Tuesday, January 7, 2020





সম্পাদকের কথা 

নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা মুজনাইয়ের সকল লেখক-কবি, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের জন্য। আগামী দিনগুলি প্রত্যাশিত সুখ ও আনন্দ নিয়ে আসবে সবার জীবনে এই আশা করি। 
বছর শেষে মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা একটি সংস্থায় পরিণত হয়ে মুজনাই সাহিত্য সংস্থা নামে স্বীকৃতি পেয়েছে। 

ইতিমধ্যে বর্ষশেষের দিন মুজনাইয়ের বার্ষিক মুদ্রিত সংখ্যা ২০১৯ প্রকাশিত হয়েছে প্রথিতযশা লেখক সম্মানীয় অধ্যাপক অমিত্রসূদন ভট্টাচার্যের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে ডঃ শেখর চক্রবর্তী, সাহিত্যিক রণজিৎ দেব, সাংবাদিক অরবিন্দ ভট্টাচার্য ও কবি অঞ্জনা দে ভৌমিকের হাত ধরে। মুজনাই সাহিত্য সংস্থার প্রথম প্রয়াস হিসেবে তরুণ কবি শুভদীপ ঘোষের একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্য চর্চা, প্রকাশনা ইত্যাদির পাশাপাশি মুজনাই আগের মতোই সেবামূলক কাজ করে যাবে। ইতিমধ্যেই জয়ন্তীর বনবস্তিতে মুজনাইয়ের তরফ থেকে একটি অবৈতনিক বিদ্যালয়কে ব্ল্যাকবোর্ড প্রদান করা হয়েছে। মুদ্রিত বার্ষিক সংখ্যা বিক্রয় করে যে অর্থ সংগ্রহ হবে তাও ব্যয় করা হবে এই জাতীয় কাজে।

সবকিছু মিলে নতুন বছরে মুজনাইয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। জানা নেই তা কতটা বাস্তবায়িত হবে। তবে স্বপ্ন তো দেখতেই হয়, তা না হলে স্বপ্নপূরণ হবে কিভাবে?


মুজনাই অনলাইন পৌষ সংখ্যা, ১৪২৬   

ঠিকানা - হসপিটাল রোড, কোচবিহার, ৭৩৬১০১
ইমেল ঠিকানা - mujnaisahityopotrika@gmail.com
গভ রেজিঃ নাম্বার- S0008775 OF 2019-2020
প্রকাশক- রীনা সাহা 
সম্পাদনা- শৌভিক রায় 

মুজনাই অনলাইন পৌষ সংখ্যা, ১৪২৬


ছবি 

মুজনাই বার্ষিক সংখ্যা প্রকাশ








জয়ন্তী বনবস্তিতে মুজনাই থেকে ব্ল্যাকবোর্ড প্রদান 





আনন্দবাজার পত্রিকার উত্তরবঙ্গ সংস্করণে প্রকাশিত মুজনাইয়ের খবর 



পর্যায়- কবিতা/ছড়া /আঁকা ছবি 



এই পর্যায়ে যাঁরা আছেন

বাণীপ্রসাদ নাগ, রীনা মজুমদার, সুব্রত নন্দী, মোহন্ত বিশ্বাস মোহন, রুনা দত্ত, মনিমা 

মজুমদার, সায়ন তরফদার, সুস্মিতা পাল কুন্ডু, সত্তাপ্রিয় বর্মন, দীপ্তিমান মোদক, প্রিয়াঙ্কা

 ভুঁইয়া, ফিরোজ হক্, প্রতিভা পাল সেন, রুপক রায়, নন্দিনী চৌধুরী, অনুভব অধিকারী,

 রথীন পার্থ মন্ডল, আসিফ আলী, ধীরাজ কুমার রায়, অনুপ কুমার সরকার, বিজয় বর্মন,

 নিত্য রঞ্জন মন্ডল, তুলোশী চক্রবর্তী, মাথুর দাস, মাম্পী রায়, মজনু মিয়া, সঞ্চিতা দাস, 

রিম্পা নাহা





সকাল
বাণী প্রসাদ নাগ  

ঘোর কুয়াশায় জবা আনমনা
গাছেতে পাখি খিদেতে বিমনা
সিঁদুরের টিপ গেছে যে মুছে
ওঠো গো জননী হয়েছি ব্যাকুল। 

ঘুমের নেশায় ক্লান্ত তনু তব
খুলে গেছে সেই অপরূপ চুল
ধুলায় লুটায় সোনার কানপাশা
করো প্রসাধন কোরো না ভুল। 

জেগেছে বসুন্ধরা ফুটেছে ফুল  
ব্যস্ত রমনী নিজ গৃহ কাজে
ঘন্টা বাজিয়ে চলেছে ধেনু পথে
চলে গেছে উড়ে ক্লান্ত বুলবুল।  

লুকায় আলোতে লক্ষ্মীর পেঁচা 
বাজছে কাঁসর বাজছে ঘন্টা 
দাও খুলে দাও বন্ধ  দুয়ার
করিনি ভুল এনেছি যে ফুল।



 মেরুদণ্ড 

রীনা মজুমদার


মেরুদণ্ড বন্ধক রাখতে
     মানুষ-ই জানে,
আমরা বড়ো বুদ্ধিমান নির্বোধ
প্রচার গুণে সত্য চেপে
 সত্য করি পেরেককে  !
শামুকের নেই সে অহংকার ।

 কেবল স্বপ্ন দেখতে আর
  আমরণ স্বপ্ন নিয়ে খেলতে,
  মোমবাতি পুড়িয়ে  
সুখের ধ্যানভঙ্গ করতে
     মানুষ-ই জানে, 

মেরুদণ্ড সোজা রাখতে
        মানুষ-ই জানে
যে স্বপ্ন উর্বরতার স্বাদ পায় না
        তা কিসের দেখাদেখি !   
 শামুকের নেই সে আত্মম্ভরিতা।

 সুখ ও দুঃখকে যে শান্তির 
     সুরে বাঁধতে পারে
       সেই তো মানুষ 
 চাই শুধু সোজা মেরুদণ্ড ..




পেটকাটি চাঁদিয়াল 
সুব্রত নন্দী 


ডিজিটাল দুনিয়ায় মিথ্যার জারিজুরি,
রঙ্গমঞ্চে নকল নকশার কারুকার্য!
নিজস্বী অবয়বে আমিত্বের ছলাকলা,
ঈশান কোণে সুপ্ত বাসনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র,
নিজের দোরে খিল দিয়ে পেটকাটি চাঁদিয়াল।
রঙিন স্বপ্নভঙ্গ উচ্চতার শিখরে পৌঁছে,
ঘুড়ির সুতো থাকবে কতক্ষণ?
অবশেষে শূন্যতা মুক্ত আকাশের নীচে।



পালক 

মহন্ত বিশ্বাস মোহন 

মরসুম শেষে ফিরে গেছে পাখি 
পড়ে আছে ফসলের ক্ষেতে তার পালক, 
তবু অনন্ত আকাশে তার আবার আসার 
অপেক্ষার ছিন্ন ছিন্ন মেঘ ভাসে ।

ধুলোর গোপনে যে ফুলের ঘুমের প্রস্তুতি এখন 
সেও ফেরে আবার, দখিনের পথ ধরে 
                                               মধু বাতাস এলে; 
আর তার সুবাসের পিছে পিছে ফিরে আসে সেও 
মরসুম শেষে ফিরে গেছে যে মধুকর ।

শুধু আমার ক্ষেত থেকে সোনালী ফসল 
উঠে যাওয়ার পর, ফিরে গেছে যে পরিযায়ী 
সে গেছে, একেবারেই গেছে! 

রেখে গেছে সময়ের ভাঁজে ভাঁজে শুধু খাপছাড়া 
গোলাপের পাপড়ির মত বইচাপা একান্ত ঠিকানা 

সে শুধু স্মৃতি ,স্মৃতি আর স্মৃতি মাখানো বেদনা ।



অভিমুখ 

রুনা দত্ত

জীবনের অভিমুখগুলো 
বারবার বদলে যায় 
যেখানে যাওয়ার কথা 
সেখানে যাওয়া হয়না 
যেখানে থামার কথা
সেখানে থামা হয় না । 

বাঁধাধরা সীমানা ছাড়িয়ে 
জীবন এগিয়ে চলে
কখনো দ্রুত লয়ে কখনো মাঝারি 
কখনো বা ঢিমে তালে
এভাবেই চেনা ছকের বাইরে 
ইতিউতি ঘোরাফেরা । 

হাজার চাইলেও নিজের মতো 
গুছিয়ে ওঠা হয়না 
তাই স্রোতের মতোই 
বদলে যাওয়া অভিমুখের টানে
ভালোবেসে বা অ-ভালোবেসেই 
হয়তো এগিয়ে যাওয়া । 




শূন্যতা

মনিমা মজুমদার 


ক্রমশ আমাদের পল্লী জুড়ে
নেমে আসে কুয়াশার স্তব্ধতা
জমা হয় বিষণ্ণ  রঙের মাটি
নগ্ন পায়ের ছাপ রেখে  যায় জন্মদাতা
সদ্যস্নাত মা  জল ঢালে উনুনে
তারপর বন্ধ হয়ে যায় ঘরের দরজা
আমাদের বাবা নেই
মা নেই
ভাত নেই
পড়ে থাকে শুধু শূন্যতা




কবিতা লিখতে না পারলে

সায়ন তরফদার


কবিতা লিখতে না পারলে
        আমি বিক্ষোভ করি
                     কলেজ স্ট্রিটের মোড়ে।
সাদা কাগজ নিয়ে হেঁটে যাই মিছিলে।

কবিতা না লিখতে পারলে
              আমি কলম ছেড়ে ঝান্ডা ধরি
স্লোগান দিই ভুল ছন্দে....

তবু না থেমে বলি- "বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক---"



সুদিনের আশা 

সুস্মিতা পাল কুন্ডু 


জানি বৃষ্টি যাবেই থেমে
ভাসবে আকাশ --
সূর্যিটা টুপ করে হাসবে আবার ,
রোদ্দুরে ভরে যাবে চারিধার
খুশী মন নিয়ে সবাই সাজাবে ঘর ;

তবুও সুদিন ফিরবে কি ,  ধন্দ সবার !

জানি কিছু লড়াই এখনো বাকি
মিথ্যা আর সত্যির মাঝে দেওয়াল তোলে
অস্থির সময় ;
কিছু লজ্জা , রাগ ...ভয় 
আঁকড়ে নিয়ে তবু বাঁচতে হয় !

জানিনা কোনটা জয় ,আর কোনটা পরাজয় !

যদিও মেনে নি সব
তুমি আর আমি মিলে এক ,
কল্পনার তুলিতে রঙ ভরিয়ে 
এঁকে দেবো ভবিষ্যৎ ;
ভালো থাকাটা যে জীবনেরই অঙ্গ ;

ভালোবেসে একবার দু'হাত বাড়িয়ে দেখ .... 
মানুষ তো মানুষেরই জন্য ... ৷৷



প্যারালাইজ 
সত্তাপ্রিয় বর্মন 

বৃষ্টিতে ভিজলে এখন বিষাদ জাগে মনে,
কাঁশ ফুলের নীরব মধ্যাহ্নেও
একটা ভেজা খড়ের নিভন্ত আগুনের ধোঁয়ার মত
কালো অন্ধকার ঘিরে রাখে আমায়
যে অন্ধকার প্রতিটি উৎসবের আলোকিত রোশনাইতেও 
গোপন প্রেমিকার মত প্রিয় আলিঙ্গনে জড়িয়ে রাখে। 
বিষাদ লাগে প্রতিটি মধ্যাহ্নের অন্ন 
হতাশা জাগে কর্মক্ষেত্রে এসে, 
বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়ি 
চোখ বুজেও দেখতে পাই 
যুদ্ধ পরবর্তী শহরের ধ্বংসাত্বক ধোঁয়া। 
বন্ধা আমার শরীর 
প্রতিবন্ধী আমি 
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কত কাজ 
কত ডায়েরির পৃষ্ঠা শূন্য মাপছে
আমি জেগে আছি যেন প্যারালাইজ্ড 
আধ খাওয়া রুটির মত। 
মৃত্যু আমাকে ডাকে না 
উৎসবের আনন্দও হাতছানি দেয় না 
আমি ফ্রেমবন্দি চৌবাচ্চার অলসতায় নির্বাসিত। 
কবিতা ছুটে আসে সামুদ্রিক সুনামির মত
কত ভালবাসা দমকা বাতাসের মত
জানালা ছুয়ে ফিরে যাচ্ছে
সবই দেখতে পাচ্ছি
চেয়ারের পায়া আর হাতলের মায়ায় আটকে গেছি যেন
সময় আমায় গিলছে
উপন্যাসের মনস্তাত্বিক শব্দ গুচ্ছের মত,
ঝর ঝর করে ঝড়ে পড়ছে মাথার ওপর সমস্ত কালো অক্ষর
সবই বুঝতে পারছি
গা ঝারা দিয়ে উঠে দাঁড়াতে পারছি না।




 এই সময়
দীপ্তিমান মোদক

চোখের জলের সাথে স্বপ্ন বেয়ে পড়ে   
বুকে বেড়ে ওঠে, আঘাতের পাহাড়.....
ভালোবাসায় মন ভালো থাকে ঠিকই,
তবে পেটের জন্য চাই, দুমুঠো হলেও আহার। 

যোগ্যতা আজ ধুলোর মতো, 
পড়ে থাকে  পথের ধারে
অঙ্ক যাদের গোছানো আছে ভালো
তারাই আজ বুক ফুলিয়ে বাঁচতে পারে।



অপসরণ
প্রিয়াঙ্কা ভুঁইয়া

কিছু সম্পর্ক ঠিক যেন অপসারী রশ্মিদের মতো,
কখনও তারা ফোকাস বিন্দুতে হয়েছিল মিলিত;
প্রয়োজন ফুরোলে গুরুত্বহীন হয়ে গেল প্রিয়জন,
ঘন মাধ্যমেতে নিজেদের মাঝে নীরব অপসরণ;
প্রিয় বন্ধু দিয়েছিল কথা যাবে না ছেড়ে কখনও,
সময়ের গতিতে আজ সেই প্রতিশ্রুতিও পুরোনো;
ফেলে আসা দিনগুলো চলাফেরা করে সীমান্তে,
সীমারেখা অতিক্রম করে দূরে সরে যায় দিনান্তে;
সম্পর্করা হেঁটে যায় পথ শুধুই অসীম, অন্তহীন,
চেনা হয়েও তো অচেনা হয়ে থাকে ওরা চিরদিন;
এগিয়ে চলার মাপকাঠিতে পিছুটান বড়ই তুচ্ছ,
ওরা পরিণত হৃদয়ের অপরিণত কিছু ধমনীগুচ্ছ।



তোমাকে নিয়ে(১)

           ফিরোজ হক্ 

প্রতিনিয়ত হাতের কাছে পেয়ে
রাগ থেকে অভিমান খসে পড়েছে।
সুর তুলেছি একতারায়
তোমার-আমার সুর।
জীবনের সুর গানের সুর
ভালোলাগার সুর ভালোবাসার সুর,
পান থেকে চুন খসলেও
তোমায় পুড়ানোর আগেই হাত কেঁপে উঠেছে
তারপর নিজেকে পুড়িয়ে ফেলতে চাইলেও
বরফ হয়ে কাজ করেছে
আমার ভিতরে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা।




কুয়াশা

প্রতিভা পাল সেন 

অস্পষ্ট চারিদিক! 
ঝাপসা আলোর নিরবতা, ক্রমে আরও নিবিড়!
সময়ের সঙ্গে বেড়ে চলে রাতের নিস্তব্ধতা ;
কুয়াশার গন্ধ মেখে এ-সময় -
সম্পৃক্ত হয় জরা-জীর্ণে;
বিবর্ণ কিছু ক্যানভাস হয়ে থাকে ধূসর, স্থবির! 
আমরা হেঁটে চলেছি সেই কুয়াশায়, 
নিমগ্ন প্রতিনিয়ত ;
অদ্ভুত, এক অদৃশ্য অজানাকে জানার আগ্রহে-
পার করে চলেছি স্তরে-স্তরে সাজানো সেই কুয়াশার প্রাচীর!!  



উলঙ্গ শিশু 

  রুপক রায়


নিজেকে টাঙিয়েছি বিজ্ঞাপনের ভিড়ে,
কত বর্ণ,কত শব্দ মুখোশহীন
অনেকে করেছে পণ্য
কেউ প্রকাশিত হয়,কেউ অপ্রকাশিত রয়
তবুও স্বপ্নেরা ছুটে বেড়ায়
তবুও না বলা কথা চাপা পড়ে
শুকনো পাতা উড়ে যায়
শুকনো কথা পথ হারায়
কত প্রেম মরে যায়
কত প্রেম আটকে যায় কন্ডোমে
সেই বদ্ধ চিত্কার মানবিক নয় !
নেশা! অ্যালকোহল নিকোটিন...
তারা! মরে যায় না খেয়ে
হিংস্র চোখ-নখ বেরিয়ে আসে
তাজা রক্তের গন্ধে
তবুও কবিতারা মিথ্যে বলে
তবুও গল্পেরা কত গল্প বলে যায়
শত তৃষ্ণার্ত চোখ ভোরে সূর্যোদয় দেখে
কত অন্ধগলির ডাস্টবিনে উলঙ্গ শিশু কাঁদে।



আমি তোমার স্বাধীনতা

   নন্দিনী চৌধুরী 


তুমি ছড়িয়ে আছ যত্রতত্র। 
আমার বইয়ের পাতায়, চায়ের কাপে, চশমার কাঁচে,
স্কুলের খাতায়, চুলের কাঁটায়।
অনেক দিন হয়ে গেছে, জড়িয়ে আছ আমায়
---- সময়ে অসময়ে। 
অনেক রাতে তুমি আমাকে বল,  "ঘুমাও ,স্বাধীনতা এলে আমি তোমাকে ডেকে দেব।"
ভোরের আলো ফোঁটার আগেই 
তুমি কানের কাছে ফিসফিস কর,
" ধৈর্য্য ধর, ওই দেখা যায় নুতন সূরয।"
 তুমি মিশে গেছ আমার সময়ে অসময়ে।
আমি তোমাকে ছুঁতে চাইলেই, তুমি বল,
"আমি লড়াই।"
আমি তোমাকে কাছে ডাকলেই , তুমি বল,
"আমি অনশন।"
আমি তোমাকে দেখতে চাইলেই, তুমি বল, "আমি এন আর এস এ ভর্তি, যন্ত্রনা।"
আমি তোমার হাতে হাত রাখলেই, তুমি বল, "আমি রেবতীর নীথর শরীর।"
আমি তোমার কাঁধে মাথা রাখলেই, তুমি বল, "আমি রজনী নিদ্রাহীন।"
আমি তোমার নিঃশ্বাস গুনতে চাইলেই, তুমি বল, 
"আমি দীর্ঘ দগ্ধ দিন।"
আমি তোমাকে ভালোবাসলেই, তুমি বল, "আমি স্বাধীনতা। 
আমিই তোমার স্বাধীনতা, তোমার স্বাধীনতা।"




ধন্যবাদ

অনুভব অধিকারী


মুক্ত কলমের স্বাধীন লেখা,
রাতজাগা স্বপ্নহীন অচিন পাখী,
খেলা করে প্রকৃতি ওই
বনের মাঝে।
নিস্তব্ধ শর্বরীর হৃদয় আলো করে
নেমে আসে ওই বিস্তৃত মাঠে
খুঁজতে গিয়া,ঠিকানা পাওয়া যায়না
এমন কোনো আলেয়ার মতো
মাঝআকাশে চাঁদের রং নীলাভ হয়ে আসে,
রঙিন আলো ফুটে ওঠে,
কোথায় যেন ঝিলিক করে ওঠে
ভিনদেশী এক তারা।
প্রকৃতি সম্ভাষণ জানায়,মাথা নত করে,
দেখিতে পাওয়া উল্কা টারে।।




সমুদ্রস্নান

রথীন পার্থ মণ্ডল 


একসাথে ন-মাস কাটিয়ে, তারপর আমরা বেরিয়ে গেছি যে যার মতো,
আমি কখনো আকাশ দেখেছি দুর্জয়, কখনো শহুরে ঘ্রাণে আমার দম বন্ধ হয়েছে।
পা ডুবিয়ে হেঁটে গেছি অনেকটা পথ, বৃষ্টিতে ভিজে কাদার ছিটে গায়ে মেখে,
তুমি নাকি আকাশ হয়েছ ! পাখিগুলো তোমার কথায় আজকাল বলে মেঘকে।

আমার ভালো লাগে, তোমার সমুদ্র- তাই আমরা বিপরীত অভিমুখে
আমার গাল চেয়ে গেছে দাড়িগোঁফে-ব্রণতে, তুমি চিনেমাটি চকচকে।
সস্তা হোটেল, ফুটপাতের খাবার আমি রোজ খাই, দেরি করে ঘুমাই রাতে‌‌
চাকরিটা ছেড়েছি এই কিছুদিন হল, এখন শুধু ছবি আঁকি সমুদ্রস্নানের।

 


স্বপ্নের অন্ধেষণে

আসিফ আলী


স্বপ্ন গুলো বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকছে
আমার চেষ্টাও অব্যহত,
নিরন্তন ছুটে যাই তার দিক নির্দেশন করে।
তবে,কখনো চলতে চলতে চোখ কেমন যেনো
ক্লান্তির ধোয়াসাই আচ্ছন্ন হয়ে পরে।
দিক ভ্রান্তি হয়ে পা চলে যায় অন্য পথে,
অথবা,কখনো চুম্বুকিয় আকর্ষণের ন্যয়
কিছু অপকট দৃশ্য আমায় তার কেন্দ্রেন দিকে
টেনে নিয়ে যায়।
ভ্রান্ত পথের রোগ আমায় আক্রান্ত করে।
তবে, আচমকা যেন শরীরে ব্রজের শিহরণ খেলে ওঠে, 
দেখিয়ে দেয় আমার স্বপ্নের পথ।
আবারও চলি আমার স্বপ্নের পথে।



বিপন্ন এবং
 
ধীরাজ কুমার রায়

 
         
আকাশ মাথা রাখে  আমার কাঁধে 
নয়ানজুলিতে নেমে আসে রামধনু।  
বিপন্ন।  
সরল গৃহযুদ্ধে বিপন্ন তুমিও।  
আমিও আহত।  
মাথা রাখতে 
আধার চেয়েছি কোনোদিন...... 

অন্য কোনো উপনামে 
আরাধ্য করো আমাকে ইচ্ছেমতো  
উপাসনা ঘরে মনোযোগ সহ নিজেকে 
আবাসিক করিনি কতদিন  
পরাজয় বা সন্ধিতে 
সব যুদ্ধে  ছিলে উদাসীন....... 

চেতনায় আরাধ্য করো আমাকে।  
আকর্ষণীয়ভাবে বিদ্ধ করো 
পরাজয় বা সন্ধিতে  তুমিও 
সমর্পণ মেনে বিপন্ন 
গৃহযুদ্ধে 
ক্লান্ত এবং মলিন ...... 




কাগজের মান্দাস
অনুপ কুমার সরকার


ভাসিয়ে দিলাম গাঙের পাড়ে-
উঠবে তোমার ঘাটে ! 
তুমি বসে থাকবে বিকালে সুলপীর ঘাটে ।
আমি থাকবো উপল উপকূলে। 
কলার মোচার খোলে-
ভেসে ভেসে পৌঁছাবে ।
উজান স্রোতের টানে ।
নারকেল পাতার কাঠি দিয়ে ছেড়া কলাপাতায়,
লেখা থাকবে তবুও ভালোবাসি ।
অভিমানী দরজায় গিয়ে হাঁক দেবে -
ভেজা ভেজা ব্যাথা নিয়ে খুলে দেখবে তুমি,
পাছে যদি ঢেউ এসে ডুবে যায়, 
তুমি ছিলে অপেক্ষায় ব্যাথা ভরা কান্নায় ।
কাগজের নৌকায় খবর দিও তুমি-
আমি থাকবো দাওয়ায়-
বৃষ্টি জলের বন্যায় এসে পৌঁছাবেই আমার আঙিনায় ।



 সস্তা সুন্দর
বিজয় বর্মন

চাঁদের আলো মুগ্ধ করে ,
মনের বিচরণ ,গভীরে !
ভাবনা গুলি সস্তায় যদি 
আস্ত ,মনের ভিতরে !

আস্থা থাকেনা বেশিক্ষণ ,
সস্তার চঞ্চলতা !
অস্থির মনে বিস্তর চিন্তা ,
বাড়ন্ত ব্যাকুলতা !

আদর্শহীন জীবনের গতি,
স্বকীয়তায় আদর্শবান !
বিনা দর্শনে দার্শনিকতা ,
লক্ষ্যভ্রষ্ট  জীবন্ত প্রাণ !

হাতের তালুতে পৃথিবী বন্দী ,
সব জান্তা মহাজন !
সস্তা সম্ভারে অপচয় সৃষ্ট ,
পিপিলীকা ,উড়ে সারাক্ষণ !



আপন খেলা
 নিত্য রঞ্জন মণ্ডল

আর কত
আর দিনে ;আমার কাছে
খেলা করে যন্ত্রণায় জীবনে,
আপন করে
চলে যাওয়ার স্বপ্নে মেলে
আকাশের গায়ে জীবন খেলে
আতরের গন্ধে;
তবুও যেন কোথায় গেলো
হারিয়ে নিরব খেলা খেলে
আপন জনে।
দূরের কাছে আমার স্বপ্নে
আঁকা আছে আপন যত্নে
আকাশের মেঘে
আপন খেলা খেলে ।



হ্যাপি নিউ ইয়ার
তুলোশী চক্রবর্তী


পুরানো বছরকে জানিয়ে শুভ বিদায়
বছরের অন্তিম দিনের শেষ নিদ্রায়
নতুন বছর সকলের শুভ হোক
আমি বিভোর এই প্রার্থনায়,

কোন ভুল যদি করে থাকি করো তবে ক্ষমা
অন্তরেতে রেখো নাকো কোন ক্রোধ হিংসা জমা,

ভুলে যেও পুরাতন ছিল যত দ্বন্দ্ব
ভুলে যেও সব ;আছিল যত মন্দ,
নতুন করে উঠো জেগে নিয়ে নতুন ছন্দ
কাটাও নতুন বর্ষব্যাপী নিয়ে অফুরন্ত আনন্দ,

নতুন বছরের নতুন দিনে
উদিবে নব রবি গগনে
আবার নতুন করে স্বপ্ন বুননে
উঠো জেগে সবে প্রফুল্লিত মনে,

সো,টু অল নেয়ার অ্যান্ড ডিয়ার
উইশিং অ্যাডভান্স হ্যাপি নিউ ইয়ার।


প্যারিস       
মাথুর দাস

কোন্ দেশটা সুন্দর  আর কোন্ দেশটা কুৎসিত,  
কোন্ দেশে গরম বেশি কোন্ দেশে বা খুব শীত ;
তর্ক  কথায় হারিস্ না    
পারিস্ যদি প্যারিস যা,    
মন জুড়বে প্রাণ জুড়বে এমন দৃশ্য এবং সঙ্গীত !
  
সেইন নদীতে প্রমোদ ভ্রমণ,  মমার্তে দাও ঠেক,
চার্চ নতেরদেম, ল্যুভর, আর দামেসনিল  লেক ;
আইফেল  টাওয়ারে      
নাই ফেল যাওয়া রে !   
ডিজনিল্যান্ডেও   হরেক মজা দেখ্ ভাই দেখ্ !!    







No comments:

Post a Comment