পরম্পরা
পিতা
দেবাশিস সাহা
ঘুমিয়ে আছে সকল পিতা
সব শিশুরই অন্তরে
বাবা বললেই মাথার উপর একটা ছাতা খুলে যায়।
বাবা,পিতা,ড্যাডি, বাপু,বাবু- কত নামেই ডাকা যায়। সাড়া পেলেই মিলে যায় অবলম্বন আর মুশকিল আশান।
প্রাণীজগৎ এবং উদ্ভিদজগৎ এর ব্যতিক্রম নয়। সেখানেও নির্ভরতা কাজ করে।
আমার বাবা
স্মৃতি হাতড়ে পাই। তিন চার বছর যখন বয়স বাবার সাইকেলের কেরিয়ারে আমার বাবু হয়ে বসে বিশ্বদর্শনে বের হওয়া। বাবা রোদে রোদে চাষবাসের কাজ কখনো কখনো ব্যবসার প্রয়োজনে রোদে রোদে সাইকেল নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম পার হয়ে যায়। তারপর স্কুল পেরিয়ে কলেজ যাবার পথে বাবার কঠোর শাসন। আমাকে সর্বদা ভীত ও সন্ত্রস্ত রাখতো।সন্ধ্যের আগেই বাড়ি ফিরতে হবে এটা ছিলো ফরমান।আমার সবসময় বিরক্ত লাগতো।শাসনের মধ্যেও যখন বাবা বুকে টেনে নিতো।লোমশ বুকে আশ্বাসের ঘুম।শাসন আর সোহাগের মধ্যে দিয়ে বড়ো হলাম। বাবা হলাম।
বাবা হয়ে আরো বেশি করে বুঝলাম বাবা হওয়া কত কঠিন।
আমি যখন বাবা
বাবা হবার নানা স্বপ্ন নানা রঙের হয়ে হয়ে উঠছে। নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন - সাধ পুত্রের মধ্যে দিয়ে পূরণের ইচ্ছে। সবকিছু হয়না।যে শাসন আমাকে আহত করেছে সেটা আর আমি ব্যবহার করিনি।সোহাগের মধ্যে দিয়ে বড়ো করতে চেয়েছি আত্মজকে।সন্তান খোলা মাঠ পেয়ে এলোমেলো বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে। তখন আবার বাবার কথা মনে পড়ছে।
সংসারের মোট বয়ে নিয়ে যাওয়া বাবা কখনো কোনো দিন কাউকে খুশি আর সুখী করতে পারেনা।যদিও সুখ ভীষণ আপেক্ষিক। তবে আমার কাছে বাবা একটি আকাশ রঙের ব্ল্যাকবোর্ডে। এখানে যেকোনো বায়না লেখা যায়।লিখে রেখে দিলে চলে আসে।
বায়নাক্কা , আবদার মায়ের কাছে করলেও গড়িয়ে গড়িয়ে বাবার কাছে চলে আসে।বাবা কখনো কাউকে ফেরায় না।
ক্ষুধার্ত সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য একজন পিতা, একজন বাবা ভোজবাড়ির বাইরে পড়ে থাকা খাবার অতিরিক্ত খেয়ে আসে। বাড়িতে এসে গলগল করে বমি করে। খিদে পেটে সন্তান তৃপ্ত করে খায়।পিতার মুখে তৃপ্তির হাসি। অবিশ্বাস্য হলেও এটা বাস্তব।
No comments:
Post a Comment