Tuesday, February 11, 2020

























পুতুল খেলার ছলে 
মজনু মিয়া 

মৌ, মীম, নূর এরা সবাই খেলা করছে কাঁঠাল গাছের তলে,,,খেজুর পাতার পাটি বিছিয়ে তারপরে সবাই বসে অনেক গুলো পুতুল দিয়ে খেলছে,পুতুলগুলো কাঠের তৈরি। 
নানান রঙের কাপড়ের টুকরা দিয়ে শাড়ি বানিয়ে পুতুলের গায়ে পরিয়ে দিয়েছে তা শুয়াইয়া রাখছে।
একটার নাম দিছে টুনি একটার নাম দিছে রনি একটার নাম দিছে ছবি এ রকম আরও অনেক নাম। 
টুনির বাবা মায় টুনির বিয়ে দিবে তাই বাড়িতে ইস্টি অর্থাৎ কুটুম আসছে এ খবর পেয়ে রনি ও ছবি সহ আরও অনেকেই এসেছে তাদের বাড়িতে।
টুনিকে দেখে কুটুমদের পছন্দ হলো তারা বিয়ের তারিখ ঠিক করে চলে গেল।কিন্তু রনি,ছবিসহ অন্যরা বলছে এটা কিছুতেই হতে পারে না।কারণ টুনির বিয়ের বয়স হয় নাই।তখন এদের মধ্য থেকে একজন বলল,স্যার বলেছিল আঠারর আগে বিয়ে আইনত অপরাধ চল আমরা এ বিষয় স্যারকে জানাব যদি টুনির বিয়েটা বন্ধ করতে পারে স্যার, টুনির বয়স মাত্র বারো কিংবা তেরো হবে।
মৌয়ের পক্ষের পুতুল গুলো ছেলে আর মীমের পক্ষের পুতুল গুলো মেয়ে নূর ছোট তাই সে বসে বসে খেলা দেখে। তখন একটা পুতুল বড় সেই পুতুলকে স্যার বানাল আর তখন সেই স্যারকে সব খুলে বলল,তখনি স্যার মেয়ের পক্ষের পুতুলগুলোর সঙ্গে আলাপ করতে লাগল,,,মেয়ের বাবাকে আর মা কে বলছে স্যার,,আপনারা জানেন কি?  আপনাদের মেয়ে টুনির বয়স এখনো আঠারো পূর্ণ হয় নাই? মেয়ের বাপ মায় আমতা আমতা করে কোন উত্তর দেয় না।আবার স্যার বলে,আপনারা এ বিয়ে দিতে পারবেন না কারণ এটা আইনত অপরাধ এ কাজ বা বিয়ে দিলে জেল খাটতে হবে উভয়কে সাথে ছেলের পক্ষকেও!

মেয়ের পক্ষের সবাইকে এ কথা বলাতে তারা সবাই স্যারকে বলল,আমরা তাহলে এখন বিয়ে দেব না টুনির বয়স আঠারো হলেই বিয়ে দেব। 
স্যার ও রনি,ছবিসহ সবাই তখন বের হয়ে এল বাড়ি থেকে।এসে স্যার বলল, তোমরা একটা সুন্দর কাজ করলা,,,একটা মেয়ের জীবন বাঁচল আর অল্প বয়সে বিয়ের আইনও ঠিক রইল। তোমরা সবাই দেখবা কোথাও যেন এ কাজ না করতে পারে।
এমন সময় ছেলের পক্ষের পুতুল গুলোর অভিযোগ এল মীম তখন মেয়ের পক্ষের কাছে জানতে চাইলে সব কথা বুঝিয়ে বললে মীমের পক্ষের পুতুল গুলো বুঝতে পারে,,, তখন সবাই বলে এই নিয়ম গুলো যদি আমাদের দেশেও সব জায়গায় প্রয়োগ হয় তবে আর কোথাও বাল্যবিবাহ থাকবে না।
সবাই তখন ইশকুলে যাবার প্রস্তুতি নেবার আর পড়া লেখা কি ভাবে শেখা যায় তার উপর পুতুলগুলোকে শিক্ষা দেয় আর নানান রকম খেলাধুলা করে চড়ুইভাতি খেলে। খুশিতে ডগোমগো হয়ে টুনিও তাদের সাথে খেলতে লাগল।
আমরাও যারা বড় আছি তারা যেন এই বিষয়টা মাথায় রাখি বাল্যবিবাহ যাতে না দেই।

No comments:

Post a Comment