ব্যক্তিগত গদ্য
' পরিধি থেকে বিন্দুতে '
অর্পিতা রায় আসোয়ার 
দীর্ঘতম ব্যাসার্ধ নিয়ে যখন বৃত্ত এঁকেছিলাম  তখন জীবন ছিল অনেকটা ফুলের মতো।নির্ভেজাল দিনগুলো শুরু হতো মিষ্টি সকালের আদরমাখানো রোদ্দুরকে সঙ্গে নিয়ে।তখনও জীবনের অলিগলিগুলো বড় প্রশস্ত ছিল, ছিল ঊজ্জ্বল চকমকি পাথরের মতো। স্বপ্নরা তাদের সীমাহীন স্বাধীনতাকে প্রশ্রয় দিতে জানতো।বৃত্তের পরিধি মাপা এককথায় বড় দুরূহ ছিল।কিন্তু ক্রমশ ব্যাসার্ধের দৈর্ঘ্য কমতে শুরু করল। খানিকটা আপন ইচ্ছে ও সময়ের তীব্র তাগিদ এ ব্যাপারে উদ্যোগী ছিল। ধীরে ধীরে অজান্তেই বৃত্ত ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে লাগল।দিব্যি দক্ষ হাতে কম ব্যাসার্ধ নিয়েই বৃত্ত আঁকতে শুরু করলাম। এ দক্ষতা আমি কিভাবে অর্জন করলাম জানি না।একে একে নিজের পছন্দের সুর,তাল,ছন্দ; এমনকি রঙগুলোকেও বৃত্তের বাইরে রাখতে শুরু করলাম, স্বার্থপরের মতো।এখন দেখছি ক্ষুদ্র বৃত্তেই কৃত্রিম স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে বেশ সখ্যতা তৈরী হয়েছে। জানি না সেই মিষ্টি রোদ্দুর আর আদর করে জড়িয়ে ধরবে কি না।যেন এক অশনি সংকেত  তার আলো ছায়ার খেলা খেলছে। এমন এক সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি না তো যখন আর হয়ত বৃত্তই থাকবে না,ব্যাসার্ধের দৈর্ঘ্য কমতে কমতে একসময় হয়ত বিন্দুই গন্তব্য হবে।এমন গন্তব্য কিন্তু কাঙ্খিত নয়।অনাকাঙ্খিত এই গন্তব্যে পৌঁছে নিজের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারব তো - জানি না। এমন বিভীষিকাময় আগামীর কথা ভেবে বড়ই শিহরিত হই।

No comments:
Post a Comment