ম
   পুড়ে হবেই ছাই!

ত্রিভুবনে তরু ফুল পাখি
  যা কিছু যত দেখি-
মা'ই মোদের দর্শন স্রষ্টা
   মা বিনে সব মেকি!

বল্ ত বাছা- শ্রেষ্ঠ উস্তাদ-
   জগতে মোদের কে?
সর্ব আগে খাওয়া, চাওয়া,
    পাওয়া শেখালো যে!

মা জননীর প্রেম প্রণয়ে
   ভক্তি না রেখে হৃদে,
স্রষ্টাকে আর পাবি কি ভাই
     মন্দির মসজিদে?

মা সন্তানে আয় গড়ি ভাই
      মধুর স্বর্গভূমি,
ফণির ললাট রেখে আগে
      মাতৃচরণ চুমি!




মায়ের ছবি
সৈকত দাম

বুকের পাটার ওপর 
ঝরে পরে বৈদেশিক মুদ্রা কতো শত ....
যেন আমার গ্রামের বাড়িতে বৃষ্টি হচ্ছে অবিরত ....
Perhaps I defeat the Rain ....
সেই বৃষ্টিকে হারিয়ে দিয়েছি গতো কয়েক শ্রাবণে ...
শুধু একটা নরম মুখের ছবি উঠে আসে বারবার ....
আর এখন হেঁটে যাই বরফের ওপর দিয়ে ....
পায়ে অনুভূত হয় সেই শিশিরের ভেজা ভাব ....
যেন আঁলের ওপর দিয়ে হেঁটে যাই খুব ভোরে ....
যেন চির স্নিগ্ধতা গ্রাস করছে ধীরে ধীরে .....
বিমান পথের মতো অদৃশ্য পথ এক 
হেঁটেই চলেছি কবে থেকে .....
কেউ খেতে বলেনি ......
সে পথের শেষে দাড়িয়ে নেই কেউ ,
শুধু আমি দাড়িয়ে রয়েছি গাড়িটা ঢেকে দেবো বলে ,
যে কটা ধান কাটতে পেরেছি শেষ মরসুমে ,
তাই ঢাকতে হবে, ঢেকে রাখতে হবে ......
This takes me somewhere else ,
Where I haven't gone ....
যোগমায়ার মায়া ভরা পথ ......
চলতে চলতে অদ্ভুত মাদকতায় ,
বুক পকেট হাতড়ে বেড়িয়ে আসে 
সেই নরম মুখের ছবি .......
মায়ের ছবি ........
এক মুঠো ধান, বৃষ্টি আর মায়ের মুখের ছবি ......




বৃত্তি
দেবর্ষি সরকার

সে অনেকটা রঙ্গিন,
স্তব্ধ ভালোবাসার চেয়ে বহুগুণ বেশি।
 জরাজীর্ণ কাঁচের ফলকের প্রেম,
নদী সমান শূন্যতা তার বক্ষে।
নিকোটিনের কালো ধোঁয়ায় তার প্রতিবিম্ব,
মনের গভীর আস্তাকুঁড় ভেদ করে,
কেবল একটা সীমাহীন উল্লাসের আনন্দে।
এই শরতেও শরীরে বসন্তের ছোঁয়া,
তবে সে বসন্ত ছাই মাখা।
বেলকনির একধারে রাখা সেই রডোডেনড্রন,
সেই চারাগাছটি বাস্তবের আয়না,
হাতটা আজ কফিনের চাপে বড় ক্লান্ত।
শিরা-উপশিরায় না পাওয়ার বেদনা,
সেই ধাঁধা ভেসে বেড়ায় তিস্তার জলে,
চাঁদের গায়ের মেঘগুলো কেবল চাঁদকে ধরে।
একটা বিষপাত্র ছিল আমার,
সেটা এখন মাটিতে মিশে গেছে।
রাতগুলি অমোঘ নেশায় কাটে,
নুইয়ে পরা রডোডেনড্রন গাছের ডালে বিষের গন্ধ,
চারিদিকে কেমন জানি হিংসার রোদ,
আমার বাসা নেই।




প্রশ্ন চিহ্ন-১
সারণ ভাদুড়ী 


আশাহীন হয়ে ,আবার আশাকাঙ্খী আমি
নিজের অস্তিত্ব নিয়েও জেগেছে প্রশ্ন চিহ্ন।
মান -মর্যাদা বিকিয়ে কি বাঁচা সম্ভব ?
সম্বল বলতে কেবল নিজের অস্তিত্ব
সেটাও কি হারাবো আমি?
নিজের প্রতিবিম্বও আজ অস্পষ্ট
তবে কি মুছে যাব আমি?
প্রশ্নবাণ মোকাবেলা করার মত সামর্থ্য আমার নেই,
উত্তরও নেই দেওয়ার।
এই অন্ধকারে কোন আলোর আশা,
 খুঁজতে আমি অক্ষম.......
আমি ক্লান্ত।
তবে অস্তিত্ব হারিয়ে বাঁচার চেয়ে,
ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নেওয়া
কী শ্রেয় নয় ?



মায়াবৃক্ষ
ম্যাসিভ  প্রধান

সেই যে বটবৃক্ষের তলে, 
পিপড়ে বেধেছে বাসা। 
সূখের পাখি নীড় বেধেছে, 
বুকে নিয়ে কত আসা। 
বট বৃক্ষের ফল গুলি খেয়ে, 
কত হয় ক্ষুদা নিবারন, 
গ্রীষ্ম তাপে সেই বৃক্ষের
মায়া ভরা ওই আবরন। 
বটবৃক্ষের সেই শাখা ধরে 
কত দিয়েছি পুকুরে ঝাপ। 
কত যুগ ধরে রয়েছে দাড়িয়ে, 
তার অঙ্গে দেখি তার ছাপ। 



কেউ বলেনা কথা

সোমনাথ সাহা 

"The truth is cruel but it can be loved, and it makes free those who have loved it."
                                          রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নক্ষত্রের রুপালী আগুন ভরা রাতে কারা যেনো আমার গতি থমকে দিলো!
সন্তর্পনে তর্জনী তুললো আমার দিকে--
হ্যা হ্যা আপনি এই দিকে আসুন,
হাত তুলে দাঁড়ান, কি কি আছে বার করুন
জামা খুলুন-পকেট খুলুন-শরীর-মন সব খুলে রেখে দিন মাটির বুকে।
কি হলো বার করুণ!
শত শত বছরের নারীদের যন্ত্রণা বার করুন,
শত শত যুবকের বেকারত্বের বেদনা বার করুন,
কত শত কৃষকের আত্মঘাতীর কথা বার করুন,
একি!  চুপ কেনো ?
আপনার সকল মৌনতা ঠিক যেন সন্ত্রাসের খুব কাছা কাছি বলে মনে হচ্ছে।
মৌনতাকে দাঁড় করাণ, প্রশ্ন করুণ-
সকল ব্যর্থ পুরুষেরা মনে মনে বীর্য ফেলে কেনো ?
অগ্নিকুন্ড থেকে কারা এসে আমাদের পুড়িয়ে দিচ্ছে ?
জবাব দিন ! উত্তর কে কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন ?
স্পষ্ট ভাবে বার করুন!
গোপনে থাকা অশ্রুজলে আর কত হারাবে  স্বতন্ত্র মানুষের স্বত্ত্বা ?
তার পর হঠাৎ করেই জেগে উঠলো আদিম দেবতার মতোন বঙ্কিম পরিহাসে মৃত সূর্যের শিখা !
তুমি কে ?কে তুমি ?!
মানুষ নও?!
হ্যা হ্যা আমি মানুষ নই!
আমি অনাহার- আমি বেকার- আমি ভয়- আমি অভিশাপ।



নাটক 

দূর্গা
রীতা মোদক

(দুর্গার এক ভক্ত সাধিকা শিউলী ফুল ছড়িয়ে পথ তৈরী করতে করতে মঞ্চে উঠে এলো । তারপর আসনে অনেকগুলি ফুল ছড়িয়ে ধুপ প্রদীপ সহ আরতি দিল । শঙ্খ বাজলো । এমন সময় আর এক ভক্ত কাকিমা  মঞ্চে উঠে এলো । )

কাকিমা :  কিরে মা , এসব কি করছিস ? শিউলী ফুলগুলো ভাবে ফেলে দিলি ? এখন পুজো কি করে হবে ? 
সাধিকা :  কাকিমা  তুমি কখন এলে ? আমি তো শিউলী ফুলগুলো ইচ্ছে করেই ফেলেছি । দেখো না কি সুন্দর পথ তৈরী হয়ছে । এই পথ দিয়েই তো মা দূর্গা আসবেন । 
ঠাকুমার :  এই পথে দূর্গা আসবে ? তুই হাসালি আমায় । 
সাধিকা :  হ্যা কাকিমা  এই পথেই দূর্গা আসবে । চার দিকে দেখছো না কত অশান্তি ছড়িয়ে আছে । কোথা ও  বোমা পরছে ,কোথাও বা অবলা নারী ধর্ষিত হচ্ছে , চারদিকে শুধুই মারামারি , হানাহানি । এতো অসুরের আক্রমণে মায়ের আসার  পথ ঘাট সব ক্ষত বিক্ষোত হয়ে গেছে । তাইতো মায়ের আসার পথ তৈরী করে দিলাম । 
কাকিমা :  তুই বেঁচে থাক মা । তোর মন্দিরে দূর্গা আসবেই । জয়  মা দূর্গা তুমি অসুরের হাত থেকে আমাদের বাঁচাও । 
( দৃশ্য ২)
                        ( দূর্গা শিবের পাশে বসে আছে ।  নন্দী ভিঙ্গি  হাত জোর করে দাঁড়িয়ে আছে )

শিব :  দেবী , এবার আর  তোমার আর মর্তে  যাওয়া হবে না । চারদিকে এতো মারামারি হানাহানি হচ্ছে যে , এবছর অনেক জায়গায় তোমার পুজো হবে না । 
দূর্গা :   আমার পুজো হবে না এটা কি সম্ভব ? দেখো মর্তে কত কাশ ফুটেছে , গাছে গাছে শিউলী ফুলে ভরে গেছে । আমার পুজো না হলে কাশ ফুলেরা ধুলোয় লুটিয়ে কাঁদবে যে , শিউলী গাছের ফুল ফোটা ই  বৃথা হয়ে যাবে । 
শিব :   ওই দেখো তোমার এক ভক্ত তোমার যাবার পথ তৈরী করছে । 
দূর্গা :  তুমি যে শুধুই সাধিকাকেই দেখছো । ভালো করে দেখো কত রমণী অত্যাচারের ভয়ে কাতর হয়ে আমাকে ডাকছে । আমাকে তো যেতেই হবে । 



(  দৃশ্য ৩)
(মঞ্চে অনেক নারী দূর্গার জন্য প্রার্থনা করছে , ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েরা দুর্গার আগমণী গান করছে --- পুজোর গন্ধ এসেছে )
                                
(দৃশ্য ৪)
                                (মঞ্চে শিব শুয়ে আছে । দূর্গা লক্ষী সরস্বতীকে যুদ্ধ বিদ্যা শেখাচ্ছেন )

শিব :  দেবী তুমি মেয়েদের সাথে মারামারি করছো কেনো ? ওরা কি কোনো অন্যায় করেছে ?
দূর্গা :  না স্বামী, মেয়েরা কোনো অন্যায় করেনি । আমি  তাদের যুদ্ধ বিদ্যা শেখাচ্ছি । প্রতিবার অসুরদের সাথে আমি  একা একা লড়াই করতে করতে হাঁপিয়ে যাই । এবার যে অসুরের সংখা বেড়ে গেছে । ছেলে মেয়েরা যদি আমাকে সঙ্গ দেয় তাহলে আমরা একসাথে অনেক অসুরদের দমন করতে পারব ।
 
(দৃশ্য ৫)
                                          ( কয়েক জন অসুর দুর্গার আরাধনা করছে )

অসুর :  মা দূর্গা এবার আমরা ও তোমার পূজা করবো । তুমি মর্ত্যভূমিতে আসো । আমাদের আরো শক্তি দাও । সব কিছু ভেঙে চুরমার করে আমরা  স্বর্গের সিংহাসনে বসব । কি সুন্দর সিংহাসন ! তোমার মেয়ে দুটো কি সুন্দর ! হাঃ হাঃ হা ঃ  আমি তদের  বিয়ে করবো । 

(দৃশ্য ৬)
শিব:  দেবী , দেখো দেখো অসুরেরা তোমার প্রার্থণা করছে । এ যে সর্বনাশের ইঙ্গিত । এবার কি করবে । তাদের আশা পূরণ করলে যে মহাবিপদ হয়ে যাবে ! 
দূর্গা : স্বামী , আপনি এতো চিন্তিত হচ্ছেন কেন ? আমি  দেখছি কি করা যায় ...


(দৃশ্য ৭)
                             (দূর্গা সরস্বতীর কাছে যায় , সরস্বতী এক মনে বীনা বাজাচ্ছে )
দূর্গা :  সরো কি করছিস মা ? 
সরস্বতী :  মা তুমি ? কখন এলে ? 
দূর্গা :   এইতো এখন । জানিস মা অসুরেরা এবার আমার প্রার্থণা করছে । তাদের আশা পূরণ করলে যে সবকিছু ধ্বংশ হয়ে যাবে , আমার খুব চিন্তা হচ্ছে ...
সরস্বতী :  তুমি অনুমতি দিলে আমি অসুরদের বুদ্ধি নাশ করে দিতে পারি । তোমার সামনে এলেই এদের বুদ্ধি নষ্ট হয়ে যাবে । 
দূর্গা :  তবে তাই হোক । আমি নিশ্চিন্ত হলাম । 
(দৃশ্য ৮)
( মর্তভূমিতে দূর্গা স্বপরিবারে এসেছেন । নারীরা উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি দিছেন  এমন সময় ভিড় ঠেলে কয়েকজন অসুর উঠে এলো )
     নারীরা : বাঁচাও , বাঁচাও , মাগো -- অসুরের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো । 
  দূর্গা :   (অসুরদের উদ্দেশ্য ) বাছারা কি হয়েছে ?  তোমরা কি চাও ? (সরস্বতী বুদ্ধি নষ্ট করে দেয় )
অসুর :    মাগো , বড় বিপদে পরে তোমার কাছে এসেছি , সারাক্ষণ অত্যাচার করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি । সাধারণ মানুষেরা আমাদের অত্যাচারে ঘুমোতে পরছে না । পথ ঘাট এতো রক্তাক্ত করেছি , জায়গায় জায়গায় বোমা ফেলে ফেলে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি । রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে পারছি না । 
দূর্গা :   তাহলে তোমরা আমার কাছে কি চাও ? 
অসুর :   মা ,  আমরা ঘুমোতে চাই ,  এমন বর দাও অনেক দিন যেন ঘুমিয়ে থাকতে পারি । 
দূর্গা :   তথাস্তু । তোমরা ছয়মাস ঘুমাবে , একদিন জাগবে । 
অসুর :   না না মা ,  ভুল বলেছি , আমরা এই বর চাই না । 
দূর্গা :   এটা তো ফেরানো যাবে না , আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে । 
অসুর : কি ব্যপার আমার ঘুম পাচ্ছে কেনো ?( অন্য অসুর ) আমার  ও ঘুম পাচ্ছে ।
( তারা ধীরে ঘুমিয়ে পড়লো )
(দৃশ্য ৯)
( ঢাক ঢোল বাজছে , উলুধ্বনি হচ্ছে ,  অসুর দের উপরে ভক্তেরা আনন্দে নাচছে ।কিছু  ভক্তের শিউলী ফুল ছিটিয়ে সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে মায়ের আরাধনা করছে ।  আর সেই ফুল ছড়ানো পথ দিয়ে মা এসে  ভক্তদের  আশীর্বাদ করছেন এবং সকলে চিৎকার করে বলছেন --- দূর্গা মাইকি – জয়,
বল দূর্গা মাইকি – জয়। ) 



ছবি 

তানভি দাম


























শৌভিক কার্য্যী  
























মুজনাই অনলাইন পূজা সংখ্যা ১৪২৯

No comments:

Post a Comment