Friday, August 2, 2024


 

`যদি ফিরে পেতাম  সেই পথ....`



যে পথে আমি গেছি বার বার 

        কবিতা বণিক



 মাবাবার সাথে রিক্সা করে যখন বাড়ি ফিরতাম  তখন   শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনের কাছে রিক্সাটা ঢা বেয়ে স্লিপ খাওয়ার মতো নামত খুব  ভয় লাগত পড়ে যাবার।সেখানে  ঢাল বেয়ে দুপাশে সারি সরি নারকেল গাছের নেমে  যাওয়ার দিকে বাবা তাকাতে বলতেন।দেখতেও খু মনোহারি ছিল।  তাই ওই দৃশ্য  উপভোগ করতে গিয়ে  ভুলেই যেতাম ভয়ের  কথা।রিক্সা একেবারে সেই সাজানো বাগানের  মধ্যে রাখা  টয়ট্রেনের কাছে গিয়ে বাঁক নিত।সেই জন্য হিলকার্টরোড  থেকে  শিলিগুড়ি জংশনে ঢোকার  ঢালু রাস্তাটর সৌন্দর্য আমার খুব প্রিয় ছিল কিন্তু পায়ে হেঁটে উপভোগ করলাম যখন , তখন   আমি কলেজ ছাত্রী। ফলে বাসে উঠতাম  নামতাম  হিলকার্ট রোড থেকেই।  ছবির মতো লাগত।খুব ধীরে হাঁটতাম ওই পথটুকু।  বলত , এই পথ যেন না শেষ হয়। খন সে রাস্তাও নেই সে সৌন্দর্য  নেই ,শুধুই দোকানপাট। ঢালটাও সমান হয়ে গেছে। খুব ফিরে পেতে  ইচ্ছে হয় সেই  পথ,  না থাক সাগর তবুও যা মনকে এক লহমায়  কোন  সাগরের  বেলা ভুমিতেই নিয়ে যেত। এখন সেলফির যুগে  আফসোস হয় হারিয়ে গেল সে দিনগুলো। কিন্তু বারও তো সাজানো যায় ! না হোক সে পাহাড়ি ঢালের রূপ। সৌন্দর্যয়ন তো  আমরাই করি। শহরের মধ্যে এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট  তো শহরে গৌরব


          শিলিগুড়ি শহরের আরও একটা সুন্দর  লাল কার্পেটের পথ আমাকে আজও  হারিয়ে ফেলার জন্য মনো কষ্ট দেয়।  সে ছিল হাসপাতাল মোড় থেকে কোর্ট মোড় পর্যন্ত। দুধারে  লাল কৃষ্ণচূড়া গাছের সারি।সারা বছর যেমন ঘন সবুজ তেমনি লাল ফুলে যখন ভরে যায়  তখন আরও মোহময় হয়ে ওঠে।বসন্ত কাল এলে শুরু হত ফুল ফোঁটা।  গাছেরমাথাগুলো  ফুলে ফুলে লাল হয়ে  থাকত।রাস্তার দুধারের  এত গাছের  ঝরে পড়া  লাল ফুলে  ফুলে  সমস্ত রাস্তাটা মনেহত লাল কার্পেট পাতা।নিজে যখন হাঁটতাম মনে মনে রেড় কার্পেটে হাঁটার মাধুর্য অনুভব করতাম।আফসোস  হয়একটা ছবিও ধরে রাখতে পারিনি।  সারা বছরই এর সৌন্দর্য  মনকে আকৃষ্ট করত।গ্রীষ্মকালে এত সুন্দর ছায়া ঘের পথবড় শান্তি দায়ক ছিল।আজও কি কোথাও এমন সাজানো রাস্তা তৈরি করা যা না?  হোক না মানুষের ভিড়তবু এমন শান্তির পথ যদি শহরে পাওয়া যায় ক্ষতি কিমানুষ ইচ্ছে করলে করতে পারেকারণ বন্য জিনিস  মানুষের হাতেরছোঁয়ায় স্বর্গীয় সৌন্দর্য লাভ করে। ইচ্ছে হয়আবার যদি ফিরে পেতাম  সেই পথ। সে যেন হবে শহরের প্রাণ ভোমরা। “ কত রকম ছন্দ শোনায় পুষ্প লতাপাতা ; সেইখানেতে সরল হাসি সজল চোখের  কাছে -শরীর মন সুস্হ হতে বাধ্য। প্রার্থনা করি , `হে জীবপালিনী !  — আপনার পত্রপুষ্পপুটে, অনন্ত যৌবনা করি  ( সাজাও ) বসুন্ধরা।` 

No comments:

Post a Comment