"আপনারা ভাগ্যবান, আপনারা আকাশের তারা দেখতে পান, আমরা বহুদিন হতে চলল দিল্লির আকাশে তারা দেখতে পাই না।" নতুন দিল্লির আই টি ও তে কর্মরত, যমুনা বিহারের বাসিন্দা শ্রীমতী মুখার্জি খুব আক্ষেপের সাথে কথাগুলো বলেছিলেন। সালটা ২০০৪, উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় একটা সাহিত্য বাসর বসেছে। সেই সাহিত্য অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি বন্ধুর বাড়ির ছাদে এমনই একটা আলোচনা উস্কে দিলেন ডঃ শিউলি মুখার্জি কারণ সেই দিনটা ছিল ২২ শে এপ্রিল। (World Earth Day) গোটা সাহিত্য সভাটাই পরিবর্তিত হ'ল বিজ্ঞান মঞ্চের সচেতনতা মূলক সেমিনারে।
তিনি বললেন, "দিল্লির ITO এলাকায় প্রদূষনের মাত্রা সর্বাধিক। অটো পলিউশনের জন্য মাঝে মাঝেই মুখে চোখে জলের ঝাপটা দিতে হয়। বেশির ভাগ মানুষই বিশেষ করে বাইক আরোহীরা মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন। দিল্লি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে DTC বাস ডিজেলের পরিবর্তে CNG তে চালানো হবে। "
আমরা সচেতনতা শিবির ছাড়াও পথে ঘাটে বৃক্ষরোপন এর পক্ষে এবং অরণ্য বিনাশ বা বৃক্ষছেদনের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনি। বিভিন্ন সামাজিক সংস্থাগুলো ও এই বিষয় নিয়ে কাজ করে চলছে। মুখে বললেও আমরা আজও প্লাস্টিকের ব্যবহার করে চলেছি। যার ভবিষ্যত পরিনতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
সাম্প্রতিক কালে পৃথিবী একটা সাংঘাতিক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বন্যা, খরা ও ভুমিকম্পের মতো ঘটনাগুলোর পূর্বাভাসের সাথে কোন মিল পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ একটা ভৌগলিক এলাকায় আবহাওয়ার তারতম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়ার এই রকমফের এর মূল কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন। বেশ কিচ্ছু জায়গায় বাইকের তেলের ট্যাংক এ উষ্ণতার কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ জন্য এখন থেকে যে কোন গাড়ির পেট্রোল ট্যাংক পুরোপুরি ভর্তি না করবার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। যারা বাইক ব্যবহার করেন তাদের দিনের মধ্যে একবার তাদের তেলের ট্যাংক খুলে গ্যাস বের করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ মহল।
এয়ার কন্ডিশনারের এবং রান্নার গ্যাস এর ব্যবহার কম করবার কথাও সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী দের মধ্যে সচেতনতার প্রসার ঘটাতে World Earth Day তে এক পক্ষকাল সচেতনতা শিবির, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, পোস্টার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত করা বিশেষ প্রয়োজন।
কবিতার এই অভিনব আসরে উপস্থিত সবাই পরিবেশ বাঁচাতে গাছ লাগানোর ওপর নিজ নিজ মতামত ব্যাক্ত করলেন। পরিশেষে সকলে এক সাথে সমাপ্তি সংগীত পরিবেশন করলেন, " এই পৃথিবীর থেকে ওই আকাশ বড়ো, আকাশের চেয়ে বড়ো সূর্য তারা, সূর্যের চেয়ে আরও অনেক বড়ো, শাশ্বত মানুষের স্রোতের ধারা, সেই মানুষের গান মোরা গাই, মোরা জীবনের গান গেয়ে যাই।"
আগামী
বিশ্ব বসুন্ধরা দিবসে গাছ লাগিয়ে পরিবেশকে সতেজ করে তুলতে হবে
বটু কৃষ্ণ হালদার
অক্সিজেন এই মুহূর্তে কতটা জরুরি তা বুঝিয়ে দিয়ে গেল অতিমারি করোনা। সুষ্ঠু সামাজিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে সবুজ সতেজ বন ময় একমাত্র বিকল্প। এই গাছ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদেরকে প্রাণদায়ী অক্সিজেন দেয় এবং দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে শোষণ করে। এই ভাষা টুকু সমাজে বাচ্চা থেকে বয়স্ক বোধহয় সবাই জানে। তবুও সভ্যতার শ্রেষ্ঠ মানব সভ্যতার দ্বারা জঙ্গল কেটে চোরাপথে কাঠ বিক্রির ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠেছে।গাছ মারো। দামের লোভে। ঝরুক সবুজ রক্ত। শেষ হয়ে যাক অক্সিজেন। পরোয়া নেই। বহরমপুর শহরে তাই তো হচ্ছে! ইতিহাসের শহর। নবাবিয়ানা, ঐতিহ্য। প্রাচীন, অতি প্রাচীন গাছের আর ঠাঁই নেই সেখানে। খুল্লমখুল্লা চলছে এই খুনোখুনি। কী দোষ? জীবন দেওয়া? প্রাণভরে অক্সিজেনের যোগান যুগিয়ে যাওয়া? সভ্যতার আদালতে এর শাস্তি হবে না, হয় নাকি! ধীরে ধীরে মৃত্যু। স্লো পয়জন। এটাই নাকি এদের ভবিতব্য!ঐতিহ্যময়, সবুজ স্কোয়ার ফিল্ড গ্রাউন্ডেও তাই যেন ধূসর ছায়া।এসবই ঘটনা ঘটছে প্রশাসনের চোখের সামনে। প্রশাসন হাতগুটিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। কারণ চোরাকারবারীদের থেকে একটা অংশ তাদের পকেটে ও তো আসে।তবে সবুজ সতেজ বনময় ধ্বংসের অন্যতম একটি কারণ হলো মানব সভ্যতার আধুনিকীকরণ।বিজ্ঞান কে সঙ্গী করে মানুষ যত উন্নত হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, ততোই সবুজ সতেজ বনময় ধ্বংস করে তার উপর গড়ে তুলছে কংক্রিটের ইমারত। জনগণ তার পরিবেশকে যেমনভাবে সুন্দর করে সাজাচ্ছে, উল্টোদিকে সবুজ সতেজ বনময় গুলো দাঁত খিঁচিয়ে হাসছে। মানব সভ্যতা যতই এগিয়ে চলেছে,সবুজ সতেজ পরিবেশ তাতে উলঙ্গ হচ্ছে। ধীরে ধীরে পরিবেশে অক্সিজেন কমছে, আর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পাল্লা ভারী হচ্ছে। অগ্রগতির নামে আমরা ধীরে ধীরে ইতিমধ্যেই ধ্বংসের মুখে পৌঁছে গেছি তা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এর সুদুরপ্রসারি ফলাফল হল মানুষকে প্রাকৃতিক অক্সিজেন ছাড়াই, কৃত্তিম অক্সিজেনের উপর নির্ভর হতে হচ্ছে।এছাড়া সুন্দরবনের জঙ্গল ধস নেমে নদীর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে।এর কারণ হলো চুরি করে গাছ কাটা,আর নদীর গর্ভ থেকে বালি চুরি করে নদীর মোহনাকে শূন্য করে দেওয়া।তবে সবথেকে ভয়ঙ্কর খবর হলো গতবছর পরিবেশে সবথেকে বেশি অক্সিজেন সরবরাহ দাতা অ্যামাজন ও অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।এবার জ্বলছে সুন্দরবন। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মিজোরামের বন জঙ্গল। বিধ্বংসী দাবানল এর লকলকে শিখায় বহু বন্যপ্রাণী মারা গিয়েছে।পাখি পক্ষ থেকে শুরু করে বহু জীবজন্তু বর্তমানে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। এই জঙ্গলের সঙ্গে পতঙ্গদের সঙ্গে নাড়ির সম্পর্ক। একটা সময় ছিল পৃথিবীতে শুধুই গাছ ছিল কিন্তু সেই গাছে কোন ফুল ছিল না। এরপর যখন প্রকৃতির টানে গাছপালার শাখা-প্রশাখায় রং-বেরংয়ের ফুলে ভরে উঠলো, তাদের সঙ্গে পতঙ্গদের খুব ভাব হলো। এই সমস্ত উড়ন্ত কীটপতঙ্গ রা ফুলের রেণু হাতে পায়ে মেখে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করল। এর বিনিময়ে ওরা পেল মিষ্টি মধু।তাই জঙ্গল পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশে যে শূন্যতার সৃষ্টি হল, তা পূরণ করব কি করে আমরা? এতে নষ্ট হতে পারে পরিবেশের ভারসাম্য।সব জেনে প্রশাসন গাছ চুরি ঠেকাতে পারেনি।
জীবনের সাথে এক না জানা সম্পর্কের অনুভূতি। না দেখে ও তাকে স্পর্শের অনুভূতি মধ্যে দিয়েও আত্মার পরম পাওয়া। মানব জীবনে তার অবদানের ঋণ কখনোই শোধ করার নয়। তার না থাকা র যন্ত্রণা প্রতিটি মুহূর্তে অবদান করে মানব সমাজ। বর্তমান এই অতি মারি র সময়ে তার শূন্যতায় হাহাকার চলছে।হ্যাঁ, বলছি অক্সিজেনের কথা।বাংলায় যাকে অম্লজান বলা হয়। ১৭৭৪ সাল তখন। বিজ্ঞানী পি.বায়েন তার গবেষণাপত্রে ধাতু দাহ করলে তার ভর বৃদ্ধির কারণ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। তিনি বলেন বাতাস থেকে ভারী এক অদ্ভুত পদার্থ দাহ করার সময় ধাতুর সাথে যুক্ত হয়। পারদ্ঘটিত যৌগের তাপবিযোজনের মাধ্যমে এই গ্যাসটি উৎপন্ন হয়েছিল। বায়েন নিজের অজান্তেই কাজ করলেন অক্সিজেন নিয়ে এবং দুর্ভাগ্যবশত তার কাছে অজানাই থেকে গেল নিজের আবিষ্কার। একই বছর রসায়নবিদ জোসেফ প্রিস্টলি যৌগ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ইতোমধ্যে তিনি কার্বন-ডাই অক্সাইড এর মত গ্যাস আবিষ্কার করে ফেলেছেন। প্রিস্টলি একদিন নিজের ঘরে গবেষণা করতে গিয়ে পাত্রে কিছু সালফিউরিক এসিড নিয়ে উত্তপ্ত করছিলেন। কিছুক্ষণ পর লক্ষ্য করলেন পাত্র থেকে এক ধরনের গ্যাসীয় পদার্থ বের হচ্ছে। প্রিস্টলি গ্যাসটি আলাদা পাত্রে সংরক্ষণ করলেন। পরীক্ষা করে দেখা গেল পাত্রের কাছে জলন্ত মোমবাতি নিয়ে আসলে তা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। শুধু তাই নয় তিনি পাত্রে একটি ইঁদুর ছানা আটকে পরীক্ষা করলেন। দেখলেন ছানাটির যতক্ষণে মারা যাওয়ার কথা তার চেয়ে বেশিক্ষণ সময় বেঁচে ছিল। জোসেফ প্রিস্টলি শুধু এইটুকু বুঝতে পেরেছিলেন যে এটি বাতাসের উপাদান যা দাহ করতে এবং প্রাণীর নিঃস্বাস নিতে সাহায্য করে। পরবর্তিতে তিনি প্যারিসে গিয়ে বিভিন্ন ফরাসি বিজ্ঞানীদের সাথে এ নিয়ে বিশদ গবেষণা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে বিষয়টি নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখান। তিনিই প্রথম গ্যাসটির অক্সিজেন বা অম্লজান নামকরণ করেন। কেননা তখন ধারণা ছিল এটি একটি জটিল পদার্থ। পরে গ্যাসটি নিয়ে অনেক গবেষণা করে জানা যায় ধারণাটি ভুল ছিল। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অক্সিজেন বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। তবে আজকের ব্যস্ত শহরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন বিরল বস্তু।
আবিষ্কারের পর প্রিস্ট্লে প্যারিসে গিয়ে সহ অন্যান্য ফরাসি বিজ্ঞানীদেরকে বিশদভাবে তার গবেষণার কথা বলেছিলেন। এই অংশটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রিস্ট্লের চেয়ে ল্যাভয়সিয়েই এই আবিষ্কারটির মর্ম বেশি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রিস্ট্লে একসময় মনে করতেন তার এই আবিষ্কারটি একটি জটিল পদার্থ। কিন্তু ১৭৮৬ সালে ল্যাভয়সিয়ের ধারণা দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়ে তিনি একে মৌল হিসেবে দেখতে শুরু করেন। এ হিসেবে অম্লজান আবিষ্কারের পিছনে মূল অবদান প্রিস্ট্লে এবং বায়েনের। এদের সাথে নামক আরও একজন বিজ্ঞানীর নাম সংযোজন করা যেতে পারে। শিলে ১৭৭২ সালে;_Chemical Treatise About Air and Fire নামক একটি বই লেখার কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু প্রকাশকের দোষে বইটি ১৭৭৫ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে অক্সিজেনের বর্ণনা প্রিস্ট্লে বা বায়েনের দেয়া বর্ণনার চেয়েও নিখুঁত ছিল। কিন্তু প্রকাশক দেইতে প্রকাশ করাতে তিনি অক্সিজেনের আবিষ্কারক হিসেবে নিজের নাম প্রস্তাব করতে পারেননি। কারণ প্রিস্ট্লের আবিষ্কার প্রকাশিত হয় ১৭৭৪ সালে। শিলে অম্লজান উৎপন্ন করেছিলেন অজৈব যৌগের বিয়োজনের মাধ্যমে।
"বৃক্ষ নেই, প্রাণের অস্তিত্ব নেই,বৃক্ষহীন পৃথিবী যেন প্রাণহীন মহাশ্মশান।”অফুরন্ত সৌন্দর্যের এক মধুর নিকুঞ্জ আমাদের এ পৃথিবী। এই পৃথিবীকে সবুজে-শ্যামলে ভরে দিয়েছে প্রাণপ্রদায়ী বৃক্ষরাজি। এ বিশ্বকে সুশীতল ও বাসযোগ্য করে রাখার ক্ষেত্রে বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। আবার মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্যে যেসব মৌলিক চাহিদা রয়েছে তার অধিকাংশই পূরণ করে বৃক্ষ। তাই মানবজীবনে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরীসীম।মানুষ ও প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বৃক্ষের ব্যাপক আবশ্যকতা রয়েছে। তাই বৃক্ষকে মানবজীবনের ছায়াস্বরূপ বলা হয়। বৃক্ষ আমাদের নীরব বন্ধু, সে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত কত যে উপকার করছে তা একবার ভেবে দেখলে অনুধাবন করা যায়।এই মুহূর্তে সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য বান নাগরিক হিসাবে সচেতন হওয়া দরকার।পরিবেশে অক্সিজেন শূন্যতার ঘাটতি মেটানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে হবে। স্কুল-কলেজ পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে কর্পোরেশন স্তরে সামাজিক সচেতনতা উদ্দেশ্যে বনসৃজন প্রকল্পের উদ্যোগ নিতে হবে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে গাছ লাগানোর চেষ্টাকে সফল করে তুলতে হবে। যেখানে যেখানে গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেখানেই প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে। তাদেরকে গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝাতে হবে।আর তার সঙ্গে এটা অবশ্যই বোঝাতে হবে গাছ আছে বলেই পরিবেশ বেঁচে আছে। আর পরিবেশ বেঁচে আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। গাছ কাটা নয়, একটি গাছ একটি প্রাণ এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সফল করে তুলতে হবে। আসুন জাত,ধর্ম নির্বিশেষে আমরা সবাই গাছ লাগানোর কর্মসূচিতে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি। আর তাতেই বাঁচবে, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ। নইলে আগামী দিনে মৃত্যুর হার এমনভাবে বেড়ে চলবে, মৃতদেহ সৎকর করার মানুষ জন থাকবে না।শুধু তাই নয় একদিন হয়তো মানুষকে এই পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন ও পয়সা দিয়ে কিনতে হবে।তার সঙ্গে এটাও প্রমাণিত হয়ে যাবে সবুজ সতেজ পরিবেশ ধ্বংস করার জন্য দায়ী বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানব সভ্যতা। সবুজ সতেজ পরিবেশ ধ্বংসের কর্মকান্ড, আমাদের কাছে গৌরবের নয়, অত্যন্ত লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। শুধু তাই নয় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা নিজেরাই মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে যাচ্ছি। এর সাথে সাথে এটাও প্রমাণ হয়ে যাবে আমরা নিজেরাই আমাদের কফিনের গর্ত খুঁড়ে চলেছি।সেটা ভুলে গেলে চলবে না।
১৯৭০ সালের ২২ শে এপ্রিল এই পৃথিবী কে আরো সবুজ সতেজ করে তুলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসুন্ধরা দিবস পালন শুরু করে। একটি মা হাজারো কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও নিজের গর্ভে দশ মাস দশ দিন একটা সন্তানকে লালন পালন করে সুস্থভাবে তাকে এই পৃথিবীর আগেও দেখানোর চেষ্টা করেন। ঠিক তেমনই এই বসুন্ধরা, বিশ্বের উন্মুক্ত মঞ্চ যাই বলুন না কেন যুগের পর যুগ ধরে আমাদের জীব কুল কে লালন পালন করে আসছে। তাই জন্ম দেয়নি মায়ের প্রতি যেমন আমাদের কর্তব্য রয়েছে, ঠিক তেমনি এই বসুন্ধরার কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা। এই বসুন্ধরা আমাদের সঙ্গে বেইমানি করে নি কোনদিন। সবুজ সতেজ শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত সাহায্য করে চলেছে। অথচ দেওয়া আর নেওয়া এই পদ্ধতিতে আমরা শুধু প্রকৃতির থেকে নিয়ে চলেছি। তার প্রতি কোন দায় দায়িত্ব আমরা পালন করি না। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় কুলাঙ্গার সন্তানদের তারা গর্ভধারিনী হাজারো মা যেমন প্রতিনিয়ত চোখের জল ফেলছে, ঠিক তেমনি ধরিত্রীর বুকে আমরা ছুরি চালিয়ে যাচ্ছি। এভাবেই একদিন প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে করতেই নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাবে সেটা মাথায় রাখতে হবে।এই সবুজ সতেজ প্রকৃতির না থাকলে আমরা কেউ বাঁচবো না। এই ধ্রুব সত্য জানার পরেও আমরা কিভাবে এত উদাসীন হয়ে পড়েছি তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। এই মুহূর্তে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হলো মানব, সেই মানব সভ্যতার দ্বারা প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের নীল নকশা তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে আমাদের ছোট্ট ভুল, ভবিষ্যতে সন্তানদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যেতে পারে। তাই সময় থাকতে থাকতে আমাদের সজাগ হতে হবে। বসুন্ধরা কি পুনরায় গাছ লাগিয়ে সবুজ সতেজ করে তুলতে হবে।এ দায়িত্ব শুধুমাত্র আমাদের, এড়িয়ে গেলে চলবেনা।
প্রার্থনা
পৃথিবী তোমাকে
চিত্রা পাল
পৃথিবী আজ একান্তভাবে তোমার জন্য এই লেখা।
প্রথমেই আমার একটা প্রশ্ন, তুমি আমাদের এত অবিবেচনা সহ্য কর কেমন করে? এই
সৌরপরিবারের একমাত্র সবুজ গ্রহ যার কোন তুলনা নেই। আর সব গ্রহের এক এক জনের এক এক
রকমের সমস্যা। তোমারও যে সমস্যা ছিলোনা বা
নেই তা নয়। সে সব অতিক্রম করে তুমি
সম্পূর্ণা। তবে সে সম্পূর্ণতা একদিনে আসেনি, কোটি কোটি বছরের অপেক্ষা ধীরতার পরে
কত লক্ষ বছর কালক্ষেপের পরে এই সৌরমন্ডলে
প্রথম তুমি জাগালে প্রাণের স্পন্দন।সে প্রাণপ্রবাহের শেষ অভিব্যক্তি মানুষ।তাকে
তুমি রাখলে বনচ্ছায়ার আচ্ছাদনে, পুণ্যতোয়া নদীনির্ঝরের সঙ্গ দানে। তারপরে ধীরে
ধীরে বহু পথ অতিক্রম করে মানুষ আজ পৌঁছেচে এখানে, মানে শেষ সীমা কিনা জানিনা, তবে
এই সীমায়।এই সীমায় এসে সে যে এমনতর রূপ ধারন করতে পারে তা তুমি কল্পনাও করতে
পারোনি। তুমি দেখেছো মানুষের কত সুদূর প্রসারী কল্পনা বিজ্ঞানের হাত ধরে বাস্তবে
রূপ নিচ্ছে।ওরা পাহাড় ভাঙ্গছে,নদীর চলার পথ পরিবর্তন করছে, সাগরে দ্বীপ বানাচ্ছে
এসব কত কি। আসলে নতুনের পথে চলতে গিয়ে যে উলটে তোমাকেই শেষ করে দিতে চাইছে সে দিকে হুঁশ নেই। যে সবুজ পৃথিবী প্রাণ দায়ী
ছিলো সে ক্রমশঃ সবুজ হারিয়ে প্রাণ হরণকারী হয়ে উঠেছে।প্রাণের জয়বার্তা ক্রমশঃ
চলেছে প্রাণহানির দিকে। পৃথিবী দিবসে আমাদের এই হোক অঙ্গীকার, পৃথিবীতে।আবার হোক শ্যামলের
আসন পাতা, বন্যেরা বনে থাকুক নির্ভয়ে, জলে থাকুক জলচর, মানুষ হোক সব প্রাণীকুলের
মঙ্গলাকাঙ্খী।পৃথিবী তুমি আবার হও
জীবপালিনী, প্রাণদায়িনী।
কর্তব্য
সবুজ প্রতিভা
অলকানন্দা দে
“..এই পৃথিবীর বিরাট খাতায় পাঠ্য যে-সব পাতায় পাতায়, শিখছি সে-সব কৌতূহলে সন্দেহ নাই মাত্র॥”
পৃথিবীকে পাঠ্য করার অভিপ্রায় নেভে না কখনো! যত্ন করে সাজিয়ে রাখা ধ্রুব যা কিছু তার প্রতি ন্যস্ত ভালোবাসা ডেকে যায় অহরহ। আর তখনই এক সামুদ্রিক দোলা লাগে বুকে! এই ধুলো এই মাটি বায়ু আকাশ স্থল জল পাহাড় সাগরের বিশ্বজোড়া সাম্রাজ্যের পর্যটন বন্ধ রাখা মানে তো মৃত্যু কে বেছে নেওয়া। প্রকৃতি মানুষের প্রেমের আঙিনায় দাঁড়িয়ে একে অপরের কথা শোনা, এই দীর্ঘ আলাপন, এরই নাম তো অনিঃশেষ ভালোবাসা! কোন আক্ষরিক শব্দে ধরা যায় না এই অভিব্যক্তিকে! তাকে শুধু অনুভব করা যায় স্নায়ুর কৌশলে! প্রকৃতিপ্রেমী হলে এরকমই হয়! যা যা ছবি ভাসে দু-চোখের আয়নায় সবই মনে হয় লিখে রাখি আন্তরিক খাতার পাতায়! প্রাকৃতিক অভিমানে দাঁড়িয়ে নিজেকে দুঃখহীন মনে হয়, মনে করি আমি নিষ্পাপ! তবেই তো প্রসন্ন হবার মন্ত্র শিখিয়েছে সে আমাকে! সমস্ত মন জুড়ে হাজার শিল্পী চঞ্চল হয় আঁকবে লিখবে গাইবে নাকি ধারাভাষ্য দেবে পরিমণ্ডলের। কল্পনার মতো বাস্তব যখন চোখের বিপরীতে দাঁড়ায় তখন সুখের থেকে সুখ নির্গত হয়! নিজস্ব ইচ্ছের মুখোমুখি হলে দলবদ্ধ উল্লাসের আবির্ভাব হওয়ার অর্থ প্রত্যাশার অমৃতপান! তার ঐতিহ্যের কীর্তন করা তখন অভ্যাসে দাঁড়ায়। মন তার পাপড়ি মেলে আহ্লাদে ওড়ে! ভালোবেসেছি তাই! ছুটে গেছি তার গালভরা খলখলে হাসির হীরক কুড়িয়ে নিতে কতশতবার!
আমি পরিবেশচারী! ঝাঁপ দিয়েছি তার অতলে! আমি স্বপ্নে দেখি, আমি বাস্তবে দেখি, আমি লিখি, আমি পড়ি, সবুজের সফলতার গল্প! ঠোঁট বেয়ে নামে শুধু তারই কথা! দুঃখের প্রতিষেধক বলে যদি কিছু থাকে তো সে আছে প্রাকৃতিক পাড়ায়! প্রাণের পরে নুয়ে থাকে যার সরলতাখানি! দিগ্বিদিকে ছড়িয়ে থাকা ভালোবাসার রঙিন রোদ্দুরে বাঁচাকেই নিশ্চিত বাঁচা বলে মনে করি। প্রকৃতির সাথে মেলামেশা সবসময়তেই অর্থপূর্ণ। তার রক্ষণাবেক্ষণ অন্যতম জাগতিক কাজ। নিজের ছায়ার চেয়ে বেশি প্রত্যয় তার প্রতি! তাই তার কুশল চাই একথা বলি গঙ্গার জল ছুঁয়ে!
ভাবনা
চিরমাতৃকা
শ্রাবণী সেন
আমি মাটির মেয়ে, পৃথিবীর কন্যা
আমার ওঠা পড়া, জীবন যাপন
এই মাটিকেই ধরে!
নরম সবুজ ঘাস আমার আনন্দের গালিচা!
বর্ষার ময়ূরপাখায়, বৃষ্টি শেষের আকাশে
আমি রামধনু দেখে মন হারাই।
বৈশাখের বেলি, জুঁই, টগর আর গন্ধরাজে
সেজে আমি ঠাকুরের কাছে প্রণত হই।
শ্রাবণের মেঘে দেখে আর রজনীগন্ধা ফুলের সৌরভে আমার চোখে জল আসে।
ফাল্গুনের অশোক আর পলাশফুল
আমার আবীরগুলাল!
শরতের শিউলিতলায় ছেলেবেলা খুঁজে পাই
হেমন্তের ফসল তোলা সারা হলে
নবান্নের পার্বণ করি,
দীপালি রাতে তোমায় সাজাই মা বসুধা...
তুমি ধরিত্রী, তুমি বসুন্ধরা,
তুমি সর্বংসহা
তোমায় প্রণাম করি,
তুমি চিরমাতৃকা,
চিরজননী !
পৃথিবী এখন
মাথুর দাস
বাড়ছে তাপ বাপ্ রে বাপ্ কী গরম আজ বিশ্ব !
মাটির জল হারায় তল শস্যভূমি শুষ্ক এবং নিঃস্ব ।
বনজঙ্গল হচ্ছে সাফ, মাফ নেই কোনও পাহাড়ের,
দঙ্গল বেঁধে লোকালয়ে পশু খাদ্যের খোঁজে আহা রে !
বর্ষাও বেশ চলে তার রেশ কষ্টও বাড়ে ঢের,
ঝড় ঝঞ্ঝায় কত প্রাণ যায় যত নষ্ট সমূহের ।
নামছে ধ্বস নেই কারো বশ পাহাড় হারায় ভারসাম্য,
ঢাকছে বরফ নানান তরফ এত বাড়াবাড়ি নয় কাম্য ।
ভাব নেই আজ আবহাওয়াতেও উপাদান নেই শুদ্ধ,
দূষণ-ভূষণ পরিবেশ জুড়ে হয় জীবনের দম রুদ্ধ ।
কেউ নেই সুখে রোগ-অসুখের দাপট পৃথিবী জুড়ে,
কবে যে মানুষ বুঝবে এ সব, কবে যে দাঁড়াবে ঘুরে ?
আকাশের গল্প
বনশ্রী মুখোপাধ্যায়
কাল ওই আকাশটার বুক থেকে ঝরে পরলো
একফোঁটা জল,
মাঠের ওই গালচেটার ওপর।
লম্বা লম্বা চোঙগুলো কাল কালো করেছিল
ওই আকাশটাকে ,
আর সাদা ইউক্যালিপটাস গুলোর ম্যাজিকে-
সাদা হলো সেই কালোটা।
সকালের সূর্য টা - যে আলো ফেলেছিল
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ,
তাতে লেগেছিল নীল রং।
উড়তে থাকা ম্যাকাওটা সেটা লাগিয়েছিল ,
আরো কোন এক
ম্যাকাও, তোতা ,মাছরাঙ্গা বা আর কারো বুকে।
তারপর সেই আলোটাও
সোনাঝুরি গাছের ফাঁক দিয়ে যখন ছড়ালো
ইউক্যালিপটাসের মাথার উপর ,
তখন দেখলাম-
এই আকাশটা হল নীল ।
রং লাগানো পাখিগুলো আরো নীল
লাগিয়ে দিল তাতে,
আর তারপর উড়লো তার বুকে -এখান থেকে
সেখানে ওখানে বা অন্য সবখানে ।
সে সময় চুপিসারে-গালচের ভেতর দিয়ে
মাটির তল দিয়ে,
ঐ জলটাই গড়াতে গড়াতে মিশে গেল
ডোবাটার মধ্যে,
পড়া - মড়া মুনিয়াটার বুকে।।
নির্ভেজাল পৃথিবী
রীতা মোদক
এস আকাশ
তোমার শরীর থেকে ভেজাল ভরা কালো মেঘ
সরিয়ে দিয়ে,
ভালোবাসার নরম চাদরে
তোমাকে মুড়িয়ে দেবো।
এসো তোমাকে নীল শাড়ি পরাই,
তোমার নীলে আর মহা সমুদ্রের নীলে
মিলে মিশে মহা নীল হয়ে যাক।
এস নদী
তোমার বুকে ঝাঁপ দিয়ে
নিজেকে পাপমুক্ত করি।
বহু বছরের সমস্ত প্লাস্টিক জাত আবর্জনা
নগরবাসীর পারিত্যাক্ত মুহু মুহু জলের বোতল
কাপ, থালা,গ্লাস তোমার জল থেকে ছেঁকে নিয়ে
তোমাকে পবিত্র করি।
এস বাতাস
তোমাকে বারুদ মুক্ত করি
তোমার শরীর থেকে বিষাক্ত নাগিনীর নিঃশ্বাস
আর কামানের বজ্র ছেকে নিয়ে,
তোমাকে নির্মল করি।
এস জন্মভূমি
তোমাকে পবিত্র করি।
তোমার বুক থেকে--
রাসায়নিক সার কীটনাশক সরিয়ে দিয়ে,
তোমার ফসলে জৈব সার ঢালি।
মুহু মুহু প্লাস্টিকের কঠিন আবর্জনা সরিয়ে
চটের থলি এবং মাটির বাসন ফিরিয়ে দিয়ে,
তোমাকে প্লাস্টিক মুক্ত করি।
যারা তোমার বুকে আগাছা রূপে লুকিয়ে থেকে
তোমাকেই বিকলাঙ্গ করতে চায়
সেসব ভেজাল উগরে ফেলে,
তোমাকে সন্ত্রাস মুক্ত করি।
তোমার বুকের নরম মাটিতে
ভালোবাসার ফসল ফলাতে,
আমি আজীবন লড়াই করে যাবো।
সৃষ্টি করবো -- এক নির্ভেজাল পৃথিবী।
তারপর চলে যাবো -- দূর.... বহু দূর...
বসুন্ধরা দিবস
সংগীতা মিশ্র
অশান্ত মেদিনীর মন
দূষিত বায়ূর দোলায়
দুলছে সর্বক্ষণ
মিষ্ট ভাবনা ভুলে গিয়ে
ক্রমশ তিক্ত ভাবনায়
অবনী যাচ্ছ জড়িয়ে
আজ বসুনধরা দিবসে
এসো সকলে মিলে
সপৎ করি
সবুজের সতেজতায়
দূষনমুকত বিশ্বভূবন গড়ি
ভূমিকান্না
কাকলি ব্যানার্জী মোদক
চৈত্রের অবসানে ফুটিফাটা হয় মাটি
দীর্ঘ, দগ্ধ ,তাপে জল ,জল চায় ভূমি ,
ছেলে-বুড়ো কদ্দুর যাবে বারি সঞ্চিতে
বারিও আজ তৃষ্ণার্ত যায়, যায় বহু দূরে।
বাষ্পেরা ফাঁকি দিয়ে খুঁজে দিঘি টলটল
মুখ বুজে পড়ে আজ আ সমুদ্র হিমাচল,
সবুজের শাবদাহ শুধু মাঠ ,ধূ ধূ মাঠ
তাই ভূমি কাঁদে আজ প্রত্যাশা বারি তার।
বহু ক্রোশ ছুটে চলে হাতে ঘড়া গাড়ুটা
মিলবে তৃষার্ত জল একফোঁটা শিশুটার
সবুজে সবুজ আনো কাটো দীঘি,
বিলটা ফুটিফাটা কম হবে মাতৃ ভূমিটার।।
ভূমি আজ কাঁদছে জল, জল চাইছে
সবুজের রূপটা নে বড়ো ফিকে আজ যে,
গরদের সাদা থানে হিমালয় সাজে বেশ
আজ যেন মনমরা রুক্ষ ,ভগ্ন বেশে।
বিশ্ব ধরিত্রী সব মুখ বুজে সহিছে
হয়তো মুখফুটে কিছু কথা বলবেই,
অগ্নি পরীক্ষায় সারা দেহ দগ্ধ।
কালের আবর্তনে আজ ভগ্নব্রম্ভান্ড ।।
প্রকাশ
অদ্রিজা বোস
মুজনাই সাপ্তাহিক বিশেষ সংখ্যা বসুন্ধরা দিবস ২০২২
No comments:
Post a Comment