নাটক
তুষার আহাসান
দরোজায় পা রাখতে ভয় হয়।
নিজের ঘর,নিজের বাড়ি।চৌকাঠের ওপাশে চিরচেনা নারী!তবু!
নারী চাকা ঘোরায় সংসারের।আমি তেলের যোগান দিই।
পারলে দায়িত্ব ও কর্তব্য না পারলে,ক্যাঁচ!
ঘরের লক্ষী,প্যাঁচা হয়!
--দুধওয়ালা আজও তাগদা দিয়ে গেল।
--মুড়িমাসীর জ্বর,নাতনিকে পাঠিয়েছিল।
--মুদির দোকানের খাতা নিয়ে এসেছিল সুধীর।
নিত্যদিন একই সুর।কথাগুলো বদলে যায় ভিন্ন চাহিদায়।সমস্যার জলে মাছ তড়পায়! ঠেকে পা দেওয়াও যেন সেই ঘাটে পা ডোবানো।হৈ-হৈ করে ওঠে আয়াজদা—
এই তো এসে গেছে নায়কের বাবা।চাঁদবদনা,আজ-ও কি পার্ট মুখস্ত হয়নি?
ছোট্ট একটা রোল,তাতেও ডিগবাজী!পুজোর সময়ে নাটক কি করে নামবে?
আমিই নামছি শুধু এদিকে-সেদিকে!সংসারের নাটক আর নাটকের সংসার
কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।খাবি খাচ্ছি সবার চোখে।
সেলাইকলে হাত-পা নাচাই।তালিমারা সাইনবোর্ডে নিচু মাথা।ফরমাশ-ও আসে
তালি-মারা।রোজগার-ও।
দরোজা খুলল ছেলে—বাবা,কাল আমার পরীক্ষার টাকা জমা দিতে হবে।
হাতের ছাতা দেয়ালের গজালে রাখতে-রাখতে বলি—দেব রে বাবা দেব।আমার রক্ত
বিক্রি করেও কাল তোর টাকা দেব।
আরে বাস,এ-তো আমার নাটকের ডায়লগ!
আয়াজদা নিশ্চয় হাততালি দেবে।
No comments:
Post a Comment