Friday, May 2, 2025


 

প্রিয় লোক উৎসব পয়লা বৈশাখ একলা হয়ে যাচ্ছে
বটু কৃষ্ণ হালদার

"বছর শেষে ঝরা পাতা বলল উড়ে এসে/একটি বছর পেরিয়ে গেল হওয়ার সাথে ভেসে/নতুন বছর আসছে তাকে যত্ন করে রেখো/স্বপ্নগুলো সত্যি করে খুব ভালো থেকো"আবার একটা বছর হয়ে গেল শেষ। চারদিকে উদাসী মন পাগল করা হাওয়া বোধহয় বুঝিয়ে দেয় -- এখন চৈত্র মাস। শুকনো পাতা উড়িয়ে, ধূলো ছড়িয়ে, পুরোনোক সরিয়ে নতুনের আবাহনে তাই মাতোয়ারা চৈত্র মাস।

সেকারণেই বোধহয় সঠিকভাবেই কবি লিখেছিলেন,-- " সেদিন চৈত্র মাস, তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ।
চৈত্র মাসে বের হয় , গাজনের সঙ। ঢাকের বাদ্যির সাথে সাথে শিব পার্বতীর নাচ, হনুমানের লম্ফঝম্ফ, মুন্ডমালিনী কালিকার ভয়াল মূর্তিসহ শোভাযাত্রা আরও কত কী। এমাসের কল্যানে আছে, সিদ্ধি,ভাঙ, গাঁজা, আফিমের নেশার মৌতাতে বুঁদ হয়ে থাকার ঢালাও ব্যবস্থা। অবশ্য বাঘছাল পরিহিত ভোলে বাবার ঐ ব্যাকডেটেড ফর্মুলার নেশা এখন একেবারেই অচল। বরং বিশ্বায়নের কল্যানে মুক্ত বানিজ্যের ছত্রছায়ায় প্রদান করে নিয়েছে, চরস,ড্রাগস,ব্রাউন সুগার,হাসিস আর সর্বকালের প্রাণহরা সোমরস " বিপিনবাবুর কারণ সুধা।
তবুও আসে চৈত্র মাস, আসে চৈত্র সেলের বাজার, বাজে গাজনের ঢ্যাম কুড়াকুড় বাদ্যি, চলে গাজনের সঙ। মন আনচান করা এলোমেলো হাওয়ায় গাছের পুরোনো পাতা ঝরিয়ে চৈত্রমাস ঘোষণা করে নতুন বছরের আগমন বার্তা। পুরোনোকে সরিয়ে তবেই তো জায়গা নেবে নতুন।
কবি অক্ষয়কুমার বড়াল 'নববর্ষে' কবিতায় লিখছেন, "সমীর শিহরে; বিহগ কুহরে;/তটিনী সুধীরে পড়িছে লুটে।/আকাশের ভালে মেঘের আড়ালে/সোনামুখী উষা উঠিছে ফুটে।" বলছেন কুসুম-সাজে সেজেছে ধরণী; চারিদিকে গান, হাসি, কাছে আসা-আসি; বর্ষ ঘুরে যায়, ধরা ঘুরে আসে --- কিন্তু হৃদয় কি ঘুরবে না? নববর্ষের কাছে মানুষের অসীম আশা; নববর্ষকে কেন্দ্র করেই উজ্জীবিত হতে চায়; নববর্ষ নামক এক সন্ধিক্ষণে মনোবীণায় বাঁধতে চায় নতুন তার। কিন্তু নববর্ষ তো আর অতীতকে অপনোদন করে নয়।অতীতের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার ধারাবাহিকতা নিয়েই বর্ষ-বরণ! মধুসূদন যতই লিখুন, "ভূত-রূপ সিন্ধুজলে গড়ায়ে পড়িল বৎসর"; মন মানে না, অতীত দিনের ভুলের ফর্দ যে আমাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খায়! এখনও যদি অতীতচারী না হই; নিজের, সমাজের, রাষ্ট্রের কৃতকর্মের অন্যায় সংশোধন না করি তবে আগামীর নববর্ষ আমাদের ক্ষমা করবে না। সমৃদ্ধ ভারত, কুশল-রাজ্য যদি নির্মাণ করতে হয় তবে অতীত-চারণ করতেই হবে। নববর্ষের আনন্দবার্তার মাঝে তাই ফেলে আসা দিনগুলির ত্রুটি স্বীকার করে সজাগ মতদান করতে হবে। এই নববর্ষ তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ত্রুটি অপনোদনের যথার্থ মরশুম হয়ে উঠুক। অবশ্য পূর্বের সদর্থক আনন্দ-রসও যেন ঢেলে নিতে পারি নতুন পাত্রে -- "কাল যে কুসুম পড়বে ঝরে/তাদের কাছে নিস গো ভরে/ওই বছরের শেষের মধু/এই বছরের মৌচাকেতে।" তোমার সদর্থক যে আশা-প্রেরণা আছে, তা আমায় দাও। বাংলায় যতটুকু আলো এখনো আছে, নিবে গিয়ে অন্ধকারে বাঙ্গালির গৃহ আবৃত হবার আগেই সেই বাতিতে নতুন তেল আর উসকো কাঠি দিয়ে আলোকিত করার নামই হোক নববর্ষ। বাঙ্গালির বর্ষপঞ্জিতে সনাতনী-সংস্কৃতির মেলবন্ধনের দিন হয়ে উঠুক বর্ষবরণ, হিন্দুর মিলন মেলা।

নববর্ষ উৎসব বাংলার গ্রাম্য জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ দিনটিকে ঘিরে গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের উদ্দীপনা,উন্মাদনার শেষ থাকেনা। নববর্ষের আগে তারা ঘরবাড়ি ব্যবহার্য সামগ্রী সমস্ত কিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে। শুধু তাই নয় কৃষিভিত্তিক বাংলার কাছে এই দিন টা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পহেলা বৈশাখের ভোরের বেলা গৃহস্থের কর্তারা নিজ নিজ চাষের জমি, বাস্তুভিটা তে খড়ের আঁটি দিয়ে আগুন জ্বালায়। এই দিনে বাঙালির ঘরে ঘরে শিল নোড়া দিয়ে নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ বাটা হয়। তারপর সেই মিশ্রণে একটু সরিষার তেল দিয়ে সবার প্রথমে মাখানো হয় বাড়ির গরু,ছাগল সহ নানান গৃহপালিত পশুকে। তাদেরকে নদীতে কিংবা বাঁধে নিয়ে গিয়ে স্নান করানো হয়। এরপর বাড়ির ছোটরা সমস্ত বড়দের পায়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে আশীর্বাদ নেন। এই প্রাচীন রীতিনীতি বাঙালি সমাজে বহু যুগ ধরে চলে আসছে। তবে ইদানিং এইসব রীতিনীতি জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমে আসছে। সকালে স্নান সেরে সবাই পবিত্র হয়। সাধ্যমত নতুন বস্ত্র পরার চেষ্টা করে বাঙালিরা। নববর্ষের টানে ঘরে ফিরে আসে বাইরে থাকা সন্তানরা, আগমন ঘটে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের। এই দিন বাঙালির ঘরে ঘরে নানান পদের সমাহারে একে অপরের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় চলে।
নববর্ষকে উৎসব মুখর করে তোলে বৈশাখী মেলা। বিভিন্ন জায়গায় এই মেলার মাধ্যমে বৈশাখী উৎসবকে পালন করা হয়ে থাকে।স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য কারুপণ্য লোকশিল্প জাতীয় পণ্য কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর হস্তশিল্প সামগ্রী এই মেলার বিশেষ আকর্ষন। আবার কোথাও কোথাও এই মেলায় গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সভ্যতা সংস্কৃতি যেমন _যাত্রা পালা গান,কবি গান,জারি গান,গাজন গান,লোকসংগীত,বাউল সংগীত, ভাটিয়ালি গান পরিবেশন করা হয়ে থাকে।আবার লায়লা মজনু,ইউসুফ জুলেখা,রাধাকৃষ্ণের,মতো প্রভৃতি আখ্যান উপস্থাপিত করা হয় কোথাও কোথাও। আবার কোথাও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী,নাটক, পুতুল নাচ,নাগরদোলা,সার্কাস ইত্যাদি মেলার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে।তাছাড়া শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ ছিল "বায়স্কোপ"। বর্তমান সমাজে এই বাইস্কোপ একেবারে হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে। তবুও এসবের কারণ এই বৈশাখী মেলাকে বাঙালি সমাজের আনন্দঘন লোক সংস্কৃতির ধারক ও বলা হয়।
সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ। ভারতবর্ষে প্রবেশ করার পর বিভিন্ন বৈচিত্র দেখে তার সেনাপতি সেলুকাসের উদ্দেশ্যেই এই উক্তি করেছিলেন সম্রাট আলেকজান্ডার। উক্তিটি তৎকালীন সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তবে এই উক্তির সত্যতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠে।আসল সত্য হলো গ্রীক ভাষায় আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলুকাসকে কি বলেছিলেন সেটি পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি।সম্ভবত দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা "চন্দ্রগুপ্ত" নামক নাটকে আলেকজান্ডারের আবেগঘন অনুভূতি র মুহূর্তটি সম্পর্কে লিখেছিলেন, সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র দেশ এই উক্তিটি। ভিন্ন ভাষাভাষী সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র হল পবিত্র ভারত ভূমি। ভিন্ন ভাষা সংস্কৃতির দেশে প্রতি মাসে কোন না কোন উৎসবে মেতে ওঠেন দেশবাসী। সেই বৈচিত্র্যময় দেশে বাঙালি সমাজ হলো এক অতি প্রিয় জনজাতি। কথায় আছে"বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ"। সে সমস্ত পার্বণের মধ্যে এক অতি প্রিয় উৎসব হলো পহেলা বৈশাখ। একটি বাঙালির সার্বজনীন লোক উৎসব। চৈত্র মাসের শেষ ও বৈশাখ মাসের প্রথম দিনকে বাঙালিরা আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয়। কল্যানা নতুন জীবনের প্রতীক হলো বাঙালির হৃদয়ের উৎসব নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত সম্রাট আকবরের সময় থেকে। সে সময়ে নববর্ষ পালিত হতো অর্ত ব উৎসব বা ঋতু ধর্মী উৎসব হিসেবে। কৃষিপ্রধান এই দেশে কৃষি কাজের সঙ্গে নববর্ষ উৎসবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। কৃষি কাজের সুবিধার্থে মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে ১০/১২ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং তা কার্যকর হয় তার সিংহাসন আরোহণের সময় থেকে (৫ নভেম্বর ১৫৫৬)। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসন কে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়। নতুন সনটি প্রথমে "ফসলি সন" নামে পরিচিত ছিল, পরে তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়।

সব জায়গায় ধরে নেওয়া হচ্ছে শশাঙ্ক হিন্দু সম্প্রদায়ের কাল অধিপতি ছিলেন।তিনি এই বঙ্গাব্দের সূচনা করেছিলেন। বাংলা নববর্ষের শুভ সূচনা তার রাজ্যভিষেকের ঘটনা কালক্রমে বঙ্গাব্দের সূচনা হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই তথ্য উড়িয়ে দিয়ে অনেকে আবার সম্রাট আকবর কে বঙ্গাব্দের সূচনাকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তবে অংকটা আমাদের একটু মিলিয়ে নেওয়া ভালো। ইতিহাসের নানান জায়গায় তথ্য অনুযায়ী,বঙ্গাধিপতি শশাঙ্কের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল ৫৯৩ খ্রীষ্টাব্দে।সেই বছর থেকেই চালু হল বঙ্গ নববর্ষ ও বঙ্গাব্দ। হিসাব অনুযায়ী দাঁড়ায়,৫৯৩ + ১৪২৯ (বঙ্গাব্দ) = ২০২২ (খ্রীষ্টাব্দ),এটা কি বঙ্গাব্দ সূচনা হওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ নয়?ওদিকে আকবর মোগল সম্রাট হয়েছিল ১৫৫৬ খ্রীষ্টাব্দে। তাই যারা বঙ্গাব্দের সূচনাকারী আকবরকে ক্রেডিট দিতে চায় তাদের হিসাব অনুযায়ী,১৫৫৬ খ্রী: + ১৪২৯ বঙ্গাব্দ = ২৯৮৫ খ্রীষ্টাব্দ।অর্থাৎ আকবর যদি বাংলা নববর্ষ চালু করতো তাহলে ইংরেজি ক্যালেন্ডারে এই বছরটা দাঁড়াতো ২৯৮৫ খ্রীষ্টাব্দ। তাই বঙ্গের অধিপতি নরেন্দ্রাদিত্য শশাঙ্ক হলেন বাংলা নববর্ষের জনক। বাকুঁড়ার সোনাতপন গ্রামে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের প্রাচীন মন্দিরের গায়ে বঙ্গাব্দের উল্লেখ আছে যা আকবরের সিংহাসনে বসার ৩০০ বছরেরও আগের প্রামাণিক ঘটনা। তাই বঙ্গাব্দের সূচনাকারী কে তা নির্ণয় করার জন্য পাঠককুলের উপর দায়িত্ব দেওয়া হলো? 

বর্তমান আধুনিক সভ্যতায় পাল্টেছে নাগরিকদের জীবনযাত্রার ধরন। চারিদিকে বেড়ে চলেছে প্রতিযোগিতার পাল্লা। সময় কে কিনে নেবার প্রয়াস। বিশ্ব আজ তালুবন্দি। এসময় মানুষ প্রাচীন সভ্যতা সংস্কৃতি ছেড়ে আপন করেছে এন্ড্রয়েড সেট ও ইন্টারনেট। বাঙালিয়ানা খাবার ছেড়ে সবাই হয়েছে রেস্তোরা মুখি। ভাত,ডাল,মাছআলুভাজা, পোস্ত ছেড়ে বাঙালি এখন চাউমিন, বিরিয়ানি চিকেন কাবাবে অভ্যস্ত হয়েছে। বাইরের জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ফলে মানুষ নিজেদের বিপদ নিজেই ডেকে আনছে অজান্তে। মানুষ অল্পতেই রোগব্যাধি গ্রস্ত হয়ে পড়ছে। অল্প বয়সে মাথার চুলে পাক ধরেছে, চুল ঝরে গিয়ে বাড়ছে টাক ধারি মানুষের সংখ্যা। অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারা যাচ্ছে। দিনে দিনে সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারাচ্ছে নারীরা, সেই সঙ্গে বাড়ছে বিকলাঙ্গ সন্তানের সংখ্যা। তবুও কারো হুশ নেই। ধুতি-পাঞ্জাবি ছেড়ে বাঙালি আর টাই তে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইংরেজি আর হিন্দি ভাষার চাপে ভুলতে বসেছে বাঙালির অতিপ্রিয় বাংলা ভাষাকে। ধুতি-পাঞ্জাবি ভাত ডাল মাছ আলু পোস্ত ছেড়ে বাঙালি নিজের ভাষা সংস্কৃতি কে হারিয়ে অন্য ভাষা সংস্কৃতির দাস হয়ে যাচ্ছে।নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করার প্রবণতা সবথেকে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যুব সমাজের মধ্যে। যাদের মধ্যে আগামী ভবিষ্যতের স্বপ্নের বীজ লুকিয়ে থাকে, সেই যুবসমাজের হাত ধরেই লেখা হবে বাঙালির প্রাচীন সভ্যতা-সংস্কৃতির নিধনের ইতিহাস। তার জীবন্ত নিদর্শন হল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।

বাঙলা ক্যালেন্ডারে নববর্ষ হল পয়লা বৈশাখ। বসন্তের শেষে গ্রীষ্মের আগমনেই আসে বৈশাখ। আর সেটা চৈত্রের চিতাভষ্ম উড়িয়ে। প্রস্তুত নববর্ষে সব অর্থেই পরিবর্তন চাই। বিশ্বপ্রকৃতির পরিবর্তন, রূপবৈচিত্রের পরিবর্তন, চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন, সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিবর্তন। 'শুকনো গাঙ্গে আসুক জীবনের বন্যা'; ভেসে যাক জীর্ণ পুরাতন; বাংলার গ্রাম-জনপদ থেকে বারুদের ঘ্রাণ মুছে যাক; গ্রীষ্মে বীরভূম সহ সারা বাংলায় মধ্যদিনের রক্ত নয়ন যারা দেখিয়েছে তাদের বিদায় চাই। নরেন্দ্র নামাঙ্কিত কালপুরুষের নববিধানে সমগ্র ভারতের সঙ্গে বাংলার রাজনৈতিক আকাশ নির্মল হোক, জীবনবৃক্ষ রূপ মনুষ্য-বিটপী যেন নির্বাচনের নিঃশ্বাসে নিঃশঙ্ক হতে পারেন। আসুক 'নববর্ষের পুণ্য বাসরের কালবৈশাখী'। আর তার জন্য যে মূল্যই চোকাতে হোক না কেন -- সে যুদ্ধ 'হোক সে ভীষণ'। ভয় ভুলে উপভোগ্য হোক 'অদ্ভুত উল্লাস'। কালবৈশাখে নেমে আসুক তার বিজয় রথ। বাংলায় তাঁর পিনাকের টংকার শুনতে পাচ্ছি। মানুষের ধৈর্যের বাঁধ যেহেতু ভেঙ্গে গেছে, তাই 'ভাঙনের জয়গান' গাই -- 'বাঁধ ভেঙ্গে দাও/ বাঁধ ভেঙ্গে দাও/ বাঁধ ভেঙ্গে দাও।'


No comments:

Post a Comment