Monday, October 5, 2020


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 সানাই

               সুপর্ণা চৌধুরী
       
          বাতাসে হিমেল পরশ। বারান্দায় এসে দাঁড়াল তুলি। রোদে লেগেছে চাঁপাফুলের রং। পুজো এসে গেছে। 
          বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠল।  এবারের পুজোটা যেন পাঁজর গুঁড়িয়ে সুর কেটে-যাওয়া সানাইয়ের মতো বাজছে। প্রতি  বছরই পুজোয় বেড়াতে  যায়। এ বছরটা যেন চলে গেছে রূপকথার রাক্ষসের করাল গ্রাসে। সুদূর পিয়াসী মনে বেয়াড়া সানাইটা বাজতে থাকে দূরকে কাছে পাওয়ার জন্য। মানস- ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে তুলি। 
            মনের ডানা মেলে উড়ে যায় সেইসব জায়গায় যেখানে এখনও পর্যন্ত যাওয়া হয়নি, কিন্তু  ইন্টারনেটে তার সম্বন্ধে  জানা হয়েছে। 
             হঠাৎ চমক ভাঙল কলিংবেলের শব্দে। দরজাটা খুলল তুলি। ঈশিতা দাঁড়িয়ে হাসছে। হৈ হৈ করে বলল, "তোমাকে অনেকক্ষণ ধরে ফোন করে নো-আনসার পেলাম, তাই সোজা চলে এলাম। এবার পুজোয়ও বেরোচ্ছ নিশ্চয়ই?"
           তুলি মাথা নেড়ে জানাল, "না, আমি তো একা বেরোতে পারি না। আর এবার মা নেই। মনও ভালো নেই কারও।"
        ---" তাহলে চল, আমরা এবার পুজোয়  শ্রুতিনাটক করব করোনা-ভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত সমস্ত সতর্কতা মেনে। আমি নিজে লিখেছি একটা শ্রুতি নাটক, নাম "রাজনীতি"।
          
   ---- "ও দিদি, বারান্দায় ইজি-চেয়ারেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছ? কি রান্না করব, বলো দেখি?" কমলাদির ডাকে ঘুমটা ভেঙে যায় তুলির।
      ঠিক তক্ষুনি ঈশিতার মেসেজ ঢোকে তুলির ফোনে,
---"শোন, এবার আমরা গুগল মিটে শ্রুতি-নাটক করব বুঝলে? সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং আর কি! হাঃ হাঃ...রেডি থেকো।"
  উত্তরে তুলি লেখে, "ওকে।"
       সানাইটা হঠাৎ সুরে বাজতে থাকে!

No comments:

Post a Comment