মেয়ে
আপরোজা খাতুন
মা দুর্গা,দুর্গতিনাশিনী,অসুরবিনা সিনী রক্ষা করো মা।
সব অশুভ,সব কালোছায়া বিনাশ করো মা।
তুমি অসহায়ের সহায় মা,অন্নদায়িনী অন্নপূর্ণা,জগৎপালিতা জগদ্ধাত্রী মা।
কাকে এত মা মা করছো,কোন দুর্গার কথা বলছো?
কোন দেবীর উপাসনা করো তুমি,সে তো মেয়ে।
ঘরের দুর্গা নির্যাতিতা,নিপীড়িতা,লাঞ্চিতা।
আর তুমি মাটির মূর্তির পুজো করো?
লক্ষ্মীবারে লক্ষ্মীপুজো করো ,লক্ষ্মীর পাঁচালী পড়, সুখ-সমৃদ্ধি ভর।
লক্ষ্মী!সেও যে মেয়ে।
ঘরের লক্ষ্মী সে যে ধুলায় লুণ্ঠিতা, দিবারাত্র গঞ্জিতা।এই তোমার লক্ষ্মীপুজা?
শক্তিদায়িনী কালীর উপাসক তুমি,কতই না করো স্তুতি।
ফুলচন্দন, বিল্বপত্র নেই কোন কিছুর ত্রুটি।
মা,মা করে কেঁদে ভাসাও;ধন,মান,জীবন,যৌবন তুমি আমায় দাও।
এত সব কার কাছে চাও,কার পায়ে মাথা নোয়াও?
ধর্ষক সমাজ যে মেয়ের অবমাননা করো ,সেই মেয়েজাতকেই পুজো করো।
বুক ফুলিয়ে বলো,বউমা আমার মেয়ে চাই না।
বংশের প্রদীপ,একমাত্র সম্বল একখানা নাতি চাই।
এবার মেয়ে হলে খোকার আবার বিয়ে করাব।
মেয়ে?আমরা বুড়োবুড়ির মুখে আগুন দেবে কে?
মেয়ে হলে পার করাবে কে?মেয়ে মানে বাড়তি খরচা।
শাশুড়ি মা নারী হয়ে নারীকে করো অবহেলা।
নারী সে যে অসামান্যা তা কি তোমার অজানা?
শত বাধা পেরিয়ে,ঘরের চৌকাঠ মাড়িয়ে মেয়েরা আজ বিশ্বের উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে এসে দাঁড়িয়েছে।
পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে,দেখিয়ে দিয়েছে সে কোন অংশে কম না।
তবুও,তবুও নারী আজও ধর্ষিতা।
No comments:
Post a Comment