নিষিদ্ধ রজনীগন্ধার গন্ধ
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
ভুঁইফোড় আমিত্বের বোধ আজও উত্তর চায়...
যে দিনটা গলির অন্ধকারে মুছে গেছে যুগের উত্তরণের সাথে সাথে,
চলে গেছে আনমনের স্মৃতি
শুধু মোছেনি জমানো খেদ
আর মখমলে নিষিদ্ধ রজনীগন্ধার গন্ধ!
সেদিন গলির ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার ছিল
নিজের সাথে যুদ্ধে এমন দীর্ঘায়ত অন্ধকার গিলে খেতে আসে না রোজ!
মোহ নেই, মায়া নেই
শুধু কর্ম আর কর্ম -
এই এক বিষের মধ্যেই বিষিয়ে থাকার দুর্বিনীত সংগ্রাম!
আমিত্বের যুদ্ধে শুধু ব্রতী কিছু মাঝরাতের সাঁঝবাতি
আর নরম শরীরের সাত্ত্বিক নিদান!
কোথা থেকে ছুটে আসে যেন নখদন্তহহীন স্বৈরাচারীর দল,
অত্যাচার করে, লুণ্ঠন করে
বয়ে নিয়ে যায় শুধু আমিত্ব... আমিত্ব... আর আমিত্বকে
তবু এককোণে পড়ে পড়ে অমরত্ব খোঁজে
ঘরকুনো বেশ আর নিষিদ্ধ রজনীগন্ধার গন্ধ!
বিধিত্বের আহ্লাদে কেটে গেছে বহু যুগ
আজও নারীর চোখে জৈব বন্ধকী থাকে..
শুধু মুছে যায় গলির ভয়ার্ত অন্ধকার,
ছলভাঙা শরীর আর
সাধ্যের স্রোতে ভেজা ভয়হীন, নিদ্রাহীন আমিত্ব!
সেই আড়াল শুধু সৌধের মত আগলে রাখে
ঘরময় এলোমেলো নিষিদ্ধ রজনীগন্ধার গন্ধ!
সেটা ছিল ঝলমলে সকাল
রাস্তাজুড়ে লোক, যান আর অতন্দ্র ব্যস্ততা -
চিরচেনা শুধু সেই কানাগলি
অন্ধকার হয়ত গ্রাস করেনি এখনো বাড়ির লালচে দালান গুলো..
অচেনা শুধু ইতিউতি জোড়ো হওয়া একটা চাপা গুঞ্জন,
কেউ বলে, কেউ শোনে,
আজ নাকি মরেছে এক অসমর্থ মাগি...
ফেলে দেওয়া জীর্ণ ভাঙা খাট বরাদ্দ হয়েছে তার জন্য
ফুল নেই, চন্দন নেই, নিদেনপক্ষে একটা ধূপও নেই
এ গুলো যে তার জন্মের শোধবোধ, সামর্থ্যের বারোমাস্যা!
কি হবে তার শেষযাত্রা সাজিয়ে?
এখনো তো লেগে আছে হাতে বিদেশী আতরের ছাপ,
মুখ জুড়ে রংকালির আস্তরণ
আর শরীরময় রগরগে নিষিদ্ধ রজনীগন্ধার গন্ধ!
যে সামর্থ্য তাকে বেশ্যা বানায়,
অকথ্য গালাগালির সত্যে বসতে শেখায় লালচে দালানটা জুড়ে...
যে পৌরুষের বিধি তাকে আঁকড়ে ধরে
আকাঙ্ক্ষা দেয় এজন্মের আড়ষ্টতা ভেঙে
সে বাঁধন নশ্বর, বেলাগাম পুরুষত্বের ছন্দ...
বাবুর মানটা শুধু বেপরোয়া দাবী করে চলে
গলির অভিশাপ আর নিষিদ্ধ রজনীগন্ধার গন্ধ।
No comments:
Post a Comment