শিল্পী বর্মন
মুজনাই সাপ্তাহিকে এ সপ্তাহের বিষয় বিবেকানন্দ: আমার চোখে। যদিও লেখা পাঠানোর নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ লগ্নে লিখতে বসার অবকাশ হল। স্বল্প সময়ে বা স্বল্প পরিসরে বিবেকানন্দ নামক মহাসমুদ্র কে মন্থন করা অসম্ভব তবুও এই মহাপুরুষের জন্মদিবস এর প্রাক্কালে মুজনাই এর নির্দিষ্ট বিষয়ে কিছু লেখার মাধ্যমে বিবেকানন্দকে শ্রদ্ধা জানানোর বা স্মরণ করার সুযোগটা ছাড়তে ইচ্ছে হলনা। এই মহাপুরুষকে আয়ত্ত করার মত অসাধারণ আমি নই, তবু আমার মত করে তাঁকে নিয়ে কিছু লেখার স্পর্ধা দেখালাম।তাঁকে নিয়ে আমার একান্তই ব্যক্তিগত ভাবনা গুলো নিজের মত করে লেখার চেষ্টা করলাম....
আমার চোখে বিবেকানন্দ সেই যুগপুরুষ যিনি শুধু মুখে বলে বা লিখে, শুধু আদর্শের বুলি আওরে সর্বশ্রেষ্ঠ হবার চেষ্টা করেননি, নিজের জীবনযাত্রাকে সেই পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে জগৎ শ্রেষ্ঠ হয়েছেন।
আমার চোখে তিনি একইসঙ্গে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, দার্শনিক, সমাজসংস্কারক, বৈজ্ঞানিক, নারীমুক্তির প্রদর্শক, শ্রেষ্ঠ সন্ন্যাসী এবং শ্রেষ্ঠ ঈশ্বর সাধক। তাঁর জীবনের এতগুলো অধ্যায়ের মূল্যায়ন করা আমার মত সাধারণের কাছে ধৃষ্টতা তবু চারিদিকে যখন অস্থিরতা, হানাহানি, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, সামাজিক অবক্ষয় বা অন্যান্য নেতিবাচক বিষয় চোখে পড়ে তখন মনে হয়, হায়! যে দেশে বিবেকানন্দ জন্মে ছিলেন সে দেশের এ কি সংকট!
বিবেকানন্দের দেহ রাখার এক শতাব্দী পেরিয়ে গেছে, তারপর আর একজন বিবেকানন্দ ও যদি এদেশে জন্মাতেন তা হলে হয়তো আমাদের দেশ সত্যি সত্যি জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন পেত। যদিও নিজের দেশকে ছোট করতে নিজেকেই ছোট মনে হয়, কিন্তু স্বামীজির চোখ দিয়ে দেখলে মনে হয় যে দেশে এত অর্থনৈতিক বৈষম্য, শ্রেণী বৈষম্য, জাতি বৈষম্য, নারী লাঞ্ছনা, শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্য সেই দেশ কি সত্যিই শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার হতে পারে।
আমার চোখে স্বামীজি সেই উদার পুরুষ যিনি বাঙালি হয়েও, বঙ্গ সংস্কৃতিকে বিসর্জন না দিয়ে রাজস্থান বা মাদ্রাজ ( চেন্নাই) এর সংস্কৃতিতে মিশে যেতে পারেন, ভারতবাসী হয়ে ভারতীয় সংস্কৃতিকে বিশ্ব সভায় পরিচিত করালেও শ্রীলঙ্কা বা ইংল্যান্ড বা আমেরিকাবাসী কে সৌভাতৃত্তের বন্ধনে আবদ্ধ করতে এতটুকু কুণ্ঠিত হননা। হিন্দু হয়ে ও সেই ধর্মের সারবস্তু টুকু আস্বাদন করে, সমস্ত গোড়ামি বা কুসংস্কারকে দূরে সরিয়ে সকল ধর্মের প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল।
আমার চোখে স্বামীজি শুধুমাত্র গেরুয়া বসন ধারী, গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী নন তিনি ছিলেন ঘরের মানুষ। তাই তো তিনি অন্নসত্র খুলতে পারেন। সন্ন্যাসী হবার অজুহাতে বাড়ির সমস্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেননি। পারিবারিক মামলায় নিষ্পত্তিতে তাকেই ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। নিঃস্বার্থ এই যুগ পুরুষ কালিমায়ের কাছে সবকিছু চাইবার সুযোগ পেয়েও স্বার্থপরের মত নিজের জন্য কিচ্ছু টি চাইতে পারেননি।
কুসুমকুমারী দাশের সেই বিখ্যাত পংক্তি টি মনে পড়ছে.... "আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে, কাজে বড় হবে"
আমার চোখে বিবেকানন্দ সেই আদর্শ ছেলে, যে মুখে বড় বড় কথা না বলে, অকাজে সময় নষ্ট না করে, তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবন অধ্যায়ে শুধু কাজ করে গেছেন, নিরলস ভাবে চেষ্টা করে গেছেন নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন যোগাতে, আর্তের সেবা করতে, অশিক্ষার অন্ধকার দুর করে শিক্ষার আলো জ্বালাতে।
আমার চোখে বিবেকানন্দ সেই দামাল, নিয়মভাঙা লৌহ পুরুষ, যিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সৎসাহস দেখিয়ে ভালো কে ভালো বা মন্দ কে মন্দ বলতে পিছপা হতেন না। উন্নত তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা বার বার বলি এই পৃথিবীটা গ্লোবাল ভিলেজে, কিন্তু সত্যি কি আমরা দেশ, কাল, ধর্ম, জাতপাতের গণ্ডিকে ছিন্ন করতে পেরেছি, অথচ ঊনবিংশ শতাব্দীতে জন্মানো এই মহান পুরুষ সত্যিকারের গ্লোবাল ভিলেজের একজন হতে পেরেছিলেন। শুধুমাত্র তাত্ত্বিক বিষয়ে নয়, ব্যবহারিক জীবনে যেমন খাদ্যাভ্যাস, রন্ধনপ্রণালি, জিবনশৈলী তেও দেশকালের গন্ডী ভেঙে প্রাচ্য পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটিয়ে ছিলেন। সকলের সব ভালো টুকুকে গ্রহণ করার মত উন্মুক্ত হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন তিনি।
বিবেকানন্দ ছিলেন সেই আধুনিক মানুষ। যিনি বাহ্যিক আড়ম্বরে গুরুত্ব না দিয়ে জীবের সেবা, মানুষের সেবাই ঈশ্বর সাধনা বলে মনে করতেন। তাইতো তিনি বলেন....
"কোথায় তুমি ঈশ্বরকে খুঁজিতে যাইবে, যদি তুমি তাহাকে নিজহৃদয়ে, জীবিত প্রনিগণের ভিতর না দেখিতে পার, যদি না তাঁহাকে ঐ যে লোকটা রাস্তায় মোট বহিয়া গলদঘর্ম হইতেছে তাহার ভিতর দেখিতে পার।"
আজ থেকে দেরশো বছরেরও বেশি সময় আগের এই মানুষটি সমাজকে সুশীল করার জন্য, সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য নারী পুরুষ, উভয়ের সমান অবদানের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন, অথচ আজ ও নারীদের সমানাধিকারের জন্য, কন্যা ভ্রূণ হত্যার বিরুদ্ধে , নারী নির্যাতনের বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হয় এটা এ শতাব্দীর লজ্জা! মনে হয় স্বামীজির আদর্শকে আমরা বুঝি শুধুই মুখস্থ করেছি, তাকে আত্মস্থ করতে পারিনি।
পাতার পর পাতা লিখলেও স্বামীজির মূল্যায়ন শেষ করা সম্ভব নয়। তবু কোথাও তো ইতি টানতেই হয়। শেষ করার আগে বিবেকানন্দ কে নিয়ে আমার যে ভাবনা গুলো লিখতে ইচ্ছে করছে, তা হল.. নিজে রক্ত মাংসে গড়া একজন সাধারণ মানুষ তাই অনেক মরীচিকার হাতছানি কে উপেক্ষা করা হয়তো সবসময় সম্ভব হয়না, তথাপি বলতে পারি চোখ বন্ধ করলে ঈশ্বর রূপে যে মূর্তি টি চোখের সামনে ভেসে ওঠে তিনি বিবেকানন্দ, যাঁকে স্মরণ করলে মনে শক্তি পাই, যাঁর মুখটি মনে ভেসে উঠলে মনে হয় মনকে সমস্ত সংকীর্ণতার গন্ডী থেকে মুক্ত করতে পারি তিনি বিবেকানন্দ । সমস্ত মহাপুরুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেই বলছি আমার চোখে শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ স্বামী বিবেকানন্দ।
চারিদিকে যখন চোখে পরে মানুষে মানুষে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের প্রতিযোগিতা, বড় বড় অন্তঃসারশূন্য বাক্যের আস্ফালন, সুস্থ সংস্কৃতির অবক্ষয় তখন মনে হয় বিবেকানন্দের আদর্শের সঠিক প্রয়োগের ভীষণ দরকার। তাঁর ভাষাতেই বলি.... "জগতের এখন একান্ত প্রয়োজন হল চরিত্র। জগৎ এখন তাঁদের চায়, যাঁদের জীবন প্রেমদীপ্ত এবং স্বার্থ শূন্য।" এই চরিত্র তৈরি হতে পারে স্বামীজির আদর্শকে পাথেয় করেই। শুধুমাত্র আড়ম্বর করে জন্মদিন পালন নয়, বা তাত্ত্বিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে নয়, নিজেদের জীবন চর্চার মধ্যে এই মহান ব্যক্তির আদর্শকে একাত্ম করেই বোধহয় আমরা অন্ধকার থেকে আলোর দিকে এগিয়ে যেতে পারি....।
স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিতে গৃহীজীবন
মৌসুমী চৌধুরী
তাঁর মতো বিরাট ব্যক্তিত্বকে কিছুই জানা হয় নি। "স্বামী বিবেকানন্দের দর্শন-ভাবনাঃ কর্মযোগ" পড়তে গিয়ে যতটুকু তাঁকে জানা। তাই "আমার চোখে স্বামী বিবেকানন্দ"__ বিষয়টি ভাবতে গিয়ে যে জিনিসটি আমাকে খুব নাড়া দেয় তা হল, জগত কাঁপানো সন্ন্যাসী হয়েও তিনি গৃহী জীবনকে উচ্চকিত ও গৌরবান্বিত করেছিলেন। তাঁর মতে, গৃহী বা গৃহস্থ হলেন সমাজের মূল ভিত্তি। কারণ, ঘরের এবং বাইরের অনেক ব্যক্তি তাঁদের উপার্জিত অর্থের ওপর নির্ভরশীল। তাই গৃহীকে জ্ঞানী হতে হবে এবং সৎভাবে উপার্জনের চেষ্টা করতে হবে।প্রত্যেকটি কর্মই শুভ ও অশুভের মিশ্রণ, তাই প্রত্যেক মানুষকে কর্ম করতে হবে অনাসক্তভাবে।
স্বামী বিবেকানন্দের দর্শন-ভাবনায় তাই এই বিষয়টি বার বার প্রতিফলিত হয়েছে যে, গৃহীদের থেকে সংসারত্যাগী সন্ন্যাসীরা মহৎ -- একথা ঠিক নয়। প্রকৃত মহৎ তাঁরাই যারা সংসারে থেকেও ফলের আশা না করে নিরাসক্তভাবে কর্ম করে যেতে পারেন। তিনি স্বীকার করেছিলেন, এভাবে কর্ম করা অত্যন্ত কঠিন। অথচ এটাই প্রকৃত স্বার্থত্যাগ। তাঁর মতে, কোনভাবে স্বার্থচিন্তার দ্বারা চালিত হয়ে কর্ম করা যাবে না, শুধু কর্মের জন্যই কর্ম করতে হবে। আর এটা একটা অনুশীলন। প্রথম দিকে কাজ করার ক্ষেত্রে স্বার্থপরতা থাকবে। কিন্তু ক্রমে ক্রমে নিজের চেষ্টার দ্বারা স্বার্থপরতাকে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা যায় এবং অবশেষে বিনা চেষ্টাতেই নিঃস্বার্থ কর্ম করা সম্ভব।
এই প্রসঙ্গে স্বামীজির জীবনের একটি ঘটনা উল্লেখ্য। শিকাগো ধর্ম মহাসম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে তিনি অর্থাভাবে ব্যায়বহুল শিকাগো শহরে থাকতে পারেন নি। তাই বস্টন শহরের বিভিন্ন অভিজাত পরিবারে তিনি আশ্রিত ছিলেন। বস্টনের এমনই একটি পরিবার ছিল হল-পরিবার। শিকাগো ধর্ম মহাসভায় বক্তৃতার পর স্বামীজি তখন সেখানকার বিভিন্ন মহলে খুব পরিচিত। সেসময় দেশে ফিরে আসর আগে স্বামীজি হল-পরিবারের ছেলে মাষ্টার হলকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, সে ভবিষ্যতে গৃহী হতে চায় নাকি তাঁর মতো সন্ন্যাসী হতে চায়। উত্তরে মাস্টার হল তাঁকে বলে যে, সে অবশ্যই তার বাবার মতো গৃহী হতে চায়। তখন স্বামী বিবেকানন্দ মাষ্টার হলকে বলেছিলে, "মনে রেখো, তুমি কঠিন পথটাই বেছে নিলে।"
স্বামী বিবেকানন্দের মতে, জীবন একটি জটিল প্রক্রিয়া। বস্তুবাদ ও ভাববাদ অর্থাৎ বাহ্যজগৎ ও অন্তর্জগতের মধ্যে যে জটিল সংগ্রাম তাকেই আমরা জীবন বলি। আর এই সংগ্রামের সমাপ্তিতেই আসে আদর্শ সুখ। সেই সুখ একজন গৃহী ও সন্ন্যাসী উভয়ের জীবনেই সমানভাবে আসতে পারে।
বিবেকানন্দ আমার চোখে
চিত্রা পাল
ভারতাত্মার প্রতিভূ স্বামী
বিবেকানন্দ।আমরা যে ভারতবাসী এক ঐতিহ্যশালী সভ্যতার ধারক বাহক তা সদর্পে
বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন যিনি তিনি আর কেউ নন স্বামী বিবেকানন্দ। আবার
ভারতীয়দের প্রাণে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে ছিলেন, জাগিয়ে ছিলেন
দেশপ্রেম, মানবপ্রেম। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড:
রমেশচন্দ্র মজুমদার ও ডঃ আর,সি প্রধান
বলেছেন “ বিবেকানন্দের জীবন ও ক্রিয়াকলাপ হইতে ভারতের জায়মান জাতীয়তা প্রচন্ড
গতিবেগ লাভ করিয়াছে।যথার্থই তাঁহাকে আধুনিক ভারতীয় জাতীয়তার জনক বলা যায়।এই
জাতীয়তার বিপুলাংশই তিনি সৃষ্টি করিয়াছিলেন এবং ইহার উচ্চতম ও মহত্তম মৌল ভাবগুলিকে নিজ জীবনে
মূর্ত করিয়াছিলেন”।এই বিশ্বপ্রেমিক সন্ন্যাসী বিশ্বজনীনতার বিশ্বপ্রেমের সিঞ্চন করে সকলকে ভাবতে শিখিয়েছিলেন যে সব কিছু শক্তির মূল উৎস আত্মবিশ্বাস যা মানুষকে নিজ শক্তি যোগাতে
সাহায্য করে। যা সামান্য প্রচেষ্টাও বিপুল আশাব্যাঞ্জক করে তোলে। তিনি সকলকে মানুষ
হবার প্রেরণা দিয়েছিলেন যা সকল ভারতবাসীকে উজ্জীবিত করেছিলো আর আজও তার ব্যাত্যয়
নেই ।তাঁর কথায় “একটা মানুষ যদি তৈরী হয় তো লাখ বক্তৃতার কাজ হবে। যে কথা আজও
সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
বীর সন্ন্যাসী -স্বামী বিবেকানন্দ
অদিতি মুখার্জী (সেনগুপ্ত)
"বীর সন্ন্যাসী বিবেক বাণী ছুটেছে জগৎময়,
বাঙ্গালীর ছেলে ব্যাঘ্রে- বৃষতে ঘটাবে সমন্বয়। "
প্রাতঃস্মরণীয় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ভারতবর্ষের গৌরব গাথা গাইতে গিয়ে উপর্যুক্ত পংক্তিগুলি, বীর সন্ন্যাসী, মানব কল্যাণকারি, স্বামী বিবেকানন্দের উদ্দেশ্য লিখেছিলেন। ভারতবর্ষের আধ্যাত্মিক সত্যকে স্বামিজী যেভাবে আমেরিকার শিকাগোতে অনুষ্ঠিত ধর্ম সভায় উপস্থাপন করেছিলেন তাহা সত্যিই অতুলনীয়। তিনিই ভারতবর্ষকে বিশ্ব সভায় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
১৮৬৩ খৃষ্টাব্দের ১২ই জানুয়ারি উত্তর কলকাতার সিমলাই স্ট্রিটের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম হয়। ওনার শৈশবের নাম ছিল "বীরেশ্বর" বা "বিলে"। শৈশব সে ছিল খুবই সাহসী এবং দয়ালু প্রকৃতির। ছোটবেলায় সে বন্ধুদের সাথে ধ্যান-ধ্যান খেলা খেলতে ভালবাসত। একবার এইরকম খেলা চলাকালীন তার বন্ধুরা একটা সাপ দেখে ভয় পালিয়ে যায়, কিন্তু বিলে এতটাই ধ্যানমগ্ন ছিল যে সে সাপের উপস্থিতি অনুভব করতে পারেনি। আর একবার বিলের বাড়ীর সামনের রাস্তায় একটি ঘোড়া হঠাৎই খুব ক্ষেপে ওঠে, তার সহিস কিছুতেই তাকে শান্ত করতে পারছিলনা, কেউই সাহস করে তাকে সাহায্য করতে এগোচ্ছিলনা, আচমকাই বিলে তাঁর স্নেহস্পর্শে ঘোড়াটিকে মুহুর্তের মধ্যেই শান্ত করতে সক্ষম হয়। মা ভুবনেশ্বরী দেবী খুবই ধার্মিক ও তেজস্বী ছিলেন। তিনি বিলের দুষ্টুমিতে অতিষ্ঠ হয়ে যখন বিলেকে গৃহবন্দি করে রাখতেন তখন বিলে ঘরের রাস্তার ধারের জানালা দিয়ে মায়ের শাড়ী ও ঘরে রাখা খাদ্য সামগ্রী গরীবদের দিয়ে দিতেন। এমনকি যখন সে ছোটবেলায় খুউব দুষ্টুমি করত তখন ভুবনেশ্বরী দেবী তাঁর মাথায় জল ঢালতে-ঢালতে শিবের নাম জপ করলেই সে নিমেষেই শান্ত হয়ে যেত। এটর্নি পিতা বিশ্বনাথ দত্তের কাছে বিভিন্ন জাতি-ধর্মের লোক দেখা করতে আসতেন, তাই তার কাছে সকলের জন্য আলাদা হুঁকো রাখা থাকত। ছোট বিলে একদিন প্রত্যেকটি হুঁকোতে মুখ লাগিয়ে দেখার চেষ্টা করেছিল যে সেগুলোর আলাদা স্বাদ কিনা। ওনার শৈশবের এই সকল ঘটনা দ্বারা আমার অনু মনের এটাই ধারনা যে তিনি ছেলেবেলা থেকেই ঈশ্বরমুখী, দয়ালু এবং সংকীর্ণ জাত-পাত বিরোধী।
বি. এ. পড়াকালিন তাঁর সান্নিধ্য পরমহংস রামকৃষ্ণ দেবের সাথে হয়। তিনি পরমহংস রামকৃষ্ণ দেবের বিশেষ আধ্যাত্মিক ক্ষমতার পরিচয় পান এবং ওনার মন্ত্রে দীক্ষিত হন।
তিনি ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে রামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যুর পর পরিব্রাজক হয়ে সম্পূর্ণ ভারতবর্ষ পরিক্রমা করেন। এবং তিনি রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়েই ১৮৯৩ খৃষ্টাব্দে আমেরিকার শিকাগোতে ধর্মমহাসভায় বক্তৃতা দেওয়ার জন্যে হিন্দু সহ ধর্মের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ভারতবর্ষ থেকে রওনা দিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর - "ব্রাদার্স অ্যান্ড সিস্টার অফ আমেরিকা" সম্বোধনে সারা প্রেক্ষাগৃহে এক অনুকূল বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। তিনি এই বক্তৃতা দ্বারা অসাধারণ খ্যাতি অর্জন করেন। ইংল্যান্ডের ও আমেরিকার বহু নর-নারী তাঁর ধর্ম মতে আকৃষ্ট হয়ে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহন করেন।
তাহার মতে ঈশ্বর আছেন আমাদের সামনে, "বহুরূপে" দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের মধ্যে। এদের সেবা করলেই ঈশ্বরকেই লাভ করা যাবে। উনি এই পরিপ্রেক্ষিতেই বলেছেন -" বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর।
জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর। "
স্বামীজী সর্বসময়, সবক্ষেত্রে ভারতবর্ষ কে শীর্ষ স্থানে রেখেছেন। তিনি সকল ভারতবাসীকে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তাঁর দেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবার জন্য এক বৃহৎ অখন্ড ভারতবর্ষ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দ বৈদান্তিক সন্ন্যাসী হলেও আধুনিক মানবতাবাদের দৃষ্টিকোণ থেকে হিন্দু ধর্মের এই শ্রেষ্ঠ গ্রন্থটি( বেদান্ত") কে গ্রহন করেছিলেন। বেদান্তের এই নবভাস্যকার বলেছিলেন - "জগতে আশার আলো বিস্তার করো: আলোক - আলোক লইয়া আইস।প্রত্যেকে যেন আলোর পথে এগিয়ে চলে। যতদিন না সকলে ভগবানের আশ্রয় লাভ করো, ততদিন যেন তোমাদের কাজ শেষ না হয়।" জগজ্জননীর কাছে তিনি মনুষ্যত্ব প্রার্থনা করে বলেছেন,"হে জগদম্বে আমায় মনুষ্যত্ব দাও, আমার দুর্বলতা, কাপুরুষতা দুর কর, অমিয় মানুষ কর।
স্বামীজী কেবল কর্মের জগতেই নয়, চিন্তা ও মননশীলতা ক্ষেত্রেও মানবতার বানী প্রচার করে গেছেন। ওনার রচিত প্রধান গ্রন্থগুলো যথা - "পরিব্রাজক", "প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য", "বর্তমান ভারত" খুবই উল্লেখযোগ্য। তিনি তাহার বাংলাভাষার পত্রগুচ্ছে কিছু প্রযুক্তিভিত্তিক আলোচনা করেছেন। তিনি বুকে হাত রেখে বলতে শিখিয়েছেন, "ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষ আমার ভাই, আমার রক্ত। ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ, ভারতের দীনতা, আমার অপমান।"
স্বামীজীর জন্মদিবস সারা ভারতবর্ষের "জাতীয় যুবদিবস" হিসাবে পালিত হয়। অন্ধকার থেকে আলোর দিকে, মৃত্যু থেকে অমৃতের দিকে, অসৎ থেকে সৎ এর পথে আমাদের যাত্রা যে মহামানব শুরু করেছিলেন, সেই বিবেকানন্দই ভারতবর্ষের প্রকৃত বাতিঘর।
তুমিই বিবেকানন্দ
অন্বেষিকা দাস
আস্যখানি মলিন তোমার
শৌর্য,বীর্যে তুমি মহান।পরিব্রাজক বিবিদিষানন্দ, লক্ষাধিক পথবাসীর সিংহকর্তা।দারিদ্রতা, নিরক্ষরতা,অস্পৃশ্যতা থেকে মুক্তির স্বপ্ন ছিল তোমার চোখে,ছিল আধ্যাত্মিক জাগরণ।
ভারতকে ভালবেসে বসিয়েছিলে আরাধ্য দেবীর আসনে।হিন্দী ভজন, বাংলা কীর্তন ও বিদ্যাপতি,চন্ডীদাস, রামপ্রসাদের রচনাবলী গেয়ে মুগ্ধ করতে সকলকে।
গুরুভাইদের বলতে,"প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে জীবের আত্মপ্রকাশের প্রচেষ্টাই জীবন।"
তুমিই নরেন,তুমিই বিশ্বনাথ,তুমিই চিরগৈরিকধারী বীরসন্ন্যাসী বিবেকানন্দ।
শিল্পী- শৌভিক দাস
বিবেকানন্দ
মাথুর দাস
থাকলে বিবেক রাখলে বিবেক-আনন্দকে জ্ঞানে,
বিবেকানন্দ-বোধ কী জিনিস ক'জনই বা জানে !
বলেই গেছেন মহান যোগী সহজ কথা, কথ্য,
'সত্য বলার রাস্তা হাজার, কথাটি হোক সত্য ।
সবার আগে শরীর গড়ো,হও যোগের অনুরক্ত,
সবচে' বড় জিম পৃথিবী-ই, যেখানে হই পোক্ত ।
সব মানুষের মধ্যে বিলাও সহানুভুতি-ধনকে,
মন মগজের লড়াই হলে মানতে থাকো মনকে ।
ত্যাগ করো সে বিষয়গুলি যা করে তোলে দুর্বল,
জীবে প্রেমই ঈশ্বর-প্রেম, মন রে সেই সুর বল্' ।
চির প্রণম্য মহামানব কর্মযোগী ধর্মজ্ঞানী বীর,
শ্রেষ্ঠ যুবক বিবেকানন্দ,সৌম্যকান্তি দৃপ্তকন্ঠ ধীর ।
বিবেকানন্দ
নির্মাল্য ঘোষ
যাঁকে আমি সংবেদনে পাই...
যাঁর কথা মানলে শরীর মেঘ হয়
নীল আকাশে...
হাওয়াকে ঝড়ে রূপান্তর করার
আত্মবিশ্বাস আসে...
জীবন পালিশ হয় অনায়াসে..
আর যাঁর কথা ভাবলে শীতকাল ঝরে
গিয়ে আসে চিরবসন্ত...
তিনি আর কেউ নন...
দুর্বলতাকে চরম পাপ হিসেবে
চিহ্নিতকারী - ভয়কে কুসংস্কারের
কাঠগোড়ায় তোলা এক হিন্দু সন্ন্যাসী...
শিকাগো জয়ী স্বামী বিবেকানন্দ...
আবার এসো হে সন্ন্যাসী
সুতপা রায়
রঙ বদলেছে সভ্যতার
কুয়াশার রঙ বদলায় নি
আজও সে ধূসর।
ভালোবাসার সংঙাগুলো
পালটে যাচ্ছে গনতন্ত্রের পরিহাসে।
আমরা যখন শীতের আদরে সুখ নিদ্রায় মগ্ন
তখন ওদিকে কিশোরীর লাশ পোড়ে।
লজ্জায় আনত মুখ
কুয়াশার চাদরে ঢাকে বিবেক শব্দহীন প্রতিবাদে।
জীবে প্রেম নেই কো আর
অ- সত্য মাথা কুটে মরে।
হে বীর সন্ন্যাসী --
তোমার অমৃত বানী, জীব সেবাই শিব সেবা
ভুলেছে শপথ মিথ্যের মায়া জালে!
তোমার উপলব্ধিতে
একবিংশ শতাব্দীর পাপ আজও বাস্তবায়িত
মূর্খ ভারতবাসী !
তোমার সৃষ্ট বানীর স্বপ্নপূরণ,অন্তর্ঘাতে নয়ত দলিত গোলাপের সাদা থানে।
হে স্বামীজি বীর সন্ন্যাসী
তোমার বানীর সুর বাজুক আঁধার দেশে
শত সহস্র বর্ষ পরেও আরো আলো দাও
মান্-হুস জাগাও।
অলৌকিক কন্ঠে ধ্বনিত হোক তোমার বানী।
সঞ্চয় যদি কিছু করে থাকি
তবে দু-হাতে এ বর মাগি।?
বিবেকানন্দ
নবনীতা
আমার চোখে তুমিই ভারতের যোগ্যতম সন্তান
তোমার চোখেই দেখেছি আমার ভারত সুমহান ৷
ভারত তোমার দ্বিতীয় স্বত্ত্বা , ভারত মানেই তুমি
তোমার প্রেমে , তোমার স্বপ্নে ধন্য জন্মভূমি ৷
তোমার ধর্ম ,তোমার কর্ম, তোমার জ্ঞানের মহিমা
পৃথিবী জুড়ে ব্যাপ্তি পেয়েছে , ছাড়িয়ে দেশের সীমা
তোমার ত্যাগ ,তোমার আদর্শ ,তোমার সকল গৌরব
এখনও আমাদের অনুপ্রেরণায় নিত্য ছড়ায় সৌরভ ৷
তোমার চোখে মানুষ শুধু মানুষ তো নয় ঈশ্বর
তোমার আদর্শ বেদান্ত থেকে বর্তমানেও ভাস্বর ৷
তুমি বলেছিলে ধর্ম মানে মানুষকে ভালোবাসো
যুব সমাজ, পুরুষ-নারী ধর্মের স্রোতে ভাসো ৷
তুমি বলেছিলে অশিক্ষা নয় কুশিক্ষা উন্নতির অন্তরায়
দেখো তোমার ভারত বুঝি আজও মুক্তি পাইনি তাই ৷
যুগাবতার , নরশ্রেষ্ঠ , দেশ প্রেমিক সন্ন্যাসী
তোমার প্রতি অপার শ্রদ্ধা , ভালোবাসা রাশি রাশি ৷৷
প্রণাম তোমায়
শঙ্খনাদ আচার্য
কলকাতায় জন্ম তোমার
অসীম জ্ঞানী তুমি
তোমায় পেয়ে ধন্য বাঙালি,
ধন্য ভারতভূমি।
'জাতের হুঁকো' ভাঙলে তুমি
রসিকতার ছলে
ভূতের ভয় ভাঙতে একাই
দুললে গাছের ডালে।
বিশ্ব-দরবারে করালে তুমি
ভারতের পরিচয়
শিকাগোর মঞ্চে দাঁড়িয়ে
করলে 'ভুবনজয়'।
দেশ ও জাতির গর্ব তুমি
সত্য জীবন দ্রষ্টা
প্রণাম তোমাকে সন্ন্যাসী বীর
'নব-ভারতের' স্রষ্টা।
মহান তুমি বিবেকানন্দ
শ্রাবনী সেনগুপ্ত
মহান তুমি বিবেকানন্দ,
নামেই তোমার বিবেক ও আনন্দ।
শ্রেষ্ঠ তুমি কর্মবীর,
আপন লক্ষ্যে ধীর স্থির।
যুবসমাজের মাথায় তুমি,
তোমাতে প্রণত জন্মভূমি।
বীর তুমি বিশ্বের দরবারে
জগৎকে চেনালে ভারতবাসীরে।
মুচি-মেথরকে ডাকলে ‘ভাই’,
সবাকার হৃদয়ে করে নিলে ঠাঁই।
সমস্ত কুসংস্কার জয় করে
সবাইকে নিলে তুমি আপন করে।
ঠাকুরের নরেন তুমি ,
তোমাকে পূজে এই মাতৃভূমি।
তোমার সান্নিধ্যে বিদেশিনী নিবেদিতা
হয়ে উঠলেন দেশমাতা।
সমাজসংস্কারের তুমি পথিকৃৎ
এ জগতে করে গেলে সবাকার হিত।
বিবেকানন্দ
সুনন্দ মন্ডল
যৌবন উদ্দীপনা
নির্ভীক সত্য
উচ্চারিত বাণী
মুখরিত জ্যোতি
বিশ্বাসে অটল
কর্মে উজ্জীবন
বিনয়ে সভ্য
চেতনায় উদ্বুদ্ধ
বিবেকে বিত্ত
তেজোদীপ্ত চেহারা
চিত্তে ধার্মিক
একগ্রতায় একনিষ্ঠ
কালের গতি
প্রাণের দ্যুতি
সমাজে সাধক
সংসারে নিয়ন্ত্রিত
জাতিতে মানুষ
মানুষে ভাই-ভাই
সদা আনন্দ
জগৎ বিবেকময়।
বিবেক গীতাঞ্জলি কুন্ডু
সিন্ধু গড়ে উঠতে
তুচ্ছ নয় একটি জলবিন্দু।
স্বমহিমায় বিবেক তাই
ছড়ায় ধর্ম হিন্দু।
পথ হারালে ধ্রুবতারা
পথ চিনিয়ে দেয়।
এমন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে
করবে বলে সহায়।
চাওয়া-পাওয়ার ভিড়ে মানুষ
হন্যে হয়ে ঘোরে।
ত্যাগ-তিতিক্ষা পরম শান্তি
আসে ঘরে ঘরে।
শান্ত বিবেক উড়িয়ে কেতন
শান্তি করে ফেরি।
বেঁধে রাখতে পারেনি কোন
বজ্রকঠিন বেড়ি।
আজ প্রভাতেও দিন যে আসে
নিয়ে নতুন আশা।
একটি নাম বিবেকানন্দ
জাগায় ভালোবাসা।
হে বীর সন্নাসী
বিজয় বর্মন
হে বীর ,মানব অবতার,
প্রসঙ্গ প্রবাহিত আজও চরাচরে,
পীরিত আত্মা দিশারী,
ভূলুণ্ঠিত হবার আগে স্মরণে তোমার।
পক্ষে-বিপক্ষে শূন্যের খেলা,
শূন্যের মান নির্ধারণের ব্যস্ত,
সামাজিক দর্পণে,
বোবার মুখে খই ফোটে।
স্বয়ং ঈশ্বর জীবের দুয়ারে,
দাতা,গ্রহিতা ,কে বা কার,
কার সেবা কে বা পায়,
হে মহানুভব মনুষ্যত্বের পূজারী।
দিশা দিয়ে যাও,
নত মস্তকে শক্তি জোগাও,
অটুট থাকুক স্বভিমান,
উচ্চ করি শির জগৎ সংসারে।
অমৃতম্
মধুমিতা শীল মণ্ডল বীর সন্নাসী, বিবেকানন্দ
বাংলার সন্তান।।
প্রেমদীপ্ত, নবীনতন্ত্রে
উত্তিষ্ঠত জাগ্রত মন্ত্রে
সত্যের জয়গান।।
নব ভারতের,তুমি নববেদ
ভারতবাসীর পরমআত্মা
অন্তর্নিহিত পূর্ণতায় একাগ্রতায়
চিন্তায় মননে
বিনম্র চিত্তে গাহি
তোমারি গান।।
অভীঃ বজ্রের দৃঢ় বন্ধন
আত্মত্যাগ ও সেবায়,
হে দিব্যশক্তির আরাধ্য দেবতা
লহ শ্রেষ্ঠ আসন।।
বীর পুরুষ
সুদীপ সাহা
হে বীর, হে বিবেকানন্দ!
আজ তোমার-ই হোক জয়
শুধু তোমার-ই হোক জয়।
বিশ্ব মাঝারে ভারতকে যিনি
দিয়েছে নতুন পরিচয়।
তিনি আর কেউ নন
তিনি শুধু তুমি।
সকলকে লয়েছে হৃদয় মাঝারে
দেখেনি কোন ভেদাভেদ।
তিনি আর কেউ নন
তিনি শুধু তুমি।
চলার পথে করেছে সাহসী,
মনে জুগিয়েছে বিশ্বাস।
তিনি আর কেউ নন
তিনি শুধু তুমি।
যার বাণীতে শত শত যুবক
খুঁজে পেয়েছে নব জীবনে প্রাণ
তিনি আর কেউ নন
তিনি শুধু তুমি।
হে বীর, হে বিবেকানন্দ!
আজ তোমার-ই হোক জয়,
শুধু তোমার-ই হোক জয়।
শিল্পী- সৃজা রায়
মুজনাই সাপ্তাহিক
No comments:
Post a Comment