Tuesday, July 2, 2024


  

যেখানে দ্বিতীয়বার ভূমিষ্ঠ হয়েছিলাম -----

গৌতমেন্দু নন্দী 



শুরুর শুরু সময়, বলি যেমন "সলতে পাকানো" 
    রূদ্ধ দ্বার ও বাতায়নের নিশ্ছিদ্র বদ্ধ ঘরে----
    দুরু দুরু বক্ষে তখন প্রবেশিকা পরীক্ষা তরে
  যোগ্যতা-নির্ধারনে, ঠিক যেন তার "চোখ রাঙ্গানো"।

    যোগ,বিয়োগ আর অংকের যত প্রশ্নচিহ্ন আঁকা
     ব্ল্যাক বোর্ডের সমতল বুকে উজ্বল সব অক্ষর
     বদ্ধ সেই ঘরে রয়েছি সদ্য হওয়া জ্ঞান-স্বাক্ষর
    খাতায় কচি আঙ্গুলে তখন কলমের স্পর্শ রাখা---

    "পাখি সব করে রব রাতি পোহাইলো
     কাননে কুসুম কলি......"
      অনায়াসে লিখে ফেলি
     খাতার পাতায় যেন অক্ষরে ফুটলো ------।

    পিতৃ-মাতৃ স্নেহ-যুক্ত মুক্ত বিহঙ্গ-মন
    পেয়ে গেল বিদ্যালয়ে প্রবেশের ছাড়পত্র-----
    সারাদিন খুশিতে উড়ল  দিন রাত্র
   খুঁজে পেল বৃক্ষ শাখায় শিক্ষা-অঙ্গন---।

     শুরু হলো বিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ভীড়ে
     নিয়মিত দাঁড়িয়ে শিক্ষক শিল্পীর সনে
     জাতীয় সংগীতের সঠিক কথা--উচ্চারনে
     সমবেত কন্ঠে সঠিক বোধ আর সুরে---।

     শুধু নয় লেখা পড়া সৃষ্টি সৃজনেরও চর্চা
     খেলাধুলা, পিকনিক, চলতো ভ্রমণও
     সাথে ছিল এন,সি,সি ক্যাম্পের আনন্দও
     কতো স্মৃতি আসে ভেসে কতো ছবি--কড়চা।

      মনে পড়ে ছাত্র তখন সবে পঞ্চম শ্রেনি
     বিদ্যালয় অঙ্গন মাঝে কৃষ্ণচূড়ার ডালে 
     বসেছিল বাজপাখি জানিনা কী ভুলে
     ছুঁড়েছিলাম লক্ষ্য ক'রে তাকে ঢিল খানি---

      পেয়েছিল আঘাত সে হয়েছিল আক্রান্ত 
      হইচই চারপাশে এলো ছুটে  ছাত্র সব
    আমি তখন "ভ্যাবাচ্যাকা" একদম নীরব
      সেই ঘটনায় আজও, বিষাদ, ভারাক্রান্ত ---।

   হাতে লেখা ম্যাগাজিন,চলত তার প্রতিযোগিতা 
    অষ্টম থেকে একাদশ চারটি শ্রেনির প্রতিযোগী
   "প্রথম"যে হোতেই হবে তাইযে  মনোযোগী 
   সেরার সেই পত্রিকাটি সযত্নে আজও রেখেছি তা---

     মনে পড়ে আর্ট এন্ড ক্র্যাফ্টের সেই বড় কক্ষ
      মুখরিত শব্দ--করাতের ঘর্ষণে 
     ভিজে যায় জামা খানি ঘাম জল বর্ষনে 
     পেয়েছিলাম শিক্ষক,যিনি শিল্পী এক দক্ষ।

     ভীড় করে কতো স্মৃতি বিদ্যালয় ঘিরে
    রেখেছি মনে মণিকোঠায় রেখেছি যতনে 
    আজও ফিরে ফিরে আসে ঘুমের স্বপনে 
    ভাবি শুধু আবার যদি আসতো সে দিন ফিরে
     
        ছিলনা "মিড ডে মিল" ছিল বাদাম ভাজা 
            সাথে ছিল ঘুগনি,আচার 
           সেটাই ছিল আনন্দ, বাঁচার 
 রাগ,অভিমান ছিলনা কিছু যতোই পাই শাস্তি সাজা।

   গ্রীষ্মাবকাশ শুরুর আগে সাজানো শ্রেনি ঘরে
   আসতেন সব শিক্ষকগণ করতাম তাঁদের বরণ
       তাঁদের স্নেহে ধন্য হয়ে পেতাম স্পর্শ-চরণ
    প্লেটে প্লেটে সাজিয়ে দিতাম মিষ্টি  তাঁদের তরে।

     মনে পড়ে তাঁদের যাঁরা ছিলেন অশিক্ষক 
   বেঁধে বেঁধে রেখেছিলেন যাঁরা স্নেহের ডোরে   
থাকবেন তাঁরাও চির বেঁচে মোদের স্মৃতি-ঘোরে
   লেখাপড়ার বাইরে তাঁরাই বিদ্যালয়ের রক্ষক।


       


No comments:

Post a Comment